কথায় বলে ইচ্ছে থাকলে উপায় হয়! কিন্তু হলো কোথায়?
আজকে ভেবেছিলাম একটি চ্যালেঞ্জ অংশগ্রহণ করবো, সেইমত খানিক লিখলাম তবে তারপর সেটা সম্পূর্ণ করতে পারলাম না।
আসলে একটা বিষয় আলোচনার জন্য বাংলাদেশের অ্যাডমিন আমাকে ডেকেছিলেন, কাজেই সেখানে উপস্থিতি জরুরি ছিল তাই আর লেখাটা সম্পূর্ণ করতে পারিনি।
যাইহোক, অংশগ্রহণ করবো ভেবেছি যখন নিশ্চই সময়ের মধ্যে করবো।
তবে আজকে আলোচনায় আসল সত্য বেরিয়ে এসেছে, এটাই হবার ছিল।
আজকে একটা গল্পো বলি, যেটা ছেলেবেলায় মায়ের মুখে শোনা।
গল্পটা হোলো এইরকম:- |
---|
দিনটি ছিল লক্ষ্মী পুজোর। ঘরে ঘরে মা লক্ষ্মীকে আহ্বান জানাতে সকলের ঘটা করে নানা রকমের খাবারের আয়োজন, সাথে ধুপ, দীপ আর আলোর রোশনাই।
লক্ষ্মী দেবী হলেন ধনসম্পদ, আধ্যাত্মিক সম্পদ, সৌভাগ্য ও সৌন্দর্যের দেবী।
দেবীকে চঞ্চলা নামেও অভিহিত করা হয়, কাজেই তাকে তুষ্ট করা কি আর যে সে ব্যাপার!
সকলের যথাসাধ্য ক্ষমতা দিয়ে দেবীকে তুষ্ট করতে বিপুল পুজোর আয়োজন করেছেন গ্রামের ধনী ব্যাক্তিরা।
এদিকে সেই গ্রামেই এক কুঁড়ে ঘরে, মা আর মেয়ে থাকতো।
পরের বাড়ীতে কাজ করে যা উপার্জন হতো তাই দিয়েই দুজনের পেট কোনরকমে চলত।
সেই গরীব মায়ের ইচ্ছে হলো লক্ষ্মী পুজো করবে, কিন্তু সাধ্য কোথায়?
তাই চোখের জল মুছতে মুছতে দেবীকে স্মরণ করলেন আর নিজের অসমর্থ অবস্থা এবং ইচ্ছের কথা জানালেন।
এরপর, যেহেতু সে পুজো করবে সংকল্প করেছিলেন, কাজেই যাদের বাড়িতে তিনি কাজ করতেন;
তারা ফল কাটার সময় অনেক ক্ষেত্রে ফলের খোসার সাথে কিছু ফল রয়ে যায় সেগুলো তারা ফেলে দেন।
এরকম কিছু অল্প লেগে থাকা ফলের খোসা সে কুঁড়িয়ে বাড়িতে নিয়ে এলেন, এবং সেখান থেকে যেটুকু ফল পেলেন সাথে কিছু খোসাও তিনি দেবীর উদ্দেশ্যে নিবেদন করলেন।
পুজোর দিন আকাশ পথে মা লক্ষ্মী তাঁর ভক্তদের নিরীক্ষণ করতে বেড়িয়েছেন। চতুর্দিকে রোশনাই আর বিপুল আয়োজন।
তিনি কোনো ঘরের দিকেই তাকালেন না, কেবলমাত্র সেই কুটিরের দিকে চাইলেন।
সাথে সাথে খোসাযুক্ত ফল গোটা ফলে রূপান্তরিত হয়ে গেলো।
কুটির হয়ে গেলো মহল আর প্রদীপের শিখা রূপান্তরিত হলো আলোর রোশনাই এ!
ঘর ভরে গেলো অর্থ আর শস্যে, মায়ের কাছে মাথা নত করে দরিদ্র মা আর মেয়ে প্রণামের মাধ্যমে দেবীকে স্মরণ করছিলেন।
যখন মাথা তুললেন, দেখতে পেলেন সবকিছু একনিমেশেই পরিবর্তন হয়ে গেছে।
এটা একটি কাল্পনিক গাঁথা কিন্তু এটা থেকে আমরা শিক্ষা পাই, সততা আর সত্য সৃষ্টিকর্তার আশীষ পাবার সেরা পথ।
দেখুন সেই মহিলা যে বাড়িতে কাজ করতেন চাইলে তিনি আঁচলে করে দুটো ফল চুরি করেও আনতে পারতেন!
আবার চেয়েও আনতে পারতেন, কিন্তু সেক্ষেত্রে অনেকেই উপহাস করতো তার ধনী হবার ইচ্ছেকে ব্যঙ্গ করে!
তিনি উপরিউক্ত কোনো পথ না বেছে, ফেলে দেওয়া জিনিষ দিয়েই পুজো করে দেবীর আশীষ পেলেন, কেনো?
কারণ তার উদ্দেশ্য ছিল সৎ, তিনি তার সততা থেকে সরে দাঁড়ান নি! আমাদের ভিতরে আসলে দুটো মন কাজ করে।
একটি লোভী মন আর অন্যটি সৎ মন।
মানে একটি মন যেটি ইতিবাচক বার্তা বহন করে, অন্যটি নেতিবাচক।
এখন আমরা কোন মনের কথা শুনে কাজ করবো না কোন মনকে গুরুত্ব দেবো সেটা নির্ভর করে আমাদের উপরে।
আমার কাছে সফলতার পরিভাষা যেখানে মানুষের পাশে দাড়িয়ে, তাদেরকে সঠিক পথ দেখিয়ে নিস্বার্থ ভাবে এগিয়ে যেতে সাহায্য করতে পারা।
আমি যখন বিভিন্ন এনজিও তে কাজ করেছি, মানুষের নিদারুণ পরিস্থিতি সচক্ষে দেখেছি এবং তারা কিন্তু কখনোই সেই পরিস্থিতি থেকে উদ্ধার পেতে অসৎ পথ অবলম্বন করেন নি।
আমি দেখেছি ফুটপাতে থেকে পড়াশুনা করে বড়ো পদে চাকরি পেয়েছে, এটা সততার বাস্তবিক উদাহরণ।
এবার আরো একটি ঘটনার উল্লেখ করবো, যেটি আমাদের পরিবারেই ঘটেছে।
একদিন আমার মাসতুতো দাদা মেট্রো করে কলকাতার বড়বাজার যাচ্ছিল।
সঙ্গে ছিল অনেকখানি নগদ টাকা, মেট্রো থেকে নামার সময় অনেক ব্যাগের মাঝে টাকার ব্যাগ পড়ে গেছে সেটা সে, লক্ষ্যই করে নি।
যথারীতি, নিজের গন্তব্যে গিয়ে শাড়ী পছন্দের পড়ে অগ্রিম টাকা দিতে গিয়ে ব্যাগ খুঁজে পাচ্ছিল না!
মাথায় হাত একটা দুটো টাকা নয়!
বাড়িতে দাদাকে ফোন করে জানায়, তখন সেই দাদা থানায় যাবার পরামর্শ দেয়।
যেহেতু মহাজন চেনা কাজেই তারা টাকা না থাকার কারণে জিনিষ দিতে অস্বীকার করে নি।
যাইহোক কাজ শেষে থানার উদ্দেশ্যে বেরিয়ে হটাৎ একটা অজানা নম্বর থেকে ফোন আসে, দাদা ফোন তুলে মহিলা কণ্ঠস্বর শুনতে পায় এবং তিনি দোকানের নাম এবং ঠিকানা জিজ্ঞাসা করে।
সাথে বলে একটি প্লাস্টিকের গায়ে দোকানের নাম এবং ফোন নম্বর পেয়েছি সঙ্গে টাকা।
দাদার প্রাণে জল আসে এবং জানায় দোকানের নামটা তাদের এবং ফোন নম্বর তারই।
এরপর দেখা করে সেই টাকা ফেরত পায়, আজও সেই পরিবারের সাথে সুসম্পর্ক রয়েছে। তারা জৈন ধর্ম অবলম্বন করেন।
যাইহোক, আজকে কথাগুলো বলছি তার কারণ, জীবনে যেকোনো পথ বেছে নেওয়া থেকে শুরু করে সেই পথ ধরে চলার সিদ্ধান্ত একান্তই আমাদের।
যে পথ আমরা আমাদের জন্য বেছে নেবো, পরিণতি কিন্তু সেই পথ অনুসারেই আমরা পাবো।
কাজেই, যেকোনো কাজ করার আগে ভেবে দেখবেন তার পরিণতি আপনার পাশাপাশি আপনার প্রিয়জনদের ভুগতে না হয়।
আর যাইহোক কখনো অকারণে মানুষের অভিশাপ কুড়োতে নেই।
ভেবে দেখবেন কথাগুলো, অনেক সময় বড়দের কর্মফল বাচ্চাদের বইতে হয়।
সততা সমাজে একজন ব্যক্তিকে টিকে থাকতে শেখায় আর সত্যবাদী ব্যক্তির মর্যাদা বৃদ্ধি করে আল্লাহ সুবাহানাতালা নিজে। গল্পটি মধ্য অনেক শিক্ষণীয় বিষয় রয়েছে যা পড়ে অনেক ভালো লাগলো। ম্যাডাম আপনি একটা কথা বলছেন যে আর যাই হোক কখনো অকারণে মানুষের অভিশাপ কুড়োতে নেই। বাস্তব সম্মুখে একটি কথা আমি দেখেছি মানুষের অভিশাপে অহংকার ধ্বংস হয়ে যেতে ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আজকে আপনার পোস্ট পড়ার পর জীবনের অনেক বাস্তবতা আমার সামনে চলে আসলো।আসলেই সৎ থাকলে সৃষ্টিকর্তার করুনা পাওয়া যায়। আমাদের ধর্মে একটা কথা আছে। যে ব্যক্তি সবসময় সৃষ্টিকর্তার প্রতি আনুগত্য স্বীকার করে। সৃষ্টিকর্তা সেই মানুষটাকে অনেক বেশি শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসে। সে খুব কাছাকাছি থাকে সৃষ্টিকর্তার।
আমাদের প্রত্যেকেরই কিছু কথা মাথায় রাখা উচিত। আমরা যখন সততার সাথে কাজ করব,, তখন আমরা অল্প অল্প উপার্জন করার শুরু করে। একটা সময় অনেক বেশি টাকা উপার্জন করতে পারব।অতিরিক্ত লোভ মানুষকে ধ্বংস করে দেয়।
তাই আমি মনে করি সৃষ্টিকর্তা যতটুকু দিয়েছে। ততটুকুতে সন্তুষ্ট থেকে এগিয়ে যাওয়া উচিত। কোন না কোন সময় নিশ্চয়ই তিনি আমাদের দিকে ফিরে চাইবেন। এবং আমরা অনেক কিছু করতে পারবো। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে,,, দুইটা গল্প আমাদের সাথে উপস্থাপন করার জন্য। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল। ভালো থাকবেন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
সততার পুরস্কার আল্লাহ পাক নিজ হাতে দেন।
আপনার পোস্টটি পড়ে আরও পরিস্কার হলাম।মে সৎ থাকলে কেউ ঠেকাতে পারবে না। দিদি আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। এতো সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
অনেক ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানে লেখা থাকে সততাই আমাদের মূলধন।
মানুষের শিক্ষা ও পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে সে কোন পথ অবলম্বন করবে।
আপনি যে সত্য ঘটনাটি উল্লেখ করেছেন তা খুবই বিরল। উনি যে সততার পরিচয় দিয়েছেন তা শিক্ষনীয় ও প্রশংসনীয়। আপনি আমাদের আজ একটি বার্তার মাধ্যমে জানিয়েছেন সত্যমেব জয়তে
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
TEAM 2
Congratulations! This post has been upvoted through Curation Team#2. We support quality posts , good comments anywhere and any tags.Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
দিদি এক কথায় অসাধারণ হয়েছে ,
এই পোস্ট টা আপনার এই পোষ্টার সম্পন্ন পরে আমি আমার বাস্তব জীবন থেকে কিছু জিনিস আমার চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছিলাম ।
আমরা যদি কখনো সরিষা পরিমাণে ভালো কাজ করে থাকি, বা সততার সাথে করে থাকি। অবশ্যই সেই সততা এবং ভালো কাজের প্রতিদান সৃষ্টিকর্তা নিজের হাতে দিয়ে থাকেন ।
তাছাড়া অতিরিক্ত লোক মানুষকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যেতে থাকে, তাই আমাদের অতিরিক্ত লোভ করা ভালো না, সৃষ্টিকর্তা যতটুকু দিয়েছে ঠিক ততটুকু নিয়ে শুকরিয়া করা দরকার,
অসংখ্য ধন্যবাদ দিদি গল্প আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য অনেক কিছু শিখতে পেরেছি জানতে পেরেছি গল্পের মাঝে। ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন আপনার জানার জন্য রইল শুভকামনা।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit