ক'দিন আগে আমাদের শশুর বাড়ির এলাকার একজন তার ছেলের বিয়ের দাওয়াত দিয়েছিলেন।আমার যাওয়ার তেমন কোন ইচ্ছে ছিল না কারন এমনিতেই আমি পারিবারিক কিছু জিনিস নিয়ে ঝামেলাতে আছি এর মাঝে ছোট ছেলেটাও অসুস্থ ছিলো এটাও কারন ছিলো। কিন্তু আমার হাসবেন্ড এর জোড়াজুড়িতেই অনেকটা রাজি হলাম।
যার বাড়িতে যাবো সে আমার শশুড় বাড়ির অনেকটা বাধা বাবুর্চি বলা যায়। যে কোন অনুষ্ঠানে তাকেই ডাকা হয়, তাই রাজি হলাম। কিন্তু ছোট ছেলেটাকে রেখে গেলাম। অবশ্য একদিকে বড়ো ছেলেটার কথা ভেবে সামান্য খুশি হলাম যে ওকে ঢাকার বাইরে নিয়ে যেতে পারতেছি।
যেদিন আমাদের শশুর বাড়িতে যাওয়ার কথা থাকে ওইদিন আমার হাসবেন্ড রাতে ঘুমায় কিনা আমার মাঝে মাঝে সন্দেহ লাগে। তাই সে যথারীতি আমাদেরকে টেনে তুলে ঘুম থেকে। আমরা রেডি হয়ে বের হবো বাসা থেকে।
এরই মাঝে আমার গ্রামের বাড়ি থেকে কল আসলো সেখানে যেতে হবে। তাই আগে শশুড় বাড়ি যাওয়া বাদ দিয়ে ধামরাই আমার বাবার বাড়ির দিকে রওনা দিলাম। সেখানে যেয়ে দ্রুত আমার কাজটা শেষ করে আবার শশুড় বাড়ির দিকে রওনা দিলাম। আগে হাইওয়ে দিয়ে যাওয়া ছাড়া তেমন রাস্তা ছিলো না কিন্তু ইদানীং অনেক বেশি বাইপাস রোড হয়ে যাওয়ায় যেকোন জায়গায় যাতায়াত করাটা অনেক বেশি সহজ হয়ে গেছে।
তাই বেশ দ্রুতই শশুড় বাড়িতে পৌঁছে গেলাম।কিন্তু শশুড় বাড়িতে ঢোকার সাথে সাথে কুকুরের ঘেউঘেউ শুনে কিছুটা চমকে উঠলাম। কারন আগে কোনদিন এমন অভিজ্ঞতার সামনা সামনি হতে হয় নাই। গাড়ি থেকে নামার আগেই দেখলাম বেশ কয়েকটা কুকুরের বাচচা ঘিরে ধরেছে আমাদের। দেখে বেশ মজা পেলাম।কারন ওরা জন্মের পরে গাড়ি দেখে নাই।
রাস্তা থেকে ছেলে সিঙ্গারা কিনেছিলো সেগুলো সাথে ছিলো। কুকুরের বাচ্চাগুলোকে সেই সিঙ্গারা খেতে দিলাম।আর তখনই গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি শুরু হলো। দ্রুত বাড়ির ভেতর ঢুকে পরলাম।এরপরই শুরু হলো ঝুম বৃষ্টি। কিভাবে বিয়ে বাড়িতে যাবো এটা নিয়ে খানিকটা চিন্তাতেই পরে গেলাম।কারন রাস্তা থেকে বেশ খানিকটা জায়গা হেটে বিয়ে বাড়িতে পৌঁছাতে হবে।
বৃষ্টি কমার পরে বিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্য রওনা দিলাম। কোনমতে পানি আর কাঁদা ভর্তি রাস্তা পারি দিয়ে বিয়ে বাড়িতে পৌঁছে গেলাম। কিন্তু সেখানে গিয়ে চারপাশ দেখে আরো অস্থির লাগলো। ছাদের ওপর খাওয়ার আয়োজন করেছে কিন্তু বৃষ্টির কারনে পানি জমে গেছে। পা ডুবে যাচ্ছে সেখানে বসে কোনমতে খেয়ে নিচে আসলাম। পাশেই আমার মামা শশুড়ের বাড়ি সেখানে গিয়ে অনেকটা হাঁপ ছেড়ে বাচলাম।কিছু সময় সেখানে কাটিয়ে বের হলাম ঢাকার দিকে রওনা দিলাম।
কিছুটা আসার পরে হঠাৎ করেই ছেলের কথায় এক ফুচকার দোকানের সামনে থামলাম। দোকানটা নতুন হয়েছে। হাসি পেলো ফুচকা চটপটির নাম দেখে।তবে নাম যাই হোক না কেন খেতে বেশ ভালো। ছেলেকে বললাম আবারো আসবো এখানে।
এরপর আবারও রওনা দিলাম। ঢাকার কাছাকাছি এসে পরলাম প্রচন্ডরকম জ্যামে। জ্যাম কাটিয়ে বাসায় আসতে আসতে প্রায় সাড়ে নয়টা বেজে গেল।
◦•●◉✿ Thank You ✿◉●•◦
!