Contest of July #2 by @sduttaskitchen|My talent, my pride!

in hive-120823 •  3 months ago  (edited)
IMG_20240723_062557.jpg
"চিকেন বিরিয়ানি"

Hello,

Everyone,

আশা করি আপনারা সকলে ভালো আছেন,সুস্থ আছেন।গত বেশ কয়েকদিন ধরে শশুর মশাইকে নিয়ে অনেক বেশি ব্যস্ততায় দিন পার করছি, তাই কনটেস্টে অংশগ্রহণ করতে দেরি হয়ে গেলো। তারপরেও আজ শেষ দিনে অংশগ্রহণ করতে চলেছি, এডমিন ম্যাম কর্তৃক আয়োজিত জুলাই মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহের কনটেস্টে। চলুন তাহলে শুরু করি,
প্রথমেই আমি কনটেস্টের নিয়মানুসারে, আমার তিনজন বন্ধু @mou.sumi, @munaa, ও @ahlawat কে এই কনটেস্টে অংশগ্রহণ করার জন্য আমন্ত্রণ জানাই,

"When did your interest grow in your chosen talent?"

প্রথমেই জানাই আমি যে প্রতিভাটি আপনাদের সামনে তুলে ধরার কথা ভেবেছিলাম, সত্যিই সেটা বর্তমানে তুলে ধরার মতন পরিস্থিতি নেই। কারণ কনটেস্টের নিয়ম অনুসারে সেই বিষয়টিকে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করতে হবে। সেই কারণেই হয়তো আমি আমার অন্য প্রতিভা আজ পোস্টের মাধ্যমে শেয়ার করবো।

আপনারা অনেকবারই আমার লেখায় পড়েছেন যে রোজকার রান্না করতে আমি পছন্দ করি না। তবে বিশেষ কোনো পদ বা একটু অন্য রকমের কোনো রেসিপি, রান্না করতে আমার বেশ ভালই লাগে এবং রান্না করার পর সেটা খেয়ে সকলে ভালো বলে আরও বেশি ভালো লাগে।

আমার মনে হয় আমাদের প্রত্যেকটি মেয়ের রান্নার প্রতি একটা বিশেষ ঝোঁক ছোটবেলা থেকেই থাকে। তাই আমার ভিতরে কখন এই বিষয়টির প্রতি আকর্ষণ জন্মেছে ,সত্যিই আমি সঠিক ভাবে বলতে পারব না। তবে হ্যাঁ নতুন কোনো পদ খেলে, সেটিতে কি কি উপকরণ ব্যবহার করা হয়েছে, কোন ফ্লেভারটি সুন্দরভাবে পাওয়া যাচ্ছে, এইসব বিষয়ে জানার কৌতুহলটা আমার বেশ আগে থেকেই ছিল।

আর ঠিক সেই কারণেই আমি নতুন কোনো পদ রান্না করলে তার ভেতরে নতুন কোনো ফ্লেভার দেওয়ার চেষ্টা করি। এমন কোনো মসলা দেওয়ার চেষ্টা করি যাতে সেই রান্নার টেস্টটি আরো কিছুটা দেখতে পাই এইরকমই বেশ কিছু এক্সপেরিমেন্ট অনেক ক্ষেত্রেই অনেকের বেশ ভালো লাগে পাশাপাশি ব্যক্তিগতভাবে আমিও সেটা পছন্দ করি

1672344690977_010726.jpg

"Do you get any training, or do you learn your talent on your own?"

রান্নার ক্ষেত্রে প্রতিটি মেয়ের হাতে খড়ি বোঝায় তার মায়ের হাত ধরেই হয়। একদম শুরুতে যখন রান্নার প্রতি আগ্রহ জাগে, তখন চা, ডিমের অমলেট করা, ডিম সেদ্ধ করা এই ছোটখাটো রান্না দিয়ে আমাদের প্রত্যেকের হাতে ঘড়ি হয

এরপর ধীরে ধীরে প্রতিটি বিষয় আমরা রপ্ত করি এবং এইভাবেই আমাদের রান্নার হাতে খড়ি হয়। তবে অনেকেই আছেন যারা হোটেল ম্যানেজমেন্ট নিয়ে পড়াশোনা করেন এবং সেখানে তারা রান্নার ক্ষেত্রে বিশেষ ট্রেনিং পান। এছাড়াও অনেকেই আছেন যারা রান্নার বিভিন্ন পার্ট অর্থাৎ বেকিং, কাটিং ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয়ে, বিভিন্ন জায়গা থেকে ট্রেনিং নিয়ে থাকেন।

তবে আমার কথা যদি বলতে হয় আমি কোথাও থেকে ট্রেনিং নেইনি। আমার প্রথম হাতে খড়ি মায়ের হাত ধরে। তবে বিভিন্ন পদ রান্না যদি আমি শিখে থাকি, তাহলে সেটা আমার শাশুড়ি মায়ের হাত ধরেই। কারণ বিয়ের আগে মা খুব বেশি কিছু রান্না করতে দিত না। আমি বরাবর রুটি এবং লুচি খুব ভালো তৈরি করি, তাই বিয়ের আগে মাঝেমধ্যে সেগুলোই তৈরি করে সকলকে খাওয়াতাম। তাই এক্ষেত্রে যতটা কৃতিত্ব আমার মায়ের, ততটাই কৃতিত্ব আমার শাশুড়ি মায়েরও।

1672344690977_010726.jpg

"How can this talent be useful for you and others?"

খাবার এমন একটা জিনিস সে যেটা আমাদের বেঁচে থাকার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই যদি ভালো খাবার তৈরি করে আমি যদি নিজে খেতে পারি, পাশাপাশি পরিবারের সকলকে খাওয়াতে পারি তাহলে সেটা আমাদেরকে ভালোভাবে সুস্থভাবে বাঁচতে সাহায্য করে। যদিও খাবারের ক্ষেত্রে আমাদের সব সময় একটু বেশি মসলাযুক্ত খাবার খেতে ভালো লাগে, তবে সেটা শরীরের জন্য খুব বেশি ভালো নয়।

তাই রোজকার সাদামাটা রান্না আমার খুব বেশি করতে ভালো লাগে না। সেগুলো বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আমার শাশুড়ি মা করেন। তবে মাঝেমধ্যে অন্য রকম খাবার খেতে ইচ্ছে হয়, তখন সেই দায়িত্বটা আমি নিয়ে থাকি এবং বেশ যত্ন সহকারে সুস্বাদু রান্না তৈরি করি। যেটা খেয়ে শুভ খুব খুশি হয় আর পাশাপাশি আমিও।

শশুর শাশুড়ি যেহেতু চিকেন, ডিম কিছুই খায় না তাই তাদেরকে খাওয়ানো সৌভাগ্য না হলেও, মাঝেমধ্যে আমরা দুজন কিন্তু বেশ আনন্দ করেই খাই। আর যেহেতু এই ধরনের খাবার আমি বাড়িতে রান্না করি, তাই স্বাস্থ্যসম্মত অথচ সুস্বাদু খাবার খাওয়ার সুযোগ হয়। বেশি পয়সা খরচ করে হোটেল থেকে অস্বাস্থ্যকর খাবার কিনে আনার প্রয়োজন হয় না।

1672344690977_010726.jpg

"Do you believe we all have some hidden talents? Justify."

একদমই তাই আমি বিশ্বাস করি আমাদের প্রত্যেকের ভেতরেই কোনো না কোনো প্রতিভা অবশ্যই আছে। প্রয়োজন শুধু সেই প্রতিভা গুলোকে চিনে, সেগুলোকেই আরো ভালোভাবে রপ্ত করার চেষ্টা করা। তাহলে সেই প্রতিভা গুলো আরও বেশি করে বিকশিত হতে পারবে।

আর এক্ষেত্রে কখনো কখনো অভিভাবকদের ভূমিকাও অনেক গুরুত্বপূর্ণ হয়ে থাকে। কারণ শিশুরা ছোট বয়সে তাদের ভেতরকার প্রতিভা গুলোকে সঠিকভাবে বুঝে উঠতে না পারলেও, সন্তানদের ভেতরের প্রতিভা গুলি অভিভাবকদের নজরে অবশ্যই আসে। তাই সেই অনুযায়ী যদি সন্তানকে এগিয়ে দেওয়া যায়, তাহলেই হয়তো অনেক সুপ্ত প্রতিভা বিকশিত হতে পারবে।

1672344690977_010726.jpg

1672344690977_010726.jpg

যাইহোক চলুন এবার আমি আমার রান্না করা সুস্বাদু চিকেন বিরিয়ানির রেসিপি শেয়ার করি। যেটি খুব কম সময়ে তৈরি করা সম্ভব। কারণ আপনারা প্রত্যেকেই জানেন বিরিয়ানি তৈরি করতে অনেকখানি সময়ের প্রয়োজন হয়, পাশাপাশি অনেক ধৈর্যেরও দরকার। এই কারণে অনেকেই দোকান থেকে কিনে এনে খেতে পছন্দ করেন।

কিন্তু আমি দোকানের বিরিয়ানি খাই না। তাই নিজের মতন করে বাড়িতে কিভাবে এই বিরিয়ানি তৈরি করি, তার রেসিপি আজ শেয়ার করব আপনাদের সাথে, -

প্রথমেই বলি বিরিয়ানি রান্না করতে আমি কি কি উপকরণ নিয়েছি-

"বিরিয়ানি রান্নার জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ"

IMG_20240519_134909.jpg
উপকরনপরিমাণ
বাসমতি চাল৭০০ গ্রাম
চিকেন১ কেজি
আলু৮-১০ টুকরো
পেঁয়াজ৫-৬ টি(বড় সাইজের)
আদা১ ইঞ্চি
রসুন১ টি (মাঝারি সাইজের)
কাঁচা লঙ্কা১০-১২ টি
সাদা তেল১ কাপ
জিরে গুঁড়ো ও ধনে গুঁড়ো৪-৫ চা চামচ
গরম মশলা গুঁড়ো½ চা চামচ
হলুদসামান্য
লবনহাফ কাপ
গোটা গরম মশলাফোরনের জন্যে
তেজপাতাফোরনের জন্যে
গোলাপজলপ্রয়োজন অনুসারে
কেওড়াজলপ্রয়োজন অনুসারে
আঁতর৬-৭ ফোঁটা
বিরিয়ানি মশলা৪-৫ চা চামচ
বিরিয়ানির রংএক চিমটি
গুঁড়ো দুধ২ চা চামচ
ঘি৭-৮ চা চামচ

1672344690977_010726.jpg

"বিরিয়ানি রান্নার পদ্ধতি"

IMG_20240519_125147.jpg
IMG_20240519_125139.jpg
IMG_20240519_125134.jpg

সবার প্রথমে চিকেনগুলোকে ভালো করে ধুয়ে জল ঝরানোর জন্য রেখে দিতে হবে। অন্যদিকে বিরিয়ানিতে দেওয়ার জন্য আলুগুলো টুকরো করে কেটে নিয়ে, প্রয়োজনীয় পেঁয়াজ গুলো কুচিয়ে নিতে হবে। পেঁয়াজ একটু বেশি পরিমাণে লাগবে, যেহেতু বেরেস্তা বানানো হবে। আদা ও রসুনের খোসা ছাড়িয়ে কাঁচা লঙ্কার সাথে একটা পেস্ট তৈরি করে রাখতে হবে।

1672344690977_010726.jpg

IMG_20240519_125205.jpg
IMG_20240519_140940.jpg

গুঁড়ো দুধ একটা ছোট বাটিতে হালকা গরম জল নিয়ে, ভালো করে ধুয়ে, তার মধ্যে বিরিয়ানির রংটা মিশিয়ে রাখতে হবে। অন্যদিকে বাসমতি চালের ভাতগুলো, গোটা গরম মশলা ও তেজপাতা ফোরণ দিয়ে, ৮০ শতাংশ ফুটিয়ে সেগুলোকে রেখে দিতে হবে আলাদা ভাবে।

1672344690977_010726.jpg

IMG_20240519_125159.jpg
IMG_20240519_130109.jpg
IMG_20240519_125153.jpg
IMG_20240519_131718.jpg
IMG_20240519_125831.jpg
IMG_20240519_140929.jpg

এরপর যে হাড়িতে বিরিয়ানি তৈরি করবো, সেই হাড়ি গ্যাসে বসিয়ে তার মধ্যে অল্প ঘি এবং সাদা তেল দিয়ে ভালো করে গরম করে নিতে হবে। এরপর কুচিয়ে রাখা সমস্ত পেঁয়াজ ওই তেলের মধ্যে দিয়ে, ভালো করে ভাজতে হবে যতক্ষণ পর্যন্ত বেরেস্তার রং না আসে।

1672344690977_010726.jpg

IMG_20240519_131749.jpg
IMG_20240519_134419.jpg

বেশ কিছুক্ষণ নাড়াচাড়া করে ভাজার পর, যখন পেঁয়াজগুলো লালচে হয়ে আসবে, তখন তার থেকে অর্ধেকটা পেঁয়াজ তুলে রাখতে হবে বেরেস্তা হিসেবে। বাকি ভেজে রাখা পেঁয়াজের মধ্যে পরিমাণ মতো জল দিতে হবে। যাতে করে ওই জলের মধ্যে আলু ও চিকেন গুলো সিদ্ধ করা সম্ভব হয়।

1672344690977_010726.jpg

IMG_20240519_132231.jpg
IMG_20240519_134809.jpg

এরপর ওই জলের মধ্যে আলু দিয়ে সামান্য পরিমাণে লবণ দিয়ে দিতে হবে। যাতে করে একটু তাড়াতাড়ি সিদ্ধ হয়। এরপর বেশ কিছুক্ষণ হাঁড়ি ঢাকা দিয়ে রাখতে হবে। আলু যখন কিছুটা সিদ্ধ হয় আসবে, তখন জল ঝরিয়ে রাখা চিকেন গুলো জলের মধ্যে দিয়ে, একে একে সমস্ত বাটা মসলা দিয়ে দিতে হবে। তার সাথে সকল গুঁড়ো মসলা দিয়ে, চিকেনগুলোর সাথে আলুগুলোকে খুব ভালোভাবে কষিয়ে নিতে হবে, যতক্ষণ পর্যন্ত সবটুকু সিদ্ধ না হয়।

1672344690977_010726.jpg

IMG_20240519_140923.jpg
IMG_20240519_141207.jpg

আলুগুলো ভালোভাবে সিদ্ধ হয়ে এলে একটা চামচের সাহায্যে আলাদা করে তুলে রাখতে হবে। তারপর ওই মাংসের মধ্যে সামান্য গোলাপজল, কেওড়া জল ও আতর দিয়ে ভালো করে আরো কিছুক্ষণ নাড়াচাড়া করে, ঝোলের মধ্যে থেকে চিকেনের পিস গুলো আলাদা করে তুলে নিতে হবে।

1672344690977_010726.jpg

IMG_20240519_141149.jpg
IMG_20240519_141449.jpg

এরপর হাড়িতে থেকে যাওয়া ঝোল টাকে ঘুরিয়ে হাড়ির চারপাশে লাগিয়ে দিতে হবে এবং এক এক করে বিরিয়ানির জন্য লেয়ার তৈরি করতে হবে। এই লেয়ারের মাঝখানে বেরেস্তা, বিরিয়ানির মসলা এবং দুধের সাথে গুলিয়ে রাখা বিরিয়ানির রংটি অল্প পরিমাণে করে দিতে হবে।

1672344690977_010726.jpg

IMG_20240519_142444.jpg
IMG_20240519_145627.jpg

ভাত, আলু ও মাংসের লেয়ার গুলোকে সুন্দর করে সাজিয়ে উপরের দিকে থেকে যাওয়া বেরেস্তা গুলো ও গুলে রাখা রংটা দিয়ে, ভালো করে বেশ কিছুটা বিরিয়ানি মসলা ছড়িয়ে অল্প পরিমাণে ঘি উপর থেকে দিয়ে, পরিমাণ মতো গোলাপ জল, কেওড়া জল ও আঁতড় দিয়ে দিতে হবে। এরপর হাড়ির ঢাকনা বন্ধ করে, খুব ভালোভাবে দম দিতে হবে ১৫ থেকে 20 মিনিটের জন্য।

IMG_20240519_142444.jpg

এরপর ঢাকনা তুলে গরম গরম পরিবেশন করবেন চিকেন বিরিয়ানি। যেটা খেতে অসাধারণ হয়। যদিও আমি চিকেনের পিসগুলো ছোট রেখেছি নিজের পছন্দ অনুযায়ী। আপনারা চাইলে পিসগুলোকে আরও একটু বড় সাইজের করে নিতে পারেন।

এই পদ্ধতিতে বিরিয়ানি করলে অনেকটাই সময় কম লাগে। কারণ আমি অন্যভাবেও বেশ কয়েকবার বিরিয়ানি করে দেখেছি, তাতে সময় আরও কিছুটা বেশি লাগে। যদি এইভাবে বাড়িতে বিরিয়ানি তৈরি করেন, আমার বিশ্বাস দোকানের বিরিয়ানির থেকে স্বাদ কোনো অংশে কম হবে না।

যাইহোক আপনাদের কেমন লাগলো আমার এই প্রতিভার কথা, অবশ্যই মন্তব্য করে জানাবেন। প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী সকলের জন্য শুভকামনা রইলো। ভালো থাকবেন। শুভরাত্রি।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  
Loading...

Looks yummy yummy.. Thanks for the recipe.. Definitely gonna your way of making Curry..