মাতৃত্ব।

in hive-120823 •  yesterday  (edited)

infant-4025284_1280.jpg
pixabay

কয়েকদিন আগে আমাদের কমিউনিটির একটা কন্টেস্ট পোস্ট চোখে পরেছিলো। তখন ভেবেছিলাম যে ,এতে অংশগ্রহণ করবো। কারণ বিষয়বস্তুটা আমার কাছে খুব পছন্দ হয়েছিল। কিন্তু তখন লেখা সম্ভব হয় নাই কারণ তখন সিম্বা খুবই অসুস্থ ছিল।আমি ওকে নিয়েই ব্যাস্ত ছিলাম। ও চলে যাওয়ার পরে আর লেখার মতো মনের অবস্থা ছিল না।। আজকে লিখতে গিয়ে দেখলাম লেখা সাবমিট করার তারিখ চলে গেছে। দেখে মনটা কিছুটা খারাপ হয়ে গেলো। পরে ভাবলাম প্রতিযোতায় অংশ নেয়ার জন্যই যে লিখতে হবে এমন তো না। এখনো লেখাই যায়। আমি নাহয় আমার মতো করেই লিখলাম সবকিছু।

সাধারণ অৰ্থে মাতৃত্ব বলতে মেয়েদের মা হওয়া বা মা হবার মতো অবস্থাকেই বুঝায় ।আর এই মাতৃত্বকে জীবনের সবচাইতে কাঙ্ক্ষিত, প্রয়োজনীয় এবং গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসাবে বলে মনে করা হয়ে থাকে। আবার অনেকের মতো মাতৃত্বই নারী জীবনের একমাত্র লক্ষ্য। যদিও আমি এর থেকে সম্পূর্ণ ভিন্নমত পোষণ করি।

dog-4494554_1280.jpg
pixabay

মাতৃত্ব অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু এর মানে এই না যে কেউ জৈবিক ভাবে সন্তান ধারণ করতে না পারলে মা হতে পারবে না। আমার মতে ,একটা মেয়ের মাঝে যে কোনো সময় মাতৃত্ব প্রকাশ পেতে পারে। উদাহরন স্বরূপ বলা যায় , বছর দশকের একটা বালিকা যদি একটা কুকুরছানাকে পোষে তাহলে সেই কুকুরছানার প্রতি তার যে মমত্ববোধ সেটা তার মাতৃত্বেরই বহিঃপ্রকাশ। এর জন্য তাকে বিবাহিত কিংবা প্রাপ্তবয়স্ক হবার কোনো প্রয়োজন নেই।

আমার এক ভাবীর কোনো সন্তান না হবার কারণে সে একটা বাচ্চাকে দত্তক এনেছিল। সেই বাচ্চাকে সে মনের চাহিদা বা ভালোবাসা থেকেই হয়তো ব্রেস্টফিডিং করতো সবার অজান্তে। যদিও তার পক্ষে এধরণের কোনো অলৌকিক কিছু ঘটবে সেটা ধারণার বাইরে ছিল। কিন্তু সৃষ্টিকর্তার পরিকল্পনা বোঝা কঠিন। তার বুকে সেই সন্তানের প্রতি ভালোবাসা দেখেই হয়তোবা সৃষ্টিকর্তা স্তন্যধারা প্রবাহিত করে দেন এবং পরবর্তীতে আমার সেই ভাবি তার দত্তক কন্যাকে নিজের বুকের দুধ খাইয়েই প্রতিপালন করে।তার মা হবার জন্য তাকে জৈবিকভাবে সন্তান ধারণ করতে হয় নাই ।

woman-8552953_1280.png
pixabay

আমাদের দেশে একটা প্রচলিত ধারণা আছে যে একটা মেয়েকে তার বিয়ের পরে মা হতে হবে। না হলে তাকে অনেক সময় অনেক বাজে অভিজ্ঞতার মুখোমুখিও হতে হতে। আমার নিজেও একই ধরণের অভিজ্ঞতার মাঝ দিয়ে গিয়েছি। যদিও আমার কোনো ধরণের সমস্যা ছিল না। আমার স্বামী চাই নাই এজন্য বিয়ের পরে ২ বছর লেট হয়েছিল। কিন্তু তার এই না চাওয়ার খেসারত আমাকে দিতে হয়েছে।

আমার মতে ,বিয়ের পরে কোনো নারী সন্তান গ্রহণ করবে কি করবে না সেটা স্বামী-স্ত্রী দুজনেরই সম্মতির ভিত্তিতে হওয়া উচিত এবং কোনো কারণে যদি কোনো নারী সন্তান ধারণ করতে অসম্মত বা কোনো সমস্যা অনুভব করে তাহলে সন্তান গ্রহণ করা বা না করার স্বাধীনতা থাকা উচিত। কারো চাপে পরে সন্তানধারণের আমি একদমই বিপক্ষে।

pregnancy-5098881_1280.jpg
pixabay

সামাজিকভাবে বিয়ের পরেই একটা মেয়েকে মা হতে হবে এই ধারণা প্রচলিত থাকলেও যদি আমার ব্যাক্তিগত মতামত চাওয়া হয় তাহলে আমি বলবো একটা মেয়েকে মা হবার জন্য বিয়ের কোনো প্রয়োজন নেই। একটা মেয়ে যদি কোনো সন্তান দত্তক আনে তাহলেও সে একজন মা কিংবা কোনো মেয়ের যদি স্বামী না থাকে কিংবা অবিবাহিত অবস্থায় মা হয় তাতেও তার মাতৃত্বে কোনোরকম ঘাটতি হয় না। সে তার সন্তানকে সমাজের বাইরে যেয়েই প্রতিপালন করতে সক্ষম।

তবে বিবাহিত অবস্থায় মা হলে অনেক সুবিধা পাওয়া যাই অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। মায়ের সাথে সাথে বাচ্চাও পিতা ও তার পরিবারের ভালোবাসা এবং নিরাপত্তা পায়।
বেশিরভাগ সময়ই একজন পিতা সন্তান ও তার স্ত্রীর প্রতি প্রেগন্যান্ট ও সন্তানধারনের সময় অতিরিক্ত যত্নবান হয়ে থাকেন। অবশ্য বিপরীত চিত্রও দেখা যায়। তবে ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি একজন স্বামী পিতা হবার পরে তার সংসার ও স্ত্রী-সন্তানের প্রতি অধিক দায়িত্বসম্পন্ন হয়ে উঠেন।

একজন মা তার সন্তানকে প্রয়োজনে একাই বড়ো করতে পারে। কিন্তু তারপরও পিতার দায়িত্ব থাকেঅনেক বেশি। সেটা সন্তানের ভরণ-পোষণ থেকে শুরু করে তার চিকিৎসা ,পড়াশোনা ,ও বিনোদন সবকিছুতেই। পিতা ও মাতা দুজনের ভালোবাসাতেই একটা সন্তানের জীবন অধিকতর সুন্দর ও পরিপূর্ণতা পায়।।



Thank You So Much For Reading My Blog

HfhigaP72YBd6w1Kgyw9eMoDygDx869D1PKa6jG8D9C9MQ5rA8UuUvaGRermEeDs8YYv1jb4TX4QUAAbRoaAJFmmUaGZUojU1gWvH66zbc...wdYfZe5zwHZgv7fSFyfX5YWvwFGCJXq8EuycKeaUaXARJjpb61mUGxLAjp1XsJ6PQbzF28Bu6LQTgryC3MSekzsBvnPpE3TAcMAMTMQbf9uvFuTHezySGMDKr6.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  
Loading...