সময় পরিবর্তন ( Time Change )

in hive-120823 •  3 days ago  (edited)

নমস্কার বন্ধুরা,,,

কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও বেশ ভালোই আছি। গতকাল আমি আমার গতকালকের কার্যক্রম গুলো তুলে ধরে ছিলাম। আজ না হয় অন্য বিষয় নিয়ে আলোচনা করা যাক। আমার আজকের বিষয়:- সময় পরিবর্তন। তাহলে চলুন আর বেশি বকবক না করে শুরু করা যাক...

IMG20241129201310.jpg

সময় পরিবর্তন,,,

সময় বড় অদ্ভুত তাই না! দেখতে দেখতে আমাদের জীবন থেকে আমরা কত সময় যে হারিয়ে ফেলছি তা হয় তো বলে বুঝানো যাবে না। শুধু সময় না, সময়ের সাথে সাথে আমরা হারিয়ে ফেলেছি আমাদের শৈশব, শৈশবের সকল স্মৃতি, হরিয়ে ফেলেছি শৈশবে কাটানো সকল মূহুর্ত।

যেমন-কাঁদামাটি মাখা, নারকেলের মালা নিয়ে খেলা করা, একজনের পুতুলের সাথে অন্য আরেক জনের পুতুলের বিয়ে দেওয়া, স্কুল থেকে কাঁদামাটি মেখে বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে বাড়ি আসা, সুপারির পাতা দিয়ে গাড়ি বানানো ইত্যাদি।

এখন মানুষ সাইকেল, মোটরসাইকেল, রিকশা, ইজিবাইক ইত্যাদি গাড়িতে উঠে মজা পায়। আর তখন আমরা সুপারি পাতার গাড়িতে উঠে মজা পেতাম। তখন শৈশবের প্রথম গাড়ি ছিল সুপারি পাতার গাড়ি। এই সকল স্মৃতি, যা এখন হাজার চেষ্টা করলেও আর ফিরে আনা যাবে না।

IMG_20241129_223713.jpg

সময়ের সাথে সাথে বদলে যাচ্ছে আমাদের সমাজ, সংস্কৃতি, পরিবেশ, পরিস্থিতি। বদলে গেছে অনেক মাুনষজনও। বদলে গেছে কথা বলার মাধ্যম। আগে একটা সময় ছিল যখন একজন আরেক জনের সাথে কথা বলার জন্য চিঠি লিখে পোস্ট অফিসে জমা দিতে হতো।

সেই চিঠি তার কাছে পৌঁছাতে পৌঁছাতে এক থেকে দুই সপ্তাহ সময় লেগে যেতো। আবার তার চিঠি আমাদের কাছে পোঁছাতে পৌঁছাতে এক থেকে দুই সপ্তাহ সময় লেগে যেতো। সময়ের সাথে সাথে এরও পরিবর্তন ঘটেছে। এখন এসে গেছে স্মার্টফোন।

যার মাধ্যমে এখন মানুষ খুব সহজে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যোগাযোগ করতে পারতিছে এবং তাদেরকে ভিডিও কলের মধ্যমে দেখতে পারতিছে।

IMG_20241129_225435.jpg

সময়ের সাথে সাথে বদলে গেছে বন্ধু বান্ধবও। যারা আগে এক সাথে স্কুলে যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করতাম, এক সাথে স্কুলে যেতাম, স্কুলে যেয়ে আড্ডা দিতাম, খেলা-ধুলা করতাম, গল্প দিতাম তারা এখন সময়ের সাথে সাথে বদলে গেছে।

এখন আর কেউ কারো জন্য অপেক্ষা করে না। এখন আর এক সাথে স্কুলে যাওয়া হয় না, এক সাথে বসে আড্ডা দেওয়া হয় না, গল্প করা হয় না। এখন যে যার মতো ফোন নিয়ে ব্যাস্ত থাকে। এখন সারাদিন ফোনে চ্যাটিং করে,ভিডিও দেখে, গেমস খেলে ইত্যাদি।

এখন কেউ আর কারো জন্য অপেক্ষা করে না। এ সব কিছুর মূলে সময় পরিবর্তন। সময় যত পরিবর্তন হচ্ছে, মানুষও ততো পরিবর্তন হচ্ছে,আধুনিক হচ্ছে। মানুষ আধুনিক হতে হতে, মানুষ মানুষের থেকে দূরে সরে যাচ্ছে।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  
Loading...

@roy.saikat বিগত দু'দিন ধরে আপনার লেখা পড়লেও একদম সময় করে উঠতে পারছিলাম না মন্তব্য করবার।
আসলে যদি কোনো লেখা মন ছুঁয়ে যায় সেই লেখা যথাযথ মন্তব্যের দাবিদার।

আপনি যতগুলো খেলার কথা উল্লেখ করেছেন সবগুলোই আমার শৈশবের সাথে জড়িত।

আমাদের বাড়ি যে পাড়ায় ছিল, সেই গলির শেষ প্রান্তে, মানে দক্ষিণ দিকের রাস্তার শেষে যে বাড়িটি ছিল, সেটি ছিল পাল বাড়ি নামে পরিচিত।

তারা মূর্তি তৈরির কাজ করত কাজেই প্রচুর এঁটেল মাটি স্তুপাকৃত করা থাকতো বাড়ির বাইরে তৈরি একটা কাঁচা ঘরে।
ঘরটি খোলাই থাকত, আর আমরা একদল বিকেল বেলায় গিয়ে খানিক মাটি নিয়ে আসতাম খেলার জন্য।

আমাদের ওই বাড়ির বড়রা কখনোই কিছু বলতো না! এবার সেই মাটি দিয়ে বাটি বানিয়ে উল্টো করে জোরে ফাটাতাম, যার যত বড় গর্ত ওই বাটিতে তৈরি হতো, অপরপক্ষ মাটি দিয়ে থালা তৈরি করে সেই সেই গর্ত পূরণ করত।

এইভাবে যার কাছে শেষ পর্জন্ত বেশি মাটি অবশিষ্ট থাকতো সেই হতো বিজয়ী।
এখন সব খেলায় ঘর বন্দী, আর আধুনিক প্রযুক্তির অন্তর্ভুক্ত।

শিশু আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে, যেটা হারিয়ে গেছে সেটা হলো শৈশব! এখন শিশুরা পায়ে দাঁড়াতে পারার আগেই হাতে সেল ফোন, কথা থেকে শিখবে প্রকৃতির মাঝে বেড়ে ওঠার মজা?

সব রোবট তৈরি হচ্ছে, কাজেই যান্ত্রিক জীবনযাপনই তারা অভ্যস্ত। আর তার পিছনে দায়ী আমরাই, মানে বাড়ির বড়রা।
খুব ভালো লিখেছেন, এরকম লেখা আরো পড়বার প্রতীক্ষায় রইলাম।

ধন্যবাদ দিদি আপনাকে। আমার পোস্টি আপনার ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম। আপনি মাটি নিয়ে যে খেলার কথা বলিছেন আমরাও ছোট বেলায় অনেক খেলেছি। কিন্তু এখন ছোটদের ওই সব খেলার প্রতি কোনো আগ্রহ নাই। তারা এখন সময় পেলে হাতে ফোন নিয় বসে যায় ভিডিও দেখতে। এই জন্য এই খেলা গুলো হারিয়ে যাচ্ছে গ্রাম অঞ্চল থেকে।