সেপ্টেম্বরে জন্মগ্রহণকারী ক্রিকেটারদের সেরা টেস্ট একাদশ!

in hive-121930 •  3 years ago 


image.png
image

দলটা দেখতে অনেক সাবলীল লাগলেও দলে আছেন অন্যতম সেরা দুই ওপেনার সাঈদ আনোয়ার, ক্রিস গেইল। মিডল অর্ডারে আছেন মার্টিন ক্রু ও চ্যাপেলদের মত অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান। স্পিন এ্যাটাকে আছেন শেন ওয়ার্ন সাথে অশ্বিন এবং পারাটাইমার হিসেব ক্রিজ গেইল। এছাড়াও পেস এ্যাটাকে অ্যামব্রোসের সাথে মাইক প্রক্টর। অতএব, নিশ্চিন্তে আপনি এই দলের হয়ে বাজি ধরতে পারেন। চলুন একাদশটি সাজিয়ে নেওয়া যাক এবং খেলোয়াড়দের ক্যারিয়ার সম্পর্কে কিছু তথ্য জানা যাক:

ব্যাটসম্যান

  • ১.সাঈদ আনোয়ার; পাকিস্তান (৬ সেপ্টেম্বর)


image.png
image

পাকিস্তানি এই ওপেনারের সুপরিচিতি রয়েছে আক্রমনাত্মক ক্রিকেটার হিসেবে। অসাধারণ স্ট্রোক প্লে, প্লেসমেন্ট, একজন ব্যাটারের সব গুণাগুণই সঠিক পরিমানে ছিল তার মাঝে। সীমিত ওভারের ক্রিকেট দিয়ে পাকিস্তানের সর্বকালের অন্যতম সেরা এই ওপেনারের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয়। তবে সময়ের সাথে সাথে তিনি নিজেকে পোক্ত টেস্ট ক্রিকেটার হিসাবেও প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। অসাধারণ নজরকারা ব্যাটিং তাকে এই একাদশের শীর্ষে রাখতে বাধ্যে করেছে।

আনোয়ারের টেস্ট ক্যারিয়ার:

ম্যাচ: ৫৫ | ইনিংস: ৯১ | রান: ৪০৫২ | শতক: ১১ | অর্ধশতক: ২৫ | গড়: ৪৫.৫২ | সর্বোচ্চ: ১৮৮*

  • ২. ক্রিস গেইল; ওয়েস্ট ইন্ডিজ (২১ সেপ্টেম্বর):


image.png
image

গেইলেকে সবাই আমরা টি-২০ ক্রিকেটের ফেরিওয়ালা হিসেবে চিনলেও তিনি ওডিআই ও টি-২০ ক্রিকেটে ভালো করার আগে নিজেকে একজন টেস্ট ব্যাটসম্যান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। টি-২০ ক্রিকেটে শতকের পাশাপাশি ওয়ানডে ক্রিকেটেও ডাবল সেঞ্চুরির মালিক ইউনিভার্স বস ক্রিজ গেইল। এছাড়াও টেস্ট ক্রিকেটে ট্রিপল সেঞ্চুরি হাঁকানো ৪ জন ক্রিকেটারের মধ্যে একজন হলেন ক্রিজ গেইল। একবার ভাবেন গেইল আর আনোয়ার যদি কোন দলের বিপক্ষে একবার দাড়িয়ে যায় তাহলে সেই দলের অবস্থা কেমন হবে?

গেইলের টেস্ট ক্যারিয়ার:

ম্যাচ: ১০৩ | ইনিংস: ১৮২ | রান: ৭২১৪ | শতক: ১৫ | অর্ধশতক: ৩৭ | গড়: ৪২.১৮ | সর্বোচ্চ: ৩৩৩

  • ৩. কেএস রঞ্জিত সিং জি; ইংল্যান্ড (সেপ্টেম্বর ১০):

কেএস রঞ্জিত সিং জি মূলত রঞ্জি নামেই বেশি পরিচিত। যখন কেউ ক্রিকেটের সেরা খেলোয়াড়দের নিয়ে আলোচনায় বসে, তখন সহজেই তার নাম উঠে আসে। রঞ্জিত সিং ক্রিকেটে কেবল রানই সংগ্রহ করে যাননি লেট কাট ও লেগ গ্লান্সের মত নতুন শটের প্রবর্তক তিনিই। প্রথম শ্রেনির ক্রিকেটের রেকর্ড দেখলেই, তার ব্যাটিং দক্ষতা সম্পর্কে মোটামুটি ধারনা পেয়ে যাবেন। ৫৬ গড়ে প্রথম শ্রেনির ক্রিকেটে ২৪ হাজারেরও এর বেশি রান তুলেছেন তিনি।

রঞ্জিত সিং জি'র টেস্ট ক্যারিয়ার:

ম্যাচ: ১৫ | ইনিংস: ২৬ | রান: ৯৪৯ | শতক: ০২ | অর্ধশতক: ০৬ | গড়: ৪৪.৯৫ | সর্বোচ্চ: ১৭৫

  • ৪. মার্টিন ক্রো; অধিনায়ক; নিউজিল্যান্ড (২২ সেপ্টেম্বর):

image

ক্রিকেটীয় পরিবারের সন্তান এবং তারই সুত্র ধরে নিউজিল্যান্ডের ক্রিকেটে সহজেই অভিষিক্ত হন মার্টিন ক্রু। ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার আগে তিনি নিজেকে কিংবদন্তীদের পর্যায়ে নিয়ে গেছে। হয়েছেন নিউজিল্যান্ডের হয়ে সর্বোচ্চ রানের মালিক। ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি অধিনায়কত্বেও দারুন সফল ছিলেন এই কিউই ক্যাপ্টেন। এই দলে ৪ নাম্বারে তাকে পরাজিত করতে পারে এমন ক্রিকেটার খুব কমই রয়েছে।

ক্রোর টেস্ট ক্যারিয়ার:

ম্যাচ: ৭৭ | ইনিংস: ১৩১ | রান: ৫৪৪৪ | শতক: ১৭ | অর্ধশতক: ১৮ | গড়: ৪৫.৩৬ | সর্বোচ্চ: ২৯৯

  • ৫. ইয়ান চ্যাপেল; অস্ট্রেলিয়া ( ২ সেপ্টেম্বর):


image.png
image

ইংলিশ ধারাভাষ্যকার জন আরলোটের বর্ণনা অনুসারে, ইয়ান চ্যাপেল খুবই প্রভাবশালী ক্রিকেটার ছিলেন। যখন অষ্ট্রেলিয়া দল খারাপ সময় পার করছিলো তখন তিনি অষ্ট্রেলিয়া দলকে নিয়ন্ত্রণে এনেছিলেন। ইয়ান চ্যাপেলের নেতৃত্বে একটা টেষ্ট সিরিজেও হারের মুখ দেখেনি অজিরা। অধিনায়কত্বের পাশাপাশি একজন ব্যাটসম্যান হিসেবেও দারুন ছিলেন ইয়ান চ্যাপেল।

চ্যাপেলের টেস্ট ক্যারিয়ার:

ম্যাচ: ৭৫ | ইনিংস: ১৩৬ | রান: ৫৩৪৫ | শতক: ১৪ | অর্ধশতক: ২৬ | গড়: ৪২.৪২ | সর্বোচ্চ: ১৯৬

  • ৬. জর্জ হার্স্ট; ইংল্যান্ড (৭ সেপ্টেম্বর):

লর্ড হক, জর্জ হার্স্ট সম্পর্কে বলেছিলেন- 'তিনি মূলত একজন ডানহাতি ব্যাটসম্যান ছিলেন এবং বাম হাতে মিডিয়াম পেস বোলিং করতেন।' জর্জ হার্স্টকে সর্বকালের সেরা কাউন্টি ক্রিকেটার হিসাবে বর্ণনা করেছিলেন তিনি। প্রথম শ্রেনির ক্রিকেটে ৮২৬ ম্যাচে ৩৪ হাজরের বেশি রান, সাথে ১৮ গড়ে ২৭৪২ টি উইকেট। তার এই অর্জন তাকে সর্বকালের সেরা কাউন্টি ক্রিকেটার হিসেবে নির্বাচিত করে।

হাস্টের টেস্ট ক্যারিয়ার-

ম্যাচ: ২৪ | ইনিংস: ৩৮ | রান: ৭৯০ |অর্ধশতক: ০৫ | গড়: ২২.৫৭ | সর্বোচ্চ: ৮৫ | উইকেট: ৫৯ |
সেরা বোলিং: ৫/৪৮

উইকেটরক্ষক

  • ৭.ব্রেন্ডন ম্যাককালাম; নিউজিল্যান্ড (২৭ সেপ্টেম্বর):


image.png
image

মূলত আক্রমনাত্মক ক্রিকেট খেলার জন্যই বেশি খ্যাতি ছিলো ব্রেন্ডন ম্যাককালামের। বোলারদের উপর চড়াও হয়ে অনেক ম্যাচে তিনি সফলও হয়েছেন। এছাড়াও প্রথম কিউই ক্যাপ্টেন হিসেবে দলকে ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনালে নিয়ে যান। ব্রেন্ডন তার পুরো ক্যারিয়ারে উইকেট কিপিং না করলেও এই একাদশে থাকছেন একজন উইকেট কিপার ব্যাটসম্যান হিসেবে।

ম্যাককালাম টেস্ট ক্যারিয়ার-

ইনিংস: ১০১ | রান:১৭৬ | শতক: ১২ | অর্ধশতক: ৩১ | গড় ৩৮.৬৪ | ক্যাচ: ১৯৮ | স্ট্যাম্পিং: ১১

বোলার

  • ৮. রবিচন্দ্রন অশ্বিন; ভারত (১৭ সেপ্টেম্বর):


image.png
image

টেস্ট ক্রিকেটে অন্যতম সেরা একজন অলরাউন্ডার হিসেবে বিবেচনা করা হয় রবিচন্দ্রন অশ্বিনকে। পাওয়ার প্লে থেকে শুরু করে মিডল ওভার এমনকি ডেথ ওভারে দলের প্রয়োজনে সব জায়গাতেই দারুন বোলিং করেন ভারতীয় এই অফস্পিনার। বোলিংয়ের পাশাপাশি ৮ নাম্বারে ব্যাটিংয়ে নেমে কয়েকটি শতক হাঁকানোরও রেকর্ড আছে অশ্বিনের। তার এসব কৃতিত্বের জন্য ভারতীয় অধিনায়করা সবসময়ই তাকে নিয়ে গর্ব করেন। এই একাদশে ৮ নাম্বারে অশ্বিনের বিকল্প কেউ নেই।

অশ্বিনের টেস্ট ক্যারিয়ার-

ম্যাচ: ৭৯ | ইনিংস: ১১১ | রান: ২৬৮৫ | শতক: ০৫ | অর্ধশতক: ১১ | গড়: ২৭.৬৮ | সর্বোচ্চ: ১২৪ | উইকেট: ৪১৩ | সেরা বোলিং: ৭/৫৯ | গড়: ২৪.৫৬ | ৫ উইকেট: ৩০ বার | ১০ উইকেট: ৭ বার

  • ৯. মাইক প্রক্টর; দক্ষিণ আফ্রিকা (১৫ সেপ্টেম্বর):

মাইক প্রক্টর বর্তমান প্রজন্মের কাছে বেশি পরিচিত তার আম্পায়ারিং দিয়ে। ২০০৭-০৮ সালে বর্ডার-গাভাস্কার ট্রফিতে বর্ণবাদী মন্তব্যের কারনে হারভজন সিংকে ৩ ম্যাচের জন্য নিষিদ্ধ করেছিলেন মাইক প্রক্টর। প্রক্টর তার সময়ে দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে অন্যতম সেরা দ্রুতগামী বোলার ছিলেন। তবে দূর্ভাগ্যবশত আফ্রিকার হয়ে মাত্র ৭ টি টেস্ট ম্যাচ খেলেন এই অলরাউন্ডার। এত কম ম্যাচ খেলার মূল কারন ছিলো আফ্রিকায় বর্ণবাদ নিয়ে দাঙ্গা। তার প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট ক্যারিয়ারের উপর অনুমান করে বলা হয়ে থাকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটীয় ক্যারিয়ার যদি তার আরও অগ্রগামী হতো তাহলে ইমরান খান, কপিল দেব ও ইয়ান বোথামদের কাতারে নিজেকে নিয়ে যেতে পারতেন।

প্রক্টরের টেস্ট ক্যারিয়ার-

ম্যাচ: ০৭ | ইনিংসঃ১৪ | রান: ২২৬ | গড়: ২৫.১১ | সর্বোচ্চ: ৪৮ | উইকেট: ৪১ | সেরা বোলিং: ৬/৭৩ | গড়: ১৫.০২ | ৫ উইকেট: ১ | ১০ উইকেট:

  • ১০. শেন ওয়ার্ন, অস্ট্রেলিয়া (১৩ সেপ্টেম্বর):


image.png
image

সেন কেইথ ওয়ার্ন। ক্রিকেট ইতিহাসে সর্বকালের সেরা লেগস্পিনার হিসেবে যাকে মানা হয়। এই একাদশে অশ্বিনের অফস্পিনের সাথে ওয়ার্নের লেগস্পিন দারুন একটা জুটি করবে আশা করি। অজি এই কিংবদন্তি টেস্ট ক্যারিয়ারের ইতি টেনেছিলেন ৭০৮ উইকেট নিয়ে।

ওয়ার্নের টেস্ট ক্যারিয়ার-

ইনিংস: ২৭৩ | রান: ৩১৫৪ | অর্ধশতক: ১২ | গড়: ১৭.৩২ | সর্বোচ্চ: ৯৯ | উইকেট: ৭০৮
সেরা বোলিং: ৮/৭১ | গড়: ২৫.৪১ | ৫ উইকেট: ৩৭ | ১০ উইকেট: ১০ বার

  • ১১. কার্টলি অ্যামব্রোস; ওয়েস্ট ইন্ডিজ (২১ সেপ্টেম্বর):


image.png
image

নব্বই দশকের ব্যাটসম্যানরা আজো নিশ্চয়ই এই নামটা শুনে আতঙ্কে ভুগেন। ৬ ফুট ৭ ইঞ্চির আদর্শ উচ্চতার অধিকারী অ্যামব্রোস অপ্রত্যাশিতভাবে বলকে বাউন্স প্রদানে সক্ষম ছিলেন। তার সাথে গতির ঝড় তো ছিলই। সব মিলিয়ে তিনি ছিলেন মূর্তিমান আতঙ্ক। কোর্টনি ওয়ালশের সাথে বোলিং উদ্বোধনের নেতৃত্বে দেখা যেত তাকে। দু’জনে মিলে গড়ে তুলেছিলেন ইতিহাসের সেরা ফাস্ট বোলিং জুটি।খুবই কৃপন এবং উইকেট শিকারি বোলিং হিসেবে খ্যাতি ছিলো স্যার কোর্টলি এমব্রোসের। ১৯৯৩ সালে ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা বোলিং স্পেলের রেকর্ড গড়েন অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে পার্থ টেস্টে। পার্থে ‘দ্য ফ্রাংক ওরেল ট্রফি’র শেষ টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৩২ বলে ১ রানের বিনিময়ে ৭ উইকেট শিকার করেন তিনি। ভাবা যায়!

এ্যামব্রোসের টেস্ট ক্যারিয়ার:

ম্যাচ: ৯৮ | ইনিংস: ১৭৯ | উইকেট: ৪০৫ | গড়: ২০.৯৯ | সেরা বোলিং: ৮/৪৫ | ৫ উইকেট: ২২ | ১০ উইকেট: ৩ বার



Contribution to the community.
image.png
Screenshot

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Great post , thanks for your support

This post has been upvoted by @boss75 from @steemcurator07 Account with support from the Steem Community Curation Project.

For more updates, keep following @steemitblog.

Best Regards!!!