Edited by Canva |
---|
আজকে সকালবেলাটা ঘুম থেকে উঠার পরে সোজা চলে গিয়েছিলাম বারান্দাতে আমার গাছগুলোর কাছে। এখানে আসলে এক অদ্ভুত রকমের শান্তিতে মন ভোরে উঠে। ইচ্ছে করে পুরো বাড়ি গাছ দিয়ে ভোরে ফেলি কিন্তু জায়গার অভাবে ইচ্ছেটাকে ইচ্ছেই করে রাখতে হয়। কদিন আগে রাস্তা থেকে একটা বট জাতীয় গাছ তুলে এনেছিলাম। এটার গোড়ায় আরেকটু মাটি দিলাম।
এই গাছটাকে বনসাই করার ইচ্ছে আছে। কিন্তু আমার ছেলে আগেই হুমকি দিচ্ছে এই ধরণের চিন্তা জেন্ আমি না করি। আসলে বনসাই আমার কাছে খুব ভালো লাগে। যদিও জানি যে এতে গাছকে অনেক কষ্ট দেয়া হয়। এই জিনিসটা আসলেই খুব অমানবিক এটা আমিও মানি। কিন্তু এই সাথে এটাও ভাবতেছি যে এটাকে বনসাই না করলেতো এতো বড়ো গাছকে বাসায় রাখাও যাবে না।
এই ভাবতে ভাবতেই ভেতরে আসলাম। এসে দেখি প্রায় ৮টা বেজে গেছে। তাই হাবির গোসলের জন্য পানি গরম করতে দিয়ে ছেলেদেরকে ডাকতে গেলাম। গতকাল রাতেই বলে রেখেছিলাম যে আমি আজকে সকালে কোনো নাস্তা বানাবো না। তাই ডাকাডাকি করা শুরু করলাম। ওদের বাবা অবশ্য আমাকে মানা করেছিল ওদের ডাকতে। সে বলেছিলো বাইরে থেকে নাস্তা করে নিবে।
কিন্তু ওদের জন্যও তো নাস্তা বানাতেই হবে আমাকে। এতদিন সকালে আমার দুই ছেলে খুব একটা নাস্তা করতো না কিন্তু ঠান্ডা পরার পর থেকে বাসায় থাকলে নাস্তা করতেছে নিয়মিতই। শীতের সকালে এই দুটোকে ঘুম থেকে তোলাটা অনেকটা যুদ্ধ জয় করার মতোই। শেষ পর্যন্ত বড়ো ছেলে উঠলে তাকে বললাম নিচ থেকে নাস্তা নিয়ে আসতে। একটু পরে ও নাস্তা নিয়ে আসলে সবাই নাস্তা করে নিলো।
দুপুরের জন্য রান্না করতে গিয়ে বলা যাই কান্নাই পেলো। গ্যাস নেই বললেই চলে। আমার ইনভার্টারটা নষ্ট হয়ে আছে যার কারণে সেটাও ব্যবহার করা যাবে না। এতদিন গ্যাসের প্রেশার কম থাকলেও এতো খারাপ ছিল না যার কারণে কিনি কিনি করে কেনাও হয় নাই। কোনোমতে রান্না করলাম।
দুপুরের পরে লেপমুড়ি দিয়ে কিছুক্ষন শুয়ে ছিলাম। কিন্তু দিনে ঘুমের খুব একটা অভ্ভাস নেই তাই ঘুম পেলো না। ঘুম না আসলে আমি শুয়ে থাকতে পারি না বেশিক্ষন তাই উঠে পরলাম।
এরপর নিচে গেলাম কারণ বাসার জন্য টুকিটাকি কিছু জিনিস কেনার ছিল। সেগুলো কিনে বাসায় ফিরতে ফিরতে সন্ধ্যা হয়ে গেলো। এরই মাঝে দুই ছেলেই বের হয়ে গেলো নাচের রিহার্সেলের জন্য। আমাদের পরিচিত একজনের বিয়ের গায়ে হলুদ এ নাচবে তাই বেশ কিছুদিন থেকেই দল বেঁধে সবাই রিহার্সেল করতেছে।
যাওয়ার আগে আমাকে আমার বড়ো ছেলে ৯টার মাঝে রেডি হয়ে থাকতে বলে গেলো । আজকে আমার বড়ো ভাই ভিয়েতনাম যাবে ওর ফ্যামিলি সহ। গতকাল সে বলে গেছে যে ওর গাড়িতে লাগেজ জায়গা হবে না গ্যাসের সিলিন্ডারের কারণে তাই আমাদের গাড়িতে লাগেজ নিয়ে যাবে এয়ারপোর্টে। এই কথা শুনে আমার হাসবেন্ড বলছে যে তাহলে আমরাও সাথে এয়ারপোর্টে যাবো। এই লোকটা কোথাও যাওয়ার সুযোগ পেলে ছাড়ে না। সে যেহেতু যাবেই তাই আমিও বলছি যে তাহলে আমাকেও নিয়ে যেও। রাতে জ্যাম খেয়ে আসা যাবে একটু ঢাকা শহরের।
ব্যাঙ্ক থেকে ফিরতে ফিরতে তার ৮তার বেশি বেজে গেলো। ভাইয়ের বাসা থেকে বের হওয়ার কথা ঠিক ৯টায়। তাই আমরাও বের হয়ে গেলাম বাসা থেকে। ওকে এয়ারপোর্টে নামিয়ে দিয়ে বাসায় ফিরতে ফিরতে আমাদের সাড়ে ১১ টার কাছাকাছি বেজে গেলো। বাসায় ফেরার পথে ছোট ছেলেকে বিয়ে বাড়ি থেকে নিয়ে তারপর বাসায় ফিরলাম। এরপরে কিছুটা মন খারাপ নিয়ে ঘুমাতে গেলাম। যদিও জানি ভাই চলে আসবে একদিনের মাঝেই তারপরও কেন জানি খারাপ লাগে।
Camera | iPhone 14 |
---|---|
Photographer | @sayeedasultana |
Location | Dhaka,Bangladesh |
শীতের সকালে ঘুম থেকে উঠা আসলে অনেক কষ্টের একটা ব্যাপার, কি আর করবেন আপু, আমার আম্মাও অনেক সকালে ঘুম থেকে উঠে নামাজ পড়ে ,আমাদের জন্য নাস্তা তৈরি করে, এটা হল একটা মায়ের দায়িত্ব আর মায়েরা কখনো দায়িত্ব অবহেলা করে না সন্তানের প্রতি। আপনার পোস্টটি পড়ে অনেক ভালো লাগলো আপনাকে ধন্যবাদ জানাই, এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য। ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপু, আপনার দিনযাপনের বর্ণনা পড়ে সত্যি মনটা ছুঁয়ে গেল। আপনার গাছের প্রতি ভালোবাসা এবং পরিবারের প্রতি যত্ন সত্যিই প্রশংসনীয়।
বট গাছটাকে নিয়ে আপনার পরিকল্পনা খুব সুন্দর, তবে ছেলেদের কথা মাথায় রেখে সিদ্ধান্ত নেবেন।
ভাইয়ের এয়ারপোর্টে যাওয়া নিয়ে যে খালি লাগা, সেটা খুব স্বাভাবিক। প্রিয়জন থেকে সাময়িক দূরত্বও অনেক খারাপ লাগে। আল্লাহ আপনার ভাইয়ের যাত্রা নিরাপদ করুন এবং দ্রুত ফেরার ব্যবস্থা করে দিন। ভালো থাকুন আপু।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit