|
---|
Hello,
Everyone,
আশাকরি আপনারা সকলে ভালো আছেন, সুস্থ আছেন এবং আপনাদের সকলের আজকের দিনটি অনেক ভালো কাটেছে।
আজ আমি অংশগ্রহণ করতে চলেছি আমাদের কমিউনিটিতে আয়োজিত সাপ্তাহিক কনটেস্টে। ইতিমধ্যে যার বিষয়বস্তু সম্পর্কে আপনারা সকলেই অবগত হয়েছেন। চলুন তাহলে দেরি না করে, আমি আমার মতামত আপনাদের সকলের সাথে শেয়ার করি, -
যদিও নেতা একজন একক ব্যক্তি। তবে এই একজন নেতা তৈরি হওয়ার পিছনে আরও বেশ কিছু মানুষের অবদান থাকে। অর্থাৎ আপনি, আমি চাইলেই নিজেরা নেতা হতে পারবো না। যদি কিনা আমাদের সাথে আরও কিছু মানুষ গোষ্ঠীবদ্ধ ভাবে কোনো উদ্দেশ্য পূরণের জন্য এগিয়ে চলে।
নেতা বলতেই আমাদের প্রত্যেকের প্রথমেই যাদের কথা মনে পড়ে তারা হলেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা। সত্যি কথা বলতে শুধুমাত্র রাজনৈতিক পরিপ্রেক্ষিতেই নেতা তৈরি হয় এমনটা নয়। আমরা যদি আমাদের জীবনের প্রতিটা ক্ষেত্রে সঠিকভাবে খেয়াল করি, তাহলে দেখতে পাবো আমাদের জীবনে বিভিন্ন সময়, বিভিন্ন নেতার সাথে পরিচয় হয়।
যৌথ পরিবারে আমরা যেমন পরিবারের সব থেকে বয়স্ক ব্যক্তির নির্দেশ অনুসারে চলি, স্কুল জীবনে আমরা যেমন শিক্ষক-শিক্ষিকাদের নির্দেশ অনুসারে চলি, কর্মজীবনে আমরা যেমন আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অনুসারে কাজ করি, এদের সবাইকেই আমরা নেতা হিসেবে আখ্যা দিতে পারি।
কারণ এরা নিজেদের নেতৃত্বে বেশ কিছু মানুষকে জীবনের সঠিক দিক নির্দেশ দেন বা নির্দিষ্ট লক্ষ্য পূরণে এগিয়ে চলার জন্য উৎসাহ যোগান। তাই নিজেদের জায়গা থেকে এরা প্রত্যেকেই নেতা, যাদের নেতৃত্ব অনুসরণ করে আমরা আমাদের জীবনের পথ চলি।
|
---|
জীবনে ক্ষেত্রবিশেষে অনেক নেতাই আমাদের চোখে পড়ে, তবে তারা সকলেই যে ভালো নেতা হবে এমনটা নয়। অনেকেই আছেন ব্যক্তি হিসেবে ভালো, কিন্তু নেতা হিসেবে একটি দলে বা গোষ্ঠীতে নেতৃত্ব দানে সিদ্ধহস্ত নন। তখন তাকে আমরা ভালো মানুষ বলতে পারি,তবে ভালো নেতা নয়।
একজন ভালো নেতা হতে গেলে শুধুমাত্র ভালো মানুষ হওয়া যথেষ্ট নয়। আরও কিছু গুন তার মধ্যে থাকতে হবে। ব্যক্তিগত ভাবে আমি মনেকরি একজন ভালো নেতার মধ্যে সততা, ধৈর্য্য, একাগ্ৰতা, সহনশীলতা, পরোপকারী মনোভাব, অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করার মতো সাহস, হার না মানার মতো জেদ ও পুনরায় লড়াই করার মতো মনের জোর, এই ধরনের বিভিন্ন গুন থাকা উচিত।
এছাড়াও একই সাথে বিভিন্ন মানসিকতাসম্পন্ন মানুষকে একই পথে চালিত করার মতো কৌশল জানাও আবশ্যক। তবেই তিনি সেই দলকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবেন, যে দলে ভিন্ন মানসিকতার মানুষ যুক্ত থাকেন। আর এই সমস্ত গুনের সমারোহে একজন মানুষ প্রকৃত নেতা হয়ে ওঠেন।
|
---|
এই প্রশ্নের কিছুটা উত্তর আমি উপরের প্রশ্নেই দিয়েছি। নেতা হলেন একজন মানুষ, যিনি একটি দলের অনেক মানুষকে সততার সাথে চালিত করে জীবনের বিভিন্ন লক্ষ্য পূরনের জন্য উদ্ধুদ্ধ করেন। যে ব্যক্তির মধ্যে থাকা বিভিন্ন গুনাবলী যখন অন্য মানুষ অনুসরণ করে, তখন সেই ব্যক্তি হয়ে ওঠেন অন্যের জীবনের নেতা স্বরূপ।
আর নেতৃত্ব হলো সেই গুনাবলী যারা দ্বারা একজন সাধারণ মানুষ নেতা হয়ে ওঠেন। বিভিন্ন মানসিকতার মানুষ একটি মানুষের যে গুন গুলির দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে, একত্রিত হয়ে জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট লক্ষ্য পুরণে এগিয়ে চলে, সেই গুনই নেতৃত্ব।
|
---|
যেমনটা আমি প্রথমেই বলেছি নেতা সব সময় যে রাজনৈতিক দলের হতে হবে এমনটা নয়। জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে চলার সময় আমরা বিভিন্ন মানুষের সাথে পরিচিত হই, যাদের মধ্যে নেতৃত্ব দেওয়ার সমস্ত গুণাবলী থাকে।
এক্ষেত্রে আমার জীবনের আদর্শ উদাহরণ হলেন আমাদের অ্যাডমিন ম্যাম। আপনারা সকলেই জানেন ব্যক্তি জীবনে তিনি আমার কোনো আত্মীয় বা পরিচিত নন, কর্ম ক্ষেত্রেই তার সাথে আমার প্রথম পরিচয়।
চাকরির সূত্রে যখন একটি এনজিওর সাথে আমি যুক্ত হই, তখন আমার সাথে আরও কয়েকজন সেই অফিসেই যোগদান করেছিলেন। ব্যক্তি হিসেবে আমরা সকলেই ভিন্ন ছিলাম, আমাদের প্রত্যেকের বড় হয়ে ওঠা ভিন্ন পরিবেশে, তাই আমাদের মানসিকতাও ভিন্ন হবে এটা খুব স্বাভাবিক।
মানুষ হিসেবে আমরা কেউই পারফেক্ট নই। তাই ভালো-মন্দ সমস্ত গুণ আমাদের মধ্যে থাকে। তবে আমাদের প্রত্যেককে দিয়ে কাজ করানোর মাধ্যমে, একটা নির্দিষ্ট লক্ষ্য পূরণের দায়িত্ব ছিল অ্যাডমিন ম্যামের উপরে।
একটা অফিসে কাজ করতে গেলে বিভিন্ন রকমের দায়িত্ব পালন করতে হয়। আর এক এক জন এক এক ক্ষেত্রে দক্ষ হয়। তবে অদক্ষতাও আমাদের মধ্যে থাকে। তবে একসাথে এতগুলো মানুষের মধ্যে থেকে দক্ষতাকে কাজে লাগানো, আর অদক্ষতার জায়গাকে আরো দক্ষ করে তোলার যে প্রক্রিয়া, সেটি অ্যাডমিন ম্যাম একা সামলাতেন।
কখনো শাসনের স্বরে বোঝাতেন, কখনো আবার আদরের স্বরে। কখনো বন্ধু হিসেবে আমাদের সাথে মিশে যেতেন, আবার কখনো অভিভাবক হিসেবে জীবনের কঠিন পরিস্থিতি পার করার শিক্ষাও দিতেন। তবে তার মধ্যে যেটা সব থেকে বড় গুণ ছিল সেটি হল সততা, ধৈর্য্য ও মানবিকতা। যা আজও তার মধ্যে অক্ষুন্ন রয়েছে। কারণ শুধু নেতা হিসেবে নন, মানুষ হিসেবেই এই গুণগুলি তার মধ্যে বিদ্যমান।
অফিসে যোগদানের পর আমি নিজের মধ্যে অনেক পরিবর্তন বুঝতে শুরু করি। শুরুর দিকে আমি এমন অনেক কাজ করেছিলাম, যেটা ওনার জায়গায় অন্য কেউ হলে হয়তো সহ্য করতেন না। তবে তিনি ধৈর্য্য ধরে আমাকে সঠিক পথ দেখিয়েছেন। বুঝিয়েছেন কিভাবে ব্যক্তি জীবন কর্ম জীবনকে আলাদা রাখতে হয়। জীবনের বাস্তবতা কতখানি কঠিন হতে পারে, তার অনেকখানি শিক্ষা আমি ওনার থেকেই পেয়েছি।
আমার জীবনের চরমতম কঠিন পরিস্থিতিতে তিনিই একমাত্র, যিনি সব সময় আমাকে সাহস জুগিয়েছেন। আমাকে আত্মবিশ্বাসী করে তুলছেন।পায়ের তলার মাটি প্রত্যেকটা মেয়ের শক্ত হওয়া উচিত, এই ভাবনাটা তিনি আমার মধ্যে জাগ্রত করেছেন।
আজ এতগুলো বছর পার করে আমি এ কথা নিশ্চিত ভাবে বলতে পারি, আজও আমাদের কমিউনিটির একজন অ্যাডমিন হিসেবে তিনি আমাদের প্রত্যেককে সৎ পরামর্শ দেন, সঠিক পথে চালিত করেন। সর্বোপরি হাজার প্রতিকূলতার সত্ত্বেও জীবনে কখনো তাকে অসৎ পথ অবলম্বন করতে দেখিনি। কারণ তিনি সর্বদাই সততার পথ অবলম্বন করেন এবং অন্যকেও সেই শিক্ষাই দেন।**
আর সত্যি কথা বলতে আমিও ছোট থেকে আমার মায়ের কাছে শুনেছি, সততার থেকে বড় গুণ আর কিছুই নেই। তাই জীবনের যেকোনো পরিস্থিতিতে সত্যি কথা বলার মতন সাহস ছোটবেলা থেকেই পেয়েছি। আর এই একই গুণ ম্যামের মধ্যেও আছে।
তাই হয়তো আমার মধ্যে অনেক খারাপ গুণ থাকা সত্ত্বেও, এই একটা গুণের সামঞ্জস্যতার কারণে আজও আমাদের একসাথে পথ চলা। তাই আমার কাছে আমার জীবনে সব থেকে আদর্শ নেতা অ্যাডমিন ম্যাম, যার মধ্যে এমন অনেক গুণ আছে যেগুলো জীবনের প্রতিটা ক্ষেত্রে আমাকে মানুষ হিসেবে আরো উন্নত করতে অনুপ্রাণিত করে।
|
---|
এই ছিল আমার মতামত, যা আমি আপনাদের সকলের সাথে শেয়ার করলাম। নিয়ম অনুসারে অবশ্যই আমি আমার তিনজন বন্ধু @wirngo, @shuhad ও @karobiamin71 কে আমন্ত্রণ জানাই। আশাকরি তারাও এই কনটেস্ট অংশগ্রহণ করে তাদের নিজস্ব মতামত তারা আমাদের সাথে শেয়ার করবেন।