আংশিক বাস্তব (পর্ব ২)

in hive-120823 •  last month 

পর্ব ১

pexels-photo-9532212.jpegsrc

দ্বিতীয় পর্ব ভালোভাবে বুঝতে হলে সর্ব প্রথম আপনাকে পর্ব নম্বর ১ পড়ার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি। সবার সুবিধার্থে পর্ব নং ১ এর লিংক শুরুতেই সংযুক্ত করে দিয়েছি৷

গতকাল যেখানে শেষ করেছিলাম, আজ সেখান থেকেই শুরু করছি............ ।

বহুদিন পর গ্রামের সেই স্কুল ছাত্রের সাথে দেখা, মাঝখানে অনেক দিন পেরিয়ে যাওয়ায় পরিচিত মুখও যেন অপরিচিত হয়ে গেছে৷ শিক্ষক ছাত্রকে চিনতে না পারলেও ছাত্র তার শিক্ষকের মর্যাদা অক্ষুণ্ণ রাখতে একটুও কমতি রাখলো না৷ সে কি আতিথ্বেতা! পুরো ব্যাপারটা আমাকে প্রচন্ড বিমোহিত করেছে৷

জীবনে চলতে পথে কারো কর্মকে ছোট করে না দেখে সব পেশার মানুষের সাথেই সুসম্পর্ক বজায় রাখা উচিত। কারণ, কখন কাকে প্রয়োজন পড়বে তা বলা আসলেই মুশকিল। আমার জীবনের একটা ঘটনা বলি, গত কিছুদিন আগে একটা ঝামেলায় পড়েছিলাম, আমার ক্লাসের সবাই যাকে "পঁচা ছাত্র" উপাধিতে ভূষিত করেছিলো সেই পঁচা ছাত্রটিই আমাকে ওই ঝামেলা থেকে উদ্ধার হতে সাহায্য করেছিলো। আমি তার কাছে চিরকৃতজ্ঞ।

যাইহোক, যেহুতু শিক্ষক বাবার আপাতত মাথা গোজার ঠাই এই শহরে নাই, সেহেতু এই মুহুর্তে শহরের সেই রিকশা চালক ছাত্রই একমাত্র শুভাকাঙ্ক্ষী। ছাত্রের জোড়াজুড়িতে শিক্ষক বাবাসহ সাথের সঙ্গীরা তার বাসায় যেতে রাজি হলো। এই পর্যায়ে ছাত্রের ভুমিকা এমন, যেন সে তাদের আরেক সন্তান৷ যেহেতু তারা অসহায়, কোনো কর্ম নেই, সেহেতু রিকশা চালক ছাত্রই তাদের সকল কিছুর ভরণপোষণের দায়িত্ব নিজের কাধে নিয়েছে৷ এভাবেই চলতে থাকলো...........।

অপরদিকে,

pexels-photo-7714733.jpegsrc

বাবা চলে আসার পর আত্ম অনুশোচনায় ভুগতে থাকলো বড় ছেলে৷ প্রতিদিন সে বাবার কথা মনে করে কাঁদে। এর ওর থেকে বাবা, মা, ভাইয়ের খোঁজ নেওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু কেউই তাদের খোঁজ জানেনা৷

যখনই ছোটবেলায় বাবা মা এবং ভাইয়ের সাথে খুনসুটি করার কথা মনে পড়ে তখনই সে ভীষণ কষ্ট পায়৷ বাবা চলে যাওয়ার পর সে ক্যামন যেন হয়ে গেছে, ঠিকমতো খায় না, কারো সাথে ঠিকমতো কথা বলে না৷ তার আত্মা যেন বাবা মাকে প্রতিনিয়ত খুঁজে ফিরছে, বারংবার।

পুর্বের প্রসঙ্গে ফেরা যাক,

রিকশা চালক ছাত্রের ঘরে বাবা নিজেদের বোঝা মনে করছেন, যদিও আশ্রয়দাতা ছাত্রের চোখে মুখে বিন্দুমাত্র বিরক্তির ছাপ নেই। বাবা কর্মের খোঁজে বের হলেন, যদি একটা গার্ড কিংবা শ্রমিকের কর্ম জোটে, তবে অসহায়ত্ব একটু হলেও ঘুচবে।

pexels-photo-9533096.jpegsrc

বাবা কর্ম খুঁজছেন, এর মধ্যে দেখা হলো আরেক ছাত্রের সাথে, যিনি একজন ইন্জিনিয়ার। তার কাছেও কাজ চাইতে অসহায় বাবার ভিতরে একটুও লজ্জাবোধ কাজ করলো না। কারণ, এই মুহুর্তে তিনি প্রচন্ড অসহায়। শিক্ষকের এমন দিন দেখে ইন্জিনিয়ার ছাত্র ক্ষণিকের জন্য আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়লো।

আজ এপর্যন্তই। পরবর্তী পর্ব আগামীকাল, সে পর্যন্ত ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন৷

উল্লেখ্যঃ "আংশিক বাস্তব" শিরোনামে লেখা পর্ব ১ এর লিংক উপরে সংযুক্ত করে দিয়েছি।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  
Loading...

মানুষের প্রতিটা সময় কিন্তু একরকম যায় না আর প্রতিটা মানুষকে আপনি একই পাল্লায় কখনোই মেপে সমান করতে পারবেন না একেক জন মানুষ একেক রকম হয়ে থাকে তার সন্তানের কাছে তার মূল্য না থাকলেও তার ছাত্রের কাছে তার মূল্য রয়েছে অপরিসীম যেটা হয়তোবা সে নিজেও জানে না।

শহরের বাড়িতে একজনের বাসায় আরেকজন থাকাটা কতটা কষ্টের সেটা আমি কিছুটা হলেও অনুধাবন করতে পারছি আসলে অনেক বেশি সমস্যা হয় তাই হয়তো বা সেই বাবা নিজের কাজকর্ম খোঁজার জন্য নিজেই বেরিয়ে পড়েছেন কিন্তু তিনি এই বয়সে কতটুকু কাজ করতে পারবেন সেটা আমার জানা নেই কারণ মানুষ যখন বৃদ্ধ হওয়া শুরু হয় তখন তার শরীরের কর্মক্ষমতা অনেকটাই হারিয়ে ফেলে।

দাঁত থাকতে দাঁতের মর্যাদা দেয় না এখন সেটাই হয়েছে ছেলে এখন তার বাবাকে হারিয়ে নিজের বাবা-মায়ের কথা মনে করে কান্না করছে কেমন যেন হয়ে গেছে আসলে এমন হওয়াটাই স্বাভাবিক নিজের আপন মানুষগুলোকে হারিয়ে ফেলাটা কতটা কষ্টকর যারা হারিয়ে ফেলেছে তারা বুঝতে পারে আপনার লেখার পরবর্তী পর্ব করার অপেক্ষায় রইলাম ভালো থাকবেন।

ধন্যবাদ আপু, আপনার সুন্দর মতামতের জন্য।