সাদা পোলাও রান্নার রেসিপি

in hive-120823 •  last month 

আসসালামু আলাইকুম

IMG_20241220_204643.jpg

কেমন আছেন সবাই আশা করি সবাই ভালো আছেন।আজকে আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করব খুব সহজে ঘরোয়া পদ্ধতিতে সাদা পোলাও রান্না রেসিপি। মনের কোণে জমে থাকা গল্পগুলো কখনো রান্নাঘরের ধোঁয়ার সাথে মিশে আমাদের শিকড়ের দিকে নিয়ে যায়। আজ যখন পোলাও রান্নার কথা ভাবছি, তখন মায়ের রান্নাঘরের কথা খুব মনে পড়ছে। মাটির চুলায় বড় পাতিল, ধোঁয়ায় ভরা পরিবেশ আর চারপাশে ব্যস্ততা।

গ্রামে থাকাকালীন ঈদের দিনগুলো কিংবা অতিথি আপ্যায়নের সময় মা কী যত্ন করে পোলাও রান্না করতেন! যেন প্রতিটি দানার সাথে ভালোবাসার স্পর্শ থাকত।আমার মা সবসময় বলতেন, পোলাও রান্না সহজ, কিন্তু তা যত্ন ছাড়া ভালো হয় না। মায়ের হাতের পোলাওয়ের গন্ধেই যেন সবাই খুশি হয়ে যেত। গ্রামের বড় উঠোনে একসাথে সবাই বসে খাওয়া, আর পোলাওয়ের সেই স্বাদএটা কখনো ভুলে যাওয়া সম্ভব নয়।

আজ সেই মায়ের কথা মনে করে শিখিয়ে দিচ্ছি মায়ের স্টাইলে সাদা পোলাও রান্নার রেসিপি।

IMG_20241220_204338.jpg

"সাদা পোলাও তৈরি উপকরণ "

নংউপকরণপরিমাণ
১.** কাঁঠালি চাল **১ কাপ
২.**পানি **২ কাপ
৩.আদা বাটা½ চামচ
৪.রসুন বাটা½ চামচ
৫.**কাঁচা মরিচ **২ টি
৬.**তেজপাতা **১ টি
৭.**সাদা এলাচ **২ টি
৮.**তেল **পরিমাণ মতো
৯.**জিরে বাটা **½ চামচ
১০.** লবণ **স্বাদমতো

"প্রস্তুত প্রণালী "

প্রথমে চালটি ভালোভাবে ৩-৪ বার ধুইতে হবে। চালগুলো ধোয়া শেষ হলে ১০ মিনিট পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে। ১০ মিনিট পানিতে ভিজিয়ে রাখলে পোলাটা খুব সুন্দর ঝরঝরে হয়।

"সাদা পোলাও তৈরি পদ্ধতি "

IMG_20241220_204408.jpg

প্রথমে একটি পাত্রে ভালোভাবে পরিমাণমতো তেল দিতে হবে। তেলটা ভালোভাবে গরম করে নিতে হবে।
এবার চাল আদা,রসুন, জিরে বাটা,এলাচ, তেজপাতা, স্বাদ মতো লবণ সবগুলো উপকরণ দিয়ে ভালোভাবে ভেজে নিতে হবে।ভালোভাবে ভেজে নেওয়ার পরে দুই কাপ পরিমাণ পানি দিতে হবে। যেহেতু আমার চাল এক কাপ পরিমাণ তাই আমার এক্ষেত্রে দুই কাপ পরিমাণ পানি লাগবে। একটা কথা খেয়াল রাখতে হবে যে, চাল যে কয় কাপ পরিমাণ তার দ্বিগুণ পরিমাণ পানি লাগবে। পানি দিয়ে ঢাকনা দিয়ে ঢেকে চুলার আঁচ মাঝারি রাখতে হবে।

IMG_20241220_204447.jpg

এরপর ঢাকনাটা খুলে দুইটি কাঁচা মরিচ দিয়ে আলতোভাবে নাড়াচাড়া করে আবারো ঢেকে দিতে হবে। আপনারা চাইলে এখানে কাঁচামরিচের পরিমাণটা বেশিও নিতে পারেন আমি খুবই অল্প পরিমাণ নিয়েছি কারণ আমার ছোট বাচ্চা আছে ও ঝাল খেতে পারবেনা এজন্য আমি মাত্র দুই টাকা মরিচ দিয়েছি। পানি শুকিয়ে গেলে ঢাকনা খুলে আবারো নাড়াচাড়া করে চুলা অফ করে দিতে হবে। ১০ মিনিট ঢাকনা দিয়ে রাখতে হবে তাহলে পোলাও টা খুব সুন্দর ঝরঝরে ও সুস্বাদু খেতে হবে।

"সাদা পোলাও পরিবেশন "

এবার পরিবেশন করার আগে পেঁয়াজের বেরেস্তা দিয়ে খুব সুন্দর ভাবে গরম গরম পরিবেশন করতে হবে ।

" মায়ের গল্পের ছোঁয়া "

আমার মা যখন পোলাও রান্না করতেন, তখন তিনি বারবার পাত্রের ঢাকনা খুলে দেখতেন চালটা ঠিকঠাক হচ্ছে কি না। সেই সময়টায় আমি পাশে দাঁড়িয়ে বলতাম, মা, আমাকেও রান্না শিখাও। মা হাসতেন আর বলতেন, তুমি বড় হলে ঠিক পোলাও রাঁধতে পারবে। আজ যখন রান্নাঘরে পোলাও বানাই, তখন মনে হয় মা যেন পাশে দাঁড়িয়ে আছে।

IMG_20241220_204609.jpg

পোলাও শুধুমাত্র একটি খাবার নয়, এটি স্মৃতির মিশ্রণ, আমার শিকড়ের গল্প, মায়ের ভালোবাসার প্রতিচ্ছবি। তাই যখনি আমি পোলাও রান্না করি তখনই আমার মায়ের কথা খুব বেশি মনে পড়ে। গ্রামের সেই সুখময় দিনগুলোর কথা মনে।

  • যাইহোক, আজ এই পর্যন্তই সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।

"আমার এই পোস্ট টা পড়ার জন্য আপনাদের সবাইকে ধন্যবাদ"

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

Loading...

Such a beautiful raspie you share I feel watering in my mouth after seeing this hop you enjoy the taste

আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।

Welcome Dear for your response back

  • সাদা পোলাও এর উপরে বেরেস্তা দিয়ে খাওয়াটা আমার ননদ আমাকে শিখিয়েছে। ইউটিউবে আপনাদের বাংলাদেশের বেশ কিছু চ্যানেলে পোলাওয়ের পরিবেশন বেরেস্তা দিয়ে করেছে দেখে আমার ননদও একদিন খেয়েছিল। ওনার বেশ ভালো লেগেছিল বলে আমাকেও একদিন খাইয়েছিলো, সত্যিই এটা একটু অন্যরকম স্বাদের লাগে বটে।

  • এবার আসি পোলাওয়ের কথায়। আপনার মত পোলাও রান্না করতে পারি না আমি। সত্যি বলতে আমি পোলাও রান্না করি না বললেই চলে। কারন আমার শাশুড়ি মা এবং ননদ দুজনেই খুব ভালো পোলাও রান্না করে। তাই বাড়িতে যখনই পোলাও হয় দায়িত্বটা ওনাদের দুজনের উপরেই থাকে।

  • আমি দাঁড়িয়ে থেকে অনেকবার রান্না করতে দেখেছি। হয়তো চেষ্টা করলে পারবো। তবে জলের পরিমাপটা নিয়ে আমার একটু সমস্যা হয় এই যা। তবে আপনিও খুব সুন্দর ভাবে পোলাও তৈরি করার জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ এবং পদ্ধতি এই পোস্টের মাধ্যমে শেয়ার করেছেন।

  • ছোটবেলা থেকে প্রত্যেকটা জিনিসের সাথে বোধহয় কম বেশি মায়ের স্মৃতি জড়িয়ে থাকে। তবে বিয়ের আগে রান্নাঘরে খুব একটা গেছি বলে মনে পড়ে না। তাই মায়ের পাশে দাঁড়িয়ে কখনো কোনো রান্না দেখার ইচ্ছে হয়নি, আর সুযোগও হয়নি। এই কারণেই রান্নাকে ঘিরে কোনো স্মৃতি মায়ের সাথে নেই ঠিকই, কিন্তু মায়ের হাতের রান্না বড্ড মিস করি।

  • সেই স্বাদ, সেই গন্ধ পৃথিবীর আর কারোর হাতেই কখনো খুঁজে পাওয়া হবে না, এটা ভেবেই আক্ষেপ হয়। তবে হ্যাঁ স্মৃতিতে মা সারাজীবন থাকবে। আপনার পোস্ট পড়তে খুব ভালো লাগে আমার। সব লেখার মধ্যে ঠিক কেমন যেন গ্রাম্য ছোঁয়া, আবেগ, ভালোলাগা সবটা মিশে থাকে। এইভাবেই কাজ করুন। অনেক শুভকামনা আপনার জন্য।ভালো থাকবেন।

  • সাদা পোলাও এর উপরে বেরেস্তা দিয়ে খাওয়াটা আমার ননদ আমাকে শিখিয়েছে। ইউটিউবে আপনাদের বাংলাদেশের বেশ কিছু চ্যানেলে পোলাওয়ের পরিবেশন বেরেস্তা দিয়ে করেছে দেখে আমার ননদও একদিন খেয়েছিল। ওনার বেশ ভালো লেগেছিল বলে আমাকেও একদিন খাইয়েছিলো, সত্যিই এটা একটু অন্যরকম স্বাদের লাগে বটে।

  • এবার আসি পোলাওয়ের কথায়। আপনার মত পোলাও রান্না করতে পারি না আমি। সত্যি বলতে আমি পোলাও রান্না করি না বললেই চলে। কারন আমার শাশুড়ি মা এবং ননদ দুজনেই খুব ভালো পোলাও রান্না করে। তাই বাড়িতে যখনই পোলাও হয় দায়িত্বটা ওনাদের দুজনের উপরেই থাকে।

  • আমি দাঁড়িয়ে থেকে অনেকবার রান্না করতে দেখেছি। হয়তো চেষ্টা করলে পারবো। তবে জলের পরিমাপটা নিয়ে আমার একটু সমস্যা হয় এই যা। তবে আপনিও খুব সুন্দর ভাবে পোলাও তৈরি করার জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ এবং পদ্ধতি এই পোস্টের মাধ্যমে শেয়ার করেছেন।

  • ছোটবেলা থেকে প্রত্যেকটা জিনিসের সাথে বোধহয় কম বেশি মায়ের স্মৃতি জড়িয়ে থাকে। তবে বিয়ের আগে রান্নাঘরে খুব একটা গেছি বলে মনে পড়ে না। তাই মায়ের পাশে দাঁড়িয়ে কখনো কোনো রান্না দেখার ইচ্ছে হয়নি, আর সুযোগও হয়নি। এই কারণেই রান্নাকে ঘিরে কোনো স্মৃতি মায়ের সাথে নেই ঠিকই, কিন্তু মায়ের হাতের রান্না বড্ড মিস করি।

  • সেই স্বাদ, সেই গন্ধ পৃথিবীর আর কারোর হাতেই কখনো খুঁজে পাওয়া হবে না, এটা ভেবেই আক্ষেপ হয়। তবে হ্যাঁ স্মৃতিতে মা সারাজীবন থাকবে। আপনার পোস্ট পড়তে খুব ভালো লাগে আমার। সব লেখার মধ্যে ঠিক কেমন যেন গ্রাম্য ছোঁয়া, আবেগ, ভালোলাগা সবটা মিশে থাকে। এইভাবেই কাজ করুন। অনেক শুভকামনা আপনার জন্য।ভালো থাকবেন।

সত্যিই আপনার মন্তব্যটি পড়ে আমার মন ছুয়ে গেল। এটা জেনে অনেক ভালো লাগলো যে আমাদের বাংলাদেশের ইউটিউব চ্যানেল থেকে পোলাও রান্না রেসিপি দেখে পোলাও পরিবেশনে বেরেস্তা দিয়ে আপনার ননদ আপনাকে খুব যত্ন সহকারে খাওয়াইছে।

হ্যাঁ আপু আপনি একদম ঠিক বলেছেন আসলে মায়ের কখনো তুলনা হয় না। আমার প্রত্যেকটা রান্নার ক্ষেত্রেই আমার মায়ের কথা খুব বেশি মনে পড়ে। কারণ আমি ছোট থেকেই তার পাশে রান্না করা দেখেছি। যাই হোক আপনার মন্তব্যটি পড়ে আমার খুব ভালো লাগলো সব সময় ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এই কামনাই করি।

আপনি সাদা পোলাও রান্নার রেসিপি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন দেখে অনেক ভালো লাগলো ৷ আসলে আমি পোলাও আর মাংস অনেক পছন্দ করি ৷ কিন্তু অনেক দিন থেকে খাওয়া হয় না ৷

আপনার পোস্ট টি দেখে সেই আগের মত পোলাও মাংসের স্বাদ মনে করিয়ে দিলেন ৷ যাই হোক রান্নার উপকরণ গুলো বেশ সুন্দর ভাবে তুলে ধরেছেন যেটা রেসিপির জন্য প্রধান উপকরণ বলে আমি মনে করি ৷

যাই হোক আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য ৷ ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন ৷