আয়ান অনেকটা বিরক্ত হয়ে বলে আমি তো তোমাকে এসব ন্যাকামি করতে বলিনি। কেন আমার জন্য অপেক্ষা কর আমি আগেও বলেছি আমার জন্য কখনোই অপেক্ষা করবে না। কথাগুলো শুনে সায়মা অনেক বেশি অবাক হল, কেননা আগেও সায়মা আয়নার জন্য অপেক্ষা করেছে। তার কাছে হাজারো রকম বায়না ধরেছে, তখন তো আয়ান কখনোই তার কথায় রাগ করত না বরং সে মুচকি হেসে তার সমস্ত বায়না পূরণ করার চেষ্টা করত।
এইসব কথা বলা শেষ করে আয়ান একটা শার্ট পরে রুম থেকে বেরিয়ে গেল। সায়মা রুমের এক কোণে বসে আছে, নিজেকে বিশ্বাস করাতে পারছে না সে যাকে পাগলের মত ভালবেসে ছিল। সেই মানুষটা কিভাবে এত তাড়াতাড়ি বদলে গেল। সায়মা বার বার ওই মেসেজ করার কথা চিন্তা করতে থাকে। যেখানে সে নিজেকে বিশ্বাস করতে পারছে না। তার নিজের বোন তার সাথে এমন বিশ্বাসঘাতকতা করেছে সেখানে আয়ান তো অন্য একটা ছেলে।
বারবার ওই মেসেজ গুলো তার চোখের সামনে এসে ভাসতে লাগলো। যেখানে তার স্বামী এবং তার বোনের আপত্তিকর কিছু মেসেজ ছিল। যেদিন আয়ানের সাথে সায়মার বিয়ের কথাবার্তা ঠিক হয়েছিল। ঠিক সেদিনই তার বোন অনেকটা রহস্যময় ভাবে তাকে বলেছিল। যদি ভাইয়া তোকে বিয়ের প্রস্তাব না দিত তাহলে আমি ভাইয়াকে জোর করে হলেও বিয়ে করে ফেলতাম, কথাটা ওই দিন সায়মা হাস্যকর ভাবেই নিয়েছিল, কিন্তু আজকে সে বিষয়টা অনেক বেশি গভীর হয়ে গেছে।
এখন আর এসব কথা ভেবে কোন লাভ নেই, কেননা যা হবার তা হয়ে যাচ্ছে। নিজের প্রিয় মানুষটাকে একটু একটু করে অন্যের হতে দেখলে সবার কষ্ট লাগে। সায়মার ক্ষেত্রেও ঠিক তাই হয়েছে। এসব কথা ভেবে সে রান্না করার জন্য রান্না করে চলে যায়। হঠাৎ করেই কেউ একজন তার পেছন থেকে তাকে জড়িয়ে ধরে। সায়মা অনেক ভয় পেয়ে যায় এবং জিজ্ঞেস করে কে?
পেছন থেকে শব্দ আসে আমি তোমার আদরের ননদি অনু। অনু হচ্ছে আয়ানের ছোট বোন। সায়মার চোখ জোড়া ফুলে আছে দেখে অনু জিজ্ঞেস করে ভাবি আজকাল তোমাকে অনেক বেশি আপসেট মনে হচ্ছে। কি হয়েছে ভাইয়ার সাথে কি কোন ঝগড়া হয়েছে।
সায়মা মুচকি হেসে তাকে জবাব দেয় কিছুই হয়নি। আসলে একটু অসুস্থ ফিল করছিলাম, তাই এমনটা লাগছে অনু তাকে আর কিছু জিজ্ঞেস করে না ওখান থেকে চলে যায়। সায়মা আপন মনে রান্না করতে থাকে আর মনে মনে ভাবে সব কথা সবার সাথে শেয়ার করা যায় না। কিছু কষ্ট নিজের মনের মধ্যে লুকিয়ে রেখে নিজেকে সান্ত্বনা দিতে হয়। যদিও সেই কষ্ট মানুষকে শেষ করে দেয়।
রাতে খাবারের টেবিলে বসে সায়মা আয়নার জন্য অপেক্ষা করতে থাকে। অনেকক্ষণ অপেক্ষা করার পর সে দরজার কলিংবেলের শব্দ শুনতে পায়। তাড়াতাড়ি করে উঠে গিয়ে দরজাটা খুলে দেয় এবং দরজা খোলার পর সে দেখতে পায় আয়ান বাসায় ফিরে এসেছে।
গল্পের এই পর্বটা আপনাদের কাছে কেমন লেগেছে জানাতে ভুলবেন না। আজকে মাত্র এখানেই বিদায় নিচ্ছি। সবাই ভালো থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।