আংশিক বাস্তব (পর্ব ৩)

in hive-120823 •  22 hours ago  (edited)

pexels-amirrzolfaqari-6418457.jpgsrc

পর্ব ১

পর্ব ২

ধারাবাহিক পর্বের ক্ষেত্রে আমি একটি কথা প্রথমেই বলে দিই সেটা হলো, আজকের পর্ব বুঝতে হলে আপনাকে অবশ্যই আগের পর্বগুলোতে চোখ বুলিয়ে আসতে হবে। যেমন বইয়ের কোনো পৃষ্ঠার উপরের অংশ না পড়ে শুধু নিচের অংশ পড়ে কিছু বোঝা যায় না তেমনি আমার ধারাবাহিক এই লেখার আগের পর্বগুলো না পড়লে এই পর্বটি বুঝতে আপনার একটু কষ্টসাধ্যই হয়ে যাবে। তাই সবকিছু বিবেচনা করেই আমি পাঠকের সুবিধার্থে উপরাংশে পুর্বের পর্বগুলোর লিংক সংযুক্ত করে দিয়েছি।

গতকালের সমাপ্তি থেকে আজকের শুরু.....,

শিক্ষক বাবা বয়সের ভারে নুয়ে পড়েছেন। পরিবারের কথা বিবেচনা করে তবুও তিনি কাজ করার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছেন৷ বাবারা আসলে এমনই৷ সকল কিছুর উর্ধ্বে তারা পরিবারকেই প্রাধান্য দেয়, সবসময়।

শিক্ষক বাবা তার ইন্জিনিয়ার ছাত্রের কাছে তার যেকোনো সাইটে একটা কাজের জন্য ভীষণ আকুতি মিনতি জানালেন৷ কিন্তু শিক্ষকের শারীরিক অবস্থা তেমন ভালো নয়, তিনি একজন বয়োজ্যেষ্ঠ মানুষ, তারপক্ষে কাজ করা প্রায় অসম্ভব। সবকিছু বিবেচনা করে ইন্জিনিয়ার ছাত্র তার শিক্ষকের কাছে ওনার পরিবার সম্পর্কে জানতে চাইলেন।

pexels-photo-9034991.jpegsrc

তিনি নির্দিধায় সবকিছু খুলে বললেন৷ পরিবার সম্পর্কে শোনার পর ছাত্র জানতে পারলেন শিক্ষকের ঘরে একজন শিক্ষিত ছেলে আছে। তিনি ঢাকা শহরে তার শিক্ষকের ছেলের ভালো একটি চাকরির ব্যবস্থা করে দিতে চাইলেন। শিক্ষক আপাতত খুশি হয়ে বাড়ি ফিরলেন এমনটা ভেবে যে, এই ধাক্কায় যদি তার ছোট ছেলেটা প্রতিষ্ঠিত হওয়ার সুযোগ পায়৷

ইন্জিনিয়ার ছাত্র তার শিক্ষকের ছেলেকে তারই পরিচিত একটি কনজিউমার প্রডাক্ট উৎপাদন প্রতিষ্ঠানে ইন্টারভিউ দেওয়ার জন্য তাগিদ দিয়েছিলেন৷ বাবা বাসায় ফিরে ছোট ছেলেকে ইন্টারভিউয়ের জন্য প্রস্তুত হতে বললেন। পরদিন সকালে ছেলে প্রস্তুত হচ্ছে ইন্টারভিউয়ের জন্য। সবকিছু ঠিকঠাক কিন্তু ফরমাল জুতো নেই, তার এমন অবস্থা দেখে তৎক্ষনাৎ ঘরের কোনায় টানিয়ে রাখা পোটলা থেকে ফরমাল জুতো বের করে দিলেন সেই আশ্রয়দাতা রিকশা চালক ছাত্র। নির্ধারিত ঠিকানা নিয়ে বাবা মা'র দোয়া চেয়ে বেরিয়ে পড়লো রিকশা চালক ছাত্রের সাথে।

free-photo-of-cycle-rickshaw-in-rain.jpegsrc

বাবার সেই ছাত্রই তাকে নিজের রিকশায় উঠিয়ে ইন্টারভিউ বোর্ডে পৌছে দিলেন। শুধু কি পৌছে দিলেন...? না, তার শিক্ষকের ছেলেকে অফিসে পৌছে দিয়ে তিনি গেলেন মিষ্টি আনতে, তিনি ভেবেই রেখেছেন যেহেতু তার শিক্ষকের আরেক ছাত্র এই চাকরির ব্যাপারে সুপারিশ করবেন সেহেতু চাকরিটাতো হবেই। তিনি তার কষ্টে উপার্জিত পয়সায় মিষ্টি কিনে আবার সেই অফিসের সামনে গেলেন, গিয়ে দেখলেন ছেলের মনমরা। কারণ জানতে চাইলে তিনি বললেন, চাকরিটা হয়নি।

একথা শুনে রিকশা চালক ছাত্র রীতিমতো হতবাক। ইন্জিনিয়ার ছাত্রের দেওয়া ঠিকানায়ও চাকরি হবে না এমনটা আসলে সে বিশ্বাসই করতে পারছিলো না। একটা সময় পর বুঝতে পারলেন আসলেই চাকরিটা হয়নি। ব্যাপারটা বোঝার পর কোনো রাগ অভিমান না করে বিপরীতে সে তাকে উৎসাহ দিয়েই চলছেন, বলছেন একটা হয়নি আরেকটা হবে।

আজ এপর্যন্তই। পরবর্তী পর্ব আগামীকাল। সে পর্যন্ত ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

TEAM 5 Congratulations! This post has been voted through steemcurator07. We support quality posts, good comments anywhere and any tags.

Picsart_24-12-31_15-00-29-616.jpg

Curated By @muzack1

Loading...

আসলে আমরা যতটুকু চিন্তা করি যদি আমাদের জীবনের সাথে ঠিক ততটুকুই হত তাহলে হয়তোবা আমাদের জীবন আরো বেশি সুন্দর হতো রিকশাওয়ালা শিক্ষককে নিজের বাসায় আশ্রয় দিয়েছেন আবার অন্য ইঞ্জিনিয়ার নিজের শিক্ষকের কথা শুনে তার ছেলেকে চাকরি দেয়ার জন্য সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কিন্তু সুপারিশ করলেই যে বর্তমান সময়ে চাকরি হয় না এটা একেবারেই বাস্তব জানিনা এই গল্পের পরবর্তী পর্বে কি রয়েছে তবে গল্পটা পড়ার আবারো আগ্রহ সৃষ্টি হয়ে গেল। পরবর্তী পর্ব পড়ার অপেক্ষায় রইলাম ভালো থাকবেন।