নিজের বিবেকের কাছে জিজ্ঞেস করা উচিত!

আমাদের আশেপাশের মানুষের এক একজনের স্বভাব একেকরকম। কেউ হয়ত তার মিষ্টি স্বভাব দিয়ে সহজেই যে কারো মন জয় করতে পারে আবার কেউ কেউ হয়ত অন্যের ভালোর জন্য কিছুটা কড়া কথা বলে। তবে অধিকাংশ মানুষ এই শাসনটা নিতে পারেন না, হয়ত তারা একবারও ভেবে দেখে না যে এই কড়া ভাষাটা আমাদের ভালো নাকি খারাপের জন্য ব্যবহার হচ্ছে!

আমরা হয়ত মনে করি পৃথিবীতে কোনো ভালো মানুষ নেই। যখন কেউ কাউকে উপকার করে তখন আমরা সেটার ভিতর কিন্তু খোঁজার চেষ্টা করি!

কেউ কাউকে যদি নিঃস্বার্থভাবেও সাহায্য করে বা উপকার করে তখন আমাদের মনে প্রশ্ন আসে,

কেন শুধু শুধু উপকার করলো? নিশ্চয়ই কোনো স্বার্থ রয়েছে তা না হলে কেউ তো বিনা স্বার্থে সাহায্য করে না!

উপরোক্ত প্রশ্নটা মাথায় আসার আগে হয়ত আমরা ভুলে যাই, আকাশের লক্ষ তারার উজ্জ্বলতা যেমন একরকম হয় না তেমনই আমাদের আশেপাশের সবাই শুধুমাত্র নিজের স্বার্থ নিয়ে চলে না!

আমরা মানুষ চিনতে ভুল করেছি এটা আমাদের অক্ষমতা। সঠিক মানুষকে আমরা সঠিক সম্মান দিতে পারি না এটা আমাদের ভুল।

আমরা বেশিভাগ মানুষই উপকারির প্রতি কৃতজ্ঞতাবোধ প্রকাশ করতে পারি না। আমরা ভাবি কৃতজ্ঞতাবোধ প্রকাশ করলে হয়ত তার কাছে ছোট হয়ে যাবো বা সকলের কাছে আমরা সম্মানহানি হবে কিন্তু এটা সম্পূর্ণ ভুল। যে ব্যক্তির মধ্যে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করার জ্ঞান রয়েছে, আমি মনে করি সে জীবনে এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে এক ধাপ এগিয়ে থাকে সব সময়।

পথ চলতে চলতে যখন সামনে এক পা দেওয়া মতো জায়গা না পাই তখন যদি কেউ আমাদের পা দেওয়ার মতো জায়গা দিয়ে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ দেয় তাহলে তার প্রতি সারাজীবন মাথা নত রাখা উচিত বলে আমি মনে করি!

জীবনে কেউ যদি আমাকে একদিনও সাহায্যের হাত বাড়ায় তবে সেটা আমি নির্দ্বিধায় সকলের সামনে স্বীকার করতে একবারও পিছু পা হই না। ক্লাসে প্রয়োজনের সময় যেসব বন্ধুরা আমাকে কলম দিয়ে লিখতে সাহায্য করেছিলো তাদের কথা আজও ভুলিনি আমি।

পেটে ক্ষুদা থাকলে নীতির কথা খুব কমই আসে। তবে ক্ষিদে মিটে গেলে আমরা ভালো- মন্দ, উচিত-অনুচিতের হিসাব কষতে শুরু করি।

বিপদে পড়লে আমরা সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করি যেন সে আমাদের বিপদ থেকে উদ্ধার করে। সৃষ্টিকর্তা তো স্বয়ং আসতে পারে না তবে কাউকে না কাউকে পাঠিয়ে দেয় আমাদের বিপদ থেকে উদ্ধার করার জন্য। তবে আমরা সেই মানুষটাকেই তার উচিত সম্মান দেই না।

তবে দুঃখের বিষয় হলো- বর্তমানে এমন স্বভাবের মানুষের সংখ্যাই বেশি। কাউকে ধরে বেঁধে পরিবর্তন করা যায় না। তবে আমরা যদি আমাদের বিবেক কে একবার প্রশ্ন করে করি তাহলে সঠিক উওর আমরা সবাই পেয়ে যাবো যে, আমাদের কোনটা করা উচিত আর কোনটা থেকে বিরত থাকা উচিত!