আ্যলেক্স রাদারফোর্ড রচিত 'আ্যাম্পায়ার অফ দ্যা মোঘল ' সিরিজের 'রাইডারস ফ্রম দ্যা নর্থ ' বইটি এক বারো বছর এর কিশোর এর জীবন কাহিনি। যার বাবা ছিলেন ফরগনার সুলতান। যিনি ১৪৯৪ সালে এক ভুমিকম্পে কার্নিশ এর কোনা ভেঙে মারা যান।
আর তার একমাত্র উত্তরাধিকারী বারো বছর এর কিশোর ছেলে আপাতদৃষ্টিতে সমাধান এর অতীত সমস্যার কেন্দ্রবিন্দুতে নিজেকে আবিষ্কার করে।তাকে তার বাবার ঘনিষ্ঠ ব্যাক্তি ওয়াজির খান জানান যে তার বাবার জানাজা শেষ হওয়ার পরেই তাকে এক কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
শুধু সিদ্ধান্ত নিলেই চলবে না সেই মতো কাজও করতে হবে আর সেটা নিজের হাতে। তবেই সে নিজের সুরক্ষিত থাকবে এবং ভবিষ্যতের সুলতান হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারবে। আর সেটা করতে না পারলে তাকেও তার বাবার সাথেই খুব দ্রুত মিলিত হতে হবে।
এই ছেলে ছিলো বিশ্বের দুই মহান মহান শাসক তৈমুর লং এবং চেঙ্গিস খানের উওরাধিকারি। বাবার দিক থেকে তৈমুর লং এবং মায়ের দিক থেকে চেঙ্গিস খানের বংশধর। যার কারনে তার রক্তধারায়ও বয়ে চলছে তাদেরই মতো সাহস ও সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা।
যার কারনে সেই কিশোর সেই মূহুর্তে তার বয়সের তুলনায় অনেক বড় ও এক কঠিন সিদ্ধান্ত নেয় এবং নিজেকে এই দুই বীরের যোগ্য উওরসুরী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার শপথ নেয়।
সে তার বাবার জানাজা শেষ হওয়ার পরে উজির কামরার খানের মাথা তার শরীর থেকে নিখুঁতভাবে আলাদা করে ফেলেন এবং এই মূহুর্তে তিনি এক নিষ্পাপ কিশোর থেকে হঠাৎ করেই বড়ো হয়ে যান। বলা যায় তিনি তার কৈশোর হারিয়ে ফেলেন সেই মূহুর্তে রাজনীতির শিকার হয়ে এবং নিজেকে ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক ব্যাক্তিত্ব হিসেবে গড়ে তোলার বীজ বপন করেন।
আপাতদৃষ্টিতে এই ঘটনা নিষ্ঠুরতায় পরিপূর্ণ মনে হলেও তার কিছুই করার ছিলো না। আর এসব প্রাসাদ ষড়যন্ত্র শক্ত হাতে দমন করতে না পারলে তাকে ও তার পরিবারকে চরম মূল্য দিতে হতো। এটা ছিলো তার জন্য 'ডু অর ডাই ' সিচুয়েশন।
কিশোর বাবর তার তার পূর্ব পুরুষ তৈমুর এর যোগ্য উওরসুরীতে পরিনত করার শপথ নেন। যদিও সেই মূহুর্তে সাম্রাজ্যের অধিকারী হওয়ার তুলনায় তার বয়স ছিলো বিপজ্জনক ভাবে কম।
তিনি বারো বছর বয়সে তৈমুরের রাজধানী তৎকালীন সময়ের সবচাইতে সুন্দর শহর সমরখন্দ দখল করেন।যদিও তার নিজের রাজত্ব ফরগনা আক্রান্ত হবার কারনে পরের দিনই সমরখন্দ ছেড়ে ফরগনার দিকে রওনা।দেন। মাত্র দুইদিন ছিলো তার কিংবদন্তির শহর সমরখন্দ দখলের সময়সীমা। পরবর্তী সময়ে অবশ্য তিনি পুনরায় সমরখন্দ দখল করেন।
পরবর্তী সময়ে তার অভিযানসমুহ দিল্লি থেকে ভুমধ্যসাগর, সমৃদ্ধ পারস্য থেকে ভলগার তীরবর্তী অরণ্যভূমি আমুল পাল্টে ফেলেছিলেন তিনি।
ফরগনার সুলতান হিসেবে নিজেকে ঘোষণা করতে প্রয়োজনীয় সংখ্যক গোত্রেপতি এবং সর্দারদের আনুগত্য লাভ করার পূর্বেই তার সালতানাতের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু হয়। এমনকি তার নিজের প্রান সংশয়ও দেখা দেয়। তবে তার পাশে বিজ্ঞ পরামর্শদাতা এবং সাহসী সেনাপতিরা থাকার কারনে এসব মোকাবিলা করতে সক্ষম হন।
তিনি ধীরে ধীরে প্রাপ্ত বয়স্ক হয়ে উঠেন এবং বুঝতে পারেন যে নির্ভিক ও সাহসী নেতাও বিশ্বাঘাতকতার শিকার হতে পারেন।
এই বইয়ে যেন ইতিহাসই জীবন্ত হয়ে উঠেছে আরো একবার। যারা ইতিহাসকে জানতে পছন্দ করেন। তাদের জন্য একটা পারফেক্ট বই এটা। যা একবার পড়া শুরু করলে শেষ করা না পর্যন্ত ছাড়া কঠিন।
আপনার পোস্ট করলে কিছু না কিছু নতুন নতুন গল্প জানতে পারি। যেমনটা আজকেও রাইডার্স ফ্রম দ্যা নর্থ গল্প সম্পর্কে জানতে পেরেছি। এসব গল্প বহু বছর পূরণের ইতিহাস।
এরকম নিত্য নতুন গল্প শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
রাইডার্স ফ্রম দা নর্থ বইটি মূলত মুঘল সম্রাট বাবুর কে নিয়ে লেখা। বই পড়লে কিছু না কিছু জানা সম্ভবই হয়।আমার নিজেরও বই পড়ার স্বভাব তাই বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরনের বই পড়ার চেষ্টা করি। আর এই সব বইয়ের কথাই টুকটাক আপনাদের সবার সাথে শেয়ার করি।
ভালো লাগলো আপনার মন্তব্য পড়ে। এত চমৎকার করে মন্তব্য করার জন্য আপনাকে
অসংখ্য ধন্যবাদ।
ভালো এবং সুস্থ থাকবেন সব সময় এই শুভকামনা কামনা রইল আপনার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit