পাহাড়িদের ঐতিহ্যবাহী একটি খাবার

in hive-120823 •  last month  (edited)
IMG_20250201_200335.jpg


হ্যালো বন্ধুরা

কিছুদিন আগে যে রাঙ্গামাটি গিয়েছিলাম সেখানে যেয়ে একটি খাবার খেয়েছি যা আদিবাসীদের একটি ঐতিহ্যবাহী খাবার। এটির নাম হচ্ছে ব্যাম্বো চিকেন। তবে আমি ইউটিউবে যেভাবে দেখেছি ব্যাম্বু চিকেন রান্না করতে, ঐ ভাবে রান্না করেনি তারা।

IMG20250103133721.jpg
IMG20250103133520.jpg
IMG20250103133638.jpg
IMG20250103133727.jpg

এটা কি সময় স্বল্পতার জন্য নাকি ,ঐ ভাবে ও রান্না করা যায় ,তা আমার জানা নেই। আমার কেন যেন মনে হয় হঠাৎ ,করে অনেক লোক একসাথে অর্ডার করেছি ,তাছাড়া পাহাড়ি এলাকা ইচ্ছে করলেই হুট করে সবকিছু পাওয়া যায় না। সেজন্যই হয় তো বা আমরা যেভাবে সাধারণত রান্না করি তারা সেই ভাবে ই রান্না করেছে ,জাস্ট পরিবেশন করেছে ব্যাম্বোর মধ্যে। কোনরকম লামছাম দিয়ে বুঝিয়ে দেওয়ার মত।

যাইহোক বন্ধুরা,আমরা প্রায় ৭:৩০ টার দিকে বের হয়ে গিয়েছিলাম বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান দেখে, ওই পাহাড়ে যেয়ে খাবার অর্ডার করতে করতে প্রায় দুইটা বেজে গিয়েছিল। তাই হয়তো উনারা এত অল্প সময়ের মধ্যে ৫০/ ৬০ জন মানুষের খাবার এরেঞ্জ করাটা এটুকু কঠিন ব্যাপার হয়ে গিয়েছিল তাদের জন্য।

তার জন্যই মনে হয় স্বাভাবিক পদ্ধতিতে রান্না করে শুধু সৌন্দর্যের জন্য পরিবেশন করেছে বাঁশের মধ্যে। যাকে উনারা ব্যাম্বো চিকন বলে চালিয়ে দিয়েছে।

তবে আমাদের কাছে খারাপ লাগেনি ।এর মূল কারণ হলো প্রচন্ড খিদে ছিল পেটে। সকাল সাতটা থেকে এই পাহাড় কই পাহাড়ে ঘুরে বেড়িয়েছি ইঞ্জিল চালিত নৌকা দিয়ে, তাই ইচ্ছে করলেও আমরা খেতে পারিনি। তবে আমাদের সাথে হালকা পাতলা কিছু খাবার ছিল সেগুলোই খেয়ে নিয়েছি।

আমাদের ভ্রমণটা যেহেতু রাঙ্গামাটি তাই রাঙ্গামাটি সম্পর্কে একটি ধারণা আমাদের আগে থেকেই ছিল। আমরা সবাই হালকা খাবার এবং খাবার পানীয় সাথে নিয়ে গিয়েছিলাম। যদিও প্রতিটা পাহাড়েই হালকা পাতলা খাবারের ব্যবস্থা ছিল।

তবে ,আমরা যেহেতু বাসা থেকে নিয়ে গিয়েছি তাই ওদের কাছ থেকে খাবার খুব একটা কিনে খাইনি। কিন্তু দুপুর বেলা তে তো ভারি খাবার খেতে হবেই। দুপুরবেলাতে তো আর হালকা-পাতলা খাবার খেলে হবে না তাই না ‌।

তাই ওখানে খাবারের অর্ডার দিয়ে ঝরনা দেখতে গিয়েছিলাম ‌। ওখানেও বিধিবাম, শীতকাল বলে ঝরনা দিয়ে কোন পানিই ঝর ছিল না। তাই খুব একটা ভালো লাগেনি ‌। ঝর্না দিয়ে যদি প্রবল স্রোতে জল ই না পরবে, তাহলে কি হয় ?আর একে কি ঝর্না বলা যায় ,বলুন তো বন্ধুরা।

যাইহোক, চিকেন ব্যাম্বোআমাদের মন মত হয়নি এটা যেমন ঠিক তবে, চাপিলা মাছের ভর্তাটা ছিল সেই। খুব সুস্বাদু ছিল আমার কাছে তো অসাধারণ লেগেছে। আমার সাথে যে বন্ধুরা ছিল তারাও খুব পছন্দ করেছে এই মাছের ভর্তাটা।

রাঙ্গামাটি যেয়ে একটি নতুন জিনিস খেলাম।অবশ্য আমি আগেও খেয়েছি কিন্তু গাছ থেকে পেড়ে প্রথম খেয়েছি তাহলো মিষ্টি তেতুল। তবে এর দাম কিন্তু মোটেও কম নয় ।ওখানেই ৫০০ টাকা কেজি বিক্রি করে। আর এটি যদি আমাদের ঢাকাতে এনে বিক্রি করা হয় ,স্বাভাবিকভাবে এক দেড়শ টাকা বেশি বেড়ে যাবে এর দাম।

আমি হাফ কেজি কিনেছিলাম আড়াইশো টাকা দিয়ে। পাহাড় ঘুরে এসে যখন ইঞ্জিল চালিত নৌকায় উঠলাম, নৌকায় বসে শেষ করে ফেলছি তেতুল। হায় আল্লাহ! বাসায় তো আনলাম ই না ,তাছাড়া ছবিও তুলিনি আপনাদের সাথে শেয়ার করব কিভাবে বলুন তো।

মোটেও খেয়াল ছিল না, মনের অজান্তেই খেয়ে ফেলেছি ।যেহেতু আমরা গ্রুপ গিয়েছি একে অপরের সাথে গল্প করতে করতে এক নিমিষেই শেষ হয়ে গিয়েছিল ,সেই মিষ্টি তেতুল ।তবে বেজায় সুস্বাদু। আর সবচেয়ে বড় কথা হলো ,কোন ফরমালিন ছিল না ,রাসায়নিক দ্রব্য ছিল না ,একেবারেই অর্গানিক।

প্রকৃতি যে এত সুন্দর তার সান্নিধ্যে না গেলে তাকে উপভোগ করা যায় না। আমার কাছে সব সময় ঘোরাঘুরি করতে ভালো লাগে। তাই পারো তো পক্ষে এসব জায়গায় যাওয়া মিস করি না। এর কারণ হলো একা একা সব জায়গায় যাওয়া সম্ভব নয়।

দলবদ্ধভাবে গেলে আনন্দটা একটু বেশি হয় ।তারপর নিরাপত্তার ব্যাপারটা তো রয়েছে ই‌ কি বলবো? এত সুন্দর এত মনোরম! চোখ জুড়িয়ে যায় মনে হয় যে, নিজ হাতে তুলি দিয়ে সাজিয়ে রেখেছে। পাহাড়ের মাটি গুলো দেখে আমি দূর থেকে মনে করেছিলাম যে পাথর কিন্তু কাছে গিয়ে দেখি নরম মাটি।

তবে একটু ঝুঁকিও রয়েছে অতিবৃষ্টি হলেই তো মাটিগুলো ধসে পড়ে পাহাড়ের আর হাজার হাজার নিরীহ মানুষ মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। আমার কাছে মনে হয় ,পাহাড়ি জীবনটা অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং। তারা প্রতিনিয়তই চ্যালেঞ্জ নিয়ে বেঁচে থাকে ‌। তবে তাদের কাছ থেকে শিখার রয়েছে অনেক কিছু ।তারা অনেক পরিশ্রমী। কাজকে কাজ ই মনে করে। ইগো নিয়ে বসে থাকে না।

তাই , নারী পুরুষ সমান তালে স্বাবলম্বী। আমি খুব ইনজয় করেছি বিষয়টাকে। আবার ইচ্ছে করছে আবার ঘুরে আসি ঐ ভূস্বর্গ থেকে। ভ্রমণ মানুষকে আনন্দ দেয়, এটা বলার অপেক্ষা রাখে না। খুব ভালো কেটেছিল সবার সাথে, যতক্ষণ ছিলাম।

তবে অরজিনিয়াল ব্যাম্বু চিকেন কোন না কোন ভাবে আমি খাবই। শুনেছি সাজেক গেলে নাকি খাওয়া যায়। দোয়া করবেন খেয়ে অরিজিনাল স্বাদ যাতে আপনাদের সাথে শেয়ার করতে পারি ।

আজ এখানে ই রাখছি, আল্লাহ হাফেজ।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

খুবই ভালো লাগলো আপনার ঘুরতে যাওয়া গল্প পড়ে। তবে ঠিকই আপনার তোলা ছবি দেখে আমার কাছে মনে হয়েছে এটা ব্যায়াম্বো চিকেন নয় কারণ আমি এর আগে একবার খেয়েছিলাম খুলনাতে গিয়ে,

আর এটা খেতে অসম্ভব মজাদার আমার কাছে তো ভালই লাগে, যদিও মসলার পরিমাণটা খানিকটা কম থাকে। তবে এর সাথে আরেকটু অবাক হলাম মিষ্টি তেতুলের গল্প পড়ে। তবে সব মিলিয়ে গল্পটা পড়তে আমার ভীষণ ভালো লেগেছে।

  • আমি ইউটিউবে দেখেছি রান্না করে ওরা সেভাবে রান্না করে নিয়ে আসলে। তবে খেতে একেবারে খারাপ হয়নি ।তাছাড়া আমাদের খিদেও ছিল প্রচুর তাই মোটামুটি খেয়েছি ।তবে যেভাবে ভেবেছিলাম সেরকম হয়নি আর কি।
DescriptionInformation
Verified UserYes
Burnsteem 25No
#steemexlusiveYes
Plagiarism FreeYes
Bot FreeYes
AI/Gpt FreeYes
350+ WordsYes
Club5050Yes
Community beneficiaryYes
Voting CSI52.9
Quality8/10
Feedback / Observation
  • আপনি যে জায়গায় ঘুরতে গিয়েছিলেন সেখানকার এক ঐতিহ্যবাহী খাবার নিয়ে আপনি আলোচনা করেছেন। খাবারটির নাম আমি এর আগেও শুনেছি যদিও । আমি আপনার মতন youtube এ এই খাওয়া সম্পর্কে জেনেছি। স্বাভাবিকভাবে অত অল্প সময়ের মধ্যে প্রায় 50 60 জনের রান্না করা আসলেই একটা অসুবিধার ব্যাপার। এজন্যই হয়তো কথাতে আছে খিদে পেলে বাঘে ধান খায়। খিদে লাগলে সব খাবারই অমৃত মনে হয়।। খাবার অর্ডার দিয়ে আপনারা ভালই কাজ করেছেন। যেহেতু অনেক সময় লাগতো তাই আপনারা ওই সুযোগে ঝর্ণা দেখে এসেছেন। মিষ্টি তেতুল কেমন যে খেতে হবে তা আমি জানিনা। তবে শুনেই লোভ লাগছে। সব মিলিয়ে আপনারা এত আনন্দ করেছেন এটাই সবথেকে বড় ব্যাপার। আমাদের সাথে সমস্ত কিছু শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
  • We would like to appreciate your presence and activities towards the community. Our community also likes to inspire you to participate in the engagement by visiting others' posts and making insightful comments.

Regards
@isha.ish(Moderator)
Incredible India
Date:-2/1/2025

Discord Twitter Telegram Instagram

4IJbBnRVy9Iq78L7aK.gif

  • আর বলবেন না দিদি সেই স্বাদ। আমিও আগে কখনো খাইনি কিন্তু মিষ্টি এরকম তেতুল পাহাড়িয়া অঞ্চলে হয় আমি প্রথম দেখলাম। তবে দামও সেই লেভেলের অল্প একটু তেতুল দুই আড়াইশো টাকা বিক্রি করে।

আপনার রাঙামাটির অভিজ্ঞতা দারুণ লাগল! পাহাড়ি খাবারের স্বাদ, প্রকৃতির সৌন্দর্য, আর ভ্রমণের আনন্দ সব মিলিয়ে যেন এক প্রাণবন্ত গল্প। যদিও ব্যাম্বো চিকেন আপনার প্রত্যাশামতো হয়নি, চাপিলা মাছের ভর্তা আর মিষ্টি তেতুল নিশ্চয়ই সে ঘাটতি পূরণ করেছে! প্রকৃতির মাঝে সময় কাটানোর আনন্দ সত্যিই অন্যরকম। আশা করি, খুব শিগগিরই আপনাকে আসল ব্যাম্বো চিকেনের স্বাদ নেওয়ার অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে দেখব! ভালো থাকুন।

  • একদমই তাই ব্যাম্বু চিকেন মনপ্রত না হলেও বাকি খাবারগুলোতে পুষিয়ে দিয়েছে। আর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কথা কি বলবো কাছ থেকে দেখলে আরো অবাক হওয়ার মতো বিষয়।

আদিবাসীদের একটি ঐতিহ্যবাহী খাবার নিয়ে আজকের পোস্টটি লিখেছেন।। সাধারণত আমাদের খাবার ের আর আদিবাসীদের খাবার কিছুটা পরিবর্তন আছে ।।। যদিও অতিরিক্ত ক্ষুধা লাগলে যে কোন খাবারই ভালো লাগে।। আর হ্যাঁ এটা একদম সঠিক বলেছেন অতিরিক্ত বৃষ্টি হলে সেখানে একটু ঝুঁকিপূর্ণ থাকে।।

  • আমরা প্রায়সই পেপার পত্রিকায় দেখি পাহাড় ধসের কথা। আমি নিজেও যেয়ে দেখে আসছি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণভাবে তারা
    বসবাস করে।

এই খাবারের সাথে অনেকেই পরিচিত আসলে অনেকেই এ ধরনের খাবার রান্না করতে অনেক বেশি ইচ্ছুক তবে পাহাড়ি এলাকার মানুষ এই খাবারটাকে অনেক বেশি পছন্দ করে ঐতিহ্যবাহী এই খাবার আপনারা গ্রহণ করার জন্য সবাই মিলে ঘুরতে বের হয়েছিলেন সবাই মিলে খাবারের স্বাদ গ্রহণ করেছেন এটা দেখেই অনেক বেশি ভালো লাগলো অসংখ্য ধন্যবাদ ব্যাম্বো চিকেন খাওয়ার মুহূর্ত আমাদের সাথে উপস্থাপন করার জন্য ভালো থাকবেন।