হ্যালো বন্ধুরা
আজ একটি মজার বিষয় শেয়ার করার জন্যই আপনাদের মাঝে চলে আসলাম। আপনার আমার পূর্বের পোস্টগুলো পড়লে হয়তো বা জেনে থাকবেন যে আমার প্রতিষ্ঠানের প্রিন্সিপাল ম্যাম অবসরে গিয়েছেন। সেই জন্য উনি আমাদের সমস্ত কলিগদের কলেজ মিলনায়তনে মধ্যাহ্ন ভোজের আয়োজন করেছিলেন। সেখানে আমরা সবাই স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করি এবং আপাকে প্রীতি উপহার হিসেবে কিছু উপহার দেই সকলের পক্ষ থেকে।
তবে আজ যে বিষয়টি আপনাদের সাথে শেয়ার করেছি সেটি আপার কর্মজীবনের শেষ দিন ছিল না এর কিছুদিন আগেই হঠাৎ করে আপা মনে মনে ঠিক করে রেখেছিল আমাদের কয়েকজন কে ট্রিট দিবেন। শুধু ট্রিট ই দেননি সাথে উপহারও দিয়েছিলেন।
আমি একটু চটপটে স্বভাবের , তাই সবার সাথে খুব অল্প সময়ের মধ্যে মিশে যাই ।আমার এই স্বভাব বা আচরণটি কে অনেকে সাদরে গ্রহণ করে ,অনেকে আবার বিরক্ত হয়। কেউ আবার প্রকাশ করে না কিন্তু তার অঙ্গভঙ্গিতে বুঝতে পারি যে ,আমার এই আচরণটি তার কাছে ভালো লাগে না।
আসলে অভ্যাস মানুষের এমন একটি বিষয়, ইচ্ছে করলে চট করে চেঞ্জ করা যায় না বা পরিবর্তন করা যায় না ।আমারও তাই। আমার মধ্যে অনেক গুলো খারাপ স্বভাব রয়েছে উল্লেখযোগ্য হলো অট্টহাসি।
স্থান কাল পাত্র না বুঝে আমি অট্টহাসি ,যেটি আমার বয়সের সাথে মোটেও যায় না। আমি অনেক সময় খানিকটা বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়ে যাই। ইচ্ছে না থাকা সত্ত্বেও কেন যেন হঠাৎ করে অট্টহাসি দিয়ে ফেলি ,যে আমার মোটেও কাম্য নয় বা আমি মন থেকে কখনো চাই না এটি ।
যাইহোক বন্ধুরা এই নিয়ে অন্য একদিন কথা বলব। সত্যি বলতে আমার দোষের শেষ নেই। আমার যে কোন গুণ আছে সেটাই আমি জানিনা। সমস্ত দোষ মনে হয় আমার মধ্যে বিধাতা দিয়ে রেখেছেন।
সেদিন প্রিন্সিপাল আপা হঠাৎ করে আমাকে ফোন দিয়ে বলল ,তাহিরা নিচে নেমে আসো। আমি খানিকটা ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম ।কি যেন, আবার কি করে ফেললাম আমার তো ঠিক নেই কখন কি করে বসি নিজেই জানিনা। যেহেতু আমার বস তাই প্রতিউত্তর না করে নিচে নেমে গেলাম।
আমি যেহেতু বাসা থেকে হঠাৎ করে নিচে নেমে গিয়েছি তাই বাসার পোশাক পরেয়েই নেমেছি পরিপাটি হয়ে নামিনি। আপা দেখে সেই অট্টহাসি। কি ব্যাপার আপা এভাবে হাসছেন যে, প্রতি উত্তরে আপা বললেন ,তোমাকে তো এভাবে নামতে বলিনি পরিপাটি হয়ে নামবে না, আমরা তো একটু আশুগঞ্জ যাব সবাই মিলে একটু সময় কাটাবো।
তাই নাকি আপা কই আমাকে তো আগে বললেন না, কিভাবে আমি পরিপাটি হয়ে থাকবো। ঠিক আছে যাও তুমি রেডি হয়ে আসো ,আমি তোমার বাসার সামনে দিয়ে হাঁটছি। আপা যেহেতু নিচে দিয়ে হাঁটাহাঁটি করছে তাই খুব একটা সময় নিলাম না যতটুকু সম্ভব দ্রুত রেডি হয়ে আমার সাথে চলে গেলাম।
আমাদের খুব পরিচিত এবং এই এলাকার জনপ্রিয় একটি রেস্টুরেন্ট বেনিশ বাংলা। যত অনুষ্ঠান হয় এখানেই হয় আমাদের ,ছোট হোক আর বড় হোক। তাছাড়া আমরা মফস্বল এলাকায় থাকি এর চেয়ে বেশি গর্জিয়াস বা লাক্সারি কোন রেস্টুরেন্ট নেই এই এলাকাতে এটাই আমাদের শেষ ভরসা।
যেহেতু প্রিন্সিপাল আপা পার্টি দিয়েছেন, তাই খাবারের সমস্ত আয়োজন উনি করেছেন অনেক ভালো একটি সময় কাটিয়েছি এবং তৃপ্তি সহকারে নিজেদের পছন্দের খাবার গুলো খেয়েছি। এমন কি আপা আমাদের জিজ্ঞেস করেছিল আমরা কে কি খাব আমরা আমাদের মত পছন্দের খাবারগুলো বলেছি ।আমাদের পছন্দের খাবার গুলো ই আপা অর্ডার করেছেন।
আসলে প্রতিষ্ঠান প্রধান এরকম হয় আমার জানা ছিল না ।আমরা অত্যন্ত সৌভাগ্যবান আপার মতন একজন আপা পেয়েছি ।জানিনা ভবিষ্যতে কেমন প্রিন্সিপাল আসবে ।তবে লোকে বলে যায় দিনই ভালো যায় ।আল্লাহ ভালো জানে আল্লাহর উপর ভরসা। আপনারা সবাই দোয়া করবেন আমি যেন আমাদের সহকর্মীদের সাথে এবং আমাদের বসদের সাথে ভালোমতো শেষ দিন পর্যন্ত কাটিয়ে যেতে পারে।
আল্লাহাফেজ।