বাংলাদেশ ড্রেসিংরুমের পরিবশে অশান্ত! কারণ কি?

in hive-121930 •  3 years ago 


shakib-tamim-mash-161119-02.jpg
image

সিনিয়রদের স্বার্থে আঘাত লাগলেই বাংলাদেশ দলের ড্রেসিংরুম অশান্ত, অস্থিতিশীল হয়ে যায়।


1604818741_mahmudullah-102-vs-nz.webp
image

১/ঘটনা!

২০১৭ সাল বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কা সফরে যায়। গলে বাংলাদেশ প্রথম টেস্ট বাজে ভাবে হেরে যায়। সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট আর বাংলাদেশের শততম টেস্ট ম্যাচ। সাজ-সাজ রব চারদিকে। হঠাৎ করে খবর আসলো শততম টেস্ট থেকে বাদ পড়তে যাচ্ছেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ আমাদের মিডিয়ায় তোলপাড় শুরু হল। কোচ হাতুড়ি সিং মিডিয়াকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে বাদ দিলেন রিয়াদকে। শুধু টেস্ট নয় অফ ফর্মে থাকা রিয়াদকে ওয়ানডে দল থেকেও বাদ দিতে চাইলেন। তবে কেপ্টেন ফ্যানটাস্টিক ঘোষণা দিলেন রিয়াদকে ছাড়া উনি শ্রীলঙ্কায় যাবেন না। বাধ্য হয়ে রিয়াদকে দলে নিতে হয়।


304031.10.jpg
image

২/ ঘটনা!

শ্রীলঙ্কা সফরের সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি সিরিজে ছিল প্রথম টি-টোয়েন্টি বাংলাদেশ হারে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টির টসের সময় কাপ্তান মাশরাফি ঘোষণা দিলেন এটাই তার শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ। তারপর শুরু হল মিডিয়ার খেলা। কে কত রকম ভাবে পারে রংবেরং রিপোর্ট তৈরি করতে।কে ফাস্ট হতে পারে আবেগের ব্যবসায়। দর্শকদেরকে গোল খাওয়াল হাতুড়ি সিং আমাদের ক্রিকেট ধ্বংস করার পাঁয়তারা করছে। শুরু হয় হাতুড়ি হাটাও বাংলার ক্রিকেট বাঁচাও আন্দোলন। বিপদ বুঝতে পেরে চাকরি ছেড়ে দিলেন চন্ডিকা।


Shakib.jpg
image

৩/ ঘটনা!

২০১৯ সাল বিশ্বকাপের বছর। বাংলাদেশ নিজেদের ইতিহাসের সেরা দল নিয়ে ওয়ার্ল্ডকাপে গেল। সুপার-ডুপার ফ্লপ করলেন ক্যাপ্টেন। অপরদিকে দেশ সেরা ওপেনার তিনিও ২৯ নাম্বার পেয়ে ফেল করলেন। ক্যাপ্টেনের অফ ফর্ম ডাকতে বিশ্বকাপ চলাকালীন সময়ে মিডিয়া খবর প্রচার করলো সাইফুদ্দিন বড় দলের বিপক্ষে খেলতে চান না। সাকিব বলেছিলেন আনফিট মাহমুদুল্লাহ রিয়াদকে পরের ম্যাচে বাদ দিতে। তারপর হারা ম্যাচে রান করে, ড্রেসিংরুমে ফিরে এসে ব্যাট গ্লাভস ছুড়ে মেরে নিজের রাগের বহিরপ্রকাশ করেছিলেন।সাকিবের অতিমানবীয় পারফরম্যান্সের পরেও দল গ্রুপ পর্ব থেকে বাদ পড়ায় দর্শকরা প্রচুর সমালোচনা করে দলের। মিডিয়াও পরিস্থিতি বুঝতে পেরে পল্টি মারে ফ্লপ প্লেয়ারদের সমালোচনা করে। ওয়ার্ল্ড কাপ ব্যর্থতার পুরো দায় চাপিয়ে দেওয়া হয় স্টিভ রোডসের উপর।তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়। তবে ব্যর্থ সিনিয়র সিন্ডিকেট নিজেদের বহাল তবিয়তে থেকেই যায়। সিন্ডিকেটের অন্যতম সদস্য মাশরাফির দল থেকে বাদ পড়ে যায়। নতুন কোচ তাকে দলে নিতে চান নাই বয়স ও ফর্ম কোনটাই তার পক্ষে না থাকায়।


cricket-bangladesh-vs-west-indies-3rd-odi_16d3105a-f64d-11e8-9c15-87952149edff_1630487857806.webp
image

৪/ ঘটনা!

প্রায় দেড় বছর টি-টোয়েন্টি না খেলেও তামিম ইকবাল বিশ্বকাপ দলে থাকছেন এই খবর যখন প্রকাশ হয় তখন প্রচুর সমালোচনা হয়। নির্বাচকরা নিতে না চাইলেও বলেন ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির চেয়ারম্যান বলে ওয়ার্ল্ডাকপ দলে তামিম থাকবে। সমালোচনা কিংবা ফিট নাথাকা তামিম ইকবাল ফেসবুক ভিডিও বার্তায় জানালেন তিনি ওয়ার্ল্ড কাপে এভেলেবেল না। তার জায়গায় যারা খেলছেন তাদের প্রতি আনফেয়ার হয়। কারণ তিনি ফিরলে তাদের কাউকে হয়তো বাদ পড়তে হবে। তবে আমাদের একদল দর্শকবৃন্দ দাবি করলেন তামিম ইকবাল অভিমান করে বিশ্বকাপ খেলতে চান না। মিডিয়াও সেটাকে প্রচার করলো খুব জোরেশোরে একদল মানববন্ধন করলো। কেউ কেউ আবার প্লে কার্ড গলায় ঝুলিয়ে মিডিয়ায় আকর্ষণ করতে চাইলেন। মিডিয়াও তাকে কাভারেজ দিল।


Mushfiqur-Rahim-1.jpg
image

৫/ঘটনা!

মুশফিকুর রহিম আমাদের দেশের সেরা ব্যাটসম্যান বলা হয়ে থাকে।আদর করে তাকে ডাকা হয় মিস্টার ডিপেন্ডেবল। ব্যাট হাতে ডিপেন্ডেবল হলেও কিপিং গ্লাভস হাতে তিনি পুরাই উল্টাে তিনি। তিনি কিপিং করায় অসংখ্য ম্যাচ হারতে হচ্ছে। ওয়ার্ল্ড কাপ কিংবা কিছুদিন আগে নিউজিল্যান্ড সিরিজ সব জায়গায় উইকেটের পেছনে প্রচুর ভুল করতে থাকেন। কিপিং নিয়ে শুরু হয় সমালোচনার ঝড়। এরই মাঝে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে দেশ সেরা উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান নুরুল হাসান সোহান ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে প্রায় 150 স্ট্রাইক রেটে ব্যাট করে 400 রান (কাছাকাছি) করেন এবং তিন ফর্মেটে দলে ফিরেন জিম্বাবুয়ে সিরিজে। ওয়ানডে সিরিজের আগে হঠাৎ করে দেশে ফিরে আসেন মুশফিকুর রহিম আর প্রথম ওয়ানডেতে ইনজুরিতে পড়েন লিটন দাস তাই উইকেটের পেছনে গ্লাভস হাতে দাঁড়ান নুরুল হাসান সোহান। প্রথম ওয়ানডের পর লিটন দেশে ফিরে আসেন। আর অস্ট্রেলিয়া সিরিজে বায়ো-বাবল নিয়ে অদ্ভুত শর্ত দেয় অজিরা। যার কারণে অস্ট্রেলিয়া সিরিজে লিটন ও মুশফিক খেলতে পারেন নাই। দলে সুযোগ পেয়ে ব্যাট কিংবা গ্লাস অসাধারণ পারফর্ম করেন নুরুল হাসান সোহান। আর নিউজিল্যান্ড সিরিজে মুশফিক পলিটন ফিরে আসায় প্রশ্ন তৈরি হয় কে কিপিং করবেন মুশফিক নাকি সোহান। সিরিজ শুরুর আগেই অবাক করা ঘোষণা দেন হেড কোচ ডোমিঙ্গো।তিনি বলেন প্রথম দুই ম্যাচ সোহান কিপিং করবে, পরের ম্যাচ মুশফিক কিপিং করবে। আর প্রথম দুই ম্যাচে ভালো করবেন সে লাস্ট ম্যাচে দাঁড়াবেন উইকেটের পিছনে। পাড়ার ক্রিকেটের নিয়ম আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এপ্লাই করলেন। এ ঘোষণার পর আবারও সমালোচনার ঝড় শুরু হয়। তৃতীয় ম্যাচে মুশফিকের উইকেট কিপিং করার কথা থাকলেও সোহান দাঁড়ান কিপিং গ্লাভস হাতে। আর ম্যাচ শেষে কোচ জানান মুশফিক আর কখনো টি-টোয়েন্টিতে কিপিং করতে চান না। একদল দাবি করে অভিমান করে মুশফিক কিপিং করবেন না।

তবে পূর্বের চারটি ঘটনা প্রমাণ কর আগে যে সিনিয়র সিন্ডিকেটের উপর স্বার্থে আঘাত লাগলে তখন ঐ ড্রেসিংরুমের পরিবেশ নষ্ট ওনোংরা হয়ে যায়।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Gracias por participar bro