আজকের কবিতা :- দশভূজা! Poetry - Decagon! (The power of a woman)

in hive-120823 •  last month 
1000037496.png

দশভূজা:- The women power!

অশান্ত মন নিয়ে, চলছে মহাশক্তির বোধন;
যদিও, পৃথিবীর আনাচে কানাচে,
উন্নত যুগেও চাই অনেক শোধন।

নারী কোমল, নারী মমতা,
নারী শক্তির রূপ;
তবুও ঘরে ঘরে তাদেরকে
এখনও থাকতে হয় চুপ!

অন্দরমহল হোক, বা বাইরে
কেনো নেই নারী এখনও সম্পূর্ণ সুরক্ষিত?
অনিশ্চিত, দুঃশ্চিন্তায় মাতা-পিতা,
আছে কি তারা অক্ষত?

কলিযুগের অসুর নিধন,
আজও রয়ে গেছে বাকি;
মমতা নয়, সম্ভব কেবল,
যদি শক্তির রূপ ধরে থাকি!

পোশাকের আড়ালে,
আজও হয়নি বন্ধ দেওয়া উঁকি;
তবুও নারী প্রতিনিয়ত লড়ছে
পাথেয় মনোবল, নিয়ে সম্মানের ঝুঁকি!

বলি? যে নারীর গর্ভে জন্ম,
কুলষিত করতে তাকে
বিবেকে বাঁধে নাকো একবার?
নজর অন্যত্র নয়, চরণে থাকা দরকার!

প্রতিবাদে নামলে,
সমাজ পরিবর্তনে সক্ষম এই নারী;
মহাদেব পদতলে শায়িত,
উদাহরণ দেওয়া আছে তারই!

দু'হাতে দশভূজা ঘরে, তথা বাইরে;
নানা ভূমিকায় সমান দক্ষ,
কেবলমাত্র নারী ছাড়া, আর কেউ নেইরে!

নারী স্থলে, নারী জলে,
নারী আজ মহাকাশে;
মহা মানবী, বহু দুর্গা
রয়েছে আশেপাশে।

বিনম্রতা, সভ্যতা, মমতা
নারীর দুর্বলতা নয়;
বলিষ্ঠ ভূমিকায় আসলে পরে,
গোটা সমাজ পায় ভয়!

দুর্গা, কালীকে জাগ্রত করো,
একত্রিত হয়ে সবে,
সমাজ তথা দৃষ্টিভঙ্গির
পরিবর্তন তবেই হবে।

1000037530.jpg

নদ অসম্পূর্ণ যদি সাথে নদী না থাকে! তেমনি আমাদের সমাজ অসম্পূর্ণ যদি নারী সমাজ থেকে মুছে যায়!
ভেবে দেখার বিষয় হলো, নারী বিহীন সমাজে পুরুষের অস্তিত্ব কি অদেও সম্ভব।

ঈশ্বরের সৃষ্টি এমন যেখানে এক্ জনের পরিপূরক অন্যজন।

এখানে কেউ কম নয়, আবার কেউ বেশি নয়;
তবে অনেকেই জীবনের পথ চালায় আজও নারীদের বেশকিছু ক্ষেত্রে পিছনে ফেলে রেখেছে, বিশেষ করে কিছু কিছু দেশে।

আজকে একটা কবিতা নিয়ে হাজির হয়েছি, যেহেতু এই মুহূর্তে কলকাতার সবচাইতে বড় উৎসব দুর্গাপুজো চলছে তার নিরিখে।

প্রতিবন্ধকতা আসলে আমাদের মানসিকতায়, কথাটা এর আগের লেখায় আপনাদের সাথে ভাগ করে নিয়েছিলাম।

কেনো লিঙ্গ বৈষম্যহীন সমাজ গড়তে আজও অনেকেই অক্ষম?
কেনো আজও অনেকেই মনে করেন নারী কেবলমাত্র রান্না ঘরে শোভা পায়?
কেনো আজও নারী কেবলমাত্র জন্মদাত্রী ছাড়া আর কিছুই হতে পারে না?

আজকে একটি ছোট্ট বাচ্চার ছবি ভাগ করেছি, সে সম্পর্কে আমার আত্মীয়া, পাশাপশি দুটো ভিডিও যেখানে এবারের পর অলিম্পিক এ দ্বিতীয়বার সোনার পদক জিতে ভারতকে গর্বিত করেছে ২২ বছর বয়সী একটি মেয়ে।

শুধু প্রযুক্তি উন্নত করলেই অথবা মিটিং মিছিল নয়, সামাজিক উন্নতি আসে মানসিকতা উন্নতির হাত ধরে, যেদিন বাড়ির মেয়ে, বউ, বৌমা যেই হোক না কেনো, সমান সুযোগ সুবিধা পাবে তার প্রতিভা বিকাশের সেদিন আসবে প্রকৃত অর্থে উন্নতি।

শিক্ষায় বিভিন্নতা, সংসারে বৈষম্যতা, মানসিকতায় পার্থক্য এগুলো আমার নজরে এমন অসুখ যার চিকিৎসা শৈশব না করলে ভালো হবার কোনো সম্ভবনা নেই।

(My salute to all those parents who believe in equality- Three para Olympic gold medalist)

সুনীতা উইলিয়ামস মহাকাশে পাড়ি দিয়েছেন বহুবার, কল্পনা চাওলা মহাকাশ পাড়ি দিয়েছেন এবং প্রাণ হারিয়েছেন, কিন্তু ইতিহাসের পাতায় নাম লিখে গেছে স্বর্ণাক্ষরে!

এরাও কিন্তু নারী এবং অন্য অনেকের চাইতে যোগ্যতার নিরিখে এগিয়ে।
ভেবে দেখবেন, কারণ ঘর থেকেই পরিবর্তন শুরু হয়।
নারী যেদিন ঘরে সমানাধিকার পাবে, যোগ্যতার বিকাশের সমান সুযোগ তাকে দেওয়া হবে, সেদিন প্রকৃত অর্থে আমরা বলতে পারবো আমরা উন্নত হয়েছি।

একটি মেয়ে কত ছোটো পোশাক পড়েছে, সেটা তার চরিত্র বিশ্লেষণ করে না, এটা নিয়ে যারা পিছনে সমালোচনা করে, তাদের মানসিকতা সুস্থ্য করবার প্রয়োজন আছে।

নজর উন্নত না করলে, সমাজ উন্নত হতে পারে না, লালসা দেহের প্রতি নয়, নিজেকে আদর্শ মানুষ রূপে তৈরি করতে প্রয়োগ করা উচিত।
নিজস্ব অভিমত ব্যক্ত করলাম, জানি অনেকেই সহমত পোষন করবেন না, তাতে আমার শিক্ষা খাটো হবে না কখনোই।

1000010907.gif

1000010906.gif

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

অসাধারণ লেখা। সত্যিই আজকের সমাজের চিত্রপট আপনি আমাদের সামনে তুলে ধরেছেন। নারী পুরুষ কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে না চললে এই সমাজের অগ্রগতি কোনোভাবেই সম্ভব নয়। তাইতো কবি কাজী নজরুল ইসলাম তার লেখায় বলেছিলেন---

"বিশ্বে যা কিছু মহান সৃষ্টি চির কল্যাণকর
অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর।"

কিন্তু দুঃখের বিষয় হল আমরা কতজনই বা এই কথাটা মানতে পারি।

আপনার মন্তব্যের একপ্রস্থ উত্তর discord জেনারেল এ দিয়েছি, তবুও এখানে চলে এলাম আবারো নিজের অভিমত ব্যক্ত করতে।

যুগ বদলেছে, উন্নত হচ্ছে প্রযুক্তি কিন্তু কোথাও আজও মানসিকতা রয়ে গেছে সেকেলে।

আজও অনেকেই মনে করেন নারীর স্থান রান্না ঘরেই সীমাবদ্ধ। অথচ, সেই কোন যুগেই বিশ্ব বরেণ্য কবিরা সমাজে সমানাধিকারের কথা বলে গেছেন।

আমরা অনেকেই অনেক কিছু জানি, কিন্তু খুব কম সংখ্যক মানি, এখানেই তারতম্য।

ভালো লাগলো আপনার অনুপ্রেরণা মূলক মন্তব্য পড়ে, ভালো থাকবেন আর অবশ্যই কাজের মাধ্যমে এগিয়ে যাবেন।

ধন্যবাদ দিদি।
সত্যিই তাই। আমরা যদি মননে চেতনায় বিশ্ব বরেণ্য কবিদের মানসিকতাকে আত্মস্থ করতে পারতাম তাহলে হয়তো এখনকার সমাজটা অন্যরকম হতো।

তবুও হাল ছাড়লে চলবে না। সমাজের পরিবর্তন আনতেই হবে। তাই সমস্ত নেগেটিভিটি থাকা শর্তেও আমাদের পজিটিভিটির দিকে এগিয়ে যেতে হবে।

ভালো থাকবেন।

Your post has been rewarded by the Seven Team.

Support partner witnesses

@seven.wit
@cotina
@xpilar.witness

We are the hope!

Upvoted. Thank You for sending some of your rewards to @null. It will make Steem stronger.

Loading...

নারীকে পুরুষের তুলনায় ছোট করে দেখাটা হাজার বছর ধরে পুরুষদের নাথায় ঢুকে রয়েয়ে।এখান থেকে তারা বের হতে না পারার পেছনে আমাদের মেয়েদেরও কিছুটা ভুমিকা রয়েছে বলে আমার কাছে মনে হয়।
আমরা পুরো পরিবার থেকে যদি নাও পারি অন্তত পরিবারের মেয়েরাও যদি ছোটবেলা থেকে তাদের এই শিক্ষাটা দেই যে নারী হলেই সে তোমার থেকে কোন অংশে পিছিয়ে নেই। তাহলে কিছুটা হলেও চেন্জ আসবে।
যতদিন নারী ও পুরুষ সমান গুরুত্ব না পাবে কিংবা নারীরা পিছিয়ে পরে থাকবে ততদিন কোন জাতীর উন্নতি সম্ভব না।
নারীকে নারী না ভেবে অন্য সবার মতো মানুষে ভাবতে হবে।

Hi @sduttakitchen the poetry has true sense of women empowerment and it motivates a lot as it reminds the women their strength and possibilities which they can have in future. A post worth huge appreciation 🎉