হ্যালো বন্ধুরা,
আসসালামু আলাইকুম ও আদাব। গরমের শুরুতে সবার দিনকাল কেমন কাটছে। হালকা শীত হালকা গরমে সবাই কেমন আছেন? আশা করি সকলে এমন সুন্দর আবহাওয়ায় বেশ ভালই আছেন। আমি আপনাদের দোয়া ও সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে খুব ভালো আছি।
বন্ধুরা আজ আমি ফটোগ্রাফি প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য কিছু ফটোগ্রাফি নিয়ে হাজির হয়েছি। আমার তোলা ফটোগ্রাফি গুলো আমার কাছে যতটা ভালো লেগেছে, আমার বিশ্বাস আপনাদের কাছেও খুব ভালো লাগবে। আমার ভালো লাগা ফটোগ্রাফি গুলো আপনাদের কাছে ভালো লাগলে, তবেই আমার ফটোগ্রাফি সার্থকতা পাবে। তো বন্ধুরা চলুন আমার ফটোগ্রাফি গুলো থেকে ঘুরে আসা যাক।
নীল আকাশে ভেসে বেড়ায় সাদা মেঘের ভেলা,
রাশি রাশি পদ্ম ফুটে মন খুশির মেলা
এই লাইন দুটি একটি কবিতা থেকে সংগ্রহ করেছি। কবিতাটি হচ্ছে "শরৎকাল"কবিতাটি লিখেছেন "অমিতা শিব দেবনাথ"। আমার কাছে নীল আকাশে টুকরো টুকরো সাদা মেঘগুলো ভেসে বেড়ায় দেখতে অপূর্ব লাগে। আর তাই শরৎ এর মেঘ দেখলেই, কবিতাটি মনে পড়ে যায়।
কেন এই ফটোগ্রাফি গুলো আপনার কাছে মূল্যবান?
শরৎ এর আকাশে যখন সাদা মেঘগুলো ভেসে বেড়ায় তখন আমি অপলক দৃষ্টিতে চেয়ে থাকি। তখন মনে হয় সৃষ্টিকর্তার কি অপরূপ সৃষ্টি, নীল আকাশে সাদা মেঘ ভেসে বেড়াচ্ছে। আকাশের বুকে মেঘগুলো এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে ছুটে বেড়াচ্ছে। আপনি বা আমি চাইলেও কখনো এমন দৃশ্য হাতে তৈরি করতে পারব না। এ শুধুমাত্র আমাদের উপর ওয়ালার সৃষ্টির লীলা খেলা। আর এরকম অসাধারণ ফটোগ্রাফি যখন মোবাইল ফোনে ধারণ করি, তখন সেই ফটোগ্রাফি গুলো আমার কাছে খুবই মূল্যবান মনে হয়। মূল্যবান সময়, মূল্যবান স্মৃতি, সেই সাথে অসাধারণ ফটোগ্রাফি যার গুরুত্ব আমার কাছে অনেক অনেক বেশি। তাই আমার কাছে এই ফটোগ্রাফি গুলো খুবই মূল্যবান।
আপনি সেই ছবিগুলো কখন ধারণ করেছেন? বিস্তারিত শেয়ার করুন।
আমি একজন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। আর আমি যে বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করি তা আমার বাড়ি থেকে অন্ততপক্ষে ১৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। প্রতিদিন আমাকে আমার কর্মস্থলে যেতে প্রায় আধঘন্টা সময় লেগে যায়। আর এ সময় আমি জার্নির জন্য অটো বাছাই করে নিয়েছি।
তাই প্রতিদিন আমি একটি নির্দিষ্ট সময়ে অটোতে করে আমার বিদ্যালয়ে গিয়ে পৌঁছাই। আমার বিদ্যালয়ে পৌঁছানোর সময় প্রতিদিন আমি রাস্তায় নানা রকম মানুষ, নানা রকম যানবাহন, নানা ধরনের পশু, আরো কত কি যে দেখতে পাই,আবার সেই সাথে ভিন্ন ভিন্ন চিত্রের আকাশও দেখতে পাই। এমনিতেই আকাশ আমার কাছে খুবই প্রিয়। আর সে যদি হয় শরৎ এর আকাশ তাহলে তো কোন কথাই নেই।
শরৎ এর কালে আমি আমার বিদ্যালয়ের যাওয়ার সময় প্রায় সময়ে অটো থেকে নেমে ভিন্ন ভিন্ন চিত্রের আকাশের ফটোগ্রাফি করেছি। যাতে করে মাঝে মাঝে মোবাইল ফোন বের করে শরৎ এর আকাশ দেখতে পাই। আর সেই শরৎ এর আকাশ আজ আপনাদের মাঝে ফটোগ্রাফি প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য শেয়ার করেছি।
এই ফটোগ্রাফির পিছনে আপনার কোন গল্প আছে? যদি থাকে তাহলে আমাদের মাঝে শেয়ার করুন।
প্রথমে আমি আমার প্রিয় কমিউনিটি incredible india কে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। কেননা এই ফটোগ্রাফী করার পেছনে আমার একটি ছোট্ট গল্প রয়েছে যা আমার হৃদয়ে সারা জীবন গেথে থাকবে। আর সেই গল্প হয়তো আমি আমার পরিবারের লোকজনের সাথে শেয়ার করতে পেরেছি। কিন্তু কখনো এত বড় পরিসরে এসে বলার সুযোগ পায়নি। তাই incredible India আমাকে সেই গল্প বলার সুযোগ করে দিয়েছে, ফটোগ্রাফির প্রতিযোগিতার মাধ্যমে।
যেহেতু আমার ভিন্ন ভিন্ন আকাশের ভিন্ন ভিন্ন ছবি তুলতে ভালো লাগে। সেহেতু এই ছবি তোলার ক্ষেত্রে আমি আমার মোবাইল ফোনটি সবসময় ব্যবহার করে থাকি। যেদিন আমি এই ফটোগ্রাফি করেছিলাম, সেদিন আমি আমার মোবাইল ফোনটি ব্যাগ থেকে বের করে মনের আনন্দে শরতের আকাশের ছবি তুলছিলাম। কিন্তু ছবি তুলতে তুলতে এক সময়, আমি আমার মোবাইল ফোনটি ব্যাগের মধ্যে না রেখে, অটোতে থাকা সিটের মধ্যে রেখেছিলাম। আমি বুঝতেই পারিনি আমার মোবাইল ফোনটি কখন আমি অটোতে রেখে দিলাম।
প্রতিদিনের মতো অটো থেকে নেমে ভাড়া মিটিয়ে আমি একটি রিক্সায় উঠে আমার বাড়িতে আসা শুরু করলাম। পথিমধ্যে হঠাৎ আমার মনে পড়ে গেল, আমার মোবাইল ফোনটি বের করে আমার মায়ের কাছে ফোন করবো, সাংসারিক কোন কিছুর প্রয়োজন আছে কিনা। যখন আমি আমার ব্যাগে হাত দিয়ে মোবাইল ফোনটি খুজছিলাম, তখন আর কিছুতেই মোবাইল ফোনটি খুঁজে পাচ্ছিলাম না।
আমার তখন বারবার মনে হচ্ছিল, মোবাইল ফোনটি বোধহয় আমি ছবি তুলে ব্যাগে না রেখে চলন্ত অবস্থায় কোথাও ফেলে দিয়ে এসেছি। প্রিয় মোবাইল ফোনটি হারিয়ে আমি তখন খুবই হতাশাগ্রস্থ। তাই দ্রুত রিক্সা ঘুরিয়ে সেই অটো স্ট্যান্ডে চলে গেলাম মোবাইল ফোনটি খোঁজার উদ্দেশ্যে। আমি অটো স্ট্যান্ডে গিয়ে কিছুটা বাকরুদ্ধ হয়ে গেলাম।
দূর থেকে আমাকে কেউ একজন ডাকছে, আমাকে কে ডাকছে খেয়াল করতেই দেখি, যিনি আমাকে অটোতে করে নিয়ে এসেছিলেন। সেই ব্যক্তি আমার মোবাইল ফোনটি উচু করে দেখিয়ে আমাকে ম্যাডাম ম্যাডাম বলে ডাকছে। সেই মুহূর্তে আমার প্রিয় ফোনটি ফিরে পেয়ে আমি সত্যিই আবেগাপ্লুত হয়ে গিয়েছিলাম। যে অটোওয়ালা আমাকে মোবাইলটি ফেরত দিয়েছে, তাকে আমি খুশি হয়ে কিছু বকশিশ দিয়েছি চা নাস্তা খাওয়ার জন্য। সেই সাথে তাকে এখন পর্যন্ত মন থেকে দোয়া করি, সে যেন তার সততার পুরস্কার সব সময়ই পায়। আর এই ঘটনাটি আমার জীবনে একটি স্মরণীয় গল্প হয়ে আছে। আজ আপনাদের মাঝে গল্পটি শেয়ার করতে পেরে আমার ভীষণ ভালো লাগছে।
এই ফটোগ্রাফি গুলোর মধ্য দিয়ে যাওয়ার সময় কোন জিনিসগুলো আপনার মাথায় আসে? এই ছবির পিছনে আপনার চিন্তা শেয়ার করুন।
আমি যেহেতু প্রতিদিন অনেকটা দূর জার্নি করি তাই প্রতিদিনই আকাশের ভিন্ন ভিন্ন চিত্র খেয়াল করি। আর এই নীল আকাশে মেঘগুলোকে ভেসে থাকতে দেখে আমার একটি গান বারবার মনে পড়ে যায়। "নীল আকাশে কে ভাসালে সাদা মেঘের ভেলা"। সত্যিই তাই, কার এমন ক্ষমতা রয়েছে যে নীল আকাশে সাদা মেঘের ভেলাকে ভাসিয়ে রাখবে।
এ শুধুমাত্র আমাদের পরম করুনাময় মহান সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতেই এমন প্রাকৃতিক দৃশ্য আমরা দেখতে পাই। এই ফটোগ্রাফি গুলোর মধ্য দিয়ে যাওয়া আসার সময়, সব সময় আমার মাথায় এই একটা জিনিসই কাজ করে, কত বড় শক্তির অধিকারী হলে কেউ, দিনকে রাত, রাতকে দিন, সূর্য ওঠা, সূর্য ডোবা, অসাধারণ প্রাকৃতিক দৃশ্য, এমনকি এই নীল আকাশে সাদা মেঘের ভেলা সাজিয়ে রাখতে পারে। তার অপার শক্তির কাছে আমরা পরাজয়। তাই মহান সৃষ্টিকর্তাকে স্মরণ করে সবসময় শুকরিয়া জানাতে চাই। তার এই অপরূপ সৃষ্টির জন্য।
কনটেস্ট এর নিয়ম অনুযায়ী আমি তিনজনকে এই কনটেস্টে অংশগ্রহণ করতে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি, @mahbubul.lemon, @sadiahaque, @bobitabobi
Photographer | samima24 |
---|---|
Device | OPPO A16 |
Location | Dharla Setu |
খুব ভালো লাগলো আপনার ফটোগ্রাফি গুলো দেখে। আপনি আপনার ফটোগুলো সত্যিই অনেক অনুভূতি নিয়ে তুলেছেন।
আমি দেখতে পেলাম আপনি এই ফটোগ্রাফি গুলো ধারন করেছেন স্কুলে যাতায়াতের সময়, আমি যতদুর জানি আপনি একজন স্কুলের শিক্ষিকা। তাই তো স্কুলের যেতেই হয়, যাতায়াত কালে যদি এমন দৃশ্য দেখা যায়, তাহলে কি মোবাইলের ফ্রেমে না আটকে থাকা যায়?
খুবই ভালো লাগলো আপনার পোস্ট পড়ে, সব ফটোর পিছনে আপনার অনুভূতি ও গল্প আমাদের সামনে উপস্থাপন করেছেন। ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনি শরতের আকাশের ফটোগ্রাফি করে। আপনার মোবাইল ফোনটি ব্যাগে না রেখে অটোতে রেখে দিলেন।
পরবর্তীতে যখন আপনি আপনার মায়ের কাছে কল দিতে গেলেন। তখন দেখলেন আপনার মোবাইল ফোনটি আপনার ব্যাগে নেই। তারপর মোবাইল ফোনটি খোজার জন্য আবারো রিক্সা ব্যাক করে অটো স্ট্যান্ডে আসলেন।
আসলে এমনটা হয়, আমরা যখন অতিরিক্ত খুশি থাকি। আপনার ফটোগ্রাফি গুলো দেখে মনে হচ্ছে আপনি খুব মনের আবেগ দিয়ে ফটোগ্রাফি গুলো শুট করেছেন। যার কারণে আপনি অনেক খুশি ছিলেন।
যাইহোক আপনার পোষ্টের ফটোগ্রাফি গুলো অসাধারণ ছিল। অসংখ্য ধন্যবাদ এত সুন্দর ফটো এতগুলো আমাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য, ধন্যবাদ ভালো থাকবেন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit