আজকে আমি সত্যিই অনেক বেশি ক্লান্ত। চারপাশের পরিস্থিতি সামলে নিতে নিতে এখন আর কিছুই ভালো লাগেনা। এখন মনে হয় জীবন থেকে যদি ছুটি মিলতো তাহলে হয়তোবা বেশ ভালই লাগতো। কেননা পরিস্থিতি দিন দিন এত পরিমানে খারাপ হচ্ছে এখন আর এই পৃথিবী ভালো লাগে না। তার পরেও সবকিছু সামলে নেয়ার চেষ্টা করছি। জানিনা সবকিছু আগের মতো ঠিক হবে কিনা কিন্তু তারপরেও চেষ্টার কোনো কমতি নেই।
গত কয়েকদিন থেকেই বাড়িতে কল করে কোন ভালো খবর পাচ্ছি না। আজকে শশুর এর অসুস্থতা কালকে শাশুড়ি অসুস্থ, এই কারনেই প্রতিনিয়ত অনেক বেশি অশান্তির মধ্যে ভুগতে হচ্ছে। মাঝে মাঝে নিজেকে খুব অসহায় মনে হয় আর মাঝে মাঝে মনে হয় আমি যদি তাদের কাছে থাকতাম হয়তো বা তারা অনেক ভালো থাকতো।
কিন্তু দুই দিক আমাকে সামলাতে হয় সবকিছু সামলে নিয়ে তো আর একটা মানুষ সঠিকভাবে নিজেকে ঠিক রাখতে পারে না। তার পরেও ঠিক রাখার চেষ্টা কিন্তু কোন দিক সামলাবো এটা নিয়ে মাঝে মাঝে দন্ধের মধ্যে পড়তে হয়। মাঝে মাঝে মনে হয় যে কোন একটা দিক বেছে নেই। কেননা সবকিছু নিয়ে যদি আমি চলতে শুরু করি। তাহলে একটা সময় সবকিছুর মাঝে আমি নিজে হারিয়ে যাবো।
গত কালকের সকালটা একটু তড়িঘড়ি করেই শুরু করেছিলাম। কেননা আমাকে যে করেই হোক বাড়িতে পৌঁছাতে হবে। শ্বশুরের অবস্থা তেমন একটা ভালো না কখন কি হয়ে যায় কিছুই বুঝতে পারছি না। তবে বারবার আমি ওনাকে দেখতে চাওয়ার পরেও আমাকে দেখানো হয়নি। তাই আতঙ্ক এর মধ্যে ছিলাম, সকালবেলা ঘুম থেকে উঠেই তাড়াতাড়ি করে সমস্ত কাজ সম্পন্ন করে নিয়েছিলাম।
তারপর ছেলের বাবাকে ঘুম থেকে ডেকে তুললাম। কেননা আমাকে বাড়িতে পৌঁছাতে হবে এরপর উনি তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠে সকালের নাস্তা করে নিয়েছিলেন। আমি শুধুমাত্র ছেলেদেরকে নাস্তা করিয়েছিলাম কেননা আমি কোন কিছুই খাব না, বাসে উঠলে আমার বমি শুরু হয়ে যাবে। যার কারণে আরো বেশি সমস্যা হবে শুধুমাত্র ঔষধ খেয়ে রওনা করলাম।
বাস স্ট্যান্ডে পৌঁছাতে আমাদের দুই ঘন্টা সময় লেগে গেল। এত পরিমাণে জ্যাম, তারপরে সাড়ে নয়টার সময় বাসে উঠলাম উনি আমাদেরকে বাসে তুলে দিয়ে আবার বাসায় চলে গেলেন। শুরু হল পথ চলা কিন্তু গাড়ি কিছুক্ষণ পরপর থেমে যাচ্ছে, কেননা অতিরিক্ত জ্যাম থাকার কারণে রাস্তায় গাড়ি চলাচল করা একেবারেই অসম্ভব হয়ে পড়েছে।
কোন কিছুই করার ছিল না, সবকিছুই সামলে নিতে হবে কুমিল্লায় আসার পর আমার বমি শুরু হলো। আসলে খুব চিন্তায় পড়ে গেলাম আমি যদি অসুস্থ হয়ে পড়ি আমার ছেলেদেরকে কে দেখবে। তারপর হোটেলে নেমে হাতমুখ ধুয়ে শুধু মাত্র ওদের জন্য অল্প পরিমাণে খাবার কিনে নিয়েছিলাম। এরপর বাসে বসে ওদেরকে খাবার খাইয়ে দিলাম, কিন্তু আমার অবস্থা আরো বেশি খারাপ হতে লাগলো।
আমি চিন্তা করেছিলাম কিছু না খেলে হয়তো বা বমি হবে না, কিন্তু এত পরিমাণে বমি হওয়ার কারণটাও বুঝতে পারলাম না। সারাটা পথ আমি বমি করতে করতে বাড়ি আসলাম। বিকেল চারটার সময় বাস এসে আমাদের সদর থামলো। এরপর আবার মেজো ননদ আসলে আমাদের কে নিয়ে যাওয়ার জন্য। ওরা সহ সিএনজি করে বাসায় ফিরলাম। বাসায় এসে দেখলাম সত্যি শশুর এর অবস্থা তেমন ভালো নেই।
তারপর হাত মুখ ধুয়ে নামাজ পড়ে নিয়েছিলাম, আমার শরীর অনেক বেশি দুর্বল হয়ে পড়েছে কোনমতে ছেলেদেরকে কয়েকটা ভাত খাইয়ে দিয়েছিলাম। তারপর আমি শুয়ে পড়লাম কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছে নিজেও জানিনা। ঘুম ভাঙলো সকাল ছয়টায়, জার্নি করার কারণে শরীর অনেক বেশি দুর্বল হয়ে গেছে, এভাবেই আমি গতকাল টা কাটিয়েছিলাম।
সবকিছু আল্লাহর হাতে ইনশাআল্লাহ সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে।একটু ধৈর্য ধরে থাকেন, মানুষের জীবনে এরকম পরিস্থিতি আসে যে মানুষ, দ্বিধা-দন্ডের মধ্যে পড়ে যায় কোনটা থেকে কোনটা করবে। শুনে খুব খারাপ লাগলো আপনার শ্বশুর এর অবস্থা অনেক খারাপ। তাঁর জন্য দোয়া করি আল্লাহ যেন তাকে সুস্থতা দান করেন। আমাদের সাথে পোস্টটি শিয়ার করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে। ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
সত্যি বলতে আমাদের সকলের জীবনেই এমন কঠিন পরিস্থিতি মাঝে মধ্যেই দেখা দেয়, যখন বড্ড বেশি দিশেহারা লাগে। সম্পর্ক গুলো এমনভাবে এলোমেলো হয়ে যায় যে, সেগুলোকে সঠিক করার সকল চেষ্টাই যেন ব্যর্থ মনে হয়।
আসলে সৃষ্টিকর্তাই বোধ হয় এইরকম পরিস্থিতি আমাদের জীবনে তৈরি করেন, যাতে আমরা নিজেরা লড়াই করে বাঁচতে শিখি। সত্যি বলতে সংসারে থাকতে গেলে শ্বশুর-শাশুড়ির প্রতি আমাদের যেমন দায়িত্ব থাকে, তেমনি দায়িত্ব থাকে স্বামী ও সন্তানের প্রতিও।
তবে এই সমস্ত দায়িত্ব গুলো কখনোই একই রকম ভাবে পালন করা সম্ভব হয় না। কখনো কোনোটা ভালোভাবে সম্ভব হয়, আবার কখনো কোনোটায় একটু কমতি পড়ে। তবে হ্যাঁ সমস্ত পরিস্থিতি মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা আমরা সর্বদাই করে থাকি, ঠিক যেমন ভাবে আপনিও করছেন।
আপনার শ্বশুর মশাইয়ের কথা শুনে খারাপ লাগলো। এর পূর্বেও তিনি বেশ কয়েকবার অসুস্থ হয়েছিলেন। আর বাড়িতে কেউ অসুস্থ হলে মানসিকতা কেমন হতে পারে, গত কয়েক বছর ধরে তা আমি খুব কাছ থেকে উপলব্ধি করছি। আশা করি আপনার শ্বশুর মশাই দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবেন এবং আপনিও মানসিক দিক থেকে শান্তি পাবেন। ধন্যবাদ আপনাকে সারা দিনের কার্যাবলী শেয়ার করার জন্য। ভালো থাকবেন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আসলে সবকিছু সামলে নেয়ার চেষ্টা সর্বদাই থাকে, কিন্তু সবকিছু যখন এলোমেলো হয়ে যায় তখন সেগুলোকে গুছিয়ে নিতে অনেকটা সময় লাগে। আর বর্তমান সময়ে শ্বশুরমশাই এর অবস্থা মোটেও ভালো নেই, আগের চাইতে আরো বেশি খারাপ হয়ে গেছে। জানিনা ভবিষ্যতে কি হতে পারে। তবে চেষ্টায় আছি তিনি যেন সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে যায়। দোয়া করবেন ধন্যবাদ চমৎকার মন্তব্য করার জন্য ভালো থাকবেন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit