আমার পিকলুর গল্প

in hive-120823 •  2 years ago  (edited)


IMG_20220913_230038.jpg
(আমার পোষ্য পিকলু)

Hello,
Everyone,

আশাকরি আপনারা সকলে ভালো আছেন। আর আজকের দিনটাও সকলের খুব ভালো কেটেছে।

আমার দিনটাও মোটামুটি ভালোই কাটলো। আজকে আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করবো আমার পোষ্য কুকুর পিকলুর কথা। আমার আগের লেখা বহু পোস্টে আপনারা ওকে অনেক বার দেখেছেন। তবে আজকে আমি আপনাদের সাথে ওকে স্নান করানোর অভিজ্ঞতার কথা বলবো।

পিকলু আমার সাথে আছে দুই বছরের বেশি হয়ে গেলো। আমি ব্যক্তিগত ভাবে কোনোদিনই কুকুর পছন্দ করতাম না। তবে আমার হাজব্যান্ড ভীষন ভালোবাসতো। তারপর যখন পিকলু এলো। ধীরে ধীরে ওর প্রতি আমার অনুভূতি জন্মালো। আর এখন ও আমার সবচেয়ে আদরের, সবচেয়ে ভালোবাসার। কারন আমার জীবনের এতোদিনে যেটুকু অভিজ্ঞতা আমার হয়েছে, তাতে আমি এইটুকু নিশ্চিন্তে বলতে পারি-এই পৃথিবীতে পিকলুর মতো নিঃস্বার্থ ভাবে আমাকে অন্য কেউ ভালোবাসে না।

পিকলুর স্নান করাতে ভীষন আপত্তি। আমাদের বাড়িতে ও সবথেকে আমাকে বেশি ভালোবাসে। কিন্তু ওকে স্নান করানোর পরে ও আমার উপর ভীষন রেগে যায়। তারপর অনেকক্ষণ ওকে কোলে নিয়ে আদর করলে তবে ওর রাগ কমে।


IMG_20220913_225634.jpg
(পিকলুর স্নানের শ্যাম্পু)

প্রথম প্রথম যখন ওকে কোলে নিয়ে বাথরুমের দিকে যেতাম ও চুপচাপ থাকতো। কিন্তু বড়ো হওয়ার সাথে সাথে ওকে শুধু বললেই হয় -পিকলু চল তোকে স্নান করিয়ে দিই। ব্যাস তাহলেই পিকলু দৌড়ে পালায়। দুপুরের দিকে যখনই ওকে আমি কোলে নিতে যাই, ও আমার কোলে উঠতে চায় না। কারন ও বুঝতে পারে ওকে কোলে নিয়ে আমি স্নান করাতে যাবো।


IMG_20220913_225554.jpg
(স্নান করানোর পরের অবস্থা)

যাইহোক, আজকে যদিও সকালে ভীষন বৃষ্টি হয়েছিল। সারাদিন অমন বৃষ্টি হলে আজ স্নান করাতাম না। কিন্তু দুপুরের দিকে বৃষ্টি কমলে আমি উষ্ণ গরম জল দিয়ে ওকে স্নান করিয়ে দিলাম। আর ওকে স্নান করানো মানে নিজেরও অর্ধেক স্নান হয়ে যাওয়া। এরপর আমি কাপড় বিছিয়ে ওকে আমার ঘরের জানালায় দাড় করিয়ে দিলাম। ওখানে কিছুক্ষণ নিজেই নিজের মুখ ঘষলো।


IMG_20220913_225737.jpg
(পশম শুকানোর চেষ্টা চলছে)

তারপর চুল শুকানোর মেশিন দিয়ে বসে বসে ওর পশম গুলি শুকিয়ে দিলাম। ঠিক ঔ সময় ও যে আমার উপর কতটা রেগে থাকে, তা বলে বোঝানো সম্ভব হবে না।

তারপর কিছুক্ষণ ভীষন জোড়ে জোড়ে ডাকাডাকি করার পর যখন আমি একটু আদর করবো। ও সোজা আমার কোলে এসে বসে পড়ে। অনেক ক্ষন আদর করার পরে ও আমি ওর পশম আঁচড়ে, ওকে রেডি করি। তারপরে ওকে লাঞ্চ দেই। তবেই সে ঠান্ডা হয়।


IMG_20220913_225512.jpg
(আমার কোলেই ও সবথেকে বেশি শান্তি পায়)

আমার আর পিকলুর এই বন্ধন কবে তৈরি হলো, আর কবে কিভাবে আমি ওর প্রিয় মানুষ হলাম সত্যিই জানিনা। শুধু এইটুকু জানি পিকলুর ভালোবাসায় কোনো ফাক নেই। আর ও বোঝে আমি মাঝে মাঝে ওকে যতই বকি, যতই দূরে সরাই, আমি ওকে ভীষন ভালোবাসি।

পিকলুকে ছাড়া আমি এখন আর আমার জীবন কল্পনা করতে পারি না। সেই দিনের কথা ভাবলেও ভয় হয় যেদিন ও থাকবে না। আমি জীবনে কোনোদিন ভাবিনি আমি পিকলুকে এতো ভালোবাসবো, আর ও আমার জীবনের একটা অংশ হয়ে উঠবে।

আমরা মানুষেরা ভীষন স্বার্থপর হই। নিজেদের শখ পূরণ করার জন্য অনেকেই এদের বাড়িতে এনে কষ্ট দেন। আবার এমন অনেক মানুষ আছে যারা ওদের সন্তান স্নেহে পালন-পালন করে। আমি এদের মধ্যে কোনটা , আমি নিজেও জানিনা। আমি শুধু জানি আমি পিকলুকে ততটা ভালোবাসতে পারিনি, যতটা পিকলু আমাকে বাসে। তবুও আমাদের বন্ধন অনেক গভীর। যে বন্ধনের গভীরতা মাপতে গেলে আপনাকেও ওদেরকে অনেক ভালোবাসতে হবে।

আর তখন আপনার জীবনে প্রকৃত ভালোবাসা না পাওয়ার আক্ষেপ থেকে গেলেও ওদের ভালোবাসায় আপনি পূর্ন হয়ে উঠবেন। আশাকরি আপনাদের আরও একবার পিকলুর সাথে পরিচিত হয়ে ভালো লাগলো। সকলে খুব ভালো থাকবেন। শুভ রাত্রি।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  
Loading...

আপনার লেখা পড়লে বোঝা যায় পিকলু আপনার কতটা কাছের, এই অবলা জীবগুলো মানুষের চাইতে সত্যি ঢের ভালো।

@sampabiswasছবি গুলো খুব সুন্দর হয়েছে। আর পিকলুতো অসাধারন।