Better Life With Steem || The Diary game || 15 February 2025 ||

in hive-120823 •  10 days ago 
Picsart_25-02-16_09-42-53-183.jpg

পরিস্থিতি যেমনই হোক সবকিছু আঁকড়ে ধরে আমাদেরকে বেঁচে থাকতে হয়। আমরা চাইলেও আমাদের পরিস্থিতিকে উপেক্ষা করে সরে যেতে পারি না। চেষ্টা করতে হয় প্রতিনিয়ত বেঁচে থাকার লড়াই আমাদের প্রতিনিয়ত করতে হয়। কারণ আমরা মানুষ। আমরা মানুষ হয়ে মানুষকে আঘাত করতে দ্বিতীয়বার চিন্তা করি না। আমরা এটা ভুলে যাই এই পৃথিবী থেকে আমাদেরকে যেতে হবে। আমাদের অহংকারে মাটিতে পা পড়ে না। আসলে এত অহংকার করা কি ঠিক। সকালবেলা যার সাথে কথা হয় বিকেলবেলা তার মৃত্যুর সংবাদ শোনা যায়। এমন ঘটনা বর্তমান সময়ে অহরহ ঘটে যাচ্ছে। তারপরেও আমাদের মানুষের মধ্যে একটু সামান্যতম আফসোস নেই। এই জীবন নিয়ে এত অহংকার কিসের।

যে জীবনের সময় অতি সংক্ষিপ্ত। এই সংক্ষিপ্ত জীবনী ও আমরা নিজেদের জায়গা জমি টাকা পয়সা সব কিছুই আমার, এসব কথা বলে বসে থাকি। কিন্তু এসব কথা বলার কোন মানে হয় না। কারণ আমি কখন এই পৃথিবী ছেড়ে চলে যাব, সেটা আমি নিজেও জানিনা। কোন কিছু নিয়ে বড়াই না করে, যদি পারেন রাস্তার পাশে থাকা মানুষ গুলোকে নিজের সৎ পরিশ্রম করা টাকা দিয়ে একটু সাহায্য করার চেষ্টা করেন। তাদের মুখের হাসি কতটা মূল্যবান, সেটা তখন বুঝতে পারবেন। আমার ইচ্ছা আছে যদি কখনো আমার সামর্থ হয়, অবশ্যই তাদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করব।

IMG_20250215_094153_782.jpg

নতুন একটা সকালের দেখা পেয়ে বুঝতে পেরেছিলাম, আলহামদুলিল্লাহ আমি এখনো বেঁচে আছি। সকালবেলা নামাজ পড়ে বাহিরে কিছুক্ষণ ঘোরাঘুরি করেছিলাম। আজকে ঠান্ডার পরিমাণটা অনেকটাই বেশি, কুয়াশার পরিমাণ টা কম কিন্তু ঠান্ডা বাতাস চারপাশে। ঠান্ডার কারণে বাহিরে দাঁড়িয়ে থাকাটা একেবারেই মুশকিল হয়ে গেছে। আসলে প্রতিদিন আমার জন্য নতুন কিছু অভিজ্ঞতা নিয়ে আসছে, যতটুকু বুঝলাম। সবকিছু সামলে নেয়ার চেষ্টায় প্রতিদিন আমি যুদ্ধ করি, কিন্তু যুদ্ধের শেষ মুহূর্তে গিয়ে বুঝতে পারি, আমাকে নতুন কিছুর জন্য আবারও প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে।

IMG_20250215_094153_712.jpg

ঘরের যাবতীয় কাজ সম্পন্ন করার পর, দেখতে পেলাম শ্বশুরের অবস্থা কালকে রাতের চেয়ে আরো বেশি খারাপ। বমি করে সবকিছু নষ্ট করে ফেলেছেন, আমি গিয়ে ধরলাম আমার অবস্থা আরো বেশি খারাপ হয়ে গেছে। কি করব বুঝতে পারছিলাম না, সবাই ঘুমাচ্ছে। এরপরে চিৎকার শুরু করলাম সবাই ঘুম থেকে উঠলো না, শশুর আমার কাঁধের উপরে নিজের মাথা ফেলে দিলেন। এটা দেখে আমি আরো ভয় পেয়ে গেলাম। এরপরে ওনার মাথায় পানি ঢালতে লাগলাম। তখন নিজেকে অনেক বেশি অসহায় মনে হচ্ছিল। কারণ তখন আমার পাশে কেউ ছিল না, আমি একা মানুষ এই মানুষটাকে সামলাতে গিয়ে হিমশিম খেয়ে যাচ্ছিলাম।

একটু পরেই দেখলাম শাশুড়ি উঠে এসেছে, উনি আমাকে এসে বকাবকি শুরু করে দিয়েছে। আমি এতক্ষণ কেন ওনাকে ডাকিনি কিন্তু আমি বললাম আমি চিৎকার করতে ছিলাম। আপনারা কেউই শুনেননি। যাইহোক তারপরেও নিজের দোষ এটা মেনে নিয়েছিলাম। তারপর ওনাকে ঘরে তুলে নিয়েছিলাম। ওখানে গিয়ে আবার ওনার মাথায় বেশ কিছুক্ষণ পানি ঢাললাম। ওনার অবস্থার কোন উন্নতি আমি দেখতে পাচ্ছি না। অসুস্থ হওয়ার পর থেকে একদিন ভালো দুই দিন আবার ওনার অবস্থা একেবারেই খারাপ। খাবার খেতে চায়না অনেকটা জোর করে ওনাকে খাওয়াতে হয়।

IMG_20250215_094154_210.jpg

এরপরে আমি শাশুড়িকে ওনার কাছে রেখে রান্নাবান্নার জন্য সব কিছু রেডি করে নিয়েছিলাম। ছেলেদেরকে সকালবেলা খাবার খাইয়ে দিয়েছিলাম। আমি যেহেতু রোজা তাই রান্নাবান্নার জন্য রেডি করে রান্না করে চলে গেলাম। এরপর আমার ভাগ্নি এসে বলল ওকে মুড়ি চানাচুর মাখিয়ে দিতে। তারপর আবার মুড়ি চানাচুর ওকে মাখিয়ে দিলাম। আমার রান্নাবান্না শেষ হতে দুপুর হয়ে গেল। তারপর তাড়াতাড়ি গিয়ে গোসল করে নিয়েছিলাম। কেননা সকালবেলা একবার আমার জামা কাপড় ভিজে গিয়েছে। এমনিতেই নিজের শরীরে এখনো জ্বর, তারপর অজু করে এসে নামাজ পড়ে ছেলেদেরকে দুপুরের খাবার খাইয়ে দিয়েছিলাম।

IMG_20250215_094153_912.jpg

এরপর গিয়ে কিছুক্ষণ শ্বশুরের পাশে বসে রইলাম। উনার অবস্থা মোটেও ভালো না, জানিনা কখন কি হয়ে যায়। দেখলাম ঘুমিয়ে আছে তাই আর কিছু বললাম না। নিজে এসে শুয়ে পড়েছিলাম শরীর অনেক বেশি ক্লান্ত লাগছিল। কখন ঘুমিয়ে পড়েছিলাম নিজেও জানিনা। তারপর উঠে আসরের নামাজ পড়ে নিলাম এবং হাঁসের বাচ্চা গুলোকে খাবার দিলাম। মুরগির বাচ্চা গুলোকে খাবার দিয়ে ওষুধ খাইয়ে দিয়েছিলাম। দুইটা মুরগির বাচ্চার শরীরের মধ্যে প্রচন্ড পরিমাণে জ্বর। ঔষধ খাওয়াচ্ছি কিন্তু কিছুই হচ্ছে না। এটা আমার আরেকটা টেনশন জানিনা তারা ভালো হবে কিনা। তবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি তারপর তাদেরকে তাদের ঘরে রেখে দিয়ে দরজা লাগিয়ে দিলাম।

IMG_20250215_094153_701.jpg
IMG_20250215_094154_271.jpg

মাগরিবের নামাজ পড়ে ছেলেদেরকে নিয়ে পড়তে বসেছিলাম। ওদের পড়া শেষ হলে আমি ওদেরকে রাতের খাবার দিয়েছিলাম। এরপর শ্বশুরের জন্য হালকা পরিমাণ একটু দুধ গরম করে নিয়েছিলাম, সাথে একটা পাউরুটি দিয়ে ওনাকে জোর করে খাইয়ে দিয়েছিলাম। তারপর ওনার ঔষধ খাওয়ালাম। এরপর নাকি ঘুমাতে বলেছিলাম কিন্তু উনি উঠে সারা ঘর হাঁটাহাঁটি শুরু করে দিল। একটু পরেই আমাকে বলল উনাকে বাহিরে নিয়ে যাওয়ার জন্য। এরপর আমি বাহিরে নিয়ে গেলাম, বাহিরে গিয়ে আবারো বমি করা শুরু করে দিল। কি হচ্ছে কিছুই বুঝতে পারছি না তারপর ডাক্তারকে খবর দিলাম।

তবে রাত বেশি হয়ে যাওয়ার কারণে ডাক্তার আসলো না।উনি বলল সকালবেলা এসে একবার দেখে যাবে। তারপর ওনার মাথায় অনেকক্ষণ পানি ঢাললাম এরপর আবার বলতে উনার কাছে ঠান্ডা লাগতেছে। এরপর ওনাকে ঘরে নিয়ে এসে কম্বল দিয়ে ছিলাম এবং ঘুমাতে বলেছিলাম। এরপর আমিও গিয়ে শুয়ে পড়লাম। এভাবেই আমার জীবন থেকে আরো একটা দিন অতিবাহিত করলাম। সবার সুস্থতা কামনা করে আজকের মত এখানেই বিদায় নিচ্ছি আল্লাহ হাফেজ।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  
Loading...

আপনে অনেক সুন্দর ভাবে আপনার দিনলিপিটা আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন। এখন শীত প্রায় আমাদের থেকে বিদান নিতে চলেছে। গরমের দেখা পাওয়া যাচ্ছে। মাঝে মাঝে তো রুমে আমি ফ্যানও চালাচ্ছি।
আমিও বাড়ীতে থাকলে আমার বড় ভাইয়ের মেয়েকে নিয়ে পরাতে বসি। ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।

চেষ্টা করেছি আমার একটা দিনের কার্যক্রম আপনাদের সাথে তুলে ধরার জন্য আপনি ঠিকই বলেছেন বর্তমান সময়ে গরমের পরিমাণটা অনেকটাই বৃদ্ধি পেয়েছে তাই আমি মনে করি এই সময়টাতে নিজেরা অনেক বেশি সতর্ক থাকা উচিত ঠান্ডা গরম যার কারণে আমাদের অনেক বেশি সমস্যা হতে পারে আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ চমৎকার মন্তব্য করার জন্য ভালো থাকবেন।