দার্জিলিং উত্তর বঙ্গের এমন একটি জায়গা যেখানে নিজের জীবনের অনেকটা সময় কেটেছে।
কাজেই দার্জিলিং জায়গাটি আমার পরিচিত কেবল তাই নয়, এর সাথে বহু স্মৃতি জড়িত।
এখনও ওখানের বেশকিছু মানুষের সাথে যোগাযোগ আছে, আমি শিলিগুড়ি শহরের কথা বলছি। আমার এক সহপাঠী যে এখন রেলে কর্মরত তার বাড়ি শিলিগুড়িতে।
কাজেই শহর সহ চেনা মানুষদের খবর মাঝে মধ্যে নিয়ে থাকি।
এখন প্রায়শই মনে হয় ফিরে যাই, কিন্তু কিছু স্মৃতি এখনও ফিরে যাবার পথের বাঁধা হয়ে আছে।
আসলে পাহাড়ি মানুষগুলোর ব্যবহার সত্যি বলতে অনেক উন্নত। তেরো বছর কাটিয়ে এখন তুলনা করতে বসলে দেখি, এখানে বেশ কিছু জায়গার মানুষ পোশাকে উন্নত হলেও মানসিকতায় হতে পারেনি।
অপরপক্ষে শিলিগুড়ির জীবনযাত্রায় কে কোন পোশাক পড়েছে, সেটা কতটা ছোটো না বড়; তাকে সেই পোশাক মানাচ্ছে কিনা এসব নিয়ে ভাবার সময় বা রুচি কোনোটাই নেই।
এছাড়াও জলবায়ুর পাশাপাশি মানুষের মানসিকতা উন্নত, ওখানে সবাই নিজের কাজ নিয়ে ব্যস্ত, দেখা হলে ডেকে কথা বলা কিন্তু কৌতূহল প্রকাশ নেই।
আমার স্কুলের বান্ধবী জয়িতার দিদিমার বাড়ি আমার যে ফ্ল্যাট আছে ঠিক তার নিচে, ওনার এক ভাসুর নিজের ভাগের জমি প্রোমোটারকে
দিয়ে ফ্ল্যাট তৈরি করেছিলেন।
যাইহোক, আজও শিলিগুড়ির তালাবন্দী সেই ঘরের ভিতরে রয়েছে পাহাড় প্রমাণ স্মৃতি।
তারসাথে আছে শহরের সাথে কাটানো নিজের ইতিহাস।
প্রতিনিয়ত আমার বন্ধু ছবি পাঠিয়ে, আমাকে সেই স্মৃতি থেকে মুক্ত হতে দেয়নি আজও, হয়তো আমরা চাইলেই অনেক স্মৃতি ভোলা সম্ভবপর ও হয় না।
|
---|
আজকে তাই আপনাদের মাঝে চলে এসেছি আমার চেনা এবং প্রতি সপ্তাহের শেষে বেড়াতে যাওয়ার সেই স্থান দার্জিলিং এর কিছু ছবি নিয়ে।
দার্জিলিং গরমের ছুটি কাটানোর জন্য বাঙালিদের সবচাইতে পছন্দের জায়গা। এই গরমের মরশুমে যেকোনো পাহাড়ে বেড়াতে যাওয়া পছন্দ ভ্রমণপিপাসু বাঙালির।
আসলে আপনি যতক্ষন বাইরে না বেরোচ্ছেন ততক্ষণ বোঝা সম্ভব নয় ঘুরতে যাবার অ্যাডভেঞ্চার টা ঠিক কোথায় লুকিয়ে আছে।
একবার যদি বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়া যায়, দেখবেন বাড়ি ফিরে আসার কয়েক মাসের মধ্যেই মনে হবে আবার কোথাও ঘুরে আসি।
আমাকে যদি জিজ্ঞাসা করা হয়, এর পিছনের কারন কি? তাহলে আমার উত্তর হবে একঘেয়েমি থেকে মুক্তি এবং পাশাপশি নিজের দেশকে আরো বেশি করে জানবার সদিচ্ছা।
তবে শিলিগুড়িতে কাটানো বছরগুলোতে আমাদের কাছে দার্জিলিং, সিকিম এবং কালিম্পং ছিল কলকাতার চিড়িয়াখানা, ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল ঘোরার মতন।
|
---|
প্রতি শনিবার বিকেলে বেরিয়ে যাওয়া আর সোমবার ফিরে আসা। আমার কাছে বৌদ্ধ মন্দির ছাড়াও হলো বহমান তিস্তা, সাথে পাহাড়ের গা কেটে তৈরি রাস্তা ধরে নিজে ড্রাইভ করে যাওয়া।
কি অপরূপ দৃশ্য নিজে চোখে না দেখলে কেবল লেখা বা ছবির মাধ্যমে বর্ণনা অসম্ভব।
রাস্তার ধারে কমলা লেবু ঝুলে থাকা গাছ, যে ফুলঝারু দিয়ে আমরা প্রতিদিন ঘর ঝেড়ে থাকি, আপনারা সেই গাছ রাস্তার ধরে সারি সারি দেখতে পাবেন।
আরো আছে কোয়াস (এক ধরনের সবজি), আর চা বাগান।
কোনো উঁচু পাহাড় থেকে ছবি তোলবার সুযোগ পেলে বুঝবেন পাহাড়ী যেকোনো চাষের ধরন অন্যরকম।
শিলিগুড়িতে এক ধরনের লাল আলু( মিষ্টি আলু নয়) আমাদের দৈনন্দিন ব্যবহৃত আলুর মতোই তবে খোসা লাল রঙের।
যদিও এখানের বাজারে সেই আলু বলে চড়া মূল্য নিয়ে গ্রাহকদের বোকা বানিয়ে থাকে।
তবে কেউ যদি আসল পাহাড়ি সেই লাল আলু খেয়ে থাকেন, পার্থক্য একমুহুর্তের বুঝে যাবেন।
এরকম ছোটো বড়ো কত গল্পো, রোজকার অভিজ্ঞতা জড়িয়ে আছে উত্তর বাংলা জুড়ে।
আজকের ছবিগুলো আপনাদের কেমন লাগলো জানাতে ভুলবেন না। আজ এখানেই বিদায় নিলাম। ভালো থাকবেন সবসময়।
Your post has been rewarded by the Seven Team.
Support partner witnesses
We are the hope!
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনি অতীতে দার্জিলিং ও শিলিগুড়ি এর কিছু স্মৃতি বিজড়িত তথ্য আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন আজকে। সত্যিই অতীত কখনো ভুলে যাবার নয়।
আসলেই দিদি কোন কিছু সৌন্দর্যের অনুভূতি লিখে কিংবা বলে শেষ করা যায় না। সৌন্দর্য উপভোগ করা যায় মনের অনুভূতি ও তৃপ্তি দিয়।
আপনার কথার সাথে আমি সম্পূর্ণই একমত পোষণ করছি। কেননা আমাদের পৃথিবীর সৌন্দর্য উপভোগ করতে হলে অবশ্যই আমাদের ঘরের বাহিরে বের হতে হবে।
আমরা যদি ঘরের বাহিরে বের হই পৃথিবীর অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবো এবং পরবর্তীতে আমাদের ভ্রমণের প্রতি আরো আকর্ষণ সৃষ্টি করবে বলে আমি মনে করি।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আপনার স্মৃতি বিজড়িত অতীতের কিছু মুহূর্ত আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit