মানুষকে বানানো হয়েছে সামাজিক জীব হিসেবে। একা থাকার জন্য মানুষের জন্ম হয়নি। দলবদ্ধভাবে কিংবা পরিবার পরিজন নিয়ে বছরের পর বছর জীবন পার করে আসছে মানুষ। যেহেতু একাকীত্ব মানুষের শোভা পায় না। তাই এই একাকিত্বে ভোগা মানুষজন মানসিক এবং শারীরিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
ধরুণ আপনাকে একটি জায়গায় আটকে রাখা হলো। যেখানে আপনার সাথে কথা বলার মতন কোন মানুষ নেই। আপনার দুঃখ, কষ্ট ভাগ করে নেওয়ার মতন কেউ নেই। আপনি সম্পূর্ণ একা। কেমন লাগবে তখন? সেখানে যদি আপনাকে অঢেল সম্পদ এবং খাবারও আপনাকে দেওয়া হয় তবুও আপনার ভালো লাগবে না। কারণ তখন আপন একাকিত্বে ভুগবেন।
ইসলাম ধর্মমতে আমাদের সকলের পিতা এবং সর্বপ্রথম মানুষ আদম (আঃ) কে বেহেশতে রাখা হয়েছিলো। যেখানে কোন কিছুর অভাব ছিলো না। কিন্তু আদম সেখানে হয়ে পড়েছিলেন একদম একা। তাই তার সঙ্গী হিসেবে সৃষ্টিকর্তা হাওয়া (আঃ) কে সৃষ্টি করেন। অর্থাৎ ধর্মীয় দৃষ্টিগুণ থেকে দেখলেও মানুষ সৃষ্টিলগ্ন থেকেই একাকীত্ব পছন্দ করে না।
পরিবার, পরিজন কিংবা কাছের মানুষজনদের সান্নিধ্য আমাদের আনন্দিত করে তোলে। বিজ্ঞানের ভাষায় প্রিয়জনদের সাথে সময় পার করলে মস্তিষ্কে ডোপামিন ক্ষরণের মাত্র বেড়ে যায়। ফলে আমাদের আনন্দ অনুভূত হয়। আপনি নিজেও দেখবেন যে, যখন কোন একটি কারণে আপনার অনেক কষ্ট হচ্ছে তখন আপনি যদি আপনার সেই কষ্টের কথা কাছের মানুষের সাথে শেয়ার করেন তাহলে নিজেকে অনেক হালকা লাগবে। মনে হবে যেনো একটি বোঝা নেমে গেলো।
কিন্তু বর্তমানে আমাদের সমাজের মানুষ যেনো অনেক বেশী একাকীত্বের শিকার হচ্ছে। এর অন্যতম কারণ প্রযুক্তির উন্নয়ন। দিন যত যাচ্ছে আমরা প্রযুক্তি দেখতে পাচ্ছি নতুন রূপে। এতে করে পৃথিবীটা হাতের মুঠোয় চলে এসেছে ঠিকই। কিন্তু মানুষের মধ্যে বেড়েছে দূরত্ব। আগে যেখানে মানুষজন সময় পেলেই বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেওয়ার জন্য বাহিরে যেত এখন সবাই ফাঁকা সময় পেলেই মোবাইলে মুখ গুঁজে বসে থাকে।
আমাদের যেখানে ছিলো রঙিন শৈশব, মাঠে-ঘাটে খেলে বেড়িয়েছি। বন্ধুদের সাথে গড়ে উঠেছিলো ভ্রাতৃত্বের বন্ধন। সেখানে এখনকার বাচ্চারা জন্মের পরেই যে জিনিসটা সবচেয়ে বেশী আপন করে নেয় তা হলো মোবাইল ফোন। সোশাল মিডিয়াতে বন্ধুদের ছবিতে লাইক, কমেন্ট করা যায় ঠিকই কিন্তু আত্মার সম্পর্ক গড়া যায় না। তাই অনলাইনে সবার মাঝে থেকেও যেনো মনে হয় আমরা খুবই একা।
একটি মানুষের অনলাইন জীবন আর অফলাইন জীবন এক হয় না। অনলাইনে সবাই সব সময় ভালোটাই দেখাতে চায়। খারাপটা আড়াল করে রেখে। ভালো থাকার লেবাস ধরে অনলাইনে সবার প্রশংসা কুড়ানোর পর বাস্তব লাইফে যখন দেখা যায় আসলে তার কোন প্রকৃত বন্ধু নেই। তখম তৈরী হয় হতাশার। জন্ম নেয় একাকীত্ব।
আমরা এখন নিজেদের জীবন নিয়ে খুবই ব্যস্ত থাকি। অপরজনের কথা শোনার মতন ধৈর্য্য আমাদের থাকে না। ফলে মানুষের ভেতর কথা জমতে জমতে পাহাড় সৃষ্টি হয়। যার চাপ সহ্য করতে না পেরে সে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। অর্থাৎ সেই একাকীত্বই কিন্তু প্রাণঘাতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাই পরিবার, প্রিয়জন অথবা বন্ধুবান্ধবদের সময় দিন। নিজেও একাকীত্ব থেকে দূরে থাকুন। অপরকেও দূরে রাখুন।
যাইহোক আজকে আপনি অনেক সুন্দর করে এই গল্পটি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন যেটা পড়ে আমার কাছে অনেকটাই ভালো লেগেছে, ধন্যবাদ জানাবো আপনাকে এত সুন্দর একটি গল্প আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন আপনি।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit