A day tour to Sirajganj-2। Travel diary । 22, June 2024।

in hive-120823 •  3 months ago 
Black and White Modern Vintage Texture Polaroid Collage  (1).png

আমরা যমুনা ব্রিজ পাড় হয়ে গুগল ম্যাপ দেখে কাছাকাছি ঘুরে বেড়ানোর জায়গা খোঁজ করায় গুগল আমাদেরকে শাহজাদপুর কাছারবাড়ি দেখায় কাছাকাছির মাঝে। এই বাড়ি যমুনা ব্রিজ থেকে ৫৩ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।এই বাড়িতে কবির ব্যাবহৃত বিভিন্ন জিনিসপত্র, চিত্রকর্ম, স্পিডবোট ইত্যাদি জিনিস রয়েছে বলে শুনেছি। কিন্তু ব্রিজ থেজে সামান্য এগুতেই আকাশ কালো করে ঝুম বৃষ্টি শুরু হলো।
সত্যি কথা বলতে আমি কয়েক বছর এর মাঝে এমন বৃষ্টি দেখি নাই। এক জায়গায় গাড়ি থামিয়ে আমি ছাতা নিয়ে নেমেছিলাম বৃষ্টিভেজা রাস্তার ছবি ভালো করে তোলার জন্য। কিন্তু বৃষ্টির পরিমান এত বেশি যে, পর মূহুর্তেই আবারো গাড়িতে ঢুকি।কারন পুরোপুরি ভিজিয়ে দিতেছিল আমাকে।

আমাকে দেখে আমার হাসবেন্ডও নামে অল্প সময় এর জন্য। সেও আমারই মতো বৃষ্টির তাড়া খেয়ে আবারো ঢুকে পরে। বৃষ্টির জন্য বাইরে ঘোলা দেখাচ্ছিলো সব কিছুই। দুইপাশে বিশাল বিশাল গাছের মাঝখান সাপের মতো পিচ ঢালা চমৎকার রাস্তা, শুধু মাঝে মাঝে পাশ দিয়ে দ্রুতগতিতে ছুটে চলা ট্রাক যেন পরিবেশ এর সৌন্দর্যকে কয়েক মূহুর্তের জন্য ম্লান করে দিয়ে যাচ্ছিলো।

IMG_5525.JPG

এইভাবে প্রায় ঘন্টাখানেক যাওয়ার পরে আামাদেরকে অবাক করে দিয়ে বৃষ্টি যেন ভুতের মতোই হাওয়ায় হারিয়ে গেল। মনে হচ্ছিল না যে কয়েক মিনিট আগেও আমরা তুমুল বৃষ্টির মাঝ দিয়ে এসেছি। উল্লাপাড়া নামক জায়গাগে এসে আমাদেরকে থামতে হলো, কারন চাকায় হাওয়া দিতে হবে। আমরা ভয় পাচ্ছিলাম চাকা লিক না হয়। এই হাওয়া দেয়ার ছেলেটাকে বারবার লিক হয়েছে কিনা জিজ্ঞেস করেও তেমন সদুত্তর পেলাম না।

ঈদের ছুটির কারনে সবজায়গাতেই লোকজন কম। একটু ভয়ে ভয়েই আমরা চাকায় হাওয়া দিলাম। কারন লিক করেছে কিনা জানা নেই। ওইদিকে ঢাকা পৌঁছাতে হবে বিকেলের মাঝেই। এই এলাকার সব মানুষজন ঢাকায় তাদের কর্মস্থলে ফেরত যাচ্ছে আজকে যার কারনে রাস্তায় প্রচুর পরিমানে জ্যাম আর এটা দুপুরের পর আরো বেড়ে যাবে। ঢাকায় ফেরত যাওয়াটা কঠিন হয়ে যাবে।

IMG_5522[1].JPG

কিছুক্ষেনের মাঝেই এই দিকেও গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি শুরু হয়ে গেল। তখন বাজে সকাল সাড়ে দশটার মতো। আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম যে, আজকে আর শাহজাদপুর যাবো না, বরং ঢাকায় ফেরত যাবো। এই সিদ্ধান্ত নিয়ে ইউ টার্ন নিয়ে ঢাকার দিকে রওনা দিলাম।এর মাঝে বৃষ্টি যেন আরো বেড়ে গেছে। আমার হাসবেন্ড ও ছেলো চা খাবো, চা খাবো বলে ব্যাস্ত হয়ে পরলো।

রাস্তার পাশে একজায়গায় একটা চায়ের দোকান চোখে পরলো, কিন্তু যাবো কিভাবে। দেখলাম সেখানকার সবকিছু ভিজে গেছে। আমাদের গাড়ি একদম চায়ের দোকানের পাশে রেখে দিলাম।কিন্তু চা আনতে হলে বৃষ্টির পানি সহ খেতে হবে। আমাদের গাড়ির ছাতাও পেছনে।
এখানে আমরা প্রায় ঘন্টা খানেক সময় বৃষ্টি দেখলাম, চমৎকার লাগতেছিলো। কিন্তু বৃষ্টি কমার কোন নামগন্ধ নেই। আমাদের জন্য চা নিয়ে আসলো দোকানের এক কর্মচারী। চা এর পরিমান কম তবে চিনি আর মালাই বেশি সাথে গাছের ওপর থেকে পরা বৃষ্টির পানি মিশ্রিত সেই চা খেতে ভালোই লাগলো। তবে চিনিটা কম হলে আরো ভালো হতো।

IMG_5527.JPG

এরই মাঝে আমার হাসবেন্ড নেমে চায়ের দোকানে ঢুকে পরলো। সে দেখি আরো এককাপ চা নিলো। আমাদেরকেও দিতে চেয়েছিলো কিন্তু আমরা কেউ নেই নাই।
পরে আমাদের কাছে এসে বললো যে, আগের বার মিষ্টি বেশি থাকায় এবার নাকি চিনি ছাড়া চা খেয়ে সেটাকে ব্যালেন্স করছে। আরো বললো যে, শহর থেকে আসা লোকজনদের নাকি চায়ের ও সরের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয় সাথে চিনি কম দেয়।আমরা হাসলাম এটা বলে যে, তাহলে চিনি কমেরই যদি এই অবস্থা হয় ,তাহলে বেশির কি অবস্থা।

এরপর আমরা আবারও যাত্রা শুরু করলাম। মেইন রোডে আসার পরে শুরু হলো যুদ্ধ। মনে হলো বাংলাদেশ এর সব গাড়ি মনে হয় এখানে চলে এসেছে। একসময় যমুনা ব্রিজ পাড় হতে সক্ষম হলাম।যমুনা পাড় হওয়ার পর থেকেই বৃষ্টি কমা শুরু হলো।একটু পরে রোদও দেখলাম।
এদিকে দেশে ভাইরা কেউ না থাকার কারনে আমাদের সিএনজি পাম্পে সহ আরো কিছু প্রতিষ্ঠান আছে সেখানে অন্তত একবার যেতে বলে গিয়েছিলো আমার বড় ভাই।

Black and White Modern Vintage Texture Polaroid Collage  (2).png

তাই গুগল ম্যাপ সার্চ করে বাইপাস রোড বের করে আমার বাবার বাড়ির এলাকা ধামরাই চলে এলাম। সেখানেই এক হোটেল থেকে খাবার কিনে এনে খেলাম।ঈদের কারনে এমনিতেই সব বন্ধ আর আমরাও লেট করে খাবার অর্ডার দিয়েছি যার কারনে তেমন কিছু ছিলোও না।
সেখানে ঘন্টা দুয়েক কাটিয়ে আবারও ঢাকার পথে রওনা দিলাম।এই রাস্তায় জ্যামের ভয় করলেও রাস্তা ফাঁকাই ছিলো।আটটার দিকে বাসায় পৌঁছাতে পারলাম।এইভাবে আমাদের জ্যামে ভরা একদিন এর অসম্পূর্ন ট্রিপ শেষ করলাম

Thank You So Much For Reading My Blog

3YjRMKgsieLsXiWgm2BURfogkWe5CerTXVyUc6H4gicdRPmPayXPfM22kXaj3xKw37oQ9tua3JfrnuMRWWqGHfhuyA1UYheY5qjiFbP3BW...JWNUaLb1UAxtVkvpEzFvrbCpiTVHr2qys8cnVHpyrfv38wVPMc1Luya71X8AzcNNuKjF1rHwqMTUWN8r39rGXHzGTLWtLUbqpNh6DHaWG6eK2zUkgnx8ShFKdg.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  
Loading...

দিদি আজকে আপনি ব্যতিক্রম একটি আর্টিকেল আমাদের কাছে উপস্থাপনা করেছেন জার্নি করার মধ্য দিয়ে আপনার একে দিন অতিবাহিত হয়েছে,

এইভাবে প্রায় ঘন্টাখানেক যাওয়ার পরে আামাদেরকে অবাক করে দিয়ে বৃষ্টি যেন ভুতের মতোই হাওয়ায় হারিয়ে গেল।

জঙ্গলের ভিতর দিয়ে রাস্তা হঠাৎ বৃষ্টি হয়েছে সেটা আপনারাই বুঝতেই পারেন নাই এটা কিন্তু অবাক করা একটি ঘটনা এটা মালয়েশিয়াতে প্রায় দেখা যায়।

গুগল ম্যাপ সার্চ করে বাইপাস রোড বের করে আপনারা বাবার বাড়ি গিয়েছেন আধুনিক প্রযুক্তির কারণে যেকোনো জায়গায় যাওয়া খুব সহজ হয়েছে।

একদম ঠিক কথা বলেছেন,প্রযুক্তির কল্যানে আমাদের দৈন্দিন জীবন অনেক সহজ হয়ে গেছে। এখন আর রাস্তায় বের হলে আগের মতো মানুষজনদের ডেকে ডেকে রাস্তা খুঁজতে হয় না কিংবা জ্যাম থাকলে বিকল্প পথ খুঁজে বের করা যাই খুব সহজেই। ঢাকাতে বসেও চিটাগং রোডের জ্যাম দেখা যাই খুব সহজেই। আর এসব কিছুই সম্ভব হয়েছে প্রযুক্তির উন্নতির জন্য।
ভালো লাগলো আপনার মন্তব্য পড়ে।
ভালো থাকবেন সবসময়।

আপু আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমার কমেন্টের খুব সুন্দর একটি রিপ্লাই দেওয়ার জন্য। মানুষের জেগে জেগে যদি কোন স্থান জিজ্ঞাসা করা হয় অনেক সময় মানুষ ভুল পথ দেখিয়ে দেয় এতে বিভ্রান্তির শিকারি হতে হয়।

সত্যি বৃষ্টি ভেজা পরিবেশ দেখতে অসাধারণ লাগে। আমার তো বৃষ্টিতে ভিজতেও ভীষণ ভালো লাগে। কিন্তু এইরকম বৃষ্টি আমাদের শহরে একদমই হচ্ছে না। বৃষ্টিতে তোলা ছবিগুলি খুব সুন্দর হয়েছে। সত্যিই কোথাও যাওয়ার সময় এরকম বৃষ্টি শুরু হলে খুবই অসুবিধা হয়। যাই হোক সুস্থভাবে বাড়ি পৌঁছতে পেরেছেন ।এটাই শুনে ভালো লাগলো। ভালো থাকবেন।

বৃষ্টি ভেজা পরিবেশ দেখতে আপনার মতোই আমারো খুব ভালো লাগে। কিন্তু বৃষ্টি শহরে গাছ কম থাকার কারণে অনেক কম হয়। ঐদিন আমাদের রবীন্রনাথ ঠাকুরের কাচারীবাড়িতে যাওয়ার প্ল্যান থাকলেও সেটা বৃষ্টির কারণে সম্ভব না হলেও বৃষ্টি উপভোগ করেছি পুরোদমেই।
ভালো লাগলো আপনার মন্তব্য পড়ে।
ভালো থাকবেন সবসময়।

বিগত পোস্টে অবগত হয়েছি আপনাদের সিরাজগঞ্জের দিকে ঘুরতে যাওয়ার কথা। আপনার পোস্টের ছবিগুলো দেখে মনে হচ্ছে বেশ ভালই বৃষ্টি হয়েছে। এভাবে বৃষ্টির মাঝে রাস্তায় গাড়ি চলাচল গুলো দেখতে বেশ ভালই লাগে। রাস্তার মধ্যে গাড়ির সমস্যা হয়ে গেলে আসলে অনেক ঝামেলার পোহাতে হয়।

ঘুরতে যাওয়ার বাকি অংশ শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

বৃষ্টির মাঝে গাড়ি চলাচল দেখতে ভালো লাগলেও আসলে বৃষ্টির মাঝে গাড়ি চলাচল বেশি রিস্কি।অনেক সময়ই গাড়ির চাকা স্লিপ করে।
সিরাজগঞ্জের পরে কাছাকাছি কয়েকটি জায়গাতে যাওয়ার ইচ্ছে থাকলেও বৃষ্টির কারনে সব ভন্ডুল হয়ে গেছে। তারপরও অনেকদিন পরে এত লম্বা সময় ধরা বৃষ্টি সবার সাথে উপভোগ করতে ভালোই লেগেছিল।
এত সুন্দর করে মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
ভালো থাকবেন সবসময়।

যাহ্ শেষ পর্যন্ত এইভাবে আপনাদের ভ্রমণ কাহিনী শেষ হবে, সেটা কিন্তু বুঝতে পারিনি। সারাদিন এর মধ্যে শুধু বৃষ্টি, বৃষ্টির জল ও অতিরিক্ত চিনি দেওয়া চা আর সবশেষে বাপের বাড়ি এলাকায় এসে সামান্য কিছু খাওয়া দাওয়া করে দিনটি শেষ করলেন। আমি আশায় ছিলাম না জানি এই পোস্টটি আরো কত কিছু পড়ার সুযোগ হবে। সে যাই হোক অন্য কোনো বিষয়ে আপনারা আনন্দিত হয়ে থাকুন বা না থাকুন, ফেরার পথে জ্যাম ছিলো না, এই বিষয়টি মনে হয় সব থেকে বেশি আনন্দের ছিলো ☺। আশা করি এই অসম্পূর্ণ ভ্রমণ কাহিনী পরবর্তী কোনো একটা পোস্টে পূর্নতা পাবে। এই বা কম কিসে পরিবারের সকলে একসাথে, বৃষ্টি ভেজা একটা দিন কাটিয়েছেন। এগুলোই অনেকে পায় না। তাই অনেক না পাওয়ার মধ্যে এই অসামান্য প্রাপ্তি, নিশ্চয়ই অনেক উপভোগ্য ছিলো। ভালো থাকবেন।