Hello Everyone,,,
আশা করি, সকলে অনেক ভালো আছেন। আজ সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি আকাশ মেঘলা। বিগত পোস্টেই আমি বলেছিলাম যে, আবহাওয়া কেমন জানি বদলে গিয়েছে এবং যেকোনো মুহুর্তে বৃষ্টি নামতে পারে।
সত্যি বলতে এই মুহূর্তে যদি বৃষ্টি হয় তাহলে সকলের অনেক বড় ক্ষতি হয়ে যাবে। অধিকাংশ মানুষ ফসল কেটে মাঠে রেখে এসেছে রোদে ভালো ভাবে শুকানোর জন্য। তবে বৃষ্টি হলে শুকানোর পরিবর্তে আরও বেশি ভিজে যাবে। আর ধান ভিজে গেলে সেগুলো নষ্ট হয়ে যায় এটা তো আপনারা জানেন।
কয়েক বছর আগেও এমন হয়েছিলো। ফসল কাটার মুহুর্তে বৃষ্টি হয়েছিলো এবং বিলে অনেক জল হয়ে ফসল তলিয়ে যাওয়ার মতো অবস্থা হয়েছিলো। বাড়িতে কিছু ফসল আনা হয়েছিলো বিগত দিন তাই আজ সেগুলো মাড়াই করতে হবে, অন্তত বাড়িতে যেগুলো এনেছি সেগুলো তো ভালো ভাবে মাড়াই করে রাখি।
সকালে বাড়ির উঠানে হাঁটাহাটি করছি আর ভাবছি কি করা যায়। তখন দাদার মেয়ে আসলো আমাদের বাড়িতে। ওর দুষ্টামি তে বাড়ির সবাই হিমসিম খেয়ে যাচ্ছে। আমাদের বাড়িতে এসেই আমার বিড়াল ধরবে। মাঝে বিড়ালকে এমন ভাবে ধরে যে বিড়ালের নড়ার শক্তি থাকে না। সকালে মা পূজার ঘরে গিয়ে মাত্র পূজা দিয়ে বের হয়েছে। তখন ও পূজার ঘরে গিয়ে বলছে -
* গোপাল দাদা, গোপাল দাদা তাড়াতাড়ি খেয়ে নাও, তোমার খাওয়া শেষ হলে আমি প্রসাদ খাবো। পূজার ঘরে গিয়ে একা একা বলছে, আর আমরা বাইরে থেকে ওর কথা শুনে হাসছি। ওদের মন কতটা পবিত্র এটাই তার প্রমাণ ।
সকালে খাওয়া দাওয়া শেষ করতে করতে কিছুটা রোদের মুখ দেখতে পেলাম। মনে হচ্ছে যেন হাফ ছেড়ে বাঁচলাম। খাওয়া শেষ করেই ধান মাড়াই করার কাজ শুরু করলাম। একেক জায়গায় একেকভাবে ধান মাড়াই করা হয়। আমাদের এখানে উঠানে ধান ছড়িয়ে তারপর গাড়ি দিয়ে সেগুলোকে খড় থেকে আলাদা করা হয়। এভাবে মাড়াই করতে অনেক সময়ের প্রয়োজন। ভালো ভাবে মাড়াই না করলে খড়ের সাথে ধান থেকে যায়।
কাজের মধ্যে থাকলে দিন যে কখন পার হয়ে যায় সেটা টের পাওয়া যায় না। সারা দিন বাড়ি থেকে কোথাও যাইনি তাই সন্ধ্যার সময় একটু রাস্তা গিয়েছিলাম। মন্দিরের মাঠে অনেক লোকজনকে একত্রিত দেখে সেখানে এগিয়ে গিয়েছিলাম। কয়েকদিন আগে আমাদের বাড়ির পাশের আমার এক জেটিমা মারা গিয়েছে এবং সেখানে শ্রাদ্ধ্য শান্তির দিনে লোকজনকে নিমন্ত্রণের আয়োজন করা হয়েছে।
সেখানে রান্নার জন্য কাঠের প্রয়োজন এজন্য গ্রামের অনেক মানুষ একত্রিত হয়ে গাছের গুঁড়ি কেটে রান্না করার উপযুক্ত কাঠ তৈরি করছে। এক জনকে সাহায্য করতে এখনও অনেক মানুষ এগিয়ে আসে এটা দেখলে সত্যি খুব ভালো লাগে।
সারাদিন রোদ আর মেঘের লুকোচুরির পর মাঝ রাতে ফিসফিস করে বৃষ্টি নামলো। এদিকে উঠানে মাড়াই করা ধান জড়ো করা রয়েছে। রাতে ঘুম থেকে উঠে সেই ধান গুলো বস্তায় ভরে পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখলাম যাতে ভিজে না যায়। রাতে একবার ঘুম ভেঙে গেলে আর যেন আসতেই চায় না। যাই হোক, এভাবেই আজকের কার্যক্রম শেষ করলাম। ভালো থাকবেন।