Betterlife With Steem [ The Diary Game. (31/03/25)..]Eid celebrated in a joyful atmosphere after a month of fasting...

in hive-120823 •  last month  (edited)

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারোকাতুহ।



1000008767.jpg

দেখতে দেখতে মাহে রমজান মাস আমাদের থেকে গত কাল বিদায় নিয়েছে। মুসলমানদের জন্য এই মাস ছিল আনন্দঘনো, ইবাদতের, আল্লাহ তায়ালার নৈকট্য লাভের মাস। তাই তো এই মাসকে ঘিরে থাকে নানা ধরনের কর্মব্যস্ত সূচি। রমজান শেষ হওয়ার মানেই আমাদের মাঝে হাজির হয়, ঈদের খুশি। যা পুরো পৃথিবীর মুসলমানদেরকে এক নতুন আনন্দে আনন্দিত করে তোলে। গতকাল সন্ধায় আরবি শাওয়াল মাসের নতুন চাঁদ দেখার মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে আমাদের খুশির সংবাদ৷ মেতে উঠেছে সবাই শুভেচ্ছা বিনিময় করতে৷ ধনী, গরীব সবাই এক উৎস মুখোর পরিবেশে বিরাজ করছে। ঈদের এক মাস আগ থেকে শুরু হয় কেনাকাটা আর পছন্দের কাজে লেগে থাকা। আজকে ঈদের দিন। গতকাল মাগরিবের নামাজের পর আমি ইতেকাফ শেষ করপ মসজিদ থেকে বাড়ী এসেছিলাম। এরপর থেকে শুরু হলো কর্মব্যস্ত জীবন।

দশটা দিনের নানা ধরনের কাজ জমে ছিল। কারণ, গত পোষ্টে আপনাদের সাথে শেয়ার করেছিলাম আমি দশ দিনের জন্য মসজিদে ছিলান। যার ফলে বাহ্যিক জীবনের সকল কাজ বন্ধ ছিল। নিদিষ্ট সময় থাকার পর আমি ঈদের চাঁদ উঠার পর মসজিদ থেকে বের হয়েছিলাম। গতকাল রাত ১২ টা পর্যন্ত বাজারেই কেটেছিল। অনেক চেষ্টা করেও চুল কাটানোর দোকানগুলোতে সিরিয়াল দিতে পারি নাই। এরপর ভাবলাম ঈদের দিন সকালে কাটাবো। আজকে ঈদের দিন। মুসলমানদের একটা খুশির দিন। আপনাদের সবাইকে ঈদুল ফিতরের অনেক অনেক শুভেচ্ছা. ভোরে এলামের আওয়াজে ঘুম ভাঙল। তারপর উঠে ওয়াশরুম থেকে এসে ওজু করে ফজরের নামাজ আদায় করে মসজিদে চলে গেলাম সালাত আদায় করতে। নামাজ কালাম শেষ করে মসজিদ থেকে বের হয়ে ভাবলাম এখন সেলুনের দোকানে গিয়ে দেখা যাক, চুল কাটানো যায় নাকি। হাঁটতে হাটতে সেলুনের দেকানে গিয়ে দেখি তখনও সিরিয়ালে ২ জন। এদিকে ঈদের নামাজের সময় সকাল ৮ টায়। এর আগে রেডি হয়ে ঈদগাহ ময়দানে চলে যেতে হবে। সেলুনের দোকান দারের সাথে কথা বললাম, বললো বসো যদি সম্ভব হয় তাহলে কেটে দিবনে। আমি সকাল ৭ টা পর্যন্ত অপেক্ষা করলাম।

1000008632.jpg1000008631.jpg

ভোরে সেলুনের দোকানে যাওয়ার সময় তোলা।

কিন্তু কিছুতেই কিছু হলো না। যেহেতু নামাজের দেরি হয়ে যাবে এজন্য, আমি চুল না কাটিয়েই বাড়ী চলে গেলাম। এরপর বাসায় গিয়ে আমার রুমটা গুছিয়ে নিয়ে একটু বসতেই,, আমার ভাইয়ের মেয়ে এসে বলে কাকু হাতে মেহেদী দিয়ে দাও। ছোট মানুষ শখ বেশি৷ তার হাতে একটু মেহেদী ডিজাইন করে দিলাম। এরপর আমি গোসল করতে চলে গেলাম। গোসল শেষ করে এসে পাঞ্জাবি পরে ঈদগাহে যাওয়ার জন্য রেডি হলাম। নিয়ম হলো একটু মিষ্টি মুখ করে তারপর নামাজ পরতে যাওয়ার। এজন্য আমি তিনটা খেজুর খেয়ে নামাজ আদায় করতে ঈদগাহে চলে গেলাম। যাওয়ার সময় একটা জায়নামাজ সঙ্গে নিয়ে গেলাম। যথা সময় ৮ টায় ঈদের নামাজ শুরু হলো।

1000008635.jpg1000008636.jpg
1000008640.jpg1000008639.jpg

ঈদগাহ ময়দান থেকে তোলা কিছু ছবি।

নামাজ শেষ করে বিভিন্ন নিয়ম কানুন মানার পর একে অপরের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করে কোলাকুলি করা হলো।তারপর পাশেই গোরস্থানে শুয়ে থাকা মৃত্য ব্যক্তির জন্য দোয়া করে আমি আমার বন্ধুদের সাথে হাঁটতে হাটতে চলে আসলাম রাস্তায়। তারপর বন্ধুরা মিলে কিছু আনন্দ ঘনো সময়ের ছবি তুললাম।

1000008643.jpg

আমি এবং আমার বন্ধুরা।

এরপর বাড়ীতে এসে কিছু খাওয়া দাওয়া করলাম। খাওয়া দাওয়া শেষ করে আমি রেডি হলাম কুমারখালি একটা গোরস্থানে যাওয়ার জন্য। ঈদটা আমার জন্য বেশি আনন্দদায়ক নয়। মনে হাজারও কষ্ট নিয়ে পালিত করতেছি ঈদ। ঈদের ২ দিন আগে মানে ২৮ রমজানে আমার বড় খালা আমাদের সবাই ছেকে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে চলে গেছে। আমার বড় খালার কোনো সন্তান ছিল না। সে আমাকে সন্তানের মতো করে মানুষ করেছে। আমাকো ছাড়া আর কিছু বুঝত না। যেখানে যাবে, ডাক্তার দেখানো থেকে শুরু করে সকল কাজ আমাকেই করতে হতো। যার জন্য তার প্রতি মায়া বেশি৷ এতো তারা তারি তাকে হারাতো হবে এটা কখনও কল্পনাও করি নাই৷ গত ৪ বছর ধরে তিনি অসুস্থ ছিলেন। ব্রেন স্টোক করে প্যারালাইসিস হয়ে গিয়েছিল। ডাক্তার দেখানোর পর আর আল্লাহ তায়ালার রহমতে অনেকটা সুস্থ হয়ে গিয়েছিল। যাই হোক, সৃষ্টির নিয়ম তো মানতেঔ হবে৷ সেটা যতটা কষ্টই হোক না কেন।

বাড়ী থেকে বের হয়ে আব্বুর ভ্যানে চলে গেলাম গোরস্থানে যাওয়ার জন্য৷ আমার সাথে আমার আব্বু, ছোট খালু, আর ছোট মামা, আর আমার দুলাভাই ছিল। আমাদের বাড়ী থেকে বেশ কিছুটা দূরে৷ গোরস্থানে গিয়ে খালার জন্য দোয়া করে,, কবরটা দেখে চলে গেলাম আমার ছোট খালাদের বাড়ী৷

1000008646.jpg1000008645.jpg

গোরস্থানে যাওয়ার সময়।

ছোট খালাদের বাড়ী গিয়ে আগে কিছুটা সময় রেস্ট নিলাম। তারপর খালা নাস্তা দিল সেটা খেয়ে আমি যোহরের নামাজ আদায় করতে গেলাম। নামাজ শেষ করে এসে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে খালুর সাথে আলোকপাত করলাম। তারপর আমি এবং আমার দুলাভাইও মামা সেখান থেকে বিদায় নেই। এবার আমাকে যেতে হবে আমার বোনের বাসায়। দুলাভাই তার সাথে অনেকটা জোর করেই আমাকে নিয়ে যাবে। আমরা কুমারখালি বাজারে এসে একটা মিষ্টির দোকান থেকে আমি মিষ্টি কিনে নিলাম। তারপর আবার ভ্যানে করে চলে গেলাম বোনের বাসায়। মূলত ভাগিনীকে দেখতে যাওয়ার জন্য যাওয়া৷ গিয়ে রেস্ট নিলাম, আপু নাস্তা দিল সেটা খেলাম। কিছুটা সময় ভাগিনীকে নিয়ে আড্ডা দিলাম। তারপর খুব ক্লান লাগতেছিল একটু ঘুমিয়ে নিলাম। ঘুম থেকে উঠে আসরের নামাজ আদায় করে নিলাম। এরপর নামাজ শেষে খাওয়া দাওয়া শেষ করলাম।

1000008660.jpg1000008664.jpg
1000008672.jpg1000008675.jpg

ভাগিনীর সাথে কিছু মুহূর্ত।

সন্ধার সময় আমি আমার দুলাভাইয়ের পরিবারের লেকজন মিলে ঘুরতে আসলাম কুমারখালি ব্রীজের উপর। ঈদের দিন হওয়াই প্রচন্ড ভির ছিল। এরপর বেশ কিছুটা সময় ঘুরাঘুরি করার পর আমার বন্ধুদের সাথে আবারও ঘুরাঘুরি করলাম। রাত ১০ টার দিকে বাড়ী আসলাম। অন্তরে কষ্ট নিয়েও হাসিমুখে মানুষের সাথে ঘুরাঘুরি করেছি। দুনিয়ার নিয়ম তো মানতেই হবে। ঈদের দিনটা এভাবেই আমার কেটে গেল। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন। আবারও দেখা হবে আমার পরবর্তী পোষ্ট নিয়ে।

1000007009.png

1000007010.gif

সবাইকে অনেক ধন্যবাদ আজকের পোষ্টটা পড়ার জন্য।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

Loading...

দেখতে দেখতে রমজান মাস আমাদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে চলে গেল। ঈদ চলে আসলো সবাই মিলে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নেয়ার জন্য ঈদগাহে গিয়েছেন এবং এরপরে আবার কবরস্থানে গিয়ে সবার জন্য জিয়ারত করেছেন যেটা জানতে পেরে ভালো লাগলো বাসায় এসে নিজের ভাগ্নের সাথে কিছুটা সময় পার করেছেন যাইহোক অসংখ্য ধন্যবাদ ঈদের আনন্দ সবার সাথে ভাগ করে নেয়ার জন্য ভালো থাকবেন।

মূল্যবান সময় ব্যয় করে মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।