আসলামু আলাইকুম
- প্রিয় বন্ধুরা কেমন আছেন সবাই আশা করি সবাই ভাল আছেন। আমি আজকে এমন একটা বিষয় আপনাদের সাথে শেয়ার করব আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে।
যোগাযোগ দক্ষতা জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক, যা আমাদের ব্যক্তি, পারিবারিক এবং পেশাগত জীবনকে প্রভাবিত করে। সঠিকভাবে মনের ভাব প্রকাশ করতে পারলে যেকোনো পরিস্থিতি অনেক সহজ হয়ে যায়। আজ আমি এমন একটি গল্প বলব, যা আমার নিজের অভিজ্ঞতা থেকে নেওয়া। কীভাবে সঠিক যোগাযোগ দক্ষতা শিখে আমি জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেছি, সেটাই এই গল্পের মূল বিষয়।
আমি আমার স্বামীর কর্মসূত্রে শহরে এসেছি। এখন একটি বড় বাড়িতে আমরা তিনজন থাকি।আমি, আমার স্বামী, আর আমার আমাদের ছোট্ট মেয়ে মিরা। আমাদের জীবনের ছন্দটা বেশ সুন্দর হলেও, শহরের নতুন পরিবেশে মানিয়ে নেওয়া আমার জন্য অনেক চ্যালেঞ্জিং হয়ে দাঁড়িয়েছিল। আমার স্বামী প্রতিদিন সকালে অফিসে যান, আর দুপুরে ফিরে আসেন। এই সময়টুকু বাড়িতে আমি এবং আমার ছোট্ট মেয়ে থাকি।
গ্রাম থেকে শহরে এসে এই নতুন জীবনে অনেক কিছুই আমার কাছে অপরিচিত মনে হতো। বিশেষ করে, শহরের মানুষের সঙ্গে ঠিকভাবে মিশতে পারা এবং তাদের সঙ্গে কথা বলার সময় নিজেকে প্রকাশ করা আমার জন্য সহজ ছিল না। অন্যরা যখন সহজেই নিজের কথা বলে, নতুন বন্ধু তৈরি করে, আমি তখন একটু একা হয়ে পড়তাম। শহুরে মানুষের আত্মবিশ্বাসী কথা বলা, ভাব প্রকাশের দক্ষতাসবকিছুই আমার কাছে নতুন লাগত।
|
---|
একদিন আমার স্বামীর অফিস থেকে একটি অনুষ্ঠানে আমাদের দাওয়াত করা হলো। সেখানে অনেক মানুষের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ হলো। সবাই খুব প্রাণবন্ত এবং পরস্পরের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ। কিন্তু আমি সবার সামনে সেভাবে কথা বলতে পারছিলাম না। তাদের আলোচনার বিষয় ছিল অনেক সময় নতুন প্রজেক্ট, চাকরি, বা শহরে জীবনযাপনের নানা অভিজ্ঞতা। আমার কিছু বলার ইচ্ছা থাকলেও, আমার ভেতরে একটা দ্বিধা কাজ করছিল।
ভয় হচ্ছিল, যদি কিছু ভুল বলে ফেলি বা সবাই আমাকে অপছন্দ করে।ফলে আমি পুরো সময়টা প্রায় চুপচাপ কাটিয়ে দিলাম। কিন্তু বাড়ি ফিরে স্বামী আমাকে বললেন, তুমি তো দারুণ কথা বলতে পার, আজ তুমি এত চুপচাপ কেন?আমি কোনো উত্তর দিতে পারলাম না। তবে তার কথা আমাকে ভাবতে বাধ্য করলআমি কি সত্যিই আমার সম্ভাবনার প্রতি সুবিচার করছি?
|
---|
আমি বুঝতে পারলাম, শুধু ভাবনার কারণে বা দ্বিধার কারণে নিজের কথা বলা বন্ধ রাখা উচিত নয়। আমার যে অসুবিধা, সেটা কাটিয়ে উঠতে হবে। এরপর থেকেই আমি নিজের যোগাযোগ দক্ষতা উন্নত করার সিদ্ধান্ত নিলাম।প্রথমেই আমি শিখলাম ধৈর্য ধরে অন্যদের কথা শোনা এবং কীভাবে তাদের ভাবনার সঙ্গে যুক্ত হওয়া যায়। এরপর নিজের চিন্তাগুলো গুছিয়ে বলার অভ্যাস করতে শুরু করলাম। প্রতিদিন আয়নায় দাঁড়িয়ে কথা বলতাম, যেন আমি বুঝতে পারি, কীভাবে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে কথা বলতে হয়।
একদিন মেয়ের খেলার সঙ্গীদের মায়েদের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ হলো। আমি তাদের সঙ্গে সহজভাবে কথা বলা শুরু করলাম। তারা সবাই বেশ ভালো ব্যবহার করল। বুঝতে পারলাম, আমি যতটা ভাবছিলাম, ততটা কঠিন কিছু নয়। এই ছোট্ট প্রচেষ্টাই আমার আত্মবিশ্বাস অনেক বাড়িয়ে দিল।
|
---|
ধীরে ধীরে আমি বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে কথা বলার অভ্যাস গড়ে তুললাম। একদিন, আমার স্বামীর অফিসের একটি অনুষ্ঠানে গিয়ে আমি সবার সঙ্গে এমনভাবে মিশে গেলাম, যেন আমি সেই পরিবেশেরই অংশ। সেইদিন আমার স্বামী গর্ব করে বললেন, তুমি আজ আমাদের আলোচনার মধ্যমণি ছিলে!
আমি বুঝতে পারলাম, সঠিক যোগাযোগ দক্ষতা শুধু নতুন বন্ধু তৈরি করার জন্য নয়, নিজের আত্মবিশ্বাস বাড়াতেও সহায়ক। এখন আমি যে কোনো পরিস্থিতিতে সহজে নিজের কথা বলতে পারি এবং অন্যদের সঙ্গে সুন্দর সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারি।
|
---|
- আমার জীবনের এই গল্প থেকে আমি শিখেছি, যোগাযোগ দক্ষতা কোনো জন্মগত গুণ নয় বরং এটি অভ্যাস ও প্রচেষ্টার মাধ্যমে অর্জন করা যায়। শুধু নিজেকে বিশ্বাস করতে হবে এবং ভয় কাটিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। কথায় আছে, আপনি যে কথা বলতে চান, তা বলুন, কারণ আপনি যদি না বলেন, আপনার চুপ থাকা কেউ বুঝতে পারবে না।তো আপনাদের কাছে আমার এই নিজের অভিজ্ঞতাটা কেমন লাগলো অবশ্যই জানাবেন ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Thank you ❤️
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit