Contest of January by @sduttaskitchen| My locality in five pictures.

in hive-120823 •  10 months ago  (edited)
Black and Orange Aesthetic Halloween Photo Collage (4).png

সবার প্রতি শুভেচ্ছা রইলো। নতুন বছরের প্রথম মাসে এমন একটা প্রতিযোগিতার আয়োজন এবং এর এতো চমৎকার বিষয়বস্তু নির্বাচন করার জন্য দিদিকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
যেকোনো মানুষই যেখানে দীর্ঘসময় বাস করে সেই জায়গার প্রতি একটা আলাদা ভালোবাসা জন্মায়। আর সেই ভালোবাসার জায়গা নিয়ে লেখার সুযোগ পাওয়াটা নিজের সৌভাগ্য বলে মনে করছি ।
আমি যেখানে থাকি এই জায়গার নাম ধানমন্ডি।একারণে ধানমন্ডি আর এর আশেপাশের প্রিয় জায়গাগুলি নিয়ে প্রতিযোগিতার প্রশ্নগুলির উত্তর দিতে চেষ্টা করবো ।

Why is your locality precious to you?

এটা যদিও আমার জন্মভূমি না কিন্তু এই জায়গাতে আছি আমি অনেক বছর।
এখানেই আমার ছেলেরা বড়ো হয়েছে। আমার দুই ভাই আর মামাসহ আরো অনেক আত্মীয়রই থাকেন।
আর সবচেয়ে বড়ো কথা এখানেই আমার মা,বাবা ,খালা আর শাশুড়ি যাদেরকে আমি ভালোবাসতাম তারা শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছে তাই এই জায়গার গুরুত্ব আমার কাছে আমার জন্মভূমির থেকে কোনো অংশেই কম না।

এছাড়াও এখনকার পরিবেশ ,নিরাপত্তা ,চিকিৎসা ,শিক্ষা ,খেলাধুলা এক কথায় সব ধরণের সুযোগ সুবিধাতেই তুলনামূলক ভাবে ঢাকার অন্যান্য অনেক এলাকার থেকে অনেক বেশি এগিয়ে আছে।
এখানে সব ধর্ম -বর্ণের ও বিভিন্ন দেশের মানুষও পাশাপাশি দেখা যাচ্ছে একই বিল্ডিংএ শান্তিপূর্ণভাবে বাস করছে বছরের পর বছর। সেই সাথে ঢাকা পৃথিবীর সবচাইতে ঘনবসতিপূর্ণ শহর হলেও এখানে দুদণ্ড শান্তিতে বসে নিঃশ্বাস নেয়ার মতো জায়গাও আছে। সবকিছু মিলিয়েই এটা আমার কাছে এক শান্তির জায়গা।

Share at least five original photos of different places in your locality and introduce them to us

আসলে এই এলাকা নিয়ে বলার মতো এতো কিছু আছে যে আমি কোনটা রেখে কোনটা বলবো ভেবে পাচ্ছিনা তবে আমার সবচাইতে প্রিয় কয়েকটা জায়গার ছবিই তুলে ধরছি আমি।

জাতীয় সংসদ ভবন

এটা বাংলাদেশের পার্লামেন্ট ভবন যা জাতীয় সংসদ ভবন নামেই পরিচিত সবার কাছে। এটা যদিও ধানমন্ডিতে পরে নাই কিন্তু আমার বাসার বেশ কাছেই।পায়ে হেঁটে গেলেও ১৫ থেকে ২0 মিনিট লাগে।
যার কারণে বিশেষ দিনগুলো ছাড়াও এখানে প্রায়ই যাওয়া হয় আমার। শুধু যে আমার এমন না , পুরো ঢাকাবাসীদের কাছেই এটা একটা বিনোদনের জায়গা।
এখানকার মনোরম পরিবেশ ,লেক ,বাগান যে কারো মন কেড়ে নিতে সক্ষম। এর সামনের রাস্তা যা একসময় তৈরী করা হয়েছিল বিশেষ প্রয়োজনের সময় যাতে প্রয়োজনে প্লেনও নামতে পারে এমন উদ্দেশ্য নিয়ে,যদিও এখন ডিভাইডার দেয়া হয়েছে মাঝে।
এই রাস্তায় নববর্ষের মতো বিশেষ দিনে বিশাল বিশাল আল্পনা দেয়া হয় যা দেখতে অনেক মানুষ জড়ো হয় এই দিনগুলিতে। আমি নিজেও আল্পনা দেয়া দেখতে যাই অনেক সময়ই।

ধানমন্ডি ৩২

এটা ধানমন্ডি ৩২ এর সামনের রাস্তার ছবি। ব্যারিকেডের ভেতরেই বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাবা প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবের বাড়ি। হলি আরটিজেনে জঙ্গি হামলার পর থেকেই ভেতরে যেতে দেয়া নিয়ে কড়াকড়ি করা হয় আর করোনার পর থেকে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
এই বাড়ি থেকেই এক সময় বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ন্ত্রিত হতো। ১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট এই বাড়িতে এক সেনা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ঘটানো হয় দুঃখজনক এক রাজনৈতিক হত্যাকান্ড যাতে ১৬ জন মানুষ প্রাণ হারায় ,এমনকি ঘাতকদের হাত থেকে ৮ বছরের শিশু ,অন্তঃসত্ত্বা নারী ও নববিবাহিতা স্ত্রীও রক্ষা পায় নাই।
আমার ছেলেদের স্কুলের পাশে আর বাসার খুব কাছেই হবার পরেও আমি একবারের বেশি শেখ মুজিবের বাসার ভেতরে ঢুকি নাই । বাসার ভেতরে ঢুকলে মন খারাপ হয়ে যায়।
রক্তের দাগ ,গুলির চিহ্ন,বিয়ের পাগড়ি ,আধ খাওয়া কোকের বোতল সবই রয়ে গেছে শুধু মানুষগুলিই নেই।
এখানে এখন পারমিশন ছাড়া ঢুকতে না দিলেও এটা আমার সবচেয়ে প্রিয় জায়গার একটা। এর সামনের খোলা চত্বর, ঝুলন্ত ব্রিজের কথা কখনো ভুলতে পারবো না। এখান দিয়েই একসময় আমি প্রতিদিন আসা যাওয়া করতাম।

ধানমন্ডি লেক

ধানমন্ডি লেকেরই ছবি এটা।
পাশেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাড়ি সুধাসদন।যদিও এখন তিনি গণভবনে বাস করেন। এই লেককে বাদ দিয়ে ধানমন্ডি হবে না হয়তো, অসম্পূর্নই থেকে যাবে। এই লেকের জন্যই বিশেষ ভাবে পরিচিত এই এলাকা। এটাকে এখানকার হার্ট বললেও ভুল হবে না। ভোর থেকে রাত পর্যন্ত মানুষের আনাগোনায় মুখরিত হয়ে থাকে পুরো লেক এলাকা। কেউ আসে খেলতে ,কেউবা হাটতে আবার কেউবা এমনিই বেড়াতে।

ডিঙ্গী

এটা লেকেরই একটা অংশ হলেও আমার খুব প্রিয় একটা জায়গা। এই জায়গার নাম ডিঙ্গী। এখানে দাঁড়িয়ে কিংবা বসে থাকতে খুব ভালো লাগে আমার।
মানুষজন ছোট ছোট বোটে করে ঘুরে বেড়ায় এখানে। কিছু কিছু বোট আবার ময়ূরপঙ্খী নৌকার আদলে করা। এখানে দাঁড়ালে এক অদ্ভুত ভালো লাগায় মন ভরে উঠে।
বিশেষ করে সন্ধ্যার আগে যখন আস্তে আস্তে চারপাশে আঁধার নেমে আসে আর খানিকক্ষণ বাদে যখন ৮ নাম্বার ব্রিজের উপর আলো জ্বলে উঠে তখন সেটা ডিঙ্গীর পাশে বসে দেখার মতো মুগ্ধতা আমি খুব কম জায়গাতেই পাই।

রবীন্দ্র সরোবর

রবীন্দ্র সরোবর এর ছবি এটি। এই জায়গাটাকে ধানমন্ডির বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও উৎসবের প্রাণকেন্দ্র বলা যায়। লেকের ঠিক কোল ঘেঁষেই এক উন্মুক্ত মঞ্চ রবীন্দ্র সরোবর।
দেখলে মনে হয় সে যেন তার সমস্ত বুক ছড়িয়ে রেখেছে তার দর্শনার্থীদের জন্য। এখানে চলে গল্প আড্ডা আর গানের নিয়মিত আসর। বিভিন্ন সময়ে সেজে উঠে বিভিন্ন উৎসবে। কখনো বর্ষবরণের উৎসবে আবার কখনো নবান্নের উৎসবে মেতে উঠে এই জায়গা।
এখানে চলে পথনাটক ,চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা ,কবিতা উৎসব ,পুঁথিপাঠ কিংবা গানের আসরের মতো সব উৎসব।

Do you believe a place becomes close to our heart when we stay there for years? Describe your answer.

এই প্রশ্নের উত্তরের সাথে আমি সম্পূর্ণ একমত। দিনশেষে পাখি যেমন নীড়ে ফেরার জন্য অস্থির হয়ে উঠে মানুষও ঠিক তেমনি সারাদিন যেখানেই থাকুক না কেন বেলাশেষে তার ঘরে ফেরত আসার জন্য অস্থির হয়ে উঠে।সেই জায়গার মানুষ থেকে প্রতিটা জিনিসই তার আপন হয়ে উঠে।
যত সুন্দর জায়গাতেই বেড়াতে যাই না কেন দুদিন গেলেই এক ধরণের শূন্যতা অনুভব করি ,মন অস্থির হয়ে উঠে কখন আমার সেই প্রিয় জায়গাতে ফেরত আসবো ,যেখানে আমার ঘর। আর সেখানেই আমি সবচাইতে শান্তিতে নিঃশ্বাস নিতে পারি।



প্রতিযোগিতার নিয়ম অনুযায়ী আমি আমার @pijushmitra
@muktaseo এবং
@hasnahena কে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য।



Thank You So Much For Reading My Blog

Posted using SteemPro Mobile

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  
Loading...

এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা বসবাস করছেন। ছবির মাধ্যমে বিভিন্ন স্থানের সম্পর্কে আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন। ঢাকা শহরে আমরা বিভিন্ন কোয়ার্টারে থাকা হয়েছে।কোযাটারের পরিবেশ অনেক সুন্দর। শুধু যানজট ছাড়া ঢাকা শহর ভালো লাগে।

আমাকে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য ধন্যবাদ।তবে এরি মধ্যে আমি অংশগ্রহণ করেছি।

ঢাকায় জ্যাম না থাকলে আসলেই অন্য রকম হতো। তবে আশা করি কয়েক বছর এর মাঝেই এই অবস্থা অনেকটা চেন্জ হবে।
ভালো লাগলো আপনার মন্তব্য পড়ে। শুভকামনা রইলো আপনার জন্য।

Posted using SteemPro Mobile

এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই। এখন রাজধানী ঢাকায় বসবাস করছেন তার বিভিন্ন স্থানে ছবি আমাদের সাথে পরিচয় করে দিয়েছেন এবং সেই সাথে কিছু ব্যাখ্যা করেছেন। আপনার প্রত্যেকটা ছবি যেমন সুন্দর করে তুলে ধরেছেন এবং সেই সাথে খুব ব্যাখ্যা গুলো খুব সুন্দর করে তুলে ধরেছেন।

ধন্যবাদ জানাই এ প্রতিযোগিতা অংশগ্রহণ করতে পেরে।

আপনিও খুব সুন্দরভাবে প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহন করেছেন।
আমার পোসট পড়ে এতো সুন্দর করে মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
ভালো থাকবেন সবসময় এই শুভকামনা রইলো আপনার জন্য।

Posted using SteemPro Mobile

আপনার এলাকায় ধানমন্ডি লেকটা আমার সবচেয়ে বেশি ভালো লাগে। কি সুন্দর স্বচ্ছ টলটলে জল আর লেকের দুপাশে গাছপালার সারি। একবার গেলে বারবার যেতে ইচ্ছে করবে। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য। আপনার জন্য আমার শুভেচ্ছা রইল।

একসময় নাকি এটা নদী ছিল। আর নদীর পাড় ঘেঁষেই গড়ে উঠেছে এই বসতি।যার কারনে এই লেককে বাদ দিয়ে ধানমন্ডি ভাবা সম্ভব হয় না। আপানর বাড়ির পাশেওতো দেখলাম লেক আছে। আসলে প্রকৃতি মানেই সুন্দর।
চমৎকার করে মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

Posted using SteemPro Mobile

প্রথমেই আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এত সুন্দর ভাবে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য। আপনি আপনার এলাকার বিভিন্ন ধরনের ফটোগ্রাফি আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন। আমি ধানমন্ডি লেক জাতীয় সংসদ ভবন এবং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সরোবর, এই তিনটা জায়গায় গিয়েছি।

বাকি দুইটা জায়গায় আমার এখনো যাওয়া হয়নি। ইনশাল্লাহ যাওয়ার চেষ্টা করব। ধন্যবাদ আপনাকে চমৎকার ভাবে প্রতিযোগিতা প্রত্যেকটা প্রশ্নের উত্তর আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য। ভালো থাকবেন।

ঢাকায় আসার আমন্ত্রণ রইলো আপনার প্রতি।ধন্যবাদ আপনাকে এত চমৎকার করে মন্তব্য করার জন্য। শুভকামনা রইলো আপনার জন্য।

Posted using SteemPro Mobile

প্রপথমেই ধন্যবাদ জানাই কন্টেস্টে নিজের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার জন্যে।

আপনার পোস্টের মাধ্যমে অনেক পরিচত জায়গা গুলো দেখতে পেলাম। সংসদ ভবন, ধানমন্ডি লেক, রবীন্দ্রসরোবর এগুলো ঢাকার প্রতিটি মানুষের কাছে অনেক প্রিয় ও পরিচিত জায়গা। আশা করি আওনার এই এলাকা পরিচিতি পোস্টের মাধ্যমে অনেকেই এসব জায়গা ঘুরে দেখার ইচ্ছে পোষণ করবে।

আসলোই তাই ,এই জায়গাগুলি ঢাকার মানুষদের কাছে খুবই পরিচিত জায়গা। কিন্তু এখানেই বাড়ি হবার কারণে এগুলিই লিখেছি।
ধন্যবাদ আপনাকে এতো সুন্দর করে মন্তব্য করার জন্য। ভালো থাকবেন সবসময় এই শুভকামনা রইলো আপনার জন্য।