একটি সামাজিক অনুষ্ঠানে

in hive-120823 •  15 days ago 
IMG_20250219_223722.jpg


হ্যালো বন্ধুরা

যেকোনো সমাজিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করলে ভালো লাগে এটাই স্বাভাবিক। আমি প্রায় বেশ কিছুদিন যাবত ই পরপর কয়েকটি সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছি। তবে ভালো লাগার পাশাপাশি অতিরিক্ত খরচ হয়েছে অনেক। কিছুদিন আগে ছিল বোনের ছেলের বিয়ের অনুষ্ঠান ।বড় বোনের ছেলের বিয়ে ছিল সেখানে ও সপরিবারে অংশগ্রহণ করেছি। বিয়েকে কেন্দ্র করে অনেক কেনাকাটা করতে হয়েছে। গায়ে হলুদ , তারপর বিয়ে প্রতিটা অনুষ্ঠানের জন্য আলাদা আলাদা পোশাক ছিল ।পোশাকের সাথে ম্যাচিং করা গহনা তাই মোটামুটি একটা বড় বাজেট রাখতে হয়েছে আমাকে।

IMG20250215143821.jpg

আমি আমার পোস্টে একটি সনাতন বিয়ের অনুষ্ঠানের কিছু খণ্ড চিত্র তুলে ধরার চেষ্টা করেছি আপনাদের মাঝে। ঐ বিয়ের বৌভাতে আমাদের দাওয়াত ছিল আমাদের অডিটরিয়াম এ। যেহেতু আমাদের কলনীর ভেতরে অডিটরিয়াম তাই বেশিরভাগ অতিথি ই ছিল পরিচিত। তাই অনেক পরিচিত মানুষের সাথে দেখা হয়েছে। কুলন বিনিময় করার সুযোগ হয়েছে ‌।

IMG20250215144208.jpg

তবে অনুষ্ঠান টা আমাদের মতই হয়েছে তেমন কোন ভিন্নতা ছিল না। খাবারের মেন্যূ গুলো আমাদের মতই ছিল ,তবে একটা স্পেশাল বিষয় ছিল সেটা হচ্ছে চাটনি আর বেগুনের বেগুনি ‌। আমাদের বিয়ের অনুষ্ঠানগুলোতে সাধারণত এই চাটনি আর বেগুনি দেওয়া হয় না।

IMG20250215144208.jpg
IMG20250215144006.jpg
IMG20250215125326.jpg

যেহেতু দুপুরে ছিল বৌভাতে দাওয়াত তাই সকালে নাস্তার করে সাড়ি ম্যাচিং করে রেখেছি। মিষ্টি কালারের একটি কাতান শাড়ি পড়েছিলাম ‌। ম্যাচিং করে গহনা পরেছি। তবে বেশি গর্জিয়াস কোন গহনা পড়েনি ।মোটামুটি একটি পাথরের সেট পরেছিলাম। সাথে ছিল পালসের একটি সেট।

খাওয়া-দাওয়ার পর্ব শেষ করে পরিচিত ভাবিদের সাথে বেশ খানিকক্ষণ গল্প করলাম। কয়েক টি ছবি ও তুললাম। তবে ছবি তোলার চেয়ে বেশি সময় কাটিয়েছি পরিচিত ভাবিদের সাথে গল্প গুজব করে। আমার ছেলে মেয়ে ও সাহেব খাওয়া দাওয়া করে বাসায় চলে এসেছিল ।আমি একাই কমিউনিটি সেন্টারে যে ভাবীরা ছিল তাদের সাথে গল্প করছিলাম।তাদের সাথে গল্প করতে অনেক ভালো লাগছিল।

যেকোনো সমাজিক অনুষ্ঠানে শুধু খাওয়া-দাওয়ার জন্য তো আর মানুষ যায় না ।কথা বললে এমনিতেই ভালো লাগে ‌।সব সময় সবার বাসায় যাওয়া সম্ভব হয় না ।ঐ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে সবার সম্পর্কে আমরা জানতে পেরেছি। অনেক ঘটনা ঘটে গেছে যা একে অপরকে বলার সুযোগ হয়নি ।এই বিয়েকে কেন্দ্র করে সব ভাবিরা একসাথে হয়েছে। এতে করে একে অপরের সাথে তথ্য বিনিময় করার একটি সুযোগ রয়েছে বলে আমার মনে হয়েছে।

আর সামাজিকরণ খুব একটা হয় না বললেই চলে। কমিউনিটি সেন্টারগুলো তে বিয়ে হয়। যে যার মত খাওয়া দাওয়া করে চলে আসে। আর মনে হয় শুধু খাওয়ার জন্য অচেনা জায়গায় কোনরকম দু চারটে খেয়ে বাসায় চলে আসতে পারলেই হয় গা ছাড়া গা একটি ভাব আমাদের ছেলে মেয়েদের মধ্যে কাজ করে।

আগে যৌথ ফ্যামিলি ছিল । তাই ছেলে মেয়েরা ছোটবেলা থেকে সমাজকর্মটা শিখে এসেছে ‌। আমাদের ছেলে মেয়েদের বলেও শিখাতে পারিনা গল্প নেই স্বভাবের ছেলে মেয়ে কমিউনিটি সেন্টারের যে কোন রকম খাওয়া-দাওয়া শেষ করে বাসায় চলে এসেছে তাদের কাছে মনে হচ্ছে, অজানা অচেনা জায়গা এখান থেকে কোনরকম বাসায় চলে আসতে পারলেই বাঁচি এমন একটা অবস্থা।

বাসার চাবি যেহেতু আমার কাছে ছিল তাই আমার কাছ থেকে চাবি নিয়ে ওরা বাসায় চলে এসেছে। আমিও দেখলাম তারা ওখানে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছে না। অনেকটা বিরক্ত বোধ করছিল। তাই উপায়ন্ত না দেখে চাবির রিং দিয়ে দিলাম। যদি ও আমি একাই ভাবিদের সাথে বেশ খানিক সময় ব্যয় করলাম।

আসলে স্বভাব পরিবর্তন করার বিষয় নয় ।আমরা ছোটবেলা থেকে যেভাবে সামাজিকিকি করন শিখেছি ওইটাকে ই মাইন্ড সেট করে চলার চেষ্টা করি, কিন্তু অনেকেই আমাদের ছেলেমেয়েদের সাথে পরিচিত হতে চেয়েছে। কিন্তু ওরা তো নারাজ ওরা তো ওখানে থাকতে চাচ্ছে না ।আমি তো ওদের সাথে এসব বিষয়গুলো শেয়ার করতে পারছি না যে, আমার ছেলে মেয়েরা এসব পরিবেশে দীর্ঘক্ষণ থাকতে পছন্দ করেনা।

আজকালের ছেলে মেয়েদের মধ্যে কেমন যেন একটা ভাব কাজ করে ,তারা নিজেরা একা থাকতে পছন্দ করে লোকালয়ে হয়ে যেতে তারা পছন্দ করে না। আমার কাছে কেন যেন মনে হয় এটা একটা অভিশাপ। ছেলে মেয়েরা সারাক্ষণ যদি একা একা থাকে তাহলে তাদের মধ্যে একটা হীনমন্যতা সৃষ্টি হয়। আর এই হীনমন্যতা একটি খারাপ গুণ যা নিজেকে অন্যের কাছ থেকে দূরে রাখতে অনেক ভূমিকা পালন করে ‌।

আমি নিজেই আমাদের ছেলে মেয়েদের আচরণে সন্তুষ্ট ন ই‌। আমি চাই ওরা সবার সাথে মিশবে মন খুলে কথা বলবে ।কিন্তু আমার মতো করে হচ্ছে না। এটা আসলে পরিবেশ পরিস্থিতির ব্যাপার। তারা পরিবেশ পরিস্থিতির শিকার। আমি দোয়া করি তারা যেন এই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসে। আমি আমার মনের ভাবনা গুলো আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম হয়তোবা আমার ভাবনা গুলো আপনাদের অনেকের ভাবনার সাথে মিলে যাবে। আজ তাহলে এখানেই বিদায় নিচ্ছি আল্লাহ হাফেজ ‌।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  
Loading...

আরে ভাই দাওয়াত খাবে না অথচ খরচ হবে না এটা তো পাবে না এটা কখনোই মানা যাবে না আপনি প্রচুর পরিমাণে অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতেও পারবেন তার জন্য আপনাকে প্রচুর খরচা করতে হবে আপনার বোনের ছেলের বিয়ে তারপরে সনাতন ধর্মের বিয়ের সব কিছু মিলিয়ে অনেক সুন্দর কিছু মুহূর্ত আপনি পার করছেন ধন্যবাদ সামাজিক অনুষ্ঠানে আবারো অংশগ্রহণ করার মুহূর্তগুলো আমাদের সাথে এত সুন্দর ভাবে তুলে ধরার জন্য ভালো থাকবেন।।