নমস্কার বন্ধুরা, সকলে কেমন আছেন ?আশা করছি সকলেই খুব ভালো আছেন। আমিও ভালো আছি। আজকে প্রথমবার আমি পোস্ট করছি। আশা করছি সকলেরই খুব ভালো লাগবে।
আজ আমি আর মৌসুমী চলে গিয়েছিলাম আমাদের পাড়ারই একটি কালী পূজা মন্ডপে ।সেখানে গিয়ে দেখি আমাদের মাতৃ প্রতিমা কাজ চলছে। প্রথমে মাটি দিয়ে কাজটি চলছে। তবে মাটির কাজটি সম্পন্ন হলেই রঙের কাজ শুরু হবে।তারপর মাকে ছোলার সাজে সাজিয়ে তোলা হবে। তখন মাকে অপরূপ সুন্দরী লাগবে।
আমাদের এই মাতৃ প্রতিমার আমরা একটি ভালোবেসে নাম রেখেছি। এই নামটি আমাদের পূর্বপুরুষরা রেখে ছিলেন ।এখনো পর্যন্ত ওই নামেই মা পূজিতা হন। মা আগুনেশ্বরী নামে। এই পূজাটি দীর্ঘদিনের বলতে গেলে দীর্ঘ বছরের ।দীর্ঘ সময়ের একসময় মায়ের এই যে নাম আগুনেশ্বরী। এই যে মায়ের নামকরণ তারও অতীতে একটা ইতিহাস রয়েছে। ছোটবেলা থেকে শুনেছি একবার নাকি বিসর্জনের দিন মায়ের সারা শরীরে আগুন লেগে যায়। যেহেতু এখন বর্তমানে আমরা যে আকৃতিতে মাকে পূজা করি অতীতে নাকি এর চাইতেও অনেক বড় হত। মায়ের মাতৃ প্রতিমা সুতরাং মাকে বিসর্জনের সময় কোন একটি অসাবধানতার কারণ বশতই হোক বা অন্য যেকোনো কারণেই হোক মায়ের গায়ে নাকি হঠাৎ আগুন লেগেছিল ।সেই কারণেই মায়ের নাম রাখা হয় মা আগুণেশ্বরী। তবে ছোটবেলায় শুনেছি ।এখনো আমরা শুনে আসছি। যে একটা সময় সেই দুর্ঘটনার পরে বেশ কয়েক বছর মায়ের পূজা- অর্চনা ,আরাধনা বন্ধ রাখা হয়েছিল ।কিন্তু আবারো বেশ কয়েক বছর ধরে একটু ছোট আকারে মাতৃ প্রতিমা গড়ে আমাদের পাড়ার দাদা, কাকা, জেঠারা আবার পুরোটা শুরু করে। তো বর্তমানে আমরা এই পূজার সাথে সবাই অজ্ঞানিকভাবে জড়িত। আমি হয়তো বা আমার মতই আরো যারা রয়েছে। হয়তো নিজেদের কাজকর্মের জন্য কর্মজীবনের ব্যস্ততার কারণে সেভাবে পূজা আরাধনা তে কাজকর্ম তে সেভাবে নিযুক্ত থাকতে পারি না। কিন্তু পুজোর সময় এলেই সশরীরে হয়তো উপস্থিত সেইভাবে থাকতে পারিনা। কিন্তু মনটা মায়ের পূজা মন্ডপের দিকেই পড়ে থাকে। তবে হ্যাঁ, যখন যে লগ্নে যে সময়ে মায়ের পূজা টা হয় ।সেই কিছুক্ষণ সময়টুকু মায়ের পূজা মন্ডপে উপস্থিত থাকার চেষ্টা করি ।সেই সময়ে কাজকর্মের ছুটিছাটাও থাকে। দীপাবলি উপলক্ষে এবং সেই সময়টাই ।আর কাজকর্মের মধ্যে ব্যস্ত থাকতে ইচ্ছে করে না। মনে হয় যেন দীপাবলীর অফার আনন্দে শরীরের আগমনে সবাই উৎসবে এক হয়ে মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়।
তো এদিন আমি আর মৌ দুজনে মিলে হাঁটতে বেরিয়েছিলাম মায়ের মন্ডপে । কিছুক্ষণ সময় ওখানে কাটাছিলাম ।বেশ ভালোই লাগছিল ।আর দেখছিলাম মাতৃ প্রতিমা কাজ ।আমাদের পাল মহাশয় সুনীলদা সুনিপুণ দক্ষতার সাথে ফুটিয়ে তুলছে। আমরা সচরাচর কোন পূজা মন্ডপে গিয়ে হয়তো দেখি মাতৃ প্রতিমা প্রস্তুত হয়ে গেছে। এবং পূজিত অবস্থাতেই ।আমরা সুসজ্জিত অবস্থায় দেখতে পাই। কিন্তু মাতৃ প্রতিমা প্রতিভাগে নির্মাণ করার যে দৃশ্যটা সেটা যে নিজের চোখে দেখবে একবার সে অবশ্যই একটু আশ্চর্যই হবে ।যে কিভাবে এত বড় একটা মাতৃ প্রতিমা নির্মাণ করা হয়।
আমি ভীষণ আবেগঘন হয়ে এই কথাটি আপনাদের আজকে শেয়ার করলাম। দীপাবলি উৎসব মানেই আনন্দের উৎসব। আমি সকল ধর্মের মানুষজনকেই আহ্বান জানাচ্ছি এই উৎসবে সম্মিলিত হয়ে আপনারা সবাই আনন্দ করুন। আনন্দে থাকুন। আনন্দে রাখুন। এটা শুধু হিন্দু ধর্ম বা সনাতনীদেরই উৎসব নয়। মা সকলেরই আনন্দ সকলের অধিকার ।মায়ের উপর সকলের অধিকার। সুস্থ থাকবেন ।আনন্দে থাকবেন। সকলে মিলে একসাথে মায়ের আরাধনায় শামিল হবেন ধন্যবাদ।
আজ এইখানেই শেষ করছি। আবার পরবর্তী কোন পোস্ট নিয়ে হাজির হব আপনাদের মাঝে।