গ্ৰামের বাড়ির মন্দির

in hive-120823 •  6 hours ago 

নমস্কার বন্ধুরা ,আপনারা কেমন আছেন ? আশা করি সকলেই ভালো আছেন। আমিও ভালো আছি । প্রচন্ড ব্যস্ততার মধ্য দিয়েই দিনগুলি চলছে। আজ আমি আপনাদের জন্য একটি পোস্ট শেয়ার করব।যেটা একটি অতীতের বিশেষ স্থান নির্দেশ করে ।যেগুলি সম্পর্কে আমরা হয়তো অনেকেই খোঁজখবর রাখিনা। কিন্তু সেই সমস্ত স্থানগুলি ইতিহাসকে অনেকটাই নির্দেশ করে ।সেই স্থান গুলি আমাদের খুব আশেপাশে কাছাকাছি থাকা অবস্থাতে ও আমরা সেগুলোর গুরুত্ব বুঝতে পারি না অবশ্য জানার চেষ্টাই করি না। অথচ সেইসব স্থানগুলিতে আমরা প্রতিদিন দৈনন্দিন আনাগোনা করে থাকি ।

IMG20240519204728.jpg

আমার জন্ম আমাদের গ্রাম তরুণীপুর ।যেটি তেহট্ট থানার অন্তর্গত আমার গ্রামে আমার বাড়ির পাশেই অবস্থিত আমাদের পাড়ার মন্দির এবং বারোয়ারিটি। এই মন্দির এবং বারোয়ারি যে স্থানে অবস্থিত সেই স্থানটি বেশ বড়সড়ো এরিয়া নিয়ে আছে। সেই জায়গাটি কারও ব্যক্তিগত নয়। একটি সরকারি জায়গায় বলা চলে । সেখানে আমাদের পাড়ার মন্দির গড়ে উঠেছে। এই জায়গাটিকে বলা হয় গোলাবাড়ি। আমাদের মন্দিরের পাশে একটি ছোট্ট ঘর রয়েছে ।সেটি একটি গুদামঘর এবং সেখানে রাখা আছে ।বিভিন্ন মাছ ধরার জিনিসপত্র আসলে আমরা তো পেশায় মালো আমাদের বাবা, কাকা যেটা সকলেই জেলে সম্প্রদায়ের মধ্যে পড়ছে। আমাদের পাড়ার বেশিরভাগই সকলেই মৎস্যজীবী মাছ ধরে মাছ বিক্রি করে ।তারা নিজেদের জীবন-জীবীকা নির্বাহ করেন ।এখন বর্তমানে কেউ কেউ পুকুরে মাছ চাষও করছে ।এর মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করছে ।আবার নদীতে গিয়ে মাছ ধরে মাছ বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করছে।

IMG20240519204731.jpg

জায়গাটির নাম এবার আমরা জানি যে গোলাবাড়ি কেন? গোলা কথাটার অর্থ হলো ধানের গোলা ।যেখানে একসাথে অনেকটা ধান মজুত করা হতো। আর বাড়ি কথাটির অর্থ হচ্ছে বাসস্থান অর্থাৎ অনেকগুলি ধানের গোলা ওই জায়গাতে একসাথে রাখা ছিল এবং আমাদের ওই এলাকার যত উৎপাদিত ধান সেই গোলাগুলিতে মজুত করে রাখা হতো। সেই কারণেই ওই জায়গাটির নাম সকলে রেখেছিল গোলাবাড়ি। এই গোলা বাড়িতে নাকি ইংরেজদের আমল থেকেই রয়েছে। সেই সময় ইংরেজদের অধীনে যেসব চাষিরা চাষবাস করত। তারা ওই গোলাবাড়ি এলাকায় সমস্ত ধান তাদের তত্ত্বাবধানে ওই গোলাবাড়িতে থাকা গোলাগুলিতে মজুত করতো এবং সেখান থেকেই তারা ব্যবসা বাণিজ্য করতো। কিন্তু এখন আস্তে আস্তে গোলা গুলি আর নেই ।

IMG20240520101714.jpg

কারণ ধান চাষ এখন আগের থেকে অনেক অনেক গুন কমে গেছে ।সকলের অর্থনৈতিক অবস্থাও এখন অনেকটাই উন্নতি হয়ে গেছে। এর ফলে কেউ চাষবাস করতে আগ্রহী হয় না এবং ধান চাষের পরিমাণ কমে যাওয়ার ফলে গোলাগুলির প্রয়োজন হয় না। এখন সেই জায়গাটি ফাঁকায় রয়েছে। এবার যেহেতু আমাদের হিন্দু পাড়ার মধ্যে অবস্থিত বলে সেখানে একটি মন্দির এবং বারোয়ারি গড়ে উঠেছে। এছাড়া মন্দিরের পাশে মাছ ধরা জিনিসপত্র রাখার গুদাম ভর্তি বানানো হয়েছে ।কারণ স্থানীয়রা অতীতে নাকি পার্শ্ববর্তী খাল বিলে সারা বছর ধরে জল থাকার জন্য নৌকো করে সেই সমস্ত জাল যেগুলি ওই গুদাম ঘরে রাখা রয়েছে এবং আরো বিভিন্ন মাছ ধরার সরঞ্জাম নিয়ে গিয়ে একটি গোষ্ঠী হিসেবে যৌথভাবে মাছ ধরত।

সেখানে যত মাছ ধরা হতো সেগুলি বিক্রি করে সেই টাকা প্রতি মাসে সকলের মধ্যে ভাগাভাগি করে নিত। যাই হোক এখন বর্তমানে এই গোলাবাড়ি নামক স্থানটিতে রাধা কৃষ্ণের মন্দিরটি স্থাপিত হয় এবং এই আমাদের বারোয়ারিতে প্রতিবছর মহা ধুমধামে বিভিন্ন রকম পূজা অর্চনা গুলি, বৃহৎকার উৎসবের রূপ নেয়। এখানে আমাদের পাড়ার এবং স্থানীয় এলাকার সকলেই একত্রিত হয়ে আনন্দে উপনীত হন ।আমিও সেখানে খুব আনন্দ করি। গ্রামের বাড়িতে গিয়ে প্রতিটি উৎসবে অংশ নিয়।


যাই হোক আর কথা না বাড়িয়ে এখানেই আমার পোস্টটি শেষ করছি। আপনাদের কেমন লাগলো আমার এই পোস্টটি সকলে জানাবেন কমেন্টের মাধ্যমে ।সকলে ভালো থাকবেন ।সুস্থ থাকবেন। আনন্দে থাকবেন। ধন্যবাদ।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  
Loading...