হ্যালো বন্ধুরা,
কেমন আছেন সবাই। বেশ কিছুদিন পর আবার আপনাদের সাথে কিছুটা সময় কাটানোর জন্য চলে আসলাম এবং কিছু মনের ভাবনাও প্রকাশ করব বলে সিদ্ধান্ত নিলাম।
কিছুদিন আগে সিলেট থেকে কয়েকজন অতিথি এসেছিল আমাদের বাসায়। আমি পূর্বেই হয়তো আপনাদের সাথে শেয়ার করেছি আমাদের প্রথম চাকরি ছিল সিলেট পাল্প এন্ড পেপার মিলস। যদি ও এই মিলটি ২০০২ সালে বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস যারা ছিল তাদের চাকুরিচ্যূত হতে হয়েছে।
যদিও আল্লাহ পাকের অশেষ কৃপায় আমরা ২০০১ সালে আশুগঞ্জ ফার্টিলাইজার এ ট্রান্সফার হতে পেয়েছিলাম। তাই হয়তো আমাদের চাকরিচ্যুত হতে হয়নি। ওইখানে যারা ছিল তাদের কারোই চাকরি ছিল না, তাই দুরবিসহ জীবন যাপন করতে হয়েছে ওদের।
সবাই মিল ছেড়ে চলে যায়, এবং যার যার মত করে যে যেখানে সম্ভব সেখানেই কোন কিছু করে জীবন যাপন করার চেষ্টা করে। আসলে এরকম পরিস্থিতিতে না পড়লে তা বোঝা মুশকিল। আমাদের সাথে যাদের যোগাযোগ ছিল তারা প্রতিনিয়তই মিলের খবর দিত আর তাদের দুর্বি সহ জীবন যাপনের কথা আমাদের সাথে শেয়ার করত।
খুবই খারাপ লাগতো শুনলে কিন্তু কিছু করার নেই। যাই হোক এই ভাবি গুলোর সাথে আমরা ওখানে একসাথে ছিলাম। পাশাপাশি ফ্লাটে ছিলাম। এমনকি আমার মেয়ে ওনাদের মেয়েদের সমবয়সীই ছিল প্রায়, কয়েক মাসের পার্থক্য ছিল একে অন্যের সাথে।
সেই সুবাদে আমি যেদিন খিচুড়ি রান্না করতাম ওই ভাবীরা আর ঐদিন খিচুড়ি রান্না করত না। আবার ওইভাবিরা যেদিন খিচুড়ি রান্না করত আমি সেদিন আর আমার মেয়ের জন্য খিচুড়ি রান্না করতাম না। এমনকি ডিম সিদ্ধ করলেও তিনটি ডিম সিদ্ধ করতাম তিনজনকে খাওয়ানোর জন্য আবার ভাবীরাও যেদিন ডিম সিদ্ধ করত আমিও সেদিন আমার মেয়ের জন্য ডিম সিদ্ধ করতাম না।
মোটকথা একটা সুসম্পর্ক ছিল আমাদের মধ্যে। ছেলে মেয়েরা একসাথে খেলাধুলা করতো আমরা পাশে দাঁড়িয়ে গল্পগুজব করতাম ।প্রতিদিন ছাদে নির্দিষ্ট সময় যেতাম ।আসরের নামাজ পড়ে ছাদে উঠতাম মাগরিবের আযান দেওয়ার পর আমরা সাদ থেকে নেমে আসতাম ,এতে করে আমাদের মধ্যে একটা সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল।
এর হলে আমাদের বাসায় ভালো-মন্দ রান্না করলে সবাই সবার বাসায় দিতাম এবং একসাথে বেড়াতে যেতাম ঘুরতে যেতাম। আমরা বিভিন্ন জেলার লোক একসাথে থাকতাম কিন্তু আমরা একই পরিবারের মতোই থাকতাম। একে অপরের বিপদ আপদে এগিয়ে আসতাম ।মন খারাপ থাকলে শেয়ার করতাম এতে করে মন হালকা হয়ে যেত।
দেশের কথা মনে পড়লে মন খারাপ হলে উনাদের সাথে গল্প করার জন্য উনাদের বাসায় চলে যেতাম। এতে করে মন অনেক টা ই ভালো লাগত। যখন পেপার মিল থেকে চলে আসি ।তখন ভাবিরা হাউমাউ করে কান্না করছিল আমাকে জড়িয়ে ধরে ।আমি ও খুব কান্না করেছিলাম খুব খারাপ লাগছিল আসলে, চলে আসতে ইচ্ছে করছিল না ।কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস মেনে নেওয়া ছাড়া উপায় নেই।
বেশ কত দিন যাবত বলছিল তারা আমাদের বাসায় আসবে কিন্তু আসবে আসবে করে আর আসা হচ্ছিল না। এখন এক ভাই সপরিবারে কানাডা চলে যাবে তাই মেয়েরা বাবার কাছে আবদার করল বাংলাদেশ থেকে যাওয়ার পূর্বে আন্টির সাথে দেখা করে যাব । তাই বাচ্চাদের আবদার রক্ষা করার জন্য সপরিবারে আমাদের বাসায় বেড়াতে আসছে দুই ভাবি। অনেকটা হঠাৎ করেই চলে এসেছে ।যদি ও আমার সাহেবের শরীরটা খুব একটা ভাল ছিল না তারপরও অনেক সুন্দর সময় কাটিয়েছি। ওদের জন্য আমাদের কোয়াটার টা নতুন। নির্জন পরিবেশ দেখে খুব পছন্দ করেছে ওরা। তাই তারা তাদের মত করে স্মৃতির পাতায় ধরে রাখার জন্য বিভিন্ন জায়গায় ছবি উঠিয়েছে যাতে করে পরবর্তীতে দেখতে পারে।
সত্যি বলতে খুব ভালো একটি সময় কাটিয়েছি ওদের সাথে। অতীতের গল্পে রাত কেটে গিয়েছে কিভাবে টেরই পাইনি। সাহেবের শরীরটা যেহেতু,হঠাৎ করে খারাপ হয়ে গিয়েছিল। তাই তাকে একটি রুমে দিয়ে আমরা অন্য রুমে গল্পে মেতে উঠেছিলাম।একসাথে গল্প করতে করতে ওদের সাথে আমাদের একটা ভালো সম্পর্ক গড়ে উঠেছে।
ভাবছি কিছুদিন পর আমরাও সিলেটে যাব। আমার ছেলে মেয়েদেরও আর সিলেট যাওয়া হয়নি ।তাই ওদেরকে দেখিয়ে নিয়ে আসবো আমাদের কর্মজীবনের প্রথম দিনগুলো কিভাবে কেটেছে ওই জায়গায়। বন্ধুরা যাই হোক আপনাদের সাথেও শেয়ার করলাম ।আশা রাখছি আপনাদের ভালো লাগবে। আজ আর নয় ,আজ এখানে বিদায় নিচ্ছি আল্লাহ হাফেজ, শুভরাত্রি।
অনেকদিন পর প্রিয়জনদের সাথে দেখা হয়ে সত্যিই খুব ভালো লাগে। একসঙ্গে থাকার পর সবাই যখন আলাদা হয়ে যায় তখন মন খারাপ লাগে। ভালো সময় কাটানোর মুহূর্ত গুলো বারবার মনে পড়ে যায়। নিজের দেশের কথা মনে পড়লে অনেক কিছুই মনে পড়ে যায়। আপনার সুন্দর পোস্টটি শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit