আজগবি প্রতিযোগিতা

in hive-120823 •  last month  (edited)

pexels-photo-9052538.jpegsrc

মুভি দেখার অভ্যাস আমার নাই বললেই চলে, তবে যদি শিক্ষামুলক কোনো মুভির লিংক পাই, তা দেখাকে আমি আবশ্যক হিসেবে বিবেচিত মনে করি৷ নিমিষেই লুফে নিই সেই সুযোগ৷

বেশ কিছু বছর আগে একটি তামিল মুভিতে দেখেছিলাম, একটি অফিসের বস তার সকল কর্মীর হাতে একটি করে বেলুন দিয়ে সেই বেলুনগুলো ফুলাতে বললেন এবং পরবর্তীতে সবাইকে নিয়ে একটি প্রতিযোগিতার আয়োজন করেন৷

বস, একটি সময় নির্ধারণ করে দেন আর বলে দেন এই বেলুন যিনি শেষ পর্যন্ত অক্ষত রাখতে পারবেন তিনিই হবেন এই প্রতিযোগিতার বিজয়ী৷ যিনি বিজয়ী হিসেবে বিবেচিত হবেন তার জন্য রয়েছে বিশাল এক পুরষ্কার।

pexels-photo-7267590.jpegsrc

নির্ধারিত সময় অনুযায়ী শুরু হলো প্রতিযোগিতা, প্রতিযোগীরা একে অন্যের বেলুন ফাটানোতে ব্যস্ত, একে একে সব বেলুনগুলো ফাটানো হলো, একটি বেলুনও কেউ অক্ষত রাখতে পারলেন না৷ যেহেতু একটি বেলুনও অক্ষত হিসেবে অবশিষ্ট নেই, তাই খেলার নিয়ম অনুযায়ী এপর্যায়ে কেউ বিজয়ী হতে পারলো না বিধায় কেউ পুরষ্কারটাও হাতিয়ে নিয়ে পারলেন না।

বস তাদের কর্মকাণ্ড ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করে বললেন, আমি শুধু একটি প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছি মাত্র। যেখানে নিয়ম ছিলো, "যিনি শেষ পর্যন্ত তার হাতে থাকা বেলুন অক্ষত রাখতে পারবেন তিনিই পুরষ্কৃত হবেন"। কিন্তু আমিতো একবারও বলিনি যে, একে অন্যের বেলুন ফাটাতে হবে৷ প্রতিযোগিতার সময় শেষ হওয়ার পর সবাই যদি তার হাতে থাকা বেলুন অক্ষত রাখতে পারতেন তাইলে সবাইকেই পুরষ্কৃত করা হতো।

আপনি কিংবা আমি হলেও হয়তো উক্ত বসের সেই কর্মীদের মতোই ভুমিকা পালন করতাম।

pexels-photo-3449933.jpegsrc

সাময়িক লোভে পড়ে নিজেদের অস্তিত্বকে বিলীন করতেও দ্বিধাবোধ করতাম না। কিন্তু উপরিউক্ত লেখাটুকু একবার ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করে দেখুনতো, কর্মীরা যদি তাদের অন্যসব কলিগকে নিজেদের প্রতিযোগী মনে না করতেন তবে কিন্তু পুরষ্কারের ভাগিদার সবাই হতে পারতেন।

বাস্তবিক জীবনে আমরা একে-অপরকে প্রতিযোগী মনে করি। শুরু হয় প্রতিযোগিতা, অন্যের পথে বাঁধ গড়ে তুলতে অনেক কাঠ-খড় পুড়াই, আমরা ৷ ফলাফল হিসেবে অন্যের পথে বাঁধা হয়ে দাড়াতে যদিও সক্ষম হই বিপরীতে নিজেরাও এগোতো অক্ষম হয়ে পড়ি৷ এর আসল কারণ কি জানেন...? এর আসল কারণ হলো, আমরা নিজেরা অন্যের পিছনে লেগে যতটুকু সময় ব্যয় করেছি ততটুকু সময় নিজেদের জন্য ব্যয় করতে অপারগ ছিলাম।

উদাহরণ হিসেবে বলা যাক,
একটি ফুটবল টিমে ১১ জন খেলোয়াড় থাকে, একটি টিমকে বিজয়ী করতে ১১জনেরই প্রচেষ্টা থাকতে হয় সমানতালে। এখানে সবাই যদি শুধু নিজস্ব খ্যাতি অর্জনের লক্ষ্য নিয়ে খেলে তবে দলকেতো জেতাতে পারবেই না বিপরীতে হারতে হবে৷

পৃথিবীটা সাম্যের হবে, এমনটাই প্রত্যাশা আমাদের। তবে আমাদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যগুলোর পরিবর্তনও ভীষণ জরুরি। যদি তা না হয়, তবে সার্বিক উন্নয়ন আদৌও কি সম্ভব.....?

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  
Loading...

ভাই, প্রথমেই আপনাকে অনেক ধন্যবাদ জানাই আপনার লেখা পড়ার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য।

পাশাপাশি, আপনার আজকের লেখাটা থেকে অনেক কিছু শেখার আছে। প্রকৃতপক্ষে ঐযে দিদি একটা কথা বলেন যে দ্রুত হাঁটতে চাইলে একা হাটো কিন্তু সফলতা অর্জন করতে চাইলে দলবদ্ধভাবে হাঁটো। এটাকে আমি জীবনের প্রতিটা মুহূর্ত মাথায় রাখবো।

আপনি যে উদাহরণটা তুলে ধরেছেন সেইটা একদমই সঠিক। কারণ একা একা দলকে জেতানো সম্ভব না বরং সেখানে সকলের অবদান অত্যাবশ্যকীয়।

আপনার পরবর্তী লেখা পরিদর্শনের অপেক্ষায় রইলাম ভাই।

ধন্যবাদ দিদি, আমার পোস্টটি বিবেচনা করে সুন্দর একটি মতামত প্রদানের জন্য।

অন্যের ক্ষতি করে কখনোই আমরা নিজের উন্নতি করতে পারি না। প্রতিযোগিতা তখনই অর্থবহ হয়, যখন তা একে অন্যকে সহযোগিতা করার মাধ্যমে হয়। এই শিক্ষা আমাদের ব্যক্তিগত ও পেশাগত জীবনে কার্যকরী হতে পারে। আমরা যদি একে অপরকে সাহায্য করে, একসঙ্গে এগিয়ে যাই, তবে একে অপরের উন্নতিতে অবদান রাখতে পারি। প্রতিযোগিতার চেয়ে সহযোগিতা জীবনের জন্য আরও প্রাসঙ্গিক।