পাসপোর্ট রিনিউ করার জন্য আগারগাঁও পাসপোর্ট অফিসে যেতে হবে। এজন্য দ্রুতই ঘুম থেকে উঠে রেডি হয়ে বের হতে হবে এটা আগের রাতেই ঠিক হয়ে ছিলো। আমাদ্র প্ল্যান ছিলো সকাল ৮টার মাঝে বের হয়ে যাবো। কারন লেট করে গেলে ভিড় বেড়ে যাবে। এই চিন্তা থেকেই দ্রুত যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম।কিন্তু ছোট ছেলেকে ঘুম ভাঙাতে গিয়ে অনেকটা সময় নস্ট হয়ে গেল।
সকালে নাস্তা বানানোর তেমন একটা ঝামেলা করি নাই। ব্রেড ছিলো বাসায় বাচ্চাদের খেতে বললাম কিন্তু ওদের একজনও খেল না। আমাদের বাসা থেকে বের হতে হতে প্রায় ৯ টার মতো বেজে গেল।রাস্তায় বের হয়ে প্রচন্ডরকম জ্যাম এর মুখোমুখি হতে হলো।কারন এই সময়ে স্কুল এর জ্যাম পরে সাথে অফিসগামী মানুষ এর জ্যামও শুরু হয়।
আগারগাঁও পাসপোর্ট অফিসে পৌছার আগে যতটা ভিড় হবে ভেবেছিলাম সে তুলনায় মানুষ অনেক কম মনে হলো। আগেতো পুরো বাংলাদেশের মানুষই এই আগারগাঁও আসতো পাসপোর্ট সংক্রান্ত কাজের জন্য। কিন্তু এখন বিভিন্ন জায়গা থেকেই কাজ করা যায় তাই জ্যাম অনেক কমে গেছে। কিন্তু আজকে যেন আরও কম মনে হলো।
আমরা অনলাইনেই সব কিছু করে এসেছিলাম তাই ঝামেলা অনেক কমে গেছে। তবে একটা জিনিস দেখে খুব ভালো লাগলো যে, কিছুদিন আগেও দালালদের জন্য হাটা যেত না কিন্তু আজকে দালাল চোখে পরলো না।তারা যে নেই এমন না কিন্তু এই গনঅভ্যুtত্থানের পরে তারা সামনে আসতে খুব একটা সাহস পাচ্ছে না।
এদের দৌরাত্ম থেকে এই জায়গাকে সব সময়ের জন্য এমন মুক্ত রাখা গেলে ভালো হবে। কেউ যদি পাসপোর্ট করতে চায় কিংবা পাসপোর্ট রিনিউ করতে চায় তাহলে আমার পরামর্শ হবে অনলাইনে ফর্ম ফিলাপ করে আসেন।এতে করে সময় ও ভোগান্তি দুটোই কম হবে।
আমি সোজা ওপরে গিয়ে মেয়েদের লাইনে দাঁড়িয়ে পরলাম।যেহেতু সকাল সকালেই চলে এসেছিলাম ও মানুষজন কম ছিলো তাই মিনিট পনেরোর মাঝেই সেখানকার কাজ শেষ করে ছবি তোলার জন্য বাইরে গিয়ে বসলাম।
অনেকটা চেয়ার খেলার মতো তিনজন করে ভেতরে ঢুকে গেলেই আমরা চেয়ার চেঞ্জ করছিলাম।ভেতরে গিয়ে ছবি তুলে ও সিগনেচার করে বাইরে বের হয়ে আসলাম।নিচে গিয়ে দেখলাম শুধু বড় ছেলের হয়েছে। ছোট ছেলে আর তার বাবার তখনও হয় নাই।
বড় ছেলে বললো ও রিকুয়েষ্ট করে আগে ঢুকেছিলো। কারন এখান থেকে বের হয়ে ও ক্লাসে যাবে। তবে সামান্য পরেই দেখি বাকী দুজনও বের হয়ে আসলো। আমরা একটা উবার নিয়ে ওর বাবাকে মেট্রো স্টেশনের কাছে নামিয়ে দিয়ে বাসায় চলে আসলাম।
বড় ছেলে ওর প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে সাথে সাথেই বের হয়ে গেল।
বুয়ার খোজ নিয়ে জানলাম তিনি আসেন নাই। এরই মাঝে ছোট ছেলে এসে জানালো তার খিদে পেয়েছে তাই ভারি কিছু লাগবে।আমার খাবার বানাতে লেট হবে তাই খাবার অর্ডার দিতে বললাম।সে চাপ বিরিয়ানি অর্ডার দিলো।ও দেখলাম খুব মজা করে খাচ্ছে কিন্তু আমার কাছে একদমই ভালো লাগলো না। এর আগেও একদিন খেয়েছিলাম সেদিনও একইরকম লেগেছিলো আমার কাছে।
সন্ধার পরে ভাই আসলো ওর বাচ্চাদের নিয়ে। এরই মাঝে আমার হাসবেন্ড ও বড়ো ছেলেও বাসায় চলে আসলো। সবার রাতের খাবার শেষ হওয়ার পরে আমিও সব কিছু গুছিয়ে রেখে ঘুমাতে গেলাম।