মানুষের জীবনের চরম কিছু সত্য। যেটা আমরা চাইলেও কখনো মুছে ফেলতে পারব না। ৪০ এর পরে আপনার শিক্ষাগত সার্টিফিকেটের কোন দাম নেই। সেটা যতই শিক্ষিত হোক না কেন? পঞ্চাশের পরে সৌন্দর্যের কোন দাম নেই! আপনি যতই সাজুগুজু করে চলুন না কেন? আপনার গাল ভাঙবেই আপনার চোখের কোনে কালি পড়বে। ৬০ বছরের পরে অবসর সময় চলে আসে, তখন পুরনো চেয়ারের তেমন কোন দাম হয় না! সে যে কোন ব্যাংকের ম্যানেজার হোক কিংবা বড় কোন সরকারি চাকরিজীবী হোক না কেন? তখন সবার একটাই পরিচয় থাকে পুরাতন ব্যাংক কর্মী অথবা অবসরপ্রাপ্ত সরকারি চাকরিজীবী।
সত্তরের পরে বড় বাড়ি কিংবা ছোট বাড়ির মধ্যে তেমন একটা তফাৎ কেউ খুঁজে পেয়েছে বলে, আমার জানা নেই। কেননা তখন ছেলেমেয়েরা বড় হয়ে গেছে সবাই বাড়ির বাইরে থাকে। বাড়িতে একমাত্র বুড়া আর বুড়ি পড়ে থাকে। ৮০ বছর বয়সে যত টাকা থাকুক না কেন? তখন আর তার কোন মূল্য থাকে না! কেননা তখন সে চলাফেরা করতে পারে না! নিজে থেকে কোন কিছু করতে গেলে তিনবার হোঁচট খেয়ে পড়তে হয়! তখন তার প্রয়োজন হয় জনবলের। ৯০ বছর বয়সে একটা মানুষ বিছানায় পড়ে যায়! তখন ঘুমিয়ে থাকা আর জেগে থাকার মধ্যে তেমন একটা তফাৎ আমরা কেউই বুঝতে পারি না।
কিন্তু তারপরেও আমাদের জীবন নিয়ে কত অহংকার! আমরা দাপটের কারণে সমাজে চলতে পারি না! নিজেদের অহংকার অনেক টাকা পয়সা আছে! রাস্তায় পড়ে থাকা মানুষের পাশে গিয়ে আমরা দাঁড়াতে পারি না! কিছু মানুষ তো রয়েছে একেবারে তাদের সামনেই বলে দেয়! আপনার শরীর থেকে দুর্গন্ধ আসছে আমার কাছ থেকে দূরে সরে দাঁড়া! আরে ভাই মৃত্যুর পরে আপনি আমি আমাদের শরীরের কি অবস্থা হবে, সেটা কি একবার ভেবে দেখেছেন।
যাইহোক আলহামদুলিল্লাহ নতুন একটা সকালের দেখা পেয়ে অনেক বেশি আনন্দিত হয়েছি! তবে মনটা একটু খারাপ! আসলে মেয়েদের ক্ষেত্রে যেটা হয় যখন বাবার বাড়িতে যাবে! তখন কত তাড়াতাড়ি করে সব কাজ শেষ করে, কখন বাবার বাড়িতে যাবে এই চিন্তা থাকে! আর যখন আবার স্বামীর বাড়িতে ফিরে আসবে! তখন কাজের প্রতি কেমন যেন অবহেলা শুরু হয়ে যায়! আমার ক্ষেত্রেও ঠিক তাই হয়েছে। সকালে অনেকটা দেরি করেই ঘুম থেকে উঠেছিলাম। চারপাশে কুয়াশার কারণে কোন কিছুই দেখা যাচ্ছে না।
ঘুম থেকে উঠে মা ভাত গরম করে দিলো। তরকারি গরম করে দিল। ছেলেদেরকে ভাত দিলাম ওরা খেয়ে নিল। আমার কেমন যেন খেতে ইচ্ছা করছে না। তার পরেও মায়ের ভয়ে অল্প পরিমানে ভাত নিয়েছিলাম। তাও বকা শুনতে হল এত কম ভাব কেন নিয়েছি আরেকটু বাড়িয়ে নিলে কি হত। আসলে মায়ের মত করে কেউ এমন ভাবে বলে না। আমি অনেক মানুষকেই দেখেছি মায়ের ক্ষেত্রে এটা একটু আলাদা হয়ে থাকে।
ভাত খেয়ে সব কিছু রেডি করে গাড়ি খবর দিয়েছিলাম। একটু পরে গাড়িওয়ালা আবার কল করে বলল, উনি আসতে পারবে না। অন্য গাড়ি নিয়ে যাওয়ার জন্য কি আর করব ব্যাগ পত্র সব গুছিয়ে নিয়ে বাড়ি থেকে বের হলাম। কেননা বাড়ি থেকে বের হলে রাস্তার মধ্যে গাড়ি পাওয়া যাবে। মা আমার পেছন পেছন আমার ব্যাগ নিয়ে হাঁটা শুরু করল। বারণ করেছিলাম না আসার জন্য কিন্তু উনি আসবেই। এমনিতেই হাঁটতে পারে না শরীর এখনো দুর্বল। তারপরেও আমার সাথে অনেকটা পথ আসলো। তারপরে সামনে একটা রিকশা পেয়ে গেলাম।
রিকশায় উঠে সোজা চলে আসলাম শ্বশুরবাড়িতে। এসে মা'কে কল করে জানালাম আমি ঠিক ভাবে এসে পৌঁছাতে পেরেছি। এরপর ঘরের অবস্থা দেখি একেবারেই খারাপ এটা দেখে আমার নিজের কাছে আরো বেশি খারাপ লাগলো। তারপর ঘর পরিষ্কার করা শুরু করলাম। ঘর পরিষ্কার করে ঘর মুছে নিয়েছিলাম এর ফাঁকে ওয়াইফাই লাগানোর জন্য ভাইয়াকে কল করেছিলাম।
উনারা এসে ওয়াইফাই লাগিয়ে দিলেন, তারপর আমি ঘর পরিষ্কার করা মাত্র শেষ করলাম। এর মাঝেই দেখি আমার মেজ ননদ তার ছেলে মেয়েকে নিয়ে এসে হাজির। তারপর রান্নাবান্নার জন্য আমি সবকিছু রেডি করে রান্না ঘরে গেলাম। রান্নাবান্না শেষ করে দুপুর দুইটার সময় গোসল করে ঘরে আসলাম। নামাজ পড়ে নিয়েছিলাম, আমার ভাত দেয়ার আগেই দেখলাম, আমার ছেলে তার দাদুর সাথে ভাত খেয়ে নিয়েছে।
এরপর নিজে অল্প পরিমাণে খাবার খেয়ে নিয়েছিলাম। আসলে খুব ক্লান্ত লাগছিল অনেকটা অস্বস্তিকর অবস্থা। এত কাজ করার পর নিজের কাছেই নিজের প্রতি ঘৃণা লাগছিল। আর মনে মনে চিন্তা করলাম মেয়েরা কি শুধুমাত্র এই পৃথিবীতে কাজ করার জন্যই এসেছে, তাদের নিজেদের কোন স্বাধীনতা নেই? সবার ক্ষেত্রে স্বাধীনতা পাওয়া যায় না এটা ভেবেই নিজের মনটাকে শান্ত করে নিলাম! তারপর কিছুক্ষণ শুয়ে পড়লাম, বিকেলবেলা আবার তাদের জন্য নাস্তা রেডি করলাম।
এরপর দেখলাম ঘরের একটা সকেট নষ্ট হয়ে গেছে। ছেলেকে দোকানে পাঠিয়ে সেটা আনলাম। এরপর আমি সেটা খুলে প্রথমে চেক করলাম কি সমস্যা পরে দেখলাম তার জ্বলে গেছে। পরে নতুন সকেট লাগিয়ে দিলাম।
সবাই যে যার মত করে গল্প করছে টিকটক দেখছে। আমি আমার কাজগুলো সম্পন্ন করে নিজের পোস্ট লেখা শেষ করলাম। তারপর মাগরিবের নামাজ পড়ে ছেলেদের কে কিছুক্ষণ পড়তে বসালাম। ওদের পড়া শেষ হলে রাতের খাবার খাইয়ে দিয়ে ওদেরকে ঘুম পাড়িয়ে দিলাম। এরপর আমি ঘরের যাবতীয় যে কাজগুলো ছিল, সেগুলো সম্পূর্ণ করে খাবার না খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। এভাবেই আমার জীবন থেকে আরো একটা দিন আমি অতিবাহিত করলাম। সবার সুস্থতা কামনা করে আজকের মত এখানেই বিদায় নিচ্ছি। আল্লাহ হাফেজ।
Hello @rubina203! 👋
I really enjoyed your post and I have voted for it.
This comment was generated by my bot for the completion of my task. 🚀
App: mohammadfaisal/1.0
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আমার পোস্ট আপনার কাছে ভালো লেগেছে জানতে পেরে ভালো লাগলো। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমাকে সাপোর্ট দেয়ার জন্য ভালো থাকবেন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য, আপনাকে ধন্যবাদ জানাই আপু! আপনার পোস্টটি পড়ে একটা বিষয় উপলব্ধি করতে পারলাম।
আপনি আমাদেরকে, অনেকভাবে বুঝিয়েছেন, কিভাবে সময়ের কাজ সঠিক সময়ে করতে হবে! একটা নির্দিষ্ট সময় পার পেয়ে গেলে তার কোন দাম থাকে না!
সেটা মানুষের সৌন্দর্যই হোক আর মানুষের শিক্ষার দিক থেকেই হোক। খুব ভালোভাবে আমাদের সাথে আপনার কথাগুলো গুছিয়ে উপস্থাপন করেছেন। যা পড়ে অনেক ভালো লাগলো, আরেকটি বিষয়ে আপনার পোস্টে দেখলাম। আপনি নিজের ঘরের সকেট নিজেই ঠিক করেছেন, সত্যিই এটা খুব সাহসের বিষয় কেননা বিদ্যুৎ জিনিসটা খুব ভয়ংকর, যাই হোক,ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন,আল্লাহ হাফেজ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আমাদের জীবনটা খুবই ভয়ঙ্কর যদি আমরা সঠিক সময়ে নিজেদের কাজগুলো সঠিকভাবে সম্পন্ন করতে না পারি আমাদের জীবনটা খুবই সুন্দর যদি সেটাকে আমরা সঠিকভাবে উপভোগ করতে পারি আমাদের জীবনটা তার চাইতেও বেশি সুন্দর যদি আমরা আমাদের সন্তানদেরকে মানুষের মত মানুষ করতে পারি।
প্রতিটা কথার পেছনে কিন্তু সময়ের প্রতি গুরুত্ব বোঝানো হয়েছে এক্ষেত্রে আমরা কি বুঝি সময়টাকে কাজে লাগাতে হবে একটা সময়ের পরে যেমন মানুষের সৌন্দর্য টাকা-পয়সা কোনকিছু তার কাজে লাগে না তখন কিন্তু তার কাজে লাগে একমাত্র ভালো কাজ অর্থাৎ আপনাকে আপনার জীবনের প্রতিটা মুহূর্তে ভালো কাজ করতে হবে।
সত্যটাকে যখন আপনি আঁকড়ে ধরে বেঁচে থাকার চেষ্টা করবেন সত্য আপনাকে ভালো কাজের দিকে নিয়ে যাবে আর আপনার ভালো কাজ আপনাকে জান্নাতের দিকে নিয়ে যাবে তাই যতই ব্যস্ত থাকুন না কেন নিজের পরিবারকে সময় দেয়ার পাশাপাশি সত্যের পথে চলার চেষ্টা করুন অসংখ্য ধন্যবাদ চমৎকার মন্তব্য করার জন্য ভালো থাকবেন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit