সবাইকে আমি প্রণাম জানাই। আশা করি উৎসবের এই দিনগুলিতে আপনারা সকলেই ভালো আছেন এবং আমিও ভালো আছি ।
আজ শুভ দীপাবলি উৎসব। আগের পোস্টে আপনারা মাতৃ প্রতিমা প্রস্তুতি পর্ব দেখেছিলেন। প্রতিমার কাজ সম্পূর্ণ হয়ে গেছে। গত কালকে ছিল মায়ের পূজা।আমাদের ক্লাব আগুনেশ্বরীতে মা আগুনেশ্বরীর খুব জাঁকজমক করে আমরা পূজার আয়োজন করে থাকি। তাই আমিও মুখিয়ে ছিলাম সারাদিনের সমস্ত কাজ সেরে কখন আমি আমার ক্লাবে পূজা মন্ডপে গিয়ে উপস্থিত হব। সুতরাং সেই শুভক্ষণ উপস্থিত হওয়া মাত্রই আমি আর মৌসুমী চলে গিয়েছিলাম আমাদের ক্লাব প্রাঙ্গনে। তখন বাজে রাত্রি দুটো। সেখানে গিয়ে দেখলাম ভীষণ জাঁকজমক সহকারে আমাদের মা আগুনেশ্বরী পূজা অর্চনা শুরু হয়ে গেছে। সুতরাং আমি আর নিজের লোভ সামলাতে না পেরে আমি আর মৌসুমী দুজনেই সেই পূজাতে জড়িয়ে পড়লাম। বিভিন্ন ছোটখাটো কার্যাবলী করা বড় বড় দাদাদের, কাকুদের হুকুম শোনা। যেহেতু তারা আমাদের থেকে বয়সে অনেক বড়। সুতরাং তাদের নির্দেশ অমান্য করা যায় না। তবে মায়ের পূজার কাজে একটা অন্যরকম আনন্দ উপভোগ করা যায়। পূজোর দিনটি নিজের ক্লাবে কাটিয়ে খুব ভালো লেগেছে।
মণ্ডপে গিয়ে দেখলাম যে মা অপরূপ সাজে সেজে উঠেছে। মায়ের আভূষণ সোলার সাজ অর্থাৎ সোলা দিয়ে মায়ের সাজ টিকে সুনিপুণ দক্ষতার সাথে শিল্পী ফুটিয়ে তুলেছেন। এই সাজটিকে আরেকটি নামেও ডাকা হয়। সেটি হল বনগাঁ বাসির সাজ ।ঢাক ও বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র সহকারে সানাই, কাসর, ঘন্টা বাজিয়ে মায়ের আরতি করা হয়। সেই বাজনা শুনতে অসাধারণ লাগে। যে কেউ যদি সেই বাজনা শোনে সেই ব্যক্তির পূজা মন্ডপে নেচে উঠতে ইচ্ছে করবে। ধুপ ,ধুনো ও ধুনোচির নাচের সহকারে পূজা মন্ডপের পূজার এই সমস্ত কিছু মিলেমিশে একাকার হয়ে একটি দারুণ পরিবেশের সূচনা হয়। সবাই মুগ্ধ হয়ে মায়ের আরতি দেখে এবং মাকে প্রণাম জানাই ও মায়ের কাছে আশীর্বাদ প্রার্থনা করে।
আজ বাদে কাল মায়ের বিসর্জন শোভাযাত্রা সহকারে মাকে বিসর্জনের উদ্দেশ্যে আমাদের পূজা মন্ডপের নিকটবর্তী কৃষ্ণনগরের রাজবাড়ি হয়ে কদমতলা ঘাটের উদ্দেশ্যে মাকে আমরা নিয়ে যাব। এই রাজবাড়ী তে নিয়ে যাওয়ার একটা ঐতিহ্য কৃষ্ণনগর বাসী পালন করে। প্রতিমা গুলিকে প্রথমে পূজা মন্ডপ থেকে রাজবাড়ীতে প্রদক্ষিণ করানো হয় তারপর কদমতলা ঘাটের উদ্দেশ্যে মাকে নিয়ে যায় বিসর্জনের জন্য। এ যেন এক ক্লান্তিহীন আনন্দ। তাদের নিজের নিজের আরাধ্যা মাকে নিয়ে কৃষ্ণনগরের এই ঐতিহ্যটি পালন করার চেষ্টা করে। আজকের এই আরতী মায়ের শেষ আরতি এই বছরের জন্য ।কারণ কালকেই মায়ের ভাসান। সুতরাং আমার আমরা মায়ের কাছে এটাই প্রার্থনা করব যে যাবার সময় সকলের মঙ্গল করুক।
কালী মায়ের আগমনের এই আলোর উৎসবকে আপনারা আর ও আলোকিত করে তুলুন । সকলেই আনন্দ করুন ।আনন্দে থাকুন ।অন্য কেউ আনন্দে রাখুন। ধন্যবাদ।