রাগ!

in hive-120823 •  6 days ago 
pexels-moh-adbelghaffar-783941.jpg

Hello Everyone,,,

রাগ! আমরা সকলেই রাগ শব্দটা ও অভ্যাসের সাথে সকলেই পরিচিত। প্রতিনিয়ত কোনো না কোনো কারনে আমাদের মনে রাগের উদয় হয়। বিশেষ করে আমাদের মনের মতো কাজ না হলে এমনটা হয়ে থাকে।

হঠাৎ রাগ নিয়ে কেন পড়লাম?

জানি না কেন আজ মনের ভিতর রাগ নিয়ে কিছু চিন্তা ভাবনা চলছে। যেগুলো আপনাদের সাথে শেয়ার করতে চাই কারন যদি শেয়ার না করি তাহলে আমার মন আবার আমার উপর রাগ করবে।

আসলে রাগ নিয়ে চিন্তা ভাবনা মাথায় আসার একটা কারনও আছে, যেটা একটু পরই বলবো আপনাদের।

আমাদের আশেপাশে দুই ধরনের মানুষ রয়েছে। এক ধরনের মানুষ অনেক শান্ত স্বভাবের হয়ে থাকে আবার কিছু মানুষ অনেক বেশি রাগী স্বভাবের হয়ে থাকে।

এই রাগী স্বভাবের মানুষ আবার দুই ধরনের হয়ে থাকে। প্রথমত, এই ধরনের মানুষের রাগ হলে সেটা বিভিন্নভাবে সবার মাঝে প্রকাশ করে আর দ্বিতীয়ত, এই ধরনের মানুষের যতই রাগ হোক না কেন সেটা নিজের মাঝে চেপে রাখে এবং সেটা সচারাচর প্রকাশ করে না, আমি কিন্তু এমন স্বভাবের অধিকারী।

মানুষের মাঝে রাগ থাকাটা স্বাভাবিক তবে মাঝে মাঝে এটার জন্য আমাদের বিপদের মধ্যে পড়তে হয় বা অনেক ক্ষতির মুখোমুখি হতে হয়।

রাগ জিনিসটার যেমন নেতিবাচক দিক রয়েছে তেমনই ইতিবাচক দিকও আছে।

আমার মনে হয় এই রাগ হলো কিছুটা ঔষধের মতো!

কোনো রোগ থেকে যেমন সঠিক ঔষধে নিরাময় পাওয়া সম্ভব তেমনই, সঠিক পরিস্থিতিতে রাগের ব্যবহারও আমাদের উপকারে আসে।

ছোটবেলায় যখন কোনো কিছু ভুল করতাম, শুধু ছোটবেলায় না, এখনও যদি ভুল পথে পা বাড়াই তখন বাবা মা সেটাকে বাধাদান করে। আমরা তো অবুঝ, তাই সেই ভুল যদি বারবার করি তখন বাবা মা রাগ করে হলেও সেটা থেকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করে।এটা অবশ্যই আমাদের ভালোর জন্য করে।

পক্ষান্তরে, এমন অনেকেই আছে যারা কোনো যুক্তি ছাড়াই মূল্যহীন রাগ দেখায়, আর এটার জন্য অবশ্য তাদেরই ক্ষতি হয়।

আজ বিকালের একটা ঘটনা আপনাদের সাথে শেয়ার করা যাক,

শুক্রবার থাকায় আজ কোচিং ছিলো না। আমার দুপুরে ঘুমানোর অভ্যাস তবে কোচিং থাকার কারনে সেটা সম্ভব হয় না। আজ যেহেতু ছুটি তাই দুপুরে স্নান করে খাওয়া দাওয়া শেষ করে কিছু সময় ঘুমিয়েছিলাম।

তবে কিছু সময় পরই বাইরে চিল্লা পাল্লার আওয়াজ শুনতে পেলাম এবং সাথে সাথে উঠে বসলাম। শুনেই বোঝা যাচ্ছে বাসার নিচে ঝগড়া হচ্ছে দুজনের মধ্যে। একজনের গলার আওয়াজ অনেক জোরে শোনা যাচ্ছে আর অপর গলার আওয়াজটা আমার বাসায় মালিকের। মালিকের থেকেও ঐ লোকটার গলার আওয়াজ বেশি শোনা যাচ্ছে না।

এক মনে ভাবলাম নিচে গিয়ে বিষয়টা দেখি। আমি বাবা, নিরপেক্ষ মানুষ, ঝুটঝামেলার মধ্যে যেতে চাই না তাই নিচে না গিয়ে জানালার কাছে দাঁড়িয়ে বিষয়টা বোঝার চেষ্টা করলাম।

কিছু সময় তাদের কথোপকথন শুনে বুঝলাম যে, ঐ ভাড়াটিয়ার কাছে মালিক ৬/৭ মাসের বাসা ভাড়ার টাকা পায় আর সেটা মালিক চেয়েছে তখনই এ কথা, ও কথায় ঝমেলাটা বাঁধছে।

আমি বুঝলাম না, ঐ ভাড়াটিয়া কোন বিবেচনায় বা কি চিন্তা করে মালিকের উপর চিল্লাপাল্লা করছে। ঐ লোকটা একটানা শুধু জোরে জোরে কথা বলছে আর মালিক ওকে শুধু আস্তে কথা বলতে বলছে কিন্তু কিছুতেই থামছে না।

আমি শুধু অবাক হয়ে দেখছি আর ভাবছি কত প্রকারের লোকই না বাস করে আমাদের আশেপাশে।

অনেকক্ষণ এভাবে চলার পর, মালিকের ছেলে সেখানে গিয়ে লোকটার সাথে কিছু সময় কথা কাটাকাটি করলো কারন নিজের বাবার উপর কেউ বিনাকারণে জোর গলায় কথা বললে রাগ হওয়াটাই খুব স্বাভাবিক।

ততক্ষণে সেখানে অনেক মানুষ একত্রিত হয়ে গেলো। এক পর্যায়ে মালিকের ছেলে ঐ লোকটাকে এই মাসেই বাসা ছেড়ে যাওয়ার কথা বললো, সাথে সাথে সব চুপচাপ হয়ে গেলো। কিছু কিছু মানুষ আছে যাদের যত নরম দেখানো হবে তারা ততই পেয়ে বসবে।

লোকটা তখন বললো, হঠাৎ করে বাসা ছেড়ে দিয়ে কোথায় যাবে।

মালিক তখন একটা কথাই বললো, এই সময়ে দাঁড়িয়ে কোন মানুষ ৬/৭ মাস ভাড়া না নিয়ে বাসায় থাকতে দেয়। এক মাসের মধ্যে যেন সব ভাড়া পরিশোধ করে, বাসা ছেড়ে দেয় এই বলেই মালিক সেখান থেকে চলে আসে।

এখন আমার প্রশ্ন হচ্ছে, কেনই বা ঐ লোকটা রাগ দেখালো আর এই রাগের কারনে উপকার হলো নাকি নিজের ক্ষতি নিজেই ডেকে আনতো?

আসলে পরিস্থিতি বুঝে রাগ দেখানো উচিত। এমন জায়গায় রাগ দেখানো উচিত নয় যেটার কারনে নিজেরই ক্ষতি হয়।

আমরা তো মানুষ, নিজের রাগকে নিজেরাই যদি নিয়ন্ত্রণ করতে না পরি তাহলে মানুষ আর অন্যান্য জীবের মধ্যে পার্থক্য থাকলো কোথায়!

END
Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  
Loading...

আপনার মত আমারও রাগটা একটু বেশি। আমি একটুতে রেগে যাই ।আর যখন রেগে যাই তখন কি করব ভেবে পাই না। অনেক সময় রাগ নিজের মধ্যে চেপে রাখি ।আবার অনেক সময় রাগ প্রকাশ করে ফেলি। আসলে মানুষের রাগ হলে খুব খারাপ জিনিস ।মানুষ রাগের কারণে নিজের কত ক্ষতি করে ফেলে। আবার রেগে গেলে অনেক কাজ শিখে ফেলে। এটা আমার ক্ষেত্রে হয়। আপনার পোস্টটি পড়ে খুব ভালো লাগলো।

হ্যা রাগ জিমিসটা খুব খারাপ। তাই শুধু শুধু রাগ করে নিজের ব্রেনকে প্রেসার দেওয়া উচিত না। অনেক সময় কিছু কিছু রাগ আমরা চাইলেও নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না, যেকোনো ভাবেই সেটা প্রকাশ করি। দিদি, আমি তো বলিনি যে আমার রাগ বেশি। আমি বলেছি, যদি কোনো কারনে আমার রাগ হয় তাহলে সেটা নিজের মধ্যে চেপে রাখি। ধন্যবাদ আপনাকে আপনার মূল্যবান মতামত প্রদানের জন্য। ভালো থাকবেন।

রাগ খুব খারাপ একটা বিষয় যেটার কারণে অনেক সময় আমাদের অনেক বিপদে পড়তে হয়। রাগ থেকে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা সকলের থাকে না।

আপনার লেখাতে উপস্থাপিত বিষয়বস্তু থেকে এটা প্রমাণিত যে রাগ করলে ঠকতেই হয়। কারণ ওই ভাড়াটিয়া যদি রাগ করে খারাপ ব্যবহার না করতেন তাহলে হয়তো অসময়ে বাসার মালিক বাসা ছেড়ে দিতে বলতেন না।

আপনাকে অনেক ধন্যবাদ চমৎকার একটি বিষয় আমাদের সাথে ভাগ করে নেওয়ার জন্য। আপনার পরবর্তী আকর্ষণীয় লেখা পরিদর্শনের অপেক্ষায় রইলাম।

রাগ করলে অনেক সময় আমাদের নিজেদেরই ক্ষতি হয়। তবে কিছু ব্যাপার নিয়ে রাগ উঠে গেলে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন। কারো ভালোর জন্য রাগ করাটা অন্যায় নয়। আমি মনে করি পরিস্থিতি অনুযায়ী রাগ করা উচিত। ভাড়াটিয়া যদি এমন উগ্র মেজাজে মালিকের সাথে খারাপ ব্যবহার না করতো তাহলে মালিকও এভাবে বলতো না। ধন্যবাদ আপনাকে আপনার মূল্যবান মতামত প্রদানের জন্য। ভালো থাকবেন।

আসলে রাগ খুব একটি খারাপ জিনিস যেটা সবাই কন্ট্রোল করতে পারে না যদি একবার কারোর রাগ উঠে যায় সে রাগের বশে অনেক কিছু করে উঠতে পারে। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপনি অনেক সুন্দর একটি টপিক নিয়ে আমাদের মাঝে আরো সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য। ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন আপনি।

ঠিকই বলেছেন সবার মধ্যে রাগ নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা থাকে না আর এর জন্য অনেক সময় বিপদের মধ্যে পড় যায়। তাই সকলের উচিত পরিস্থিতি অনুযায়ী নিজের রাগটা কন্ট্রোল করা। যে রাগ নিজের ক্ষতি ডেকে আনে সেটা করা উচিত নয়। ধন্যবাদ আপনাকে আপনার মূল্যবান মতামত প্রদানের জন্য। ভালো থাকবেন।

আমাদের সবার মাঝেই রাগ আছে। তবে কারো কারো মাঝে এর আগে পরিমাণটা হয় মাত্রাতিরিক্ত। একটা কথা প্রচলিত আছে যে রেগে গেলেন তো হেরে গেলেন।
আপনি আপনার লেখাতে ওই ধরনের কথায় তুলে ধরেছেন। রাগ করার জন্যই তাকে এখন বাড়ি ছেড়ে যেতে হচ্ছে। আপনি চমৎকার একটা বিষয় নিয়ে লিখেছেন।
আসলে, আমাদের সবারই রাগ কমানো প্রয়োজন।