প্রযুক্তির যুগে পাহাড়ের গুহায় বসে থেকেও আমরা এখন পৃথিবীকে খুব ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করতে পারছি।
আমরা মানুষ, আমাদের স্বভাবগত বৈশিষ্ট্যই হলো প্রয়োজনে আবিস্কার করা৷ এক একটা আবিস্কার কতইনা চমৎকার, যা অনুধাবন করতে গেলে আমাদের মস্তিষ্কে ভাঁটা পড়ে৷
আমরা আদিম যুগকে পিছনে ফেলে এখন আধুনিক যুগের বাসিন্দা। সেসময় থেকে এসময়ের পার্থক্য অনেক । আদিম যুগের মানুষগুলো পোশাক হিসেবে গাছের বাকল কিংবা পাতা পরিধান করতেন। খাবার হিসেবে গ্রহন করতেন কাঁচা গোস্ত কিংবা গাছের লতা-পাতা। কিন্তু আধুনিকতার ছোয়ায় পৃথিবীর মানুষ আজ সভ্য, বহু প্রযুক্তির আবির্ভাব ঘটেছে যার ফলশ্রুতিতে মানুষ এখন কাপড় তৈরি করতে শিখে গেছে। সেই সাথে মানুষ এখন রান্না করা খাবার খায়৷
আগুনের সহজলভ্যতা ছিলনা সেসময়, এখন যেমনটা আমরা দেখতে পাই।
তখনকারদিনের মানুষগুলোকে আগুন জ্বালানোর জন্য রীতিমতো যুদ্ধই করতে হয়েছে। পাথরে পাথরে ঘর্ষণ, কাঠে কাঠে ঘর্ষণ, এমনই ছিলো তাদের আগুন জ্বালানোর পদ্ধতি।
বর্তমানে আমরা যে ম্যাচ কাঠি দেখতে পাই তার উদ্ভাবক কে, তা সম্পর্কে হয়তো আমাদের অনেকরই অজানা। ম্যাচ কাঠির উদ্ভাবক যিনি, তিনি ছিলেন একজন রসায়নবিদ, যার নাম জন ওয়ারকার৷ তার এই অকৃত্রিম আবিস্কারের ফলে আগুন আজ সহজলভ্য।
মাইকেল ফ্যারাডের আবিস্কৃত বিদ্যুৎ আর টমাস আলভা এডিসনের বৈদ্যুতিক বাল্ব আজকের এই আধুনিক যুগকে করেছে আরোও সৌন্দর্যমন্ডিত৷
তাদের আবিস্কারের উপর ভিত্তি করে যুগে যুগে নতুন নতুন আবিস্কার সাধিত হয়েছে, যার ফলাফল আমরা আধুনিক যুগে এসে সরবভাবে ভোগ করছি।
প্রত্যেকটি জিনিস তখনই আবিস্কার হয়েছে যখন মানুষ ঐ জিনিসের অভাব অনুভব করেছে৷ এখনও তাই হচ্ছে, প্রতিনিয়ত নব্য নতুন প্রযুক্তির সাথে পরিচিত হচ্ছি আমরা। শুনেছিলাম, আগেকার যুগে নাকি কবুতরের মাধ্যমে চিঠির আদান প্রদান করা হতো কিন্তু এখনকার কথা ভাবুনতো....! অদৃশ্য নেটওয়ার্কের উপর ভিত্তি করে এক ক্লিকেই সব খবর পৌছে যায় পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তে।
বিজ্ঞানীদের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে আমাদের জীবন আজ কতটা সহজ হয়েছে তা চিন্তা করতে বসলে দিন-রাত ফুরিয়ে যাবে, তবুও ভাবনা শেষ হবে না।
বেশি কিছু না, বিজ্ঞানের আবিস্কার শুধু একটি মোবাইল ফোনের কথাই ভাবুনতো....! ছোট একটি ডিভাইস, তার কর্মকাণ্ড কেমন বিরাট।একই সাথে কতো ধরনের কাজ এতে সম্পূর্ণ করা যায়, তা আপনি আমি খুব ভালোভাবে অবগত৷ ইন্টারনেট তো আরেক চমকপ্রদ আবিস্কার। সবাই এর গুণাগুণ সম্পর্কে অবগত তাই আর এর কাজ সম্পর্কে আলোচনা করার প্রয়োজন মনে করছি না। আমার এই লেখা যে আমি আপনার কাছে পৌঁছাতে পেরেছি তা কিন্তু ইন্টারনেটই ফলশ্রুতি।
প্রয়োজনেই আবিস্কার হয়, একথাই সত্যি। প্রয়োজন আমাদের আবিস্কার করতে বাধ্য করে।