![]()
|
---|
Hello,
Everyone
আশাকরি আপনারা সকলে ভালো আছেন, সুস্থ আছেন এবং আপনাদের সকলের আজকের দিনটি অনেক ভালো কেটেছে।
অনেকদিন যাবত যেহেতু হসপিটালে আছি, তাই হসপিটাল কেন্দ্রিক লেখাই আপনাদের সাথে শেয়ার করা হয়েছে। এই কারণে ভাবলাম আজ আপনাদের সাথে একটু ভিন্নধর্মী লেখে শেয়ার করি।
আমার পোস্ট যারা পড়েছেন, তারা সকলেই জানেন শ্বশুর মশাইকে হসপিটালে ভর্তি করার পর থেকে আমি ও শুভ, শুভর মামার বাড়ি অর্থাৎ আমার মামা শ্বশুরবাড়িতেই থাকছি। এখান থেকেই প্রতিদিন হসপিটালে যাতায়াত করি।
এর মধ্যে একদিন ছোট মামীশাশুড়ি বাড়িতে বিরিয়ানি তৈরি করেছিলেন। আমিও বাড়িতে বিরিয়ানি তৈরি করি তবে ওনার রান্না করার পদ্ধতি বেশ কিছুটা আলাদা। যদিও আমার ফিরতে দেরি হয়েছিল বলে সমস্ত ছবি গুলো তোলা সম্ভব হয়নি। তবে যতটুকু ছবি আমি তুলতে পেরেছি এটা দিয়ে রেসিপিটি আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করবো। আশাকরি আপনাদের বুঝতে কোনো সমস্যা হবে না। প্রথমেই ব্যবহার করা উপকরণগুলো সম্পর্কে আপনাদের জানাই-
|
---|
নং | উপকরণ | পরিমাণ |
---|---|---|
১. | চিকেন | ১½ কেজি |
২. | পেঁয়াজ কুচি | ২ কাপ |
৩. | আদা বাটা | ২ চা চামচ |
৪. | রসুন বাটা | ২ চা চামচ |
৫. | আলু | ৫-৬ টি মাঝারি সাইজের |
৬. | কাঁচা লঙ্কা বাটা | ২½ চা চামচ |
৭. | সাদা তেল | হাফ কাপ |
৮. | হলুদ গুঁড়ো | ১চা চামচ |
৯. | জিরে গুঁড়ো | ১½ চা চামচ |
১০. | খোয়া ক্ষীর | ২০০ গ্ৰাম |
১১. | পাতি লেবুর (রস) | ১ টা |
১২. | গোলাপ জল | ½ চা চামচ |
১৩. | কেওড়া জল | ½ চা চামচ |
১৪. | লবন | স্বাদ অনুসারে |
১৫. | ঘি | পছন্দ অনুসারে |
১৬. | সানরাইজ বিরিয়ানি মশলা | ১ প্যাকেট |
১৭. | টক দই | হাফ কাপ |
১৮। | আঁতর | ৪-৫ ফোঁটা |
১৭. | আটা | হাঁড়ির মুখে দিয়ে দম দেওয়ার জন্য পরিমাণ মতো |
|
---|
উপকরণগুলো আপনারা আপনাদের পরিমাণ অনুসারে কম বেশি করতে পারেন। এখন আমি আপনাদের সাথে বিরিয়ানি তৈরি করার ধাপগুলো শেয়ার করবো।
প্রথমে মাংসের পিসগুলোকে ভালো করে ধুয়ে জল ঝড়িয়ে রেখে দিতে হবে। আলুগুলোকে ছাড়িয়ে টুকরো করে কেটে নিতে হবে এবং পরিমাণ মতো সব পেঁয়াজ, আদা, রসুনের খোসা ছাড়িয়ে পেস্ট তৈরি করে রাখতে হবে। রেডিমেড বিরিয়ানি মসলা ব্যবহার করা হয়েছিলো, তাই মসলা তৈরি করার কোনো ঝামেলা না থাকলেও, কাঁচা লঙ্কা পেস্ট করতে হবে এবং একটি লেবুর রসটাকে একটা পাত্রে বের করে রাখতে হবে।
এই সকল কাজগুলো হয়ে যাওয়ার পরে আসল কাজ শুরু করতে হবে, যেটা বিরিয়ানির ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ সেটি হলো বেরেস্তা তৈরি করা।
মামি প্রথমে পরিমাণ মতো তেল দিয়ে তার মধ্যে সমস্ত পিয়াজ দিয়ে দিয়েছিলো। ভাজা হয়ে গেলে কিছুটা পেঁয়াজ তুলে রেখে, বাকি সবটাই বেরেস্তা তৈরি করে আলাদা একটা নামিয়ে রেখেছিল।
এরপর ওই তেলের মধ্যে টুকরো করে কেটে রাখা আলু গুলোকে ধুয়ে নিতে হবে। মামী চন্দ্রমুখী আলু ব্যবহার করেছিল বলে শুধুমাত্র ভেজেই বিরিয়ানিতে দিয়েছিলো। তাতে আলুগুলো ভালোই গলে গিয়েছিলো, তবে আপনারা যদি মনে করেন ভাজার পরে দম দিলে আলু সিদ্ধ হবে না, তাহলে কিন্তু আপনারা আলু গুলোকে সামান্য সেদ্ধ করে নিয়ে ভেজে তুলে রাখতে পারেন।।
ভেজে রাখা বেরেস্তার মধ্যে খোয়াক্ষীর গুলোকে মেশিনের সাহায্যে প্রথমে কুড়িয়ে নিতে হবে। তারপর বেরেস্তার সাথে ভালো করে হাতের সাহায্যে মাখিয়ে নিতে হবে। এমন ভাবে যদি বেরেস্তার সাথে খোয়াক্ষীর মাখিয়ে ব্যবহার করা যায়, তাহলে নাকি বিরিয়ানির স্বাদ আরো সুন্দর হয়।
এরপর তুলে রাখা বাকি পেঁয়াজটা তেলের মধ্যে দিয়ে তার ভেতরে একে একে আদা, রসুন, লংকা সবকিছুর পেস্ট দিয়ে বেশ কিছুক্ষণ ভালোভাবে কষতে হবে। তারপর ওর মধ্যে জিরাগুড়ো ও হলুদ গুঁড়ো দিয়ে সব মসলাগুলোকে ভালোভাবে কষাতে হবে। মামী বিরিয়ানিতে ধনে গুঁড়ো ব্যবহার করেননি, তবে আমি বাড়িতে মাংস তৈরি করার সময় ধনে ব্যবহার করি।
মসলাটা খুব ভালো হবে কষে যাওয়ার পর, যখন মসলা থেকে তেল ছাড়তে শুরু করবে, তখন ওর মধ্যে পরিমাণ মতো জল দিয়ে দিতে হবে। প্রথমে আমিও অবাক হয়েছিলাম মামি মাংসগুলোকে ভালোভাবে না ভাজলে আগে এটার স্বাদ কেমন হবে খেতে এটা ভেবে।
যাইহোক জলটা একটু ফুটে উঠলে তার মধ্যে ধীরে জল ছড়িয়ে রাখা মাংসগুলো দিয়ে দিলো। ,ঢাকনা দিয়ে ঝোলের সাথে মাংসগুলোকে খুব ভালোভাবে ফুটতে দিতে হবে, যেহেতু চিকেন সেদ্ধ হতে বেশি সময় লাগে না, তাই ঢাকা দিয়ে রান্না করলে চিকেনগুরো অনেকটা সেদ্ধ হয়ে যাবে।
মাংসগুলো অনেকটা সেদ্ধ হয়ে এলে, তার মধ্যে আগে থেকে ভেজে রাখা আলুগুলো দিয়ে দিতে হবে এবং সামান্য বিরিয়ানি মসলা উপর থেকে ছড়িয়ে,,খুব ভালোভাবে মাংস এবং আলুগুলো সেদ্ধ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
যাইহোক এরপর মাংসটাকে ঢাকা দিয়ে কিছুক্ষণ রেখে দিতে হবে। অন্যদিকে বিরিয়ানির চাল অনেকক্ষণ আগেই ভিজিয়ে রেখেছিলো। জলটা ভালোভাবে ফুটে উঠলে বিরিয়ানির চালগুলো দিয়ে মামি অল্প কিছুক্ষণ ফুটিয়ে নিলো।
মোটামুটি ভাতটা যাতে ৬০% সেদ্ধ হয়, এই অবস্থায় ভাতগুলো নামিয়ে নিলো। এরপর তিনি যে হাড়িতে দম দেবে,সেই হাঁড়িতে বেশ কিছুটা ঘি একেবারে নিচের দিকে মাখিয়ে নিলেন।
এরপর চালগুলো দিয়ে তার ওপরে বেরেস্তা ও খোয়া ক্ষীরের মিশ্রণটা ছড়িয়ে দিয়ে, সামান্য পরিমাণ বিরিয়ানি মসলা ও লেবুর রস দিতে হবে।
এরপর কিছুটা টক দই একই ভাবে ভাতের উপরে ছড়িয়ে দিয়ে, প্রয়োজন অনুসারে মাংস এবং আলু দিয়ে দিতে হবে। আর অবশ্যই সামান্য পরিমাণ ঝোল ভাতের চারিদিক দিয়ে ছড়িয়ে দিতে হবে।
এরকম ভাবে প্রতি লেয়ার একই জিনিস দিয়ে, একেবারে শেষ লেয়ারে ব্যবহার করার জন্য যে লেবুর রসটুকু থাকবে, তার মধ্যে প্রয়োজন অনুসারে গোলাপ জল ও কেওড়া জল মিলিয়ে নিতে হবে, যাতে শেষ লেয়ারে সেটা ব্যবহার করা যায়।
একেবারে শেষ পর্যায়ে সমস্ত কিছু পর পর দেওয়ার পর, ওপর থেকে কেওড়া ও গোলাপজল মিশ্রিত লেবুর রসটা দেওয়ার পর ৫ থেকে ৬ ফোটা আঁতর দিয়ে দিতে হবে, যাতে বিরিয়ানির আসল গন্ধ বেরোয়। তারপর বাকি ঘি ছড়িয়ে দিতে হবে।
এরপর আটা টুকু নিয়ে ভালোভাবে মেখে, হাড়ির মুখটায় এমন ভাবে লাগিয়ে দিতে হবে যাতে, উপর থেকে ঢাকনা লাগিয়ে দম দিলে কোনো ভাবেই ভাঁপ বাইরে বেরিয়ে না যায়। তাহলে কিন্তু দমটা ভালো হবে না। শেষে গ্যাসের ফ্লেম একেবারে কমিয়ে দিয়ে বিরিয়ানিটাকে দমে দিতে হবে প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ মিনিট মতো।
চালগুলো যেহেতু সম্পূর্ণ সেদ্ধ হয়নি, এই কারণেই মামী অনেক পরিমাণ ঝোল এই বিরিয়ানিতে ব্যবহার করেন, যাতে তার গন্ধ যেমন সব জায়গাতে ছড়ায়। পাশাপাশি সেই জলে ভাবে ভাতের বাকি অংশটাও যাতে সুন্দরভাবে সেদ্ধ হয়। আমি বাড়িতে বিরিয়ানি করলে কখনোই এইভাবে মাংস রান্না করি না। কারণ আমি মাংসটাকে মসলার সাথে খুব ভালো কষিয়ে তবে রান্নাটা করবো। তবে মামী যেভাবে রান্না করেছিল সেটাও কিন্তু দুর্দান্ত ছিল।
বেরেস্তা ও খোয়া ক্ষীরের মিশ্রণটা সত্যি বিরিয়ানির স্বাদটাকে অনেকখানি বদলে দিয়েছিলো। আর বিরিয়ানিতে এইভাবে যে লেবুর রস ব্যবহার করা হয়, এ বিষয়ে আমার সত্যিই ধারণা ছিল না। সত্যি কথা বলতে বিরিয়ানিটার প্রতিটি ধাপ যখন আমি দাঁড়িয়ে দেখেছিলাম, আমি ভাবিনি যে এটা খেতে আদেও এতটা সুন্দর হবে।
তবে ফাইনালি যখন ৩৫ মিনিট বাদে মামি শাশুড়ি বাড়ির মুখটা খুলেছিল সারা ঘর বিরিয়ানির গন্ধে ভরে গিয়েছিল। এমনকি খেতে বসেও সকলেই কিন্তু বিরিয়ানির প্রশংসা করেছিল। এমনকি আমার নিজেরও ব্যক্তিগতভাবে খুব ভালো লেগেছিলো।
একটা জিনিসকে কত ভাবে রান্না করা যায় এবং একটি জিনিস ব্যবহার করলে তার স্বাদ কতটা ভিন্ন হয় অথবা, কোনো কোনো জিনিস ব্যবহার না করলেও স্বাদে কোনো পরিবর্তন আসে না, এগুলো কিন্তু শেখার বিষয়। ঠিক যেমনটা আমিও একটু ভিন্ন স্বাদের বিরিয়ানি তৈরি করা শিখলাম।
আমি চেষ্টা করেছি প্রতিটি জিনিসের ডিটেইলস লেখার মাধ্যমে ও ছবির মাধ্যমে প্রকাশ করার, তবে যদি কোথাও বুঝতে অসুবিধা হয় অবশ্যই আমাকে মন্তব্যের মাধ্যমে জানাবেন। বিষয়টি সম্পর্কে আপনাদের অবগত করার চেষ্টা করবো। আজকের লেখা তাহলে এখানেই শেষ করছি। সকলে খুব ভালো থাকবেন
আজ আপনি আমার খুব পছন্দের একটা রেসিপি শেয়ার করেছেন। বিরিয়ানি আমি ভীষণ পছন্দ করি। রান্নার পদ্ধতিতে ভিন্নতা থাকার কারনে মূলত স্বাদের পার্থক্য দেখা যায়। একই রেসিপি একেকজন একেক পদ্ধতিতে তৈরি করেন। আজ আপনি ভিন্ন পদ্ধতিতে বিরিয়ানি রান্না করেছেন এবং সেটা আমাদের মাঝে সুন্দরভাবে শেয়ার করেছেন। আমি যেহেতু রান্নার ব্যাপারে অনেক কাঁচা তাই বিরিয়ানি তৈরির সকল পদ্ধতি আমার কাছে জটিল মনে হয়। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ সুন্দর রেসিপি শেয়ার করার জন্য। ভালো থাকবেন।
We would like to appreciate your presence and activities towards the community. Our community also likes to inspire you to participate in the engagement by visiting others' posts and making insightful comments.
Regards
@tanay123( Moderator )
Incredible India
Date:- 19/3/2025
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনার রেসিপিটি পড়তে খুব ভালো লাগলো! বিরিয়ানি যে কত ধরনের হতে পারে, তা সত্যিই নতুনভাবে শিখলাম। খোয়া ক্ষীর আর বেরেস্তা মিশ্রণটা বিরিয়ানির স্বাদকে নতুনভাবে সাজিয়েছেন আপনে।
চিকেন বিরিয়ানি প্রিপারেশনটি অসাধারণ! আলু ও মাংসের সঙ্গে খোয়া ক্ষীর মিশিয়ে যে নতুন স্বাদ সৃষ্টি হয়েছে, তা সত্যিই অসাধারণ হয়েছে। এরকম দারুণ রেসিপি শেয়ার করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ দিদি!
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
@sampabiswas তোর আর তোর মামীর হাত দেখি একইরকম!
যাক এমনিতেই জানিয়েছিলি তোদের ভীষণ মিল আছে।
বলছি সবসময় এইভাবে বিরিয়ানি বানিয়ে নিজেরাই খাবি?
বাঙালির যে লজ্জা হারিয়ে যাচ্ছে তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ দিচ্ছিস, কি আর বলব বেশি কিছু তো এখানে আবার লেখার উপায় নেই, তাই আর সবার মত খুব সুন্দর দেখতে হয়েছে ইত্যাদি ইত্যাদি লিখতে পারলাম না!
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আরে বাহ আপনি তো দেখছি চিকেন বিরিয়ানি অন্যরকম ভাবে তৈরি করেছেন এবং অন্যরকম স্বাদের কথা আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন একদিন আমিও আপনার পোস্ট পরিদর্শন করে যতটুকু বুঝতে পারলাম ততটুকু দিয়ে একদিন এভাবে চিকেন বিরিয়ানি তৈরি করার চেষ্টা করব অসংখ্য ধন্যবাদ চমৎকার বিরিয়ানি তৈরি করার পদ্ধতি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য ভালো থাকবেন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit