আমাদের অনুভূতি গুলো মিশে থাকে গানের কথায়

in hive-120823 •  2 years ago  (edited)

abstract-g91d94841a_1280.png

source
(গান ভালোবাসে না,এমন মানুষ বোধহয় খুজে পাওয়া যাবে না)

Hello,
Everyone,

আশাকরি আপনারা সকলে ভালো আছেন, সুস্থ আছেন এবং আজকের দিনটা আপনারা প্রত্যেকেই ভীষন ভালো ভাবে কাটিয়েছেন।

"গান" আমাদের জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। আমি জানিনা আপনারা সকলে আমার সাথে সহমত পোষন করবেন কিনা। তবে ব্যক্তিগত ভাবে আমি বিশ্বাস করি, গান আমাদের জীবনের প্রতিটি অনুভূতির সাথে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত।

ভেবে দেখবেন আমাদের জীবনের সব ক্ষেত্রে, প্রতিটি অনুভূতির সাথে সামঞ্জস্য রেখে অনেক অনেক গান সৃষ্টি হয়েছে, বা এখনও হচ্ছে।

জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে বিভিন্ন গানের ভাগ আছে, যেমন- রবীন্দ্রসঙ্গীত, ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে আছে ভক্তিগীতি, যেমন- কালিঠাকুরের জন্য আছে শ্যামাসংগীত, দেশের জন্য আছে দেশাত্মবোধক গান।

এছাড়াও আছে জয়ের গান, প্রেমের গান,কষ্টের গান,আনন্দের গান, বিয়ের গান, নাচের গান,হোলির গান ইত্যাদি।

যদিও আমি গানের সুর, তাল,সম্পর্কে কিছুই জানিনা। আমি শুধু ভালো গান শুনতে ভালোবাসি। যেহেতু গানের সুর সম্পর্কে আমার একদমই কোনো অভিজ্ঞতা নেই, তাই সুরের থেকেও গানের লাইনের কথাগুলো আমাকে বেশি আকৃষ্ট করে।*

কিন্তু হ্যাঁ, বর্তমান যুগের বিশেষ কিছু গান ছাড়া অন্য গান আমার একদমই ভালো লাগে না। কারন এখনকার দিনের গানের মধ্যে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আমি কোনো গানের কথায় কোনো অনুভুতি খুঁজে পাই না। অথচ পুরোনো দিনের প্রতিটি গানের লাইনের সাথে যেন আমাদের ইমোশন জড়িয়ে আছে।

IMG-20220907-WA0007.jpg

অবশ্য সবটাই বয়েসের ব্যাপার। ছোটোবেলায় যখন জীবনের বাস্তবতা সম্পর্কে কোনো ধারণা ছিলো না। তখন গানের লাইনের কোনো তাৎপর্য ছিলো না আমাদের কাছে।তখন বেশি মিউজিক দেওয়া গান, বাচ্চাদের জন্য তৈরি গান এইসব গানই ভালো লাগত।

ছোটবেলায় আমার সবথেকে প্রিয় গান ছিলো- বিখ্যাত সঙ্গীতকার সলিল চৌধুরীর কন্যা অন্তরা চৌধুরীর গাওয়া গান গুলো।তিনি সাধারণত শিশুদের জন্য তৈরি গানের মাধ্যমেই বেশি পরিচিতি পেয়েছেন, যেমন-

  • বুলবুল পাখি ময়না টিয়ে......

  • ও সোনা ব্যঙ, ও কোলা ব্যঙ.....

  • আর পুজোর সময়কার সবচেয়ে প্রিয় গান হলো-
    ওওওও আয় রে ছুটে আয়, পুজোর গন্ধ এসেছে।

IMG-20220907-WA0007.jpg

বয়েস বাড়ার সাথে সাথে যখন একটু বড়ো হলাম, তখন ঐ গানগুলোর থেকে মন সরে কখন যে রোমান্টিক গানের দিকে চলে গেলো, তা বুঝতেও পারলাম না।

তখন হিন্দি গানের মানে সবে বুঝতে শুরু করেছি। এমন অনেক গান আছে যেগুলো শুনে শুনে নিজের মনে মনে এমন কাল্পনিক ভালবাসার স্বপ্ন দেখতাম, বাস্তব জগতে যার কোনো অস্তিত্ব নেই।

IMG-20220907-WA0007.jpg

জীবনে যখন প্রথম কাউকে ভালোবাসার অনুভূতি মনে জাগলো, তখন সমস্ত রোমান্টিক গান গুলো মনে দাগ কাটতো। এই সময় এতো এতো গান ভালো লাগতো,যে সব গুলোর নাম লেখা সম্ভব নয়।

এখনকার মতো তখন সকলের হাতে মোবাইল ছিলো না। তাই প্রতি রবিবার ডি ডি ন্যাশনাল চ্যানেলে সম্প্রচারিত হওয়া রঙোলী ছিলো, নিজের প্রিয় গান গুলো শোনার ও দেখার একমাত্র উপায়।

এরপর মোবাইল এলে, তাতে মেমোরি কার্ড লাগিয়ে নিজের পছন্দের গান গুলো ডাউনলোড করিয়ে নিয়ে নিজের খুশিমতো শোনার যে কি আনন্দ তখন ছিলো, সেটা আজকে বুঝিয়ে বলা সম্ভব নয়।

আর এখন তো মেমোরি কার্ড, ডাউনলোড কোনো কিছুর প্রয়োজন নেই।এখন এতো অ্যাপ আছে যায় সবকটি নাম ও আমি জানি না।

IMG-20220907-WA0007.jpg

এরপর যখন চোখের রঙিন চশমা খুলে গেল, জীবন আস্তে আস্তে বাস্তবরূপ দেখাতে শুরু করলো,আর কখন যেন রোমান্টিক গান গুলোর জায়গা নিয়ে নিলো জীবনমুখী গান, কষ্টের গান গুলো।

তাই বলে এটা কখনোই নয় যে আজকে আমি ছোটোবেলার পছন্দের গান শুনি না। আজও শুনি, কখনো কখনো গানের সাথে তাল মিলিয়ে হাত-পায়ে ছন্দ ফিরে আসে।

রোমান্টিক গানের লাইন গুলো আজও কখনো কখনো মনের অজান্তেই গুনগুন করে গেয়ে উঠি। কিছু কিছু গান সারা জীবনের ভালোলাগা জুড়ে থাকে। আবার কিছু কিছু গান আছে, যেগুলো মন খারাপ হলে শুনতে ভীষন ভালো লাগে।

IMG-20220907-WA0007.jpg

আমার প্রিয় গানের লিস্ট অনেক বড়ো,প্রিয় গায়ক/গায়িকার লিস্টও অনেক বড়ো। তাদের মধ্যে কয়েকজন হলেন - শ্রদ্ধেয়া লতা মঙ্গেশকর, আশা ভোঁসলে, উদিত নারায়ন, কবিতা কৃষ্ণমূর্তি, এস-পি-বালা-শুভ্রমোনিয়াম, কে.কে, সোনুনিগম শান আরও অনেকে।

আর যদি বাংলার শিল্পীদের কথা বলতে হয় তাহলে, আছে হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, মান্না দে, কিশোর কুমার আমার ভীষন পছন্দের। যদিও এদের হিন্দি গানগুলোও ভীষন ভালো।

শেষ করার আগে আমার সব সময়ের প্রিয় তিনটি গানের কথা আপনাদের নিশ্চয়ই জানাবো। এই তিনটি গান আমি যে কোনো সময় শুনতে ভালোবাসি-

  • প্রথমটি হলো রবীন্দ্র সঙ্গীত- আমারও পরান যাহা চায়
  • লতা মঙ্গেশকর ও কিশোর কুমারের গাওয়া -গুম হ্যায় কিসিকে প্যায়ার মে....
  • মুকেশের গাওয়া মেরা নাম জোকার সিনেমার গান, -জিনা ইয়াহা মরনা ইয়াহা।

আমার আজকের লেখা আপনাদের কেমন লাগলো নিশ্চয়ই জানাবেন। সকলে ভালো থাকবেন। শুভ রাত্রি।

IMG-20220907-WA0008.jpg

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  
Loading...

আমার তো আঁকতে বসলে কানে হেডফোন দিয়ে গান শুনতে হয়।আমার বাড়িতে তো সকাল হলেই গান চলে,তার কারণ হলো যাতে সারাটাদিন আমাদের সবার যেনো ভালো কাটে।গান আমাদের দুঃখ,হাসির মাধ্যম।

ঠিক তাই, হাজার মন খারাপেও, পছন্দের গান শুনলে মন ভালো হয়ে যায়।

আপনি যে শিল্পীদের নাম উল্লেখ করেছেন এই শিল্পীবৃন্দ হচ্ছেন গানের মূল। এই কন্ঠগুলোতে মনে হয় স্বয়ং ঈশ্বর অবস্থান করেন, যখন গান করেন। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ গায়ক। গানের পৃথিবীতে যেন সর্বত্র এনাদের পদচারণা।

একদমই তাই, গানের সর্বত্র এই সকল শিল্পীদের বিচরণ।

আপনি যে যে গানের কথা বলেছেন সবগুলোই ভীষন সুন্দর। সত্যিই গানের মাধ্যমে আমরা আমাদের জীবনের সব রকম পরিস্থিতিতে সব রকম অনুভূতি প্রকাশ করতে পারি।

অনেক ধন্যবাদ আমার লেখার সাথে সহমত পোষন করার জন্য। ভালো থাকবেন।

@sampabiswas সত্যি গান শুনতে কার না ভালো লাগে, আমার সব থেকে ভালো লাগে লোকসংগীত বাউল গান শুনতে।