হঠাৎ করেই বিকট শব্দে ঘুম ভেঙে গেলো। মনে হলো চারপাশে বোমা পড়তেছে আর আমি কোনো যুদ্ধের ফ্রন্ট লাইনে আছি। একটু ধাতস্ত হয়ে পর্দার ফাঁকা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে দেখলাম সাদা হয়ে আছে ,ঝুম বৃষ্টি হচ্ছে। দেখলাম ছেলেরাও উঠে পরেছে। প্রায় আধাঘন্টা বিদ্যুৎ চোকানো একটু কমার পরে সবাই ঘুমিয়ে পড়লো আবার। দ্বিতীয়বার উঠে দেখি প্রায় নয়টা।
সকালে ঘুম ভাঙার পরে সময় থাকলে বারান্দায় গিয়ে দাঁড়ানোর অভ্ভাস আমার দীর্ঘদিনের। আজকেও সেই অভ্ভাস মতো বাড়াদায় গিয়ে দাঁড়ালাম। আমার ইচ্ছে করে পুরো বারান্দা ভরে ফেলি বিভিন্ন ধরণের গাছ দিয়ে। কিন্তু জায়গার এত অভাব যে ইচ্ছে থাকলেও সেটা করা আমার পক্ষে সম্ভব হয় না।
এর মাঝে আরেক সমস্যা হলো আমাদের বাড়িওলা। বারান্দায় গাছ লাগানো তার খুব একটা পছন্দ না। অবশ্য এই পছন্দ না করারও একটা কারণ আছে। এক বাসার টব গিয়ে পড়েছিল রাস্তায়। এই থেকে তার মনে ভয় ঢুকে গিয়েছে যে যদি কোনো গাড়ির উপর গিয়ে পরতো তাহলে কি হতো। অবশ্য আমার মনে হয় উনি গাছেই বেশি একটা পছন্দ করেন না। কারণ উনার বাসায় আমি গিয়ে দেখেছি কোথাও কোনো সবুজের ছোঁয়া নেই।
আর আমি তার উল্টো স্বভাবের। আমার তবে জন্মানো আগাছাও আমি তুলতে গেলে কষ্ট লাগে। আমার এই সমস্যাকে আরো বড়ো করে তুলে আমার বড় ছেলে।ও পছন্দ মতো কোনো ফল খেলেই তার বীজ নিয়ে পুঁতে রাখে। কদিন আগে সব টবে লাগিয়েছিল তরমুজের বীজ। পরে সেগুলি একাই মরে গেছে কেন জানি। আবার আমার রঙ্গন ফুলের টবে নিয়ে আমের আটি পুঁতে রেখেছিলো। এখন পাশাপাশি বড় হচ্ছে দুই গাছ।
গাছের একটা জিনিস আমাকে মুগ্ধ করে আর সেটা হলো ওদের ঋতু বোঝার ক্ষমতা। আমার চন্দ্রমল্লিকা গাছে সারা বছর কুড়ি ধরেছে কিন্তু কখনো ফুটে নাই। সব কলিই সামান্য বড় হয়ে কালো হয়ে মরে যেত । কিন্তু কদিন থেকে দেখতেছি কলিগুলি সাদা হয়ে উঠতেছে। এসব দেখতে দেখতেই মনে হলো যে নাস্তা বানাতে হবে।
রুমে ঢুকে দেখি ছেলে আর তার বাবা বাইরে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছ। আমাকে দেখেই বললো যে একটু ঘুরে আসি। ওদেরকে বললাম যে ,দেখো দুর্গাপুজোর ৪টা দিন ছুটি পেলে কিন্ত আমরা এবার কোথাও গেলাম না। ছেলে বললো আমার সমস্যা নেই কিন্তু তার বাবা বললো তাকে নাকি দুপুরে মিরপুর যেতে হবে। ঐখানে বিল্ডিং এর কাজ চলতেছে। উনার ব্যাংকের কয়েকজন কলিগ মিলে জায়গা কিনে সেখানে বিল্ডিঙের কাজ করতেছে। আজকে ছাদ ঢালাই হবে। সেখানে খাওয়া -দাওয়াও হবে। আমার আর কিছু বলার ছিল না এটা শুনে।
ওরা আসলো এগারোটার দিকে। এসে আমাকে বললো বললো যে আজকে না গেলাম বরং অন্য কোথাও যাই। কিন্তু আমি ও আমার দুই ছেলের একজনও রাজি হলো না। তাই সে কিছুক্ষন পরে চলে গেলো। এই যাবো কি যাবো না সিদ্ধান্ত নিতে নিতে প্রায় বারোটা বেজে গেলো। ঐদিকে রান্নাও করা হয় নাই। গ্যাস নেই ভেবে রান্না ঘরে ঢুকলেও দেখলাম গ্যাস ভালোই আছে ।
খিচুড়ি আর দেশি মুরগি ভুনা করলাম দুপুরের জন্য। সাথে অবশ্য বেগুন ভাজাও ছিল। আমি আর আমার দুই ছেলে একসাথেই খেয়ে নিলাম।
রাতে ভেবেছিলাম ভাত রান্না করবো আর সাথে অন্য কিছু করে দিবো। কিন্তু ছেলেরা বললো আবারো খিচুড়ি খাবে তাই ওদের খিচুড়ির রান্না করে দিলাম।। রাতে সবাই খাওয়ার পরে সব গুছিয়ে রেখে ঘুমিয়ে পরলাম।
Camera | iPhone 14 |
---|---|
Photographer | @sayeedasultana |
Location | Dhaka,Bangladesh |
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
@malikusman1, thank you so much for your encouraging support, sir.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit