![]() |
---|
কিছু অজানা অনুভূতি আমাকে তাড়া করে বেড়াচ্ছে। বারবার চেষ্টা করছি সেখান থেকে বেরিয়ে আসার, কিন্তু বের হতে পারছি না।কেন সেটা জানিনা, নিজের অজান্তেই চোখ দিয়ে পানি পড়ছে, কেন সেটা বুঝতে পারছি না। বুকটা ফেটে যাচ্ছে ইচ্ছে করছে চিৎকার করে কান্না করতে, কিন্তু সেটাও পারছি না। কারণ আমি বড় হয়ে গেছি। একটা মেয়ে বড় হয়ে যাওয়ার পর মা'কে জড়িয়ে ধরে বলতে পারেনা। মা আমার খুব কষ্ট হচ্ছে। বাবা কে জড়িয়ে ধরে বলতে পারেনা বাবা আমার বুকটা ফেটে যাচ্ছে। খুব কান্না করতে ইচ্ছে করছে, এসব কথা বড় হওয়ার পর আর বলা যায় না।
সম্পর্ক সেটা নয় যেটাকে জামা কাপড়ের মত গুছিয়ে আলমারিতে রাখা হয়। সম্পর্ক সেটা যেটার মধ্যে হাজারো সমস্যা থাকে যেমন জামা কাপড়ের হাজার রকমের ময়লা আবর্জনা পড়ে। তারপরেও আমরা সেটাকে পরিষ্কার করে নিজেদের পরিধানযোগ্য করে তুলি। ঠিক সম্পর্ক সেটা যেটার মধ্যে ঝগড়া মান অভিমান ভুল বোঝাবুঝি থাকবে। তার পরেও আমরা সঠিকভাবে সেটাকে নিজেদের মধ্যে রাখার চেষ্টা করব। সেটাকে ভালো রাখার জন্য প্রতিনিয়ত চেষ্টা করব। তাহলেই তো আমাদের সম্পর্ক টিকে থাকবে। আপনাকে যে সময় দেয়ার সে এমনিতেই দেবে, আর যে আপনার কাছ থেকে পালিয়ে বেড়ানোর চেষ্টা করবে। তার কাছে আপনি হাজারো অজুহাত পাবেন। আমার কাছে মনে হয় প্রিয় মানুষগুলোকে মুক্ত পাখির মতো ছেড়ে দেয়াটা উত্তম। যদি সে আপনার কাছে ফিরে আসে তাহলে সে আপনার, আর যদি সে আপনার কাছে ফিরে না আসে। তাহলে আপনার ভালোবাসা পাওয়ার যোগ্যতা তার ছিল না, আর কখনো হবেও না।
সকালের মুক্ত বাতাস উপভোগ করার জন্য বাহিরে গিয়ে দাঁড়িয়েছিলাম। প্রচন্ড বাতাস ঠান্ডার পরিমাণটা সকালবেলা একটু অনুভব করা যায়। এদিক ওদিক হাঁটাহাঁটি করছিলাম চারপাশে কোন মানুষের কোন শব্দ নেই, শুধুমাত্র পাখির ডাক। এই নিস্তব্ধ পরিবেশে হারিয়ে ফেলা মানুষগুলোর কথা চিন্তা করছিলাম, আর মনে মনে কান্না করছিলাম। কি ছিল আর কি হয়ে গেল সবকিছুই তার লীলা খেলা। তিনি যা চান সেটাই হয়ে থাকে। আমরা হাজারো চেষ্টা করে সেটা পরিবর্তন করতে পারবো না। সৃষ্টিকর্তা আমাদের জন্য যা রেখেছেন সবটাই আমাদের মঙ্গলের জন্য। এইসব কথা ভেবে ঘরে চলে আসলাম, তারপর ঘরের যাবতীয় কাজ সম্পন্ন করে নিয়েছিলাম।
![]() |
---|
শ্বশুরমশাই রাতে সবকিছু নষ্ট করে ফেলেছে, তাই জামা কাপড় গুলো নিয়ে আমি সোজা চলে গেলাম কল পাড়ে। এরপর হুইল পাউডারের গুড়া দিয়ে জামা কাপড় গুলো ভিজিয়ে রাখলাম। তারপরে ঘরে আরো কিছু কাজ ছিল সেগুলো সম্পন্ন করে হাঁস মুরগির বাচ্চা গুলোকে ঘর থেকে বের করে দিয়েছিলাম। তারপর ওদেরকে খাবার দিয়ে সবার জন্য চানাচুর মুড়ি মাখা তৈরি করেছিলাম। প্রতিদিন সকালে ভাত খেতে কারোর ভালো লাগেনা, কিন্তু আমি মাঝে মাঝে চিন্তা করি। প্রতিদিন আমি এই সংসারের কাজগুলো কিভাবে করি? যাই হোক আমি ওদের বাড়ির বউ আমাকে করতেই হবে এটাই স্বাভাবিক।
![]() |
---|
এরপর দুপুরের জন্য রান্না বান্নার সবকিছু রেডি করে রেখে দিয়ে, আমি শ্বশুরের জামা কাপড় গুলো ধুয়ে পরিষ্কার করে ছাদে রোদে দিয়েছিলাম! তারপর এসে রান্নাবান্না শুরু করে দিয়েছিলাম। এর মাঝে ছোট ছেলেকে স্কুলে পাঠিয়ে দিলাম! ওর শরীরটা তেমন ভালো নেই জ্বর দেখলাম কমে গিয়েছে, এখন আবার শরীরের মধ্যে সামান্য পরিমাণে জ্বর দেখতে পাচ্ছি! এটা ভেবেই আমার অনেক বেশি ভয় লাগে ওরা অসুস্থ হয়ে গেলে আমার আরো বেশি খারাপ লাগবে। এমনিতেই শশুরের অসুস্থতা নিয়ে অনেক বেশি পেরেশানির মধ্যে দিন কাটছে, আশা করি সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে।
![]() |
---|
এইসব কিছু চিন্তা করতে করতে রান্নাবান্নার কাজ সম্পন্ন করেছিলাম! তারপর সবকিছু গুছিয়ে ঘরে নিয়ে আসলাম। এরপরে গোসল করে নিয়েছিলাম যোহরের নামাজ আদায় করে, নামাজের বিছানায় বসে ছিলাম। দেখলাম ছোট ছেলে চলে এসেছে তারপর ওকে হাতমুখ ধুয়ে পরিষ্কার করে দুপুরের খাবার খাইয়ে দিলাম। আমি নিজেও দুপুরের খাবার খেয়ে নিয়েছিলাম। এরপরে কিছু পোস্টে কমেন্ট করেছিলাম, আসলে গত সপ্তাহে আমার কমেন্টের সংখ্যা অনেক কম ছিল। যার কারণে নিজের কাছে অনেক বেশি খারাপ লাগছে।
![]() |
---|
![]() |
---|
কমেন্ট করতে করতে কখন ঘুমিয়ে পড়েছিলাম নিজেও জানিনা। আসলে অনেক সকালে ঘুম থেকে ওঠার কারণে দুপুরে কখন ঘুমিয়ে পড়ি নিজেও বুঝতে পারি না। তারপর উঠে পড়লাম আসরের নামাজের আযানের শব্দে উঠে, নামাজ পড়ে ঘরে যাবতীয় কাজ সম্পন্ন করে, প্রথম অবস্থায় হাঁস মুরগি গুলোকে খাবার দিয়েছিলাম। তারপর তাদেরকে তাদের ঘরে রেখে শ্বশুরের জামা কাপড় গুলো ছাদের উপর থেকে নিয়ে আসলাম। এরপরে বাজারে গিয়েছিলাম হাঁস মুরগির ঔষধ নিয়ে আসার জন্য। সে সাথে আমার ঘরের কিছু বাজার লাগবে সেগুলো নিয়ে আসলাম। এরপরে মাগরিবের নামাজের অজু করে ঘরে চলে আসলাম।
![]() |
---|
এরপরে ছেলেদের কে নিয়ে পড়তে বসলাম, ওদের পড়াশোনা শেষ হয়ে গেলে আমি প্রথমত এশার নামাজ আদায় করে নিয়েছিলাম। তারপর ছেলেদেরকে রাতের খাবার খাইয়ে দিলাম, আমার প্রচন্ড মাথা ব্যথা করছে তাই শুধুমাত্র ঔষধ খেয়ে শুয়ে পড়েছিলাম। ঘুম আসছিল না তাই আরো কিছু পোস্টে কমেন্ট করলাম। এরপরেও ঘুম আসছিল না, তারপর ইউটিউবে একটা নাটক দেখতে শুরু করলাম। নাটকের কয়েক মিনিট দেখার পর কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম নিজেও জানিনা। এভাবেই আমার জীবন থেকে আরও একটা দিন আমিও অতিবাহিত করলাম। সবার সুস্থতা কামনা করে আজকের মত এখানেই বিদায় নিচ্ছি। আল্লাহ হাফেজ।
আপনার মত এমন পরিস্থিতিতে বেঁচে থাকা সত্যিই একটি বড় চ্যালেঞ্জ। কিন্তু আপনি যেভাবে সবকিছু সামলাচ্ছেন তা অসাধারণ। আপনার চিন্তা-ভাবনা, অনুভূতি এবং দায়িত্ববোধ সত্যিই প্রশংসনীয় আপু। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ, আপনি সারাদিনের কার্যক্রম গুলো অনেক সুন্দর ভাবে আমাদের সাথে উপস্থাপন করেছেন। ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন, আল্লাহ হাফেজ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
সব রকম পরিস্থিতিতে বেঁচে থাকার চেষ্টা করতে হয় কারণ আমরা মানুষ আমাদের জীবনে সমস্যা আসবে সেগুলো সমাধান করার সাহসিকতা যদি আপনার মধ্যে না থাকে তাহলে আপনি জীবনের কাছে হেরে যেতে হবে তবে আমি জীবনের কাছে কখনোই হেরে যাবো না আমি শেষ পর্যন্ত লড়াই করব যতদিন আমি এই পৃথিবীতে থাকবো কারণ আমি বিশ্বাস করি যুদ্ধ করে জিতে যাওয়ার মধ্যে অবশ্যই আনন্দ আছে আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ চমৎকার মন্তব্য করার জন্য ভালো থাকবেন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনার দিনলিপি পড়ে অসাধারণ লেগেছে। আপনার কথাগুলো একদম সত্যি ।আমরা মেয়েরা বাবার বাড়ি এক পরিবেশে বড় হয়ে উঠি এবং শ্বশুরবাড়িতে এসে অন্য পরিবেশে নিজেকে মানিয়ে নেয়ার চেষ্টা করি।
সকলের চাহিদা গুলো পূরণ করতে করতে নিজের চাহিদা গুলো হারিয়ে যায় ।তারপরও এই ভেবে ভালো লাগে পরিবারের মানুষগুলো সুখে থাকুক ও ভালো থাকুক। কিন্তু সেই পরিবারের মানুষগুলো যদি তখন তাকে অবহেলা করে এর থেকে কষ্টের আর কিছুই থাকে না ।
মাঝে মাঝে মনে হয় ,শুধুমাত্র শৈশব যদি থাকতো এবং বড় হয়ে এই দায়িত্বগুলো না নিতে হতো তাহলে মনে হয় জীবনটা খুব সুন্দর হতো।শৈশবে আমরা সবকিছু প্রকাশ করতে পারি তবে বড় হয়ে যখন দায়িত্ব নিতে শুরু করি তখন সবাইকে ভালো রাখার চেষ্টা করার জন্য নিজেকে ভালো রাখাটা ভুলে যেতে হয়।
এমনকি কোন কষ্টে মন খুলে কাঁদতে পারিনা । বিশেষ করে মা হওয়ার পরে যদি কখনো মন খারাপ হয় তখন আর কোন মা হাউমাউ করে কাঁদতে পারেনা। লোকে কি বলবে এই ভেবে অনেক পরিবারের মেয়েরাই চুপ করে থাকে ।তার মনের কষ্টটা কখনোই কাউকে শেয়ার করে না ।
যাইহোক আপনার ছবিগুলো অসাধারণ ছিল। মাঝে মাঝে ভাবি আপনি এত শক্তি কোথা থেকে পান ।সংসারের কাজের সাথে সাথে এই প্লাটফর্মে নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছেন। সৃষ্টিকর্তা আপনাকে আর শক্তি আরো ধৈর্য দিবেন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
মেয়েদের জীবনটা একটু অন্যরকম তারা চাইলেও সবকিছু মন খুলে সবার সাথে শেয়ার করতে পারে না কারণ তারা শেয়ার করলে অনেকে তাদেরকে নিয়ে হাসাহাসি করে বাজে কথা বলে মেয়েরা নিজের বাবার বাড়িতে এক রকম শ্বশুরবাড়িতে আরেকরকম ভাবেই বেড়ে ওঠে।
আমরা চাইলেও নিজের মনের কষ্ট কারো কাছে প্রকাশ করে হাউমাউ করে কান্না করতে পারি না কারণ তখন মনে হয় আমরা বড় হয়ে গেছি তার পরেও চেষ্টা করি জীবনের প্রতিটা মুহূর্তকে সুন্দরভাবে কাটিয়ে ভালো থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ চমৎকার মন্তব্য করার জন্য ভালো থাকবেন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit