আমাদের দেশে হবে সেই ছেলে কবে?
কথায় না বড় হয়ে, কাজে বড়ো হবে! - কুসুম কুমারী দাশ।
আমি জানিনা আমাদের মধ্যে উপস্থিত কতজন উপরিউক্ত কবিতাটি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল!
যদিও পরাধীনতার সময় কবিতাটি নব- প্রজন্মকে উদ্ভুদ্ধ করতে কবি রচনা করেছিলেন।
তবে আক্ষরিক অর্থে আজও কবিতাটির প্রতিটি শব্দের প্রয়োজনীয়তা আছে বলে আমার মনে হয়।
কোনো মানুষ ভুলের উর্ধ্বে নয়, তবে খুব কম মানুষ আছেন যারা নিজেদের ভুল সঠিক সময় শুধরে নিয়ে নতুন করে পথ চলতে ইচ্ছুক।
নিজের কাজের অভিজ্ঞতা দিয়ে দেখেছি নিজেদের শুধরানোর প্রয়াস হাতে গোনা কিছু মানুষ করে থাকেন।
এর পিছনে বেশ কিছু কারণের অন্যতম দুটি কারণ হলো সুযোগ, আর লোভ।
এবার অনেকেই ভাবতে পারেন এই দুটি জিনিসের সাথে সঠিক মানুষ হবার কি সম্পর্ক?
আমাদের মধ্যে যারা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কাজের সাথে যুক্ত থেকেছেন বিশেষ করে যারা নানা কোম্পানিতে চাকরি করেছেন বা করছেন তারাই কথাগুলো বিশেষ করে বুঝতে পারবেন।
(বাকবিতণ্ডা, চাপ, ভুলভ্রান্তি পথ পরিবর্তনের কারণ হওয়া উচিত নয়) |
---|
কাজের জায়গায় যখন কোনোরকম চাপ, ভুল, বাকবিতণ্ডা সৃষ্টি হয়, প্রথম যে কথাটি মাথায় কাজ করে ধুর এই কোম্পানিতে আর কাজ করবো না।
বেশিরভাগ মানুষ অন্যত্র জায়গায় কাজের সন্ধান করেন এবং যখনই দেখেন তারা অধিক মাসোহারা দিচ্ছেন সঙ্গে সঙ্গে আগের কাজ ছেড়ে নতুন কোম্পানিতে বহাল হয়ে যান।
তারা এটাকে সঠিক সুযোগ পাওয়া বলে মনে করেন, এবং অধিক অর্থ উপার্জনের লোভ তাদেরকে ঠেলে দেয় সেই সুযোগকে গ্রহণ করতে।
তবে কিছুদিন কাজ করে অনেকেই তুলনা শুরু করে দেন, আগের আর পরের কোম্পানিতে পার্থক্য কোথায় ছিল।
আমি সুযোগের বিরুদ্ধে নই, তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সৃষ্টিকর্তা একাধিক সুযোগ আমাদের সামনে উপস্থিত করে, এর মাধ্যমে তিনি আমাদের সততার পরীক্ষা নিয়ে থাকেন।
এখানে একটি ছোট্ট ঘটনা বলি, একবার এক কোম্পানিতে একজন দক্ষ এবং সৎ ইঞ্জিনিয়ার কাজ করতেন। যদিও কোম্পানিটি তেমন নামকরা ছিল না, তবে এই ইঞ্জিনিয়ারের কারণে দিনে দিনে কোম্পানিটি সফলতার দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল।
এরপর যখন কোম্পানিটি বেশ নাম করে ফেললো, তখন অন্য এক নামী কোম্পানির মালিক সেই ইঞ্জিনিয়ারের সাথে দেখা করতে চাইলেন।
যে জায়গায় ইমারত তৈরির কাজ চলছিল তিনি স্বয়ং সেখানে গেলেন ইঞ্জিনিয়ারের সাথে দেখা করতে, এবং তাকে মোটা বেতনের সাথে কোম্পানির অংশীদারি দেবেন বলে জানালেন।
নিজের কথা শেষ করে মালিক সেই ইঞ্জিনিয়ারের অভিমত জানতে চাইলেন। উত্তরে সেই ইঞ্জিনিয়ার জানালেন স্যার আমি এই কোম্পানিতে ইন্টারভিউ দেবার আগে আপনার কোম্পানিতেই ইন্টারভিউ দিতে গিয়েছিলাম।
সেদিন আপনি আমাকে সুযোগ দেন নি কারণ আমার সেদিন ডিগ্রী থাকলেও কাজের অভিজ্ঞতা ছিল না। তাই সেদিন আপনি একজন অনভিজ্ঞ ইঞ্জিনিয়ারকে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন।
এরপর যখন আমি বর্তমান কোম্পানিতে ইন্টারভিউ দিতে আসি, এখানে আমার যোগ্যতা এবং কাজের প্রতি আস্থাকে প্রাধান্য দেওয়া হয়।
যে মানুষটি আমার অভিজ্ঞতাকে নয়, আমার যোগ্যতাকে মূল্যায়ন করে আমাকে সুযোগ দিয়েছেন, আজকে সফলতা পাবার পরে, লোভের বশবর্তী হয়ে তার সাথে বেইমানি করতে পারবো না।
একটার পর একটা কোম্পানি পরিবর্তন করতে যারা অভ্যস্ত তারা কখনোই বিশ্বাসযোগ্যতার অধীনে থাকা মানুষের দলে পড়েন না।
আমিও একসময় ইন্টারভিউ নেবার সময় দেখতাম সেই ব্যক্তি কতগুলো কোম্পানি বদলেছেন এবং কোথায় কতদিন কাজ করেছেন।
একটা বাস্তব সত্য হচ্ছে যেখানে উঁচু পদ, আর উঁচু মানের বেতন আছে, জানবেন সেখানে কাজের দায়িত্বও ততখানি আছে।
বিনা কারণে গাছের একটা পাতাও দোলে না, সেখানে বিনা সততা এবং নিষ্ঠা ছাড়া কোথাও দীর্ঘদিন ঠাঁই পাওয়া যায় না।
সুযোগ আসবে, যাবে কিন্তু বিপদের বন্ধুদের যারা মনে রাখেন না, সময় তাদের থেকে কর্মের হিসেব নিয়ে নেয়।
একটা সময় এই ধরনের মানুষের জন্য সকল দরজা যখন বন্ধ হয়ে যায়, তখন তারা নিজেদের ভুল উপলব্ধি করতে পারেন।
সেইদিন ফেলে রেখে আসা বিপদের বন্ধু বা কাজের জায়গা কোথাও ঠাঁই পায় না এইসকল মানুষ।
আমি এর আগেও একটি লেখাতে উল্লেখ করেছিলাম প্রতি বছর ভালো কাজ করেও আমার পদোন্নতি পেতে ছয় বছর সময় লেগেছিল, তার জন্য আমি কোম্পানি বদলে ফেলি নি হতাশ হয়ে।
ফলস্বরূপ পর পর দুমাসে আমার দুবার পদোন্নতি হয়েছিল। ধৈর্য্য, সততা, এবং একনিষ্ঠতা আজও বাজারে বিক্রিত দ্রব্যে সামিল নয়, কাজেই এটার মূল্য সর্বাগ্রে আমাদের দেওয়া শিখতে হবে।
নইলে সারাজীবন ভবঘুরে হয়েই থাকতে হবে, ঠাঁই মিলবে না কোথাও, অন্ততপক্ষে আমি সেই নীতি মেনেই আজও চলছি।
কাজেই উপরিউক্ত কথাগুলো আমার সেই অভিজ্ঞতার সারমর্ম। সহমত পোষণ করার আশা নিয়ে লেখাটা লিখছি না।
কাজেই আপনারা উন্মুক্ত ভাবে নিজের নিজের অভিমত পোষণ করতেই পারেন।
পরিশেষে তাই বলতে চাই আমাদের কথায় নয়, নিজের নিজের কাজের দ্বারা নিজেদেরকে প্রমাণ করতে হবে। নিজেদের নীতিতে সঠিক থাকাটা অত্যন্ত আবশ্যকীয়। একবার অন্তত ভেবে দেখবেন আমার কথার অর্থগুলো।
Your post has been rewarded by the Seven Team.
Support partner witnesses
We are the hope!
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
বাস্তবিক পক্ষে সেই ইঞ্জিনিয়ার এর মত সৎ ব্যক্তি খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। তার মত যদি কেউ তার নিজ নিজ জায়গা থেকে সেই ইঞ্জিনিয়ার ব্যক্তির মত নিজেকে তৈরি করতে পারে তাহলে অবশ্যই ভালো ব্যক্তি হওয়া সম্ভব।
যেমনটি ভাবে আপনি আপনার কর্মক্ষেত্রে ছয়টি বছর অপেক্ষা করার পর পদোন্নতি হয়েছে তাও একবার নয় বেশ কয়েকবার। পদোন্নতি কখন হবে সেটাও বলা যায় না। তবে আপনি ধৈর্য এবং নিরাশ না হয়ে সেখানে ছিলেন। ইন্সপায়ার হোই আপনার কাছ থেকে।
ধন্যবাদ জানাই বাস্তবিক কথাগুলো তুলে ধরার জন্য। দোয়া করবেন দিদি আমার জন্য। কখনো যেন অসৎ পথে ধাবিত না হই, এ ক্ষেত্রে নিজের প্রচেষ্টা সর্বপ্রথম এটাও মানি। (ধন্যবাদ)
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনি আজকে যে ইঞ্জিনিয়ার এর কথা আপনার পোস্টটি তুলে ধরেছেন! এমন মানুষ আসলে বর্তমান সমাজে খুঁজে পাওয়াটা,,,, খুব দুঃসাধ্যকর ব্যাপার।
এরপরে আপনি পোষ্টের শেষে বলেছেন,, ধৈর্য সততা এসব কিছু বিক্রি হয়! কিন্তু দ্রব্যমূল্যের মতো নয়! একদমই ঠিক বলেছেন,, বর্তমান সময় যে এসব কিছুর মূল্য মানুষ বুঝতে পারে না।
আজকে আপনার পোস্ট পড়তে গিয়ে,, নিজের কাছে মনে হচ্ছিল আমি কিছুই না! আমি অনেক ছোট! আমাকে আরো অনেক কিছু জানতে হবে।
অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে,,, এত সুন্দর একটা পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্যে। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল! ভালো থাকবেন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Amiga es verdad en un empresa se pasan muchas situaciones que hay veces el jefe no nos valoran como sus trabajadores si no cuando se dan cuenta de que tú te sabes el trabajo o existe ocasiones de trabajadores que son inestable no quieren seguir trabajando con esa empresa si no buscan en otra y sigue con el mismo patrón. Saludos y bendiciones.🤗
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit