নারী সমাচার-২ (10% beneficiaries for @shy-fox)

in hive-129948 •  3 years ago  (edited)
কেমন আছেন সবাই? আশা করি ভাল আছেন। আমার বাংলা ব্লগে পরিবারের সকল সদস্যদের সুস্বাস্থ্য কামনা করি। সেই সাথে মহামারী করোনার যে নতুন ভ্যারিয়েন্ট চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ছে সেই বিষয়ে সতর্ক থাকার জন্য অনুরোধ করছি। কেননা আমরা নিজেরা সুস্থ থাকলে নিজেদের পরিবার সুস্থ্য থাকবে। যাই হোক আজ আমি আপনাদের মাঝে আমার লেখা প্রবন্ধ নারী সমাচার নিয়ে আলোচনা করব।

love-g29de15883_1920.jpg

Image Source
আমি বলি কি ভোগ জিনিসটা দোষের নয় কিন্তু শরীরের ভোগই যেন জীবনের শেষ না হয়। আমাদের জীবন এত ছোট নয় যে কিনা শুধুমাত্র ভোগের মধ্য দিয়েই জীবনের তৃপ্তি উপভোগ করা যাবে। ভোগের মধ্য দিয়ে আমরা আমাদের কর্তব্য সম্পাদন করবো এটা ভাবার কোনো যুক্তিযুক্ত কারণ নেই। আমাদের সকলের ভোগকে অবশ্যই আনন্দের সঙ্গে বরণ করে নেয়া উচিত
বরং না নেওয়াটাই আমার কাছে বেশ দোষের। আপনি স্বামী আপনার পাপ, অন্যায় যদি আপনার স্ত্রীর মনে দুঃখ না আসে, অপদার্থ, দুরাচার স্বামীর উপহার যদি স্ত্রীর প্রাণে আনন্দ, উৎফুল্ল হয়ে ওঠে তবে আমি বলব নারী তুমি নিজের জীবনকে ব্যর্থ করে দিয়েছো। অন্যায়, পাপ, নীচতার বিরুদ্ধেই দাঁড়াবার জন্যই আমাদের সৃষ্টি, নারী পুরুষের মিলন। আমরা অনেক সময় লক্ষ্য করলে দেখতে পাই স্বামী হাজারো পাপ, অন্যায় করে আসলেও স্ত্রী তা হাসিমুখে মেনে নেয় এবং সর্বদা তাঁর পক্ষ অবলম্বন করে। আমি বলি কি দাম্পত্য জীবনের কোন অংশে যদি পাপ আদর পায় তবে আমি বলব সেই দাম্পত্য একদম নিরর্থক। আচ্ছা আমাদের কাছে সৌন্দর্যের অর্থ কি আমরা কোন ক্যাটাগরিতে সৌন্দর্যকে পরিমাপ করি? আমার জানা মতে এটা কি মনস্তাত্ত্বিক বিষয় আবার পরিবেশগত বিষয়। কোন এক দেশে লোকজন ওই দেশের কালো মেয়েদের বেশি সুন্দরী ভাবে আবার যারা ফর্সা তাদের অসুন্দরী ভাবে আবার আফ্রিকার কোন একটা দেশের আমি দেখেছি যাদের গলা ফোলা তাদের বেশি সুন্দর ভাবা হয় । আচ্ছা একবার ভাবুনতো একটা মেয়ের যদি গলা ফোলা থাকে তাহলে আমাদের দেশে সেই মেয়েকে কিভাবে দেখবে কতটা কুৎসিত লাগবে দেখতে কিন্তু এই মানুষটাকে ওই দেশের সব মানুষই যদি এরকমই হয় তাহলে তাদের দেখতে দেখতে অদ্ভুত এক ধরনের ভালোলাগা কাজ করে। তাদের ভেতরে তখন মনে হয় যারা গলাফুলা না তারাই অসুন্দর।

rice-gda8cb3569_1920.jpg
Image Source

অন্যদিকে সৌন্দর্যের গৌরবে বালিকাদের বা যুবতীদের অহংকার আর দাম্ভিকতায় প্রকৃতির তাদের কাছে হার মানে। আপনার মনের সৌন্দর্য যদি ঠিক না হয় আপনার ব্যবহার যদি ঠিক না হয় তাহলে বাহ্যিক সৌন্দর্যের কোন মূল্য থাকে না। আপনি আপনার রূপের অভিশাপে মন ও স্বভাবকে কুলুষিত করছেন নাতো? আপনি অনেক সুন্দর কিন্তু আপনার যদি ব্যবহার সুন্দর না হয় স্বভাব সুন্দর না হয় তাহলে আপনি কখনোই অন্য কাউকে মুগ্ধ করতে পারবেন না, যখন বুঝবে আপনার রূপের মধ্যে প্রেম, সহানুভূতি, সুরুচির পরশ মাত্র নেই তখন সে অবশ্যই সরে পড়বে আপনার কাছে থেকে। আমরা সব সময় অল্প সময়ের আনন্দের কথা ভাবি ,ক্ষনিকের আমোদের জন্য মানুষ রূপ নিয়ে যে পরিমান বাড়াবাড়ি করে কিন্তু সে রূপ কে শ্রদ্ধা করে না। আপনারা ভাবছেন আমি নারী।তাহলে নারী সম্পর্কে এতকিছু কেন বলছি আমি অবশ্য পুরুষকে নিয়েও বলব পুরুষের ক্ষেত্রেও একই কথাই বলা চলে। কুৎসিত পুরুষের বাইরে অন্তরালে উন্নত পুরুষ আত্মাটা অপদার্থ নারীর সম্মান না পেতে পারে কিন্তু যারা উন্নত হৃদয়ের অধিকারী নারী তারা তাকে অবশ্যই সম্মান করবে। যাকে ভালবাসবে তার জন্য প্রাণ দিয়ে দেবে। কিন্তু আমাদের এই সময়ে মনুষত্বকে আদর করার মতো নারী'রা প্রায়ই নেই। আমাদের নারীরা অনেক সময় পুরুষকে অন্ধের মত মমতা করেন কিন্তু তারা কখনোই বোঝেনা উন্নত আত্মা ছাড়া অন্য কোথাও প্রেমের বহিঃপ্রকাশ, প্রেমের উন্মেষ হয় না। আপনার যদি মনুষ্যত্বের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ না জাগে আপনি কখনো সেখানে সত্যিকারে ভালোবাসা খুঁজে পাবেন না। আবার অন্যদিকে আমাদের সমাজের স্বামী-স্ত্রীর মাঝে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে টানাপড়েন দেখা যায় আমি বলব স্বামী-স্ত্রীর মাঝে ভুল হবে। কথায় আছে মানুষ মাত্রই ভুল কিন্তু আমরা যদি একজন আরেকজনের ভুল নিয়ে অনবরত ঝগড়াঝাটি করতে থাকে তাহলে আমি বলব অবশ্যই সেটি কল্যাণ বয়ে আনবে না।

studying-gff5b2e08a_1920.jpg

Image Source

আমি বলি কি জীবনে সঙ্গী বাছাইয়ে ক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই গুরুত্ব দিতে হবে এবং অবশ্যই সর্বাপেক্ষা গুরুত্ব দিতে হবে। না হলে দেখবেন বিয়ে কিছুদিন ভালোবাসা আদান-প্রদান হবে, প্রণয় হবে, চুম্বন হবে, কবিতাপাঠ চলতে থাকবে কিন্তু তারপর কঠিন ঘর কান্নার মাঝে আপনার প্রেম পালিয়ে যায়। তখন দেখা যায় একজন আরেকজনের দোষ ধরতে ব্যস্ত থাকে স্বামী ভাবে বাড়ির সকল কাজ করবে অর্থাৎ পত্নীর প্রধান দায়িত্ব হচ্ছে স্বামীকে সন্তুষ্ট থাকা বাড়ির সকল কাজ করা এবং স্বামীর সকল রকমের সুযোগ সুবিধার প্রতি নজর রাখা কিন্তু স্বামীর অবশ্যই উচিত পত্নীর প্রতিটি কাজে ভুল না ধরা কিন্তু বর্তমান সমাজে কেউ কাউকে ছাড় দিতে নারাজ একটা জরিপে দেখা গেছে ঢাকায় প্রতি ঘণ্টায় প্রায় 6 জন করে ডিভোর্স হচ্ছে এর প্রধান কারণ হচ্ছে তারা একে অপরকে কখনো বোঝে না মানে না। সম্পর্কে মাঝে যদি শ্রদ্ধাবোধ না থাকে, ভালোবাসা না থাকে, মমত্ববোধ না থাকে সেই সম্পর্ক কখনো আলোর মুখ দেখবে না। আমি যখন প্রতিনিয়ত একটা মানুষের ভুল ধরব এবং সেটা যখন অতিরিক্ত হয়ে যাবে তখন অবশ্যই তার মনুষ্যত্ব নষ্ট হয় তার বুদ্ধি নির্বুদ্ধিতায় পরিণত হয়। সেজন্য আমি বলি নারীর স্বাধীনতা ও শক্তি অর্জন ছাড়া কখনই মুক্তি সম্ভব না।

চলবে..........

ধন্যবাদ
@abidatasnimora

3W72119s5BjVs3Hye1oHX44R9EcpQD5C9xXzj68nJaq3CeJJwaZsefPk1zN6fEAs7MdkdJfudjGmTTgEGoGzxsz4JfVM6eKjD5LC9K3xQyuVYFwkWACxsp.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

করোনার নতুন ভ‍্যারিয়েন্টটা ইতিমধ্যে বিশ্বের ৩০ টা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। জানিনা আমাদের দেশে কী হবে।

আমি বলি কি ভোগ জিনিসটা দোষের নয় কিন্তু শরীরের ভোগই যেন জীবনের শেষ না হয়।

অনেক বড় একটি কথা যেটা কীনা কাউকে বোঝাতে অনেক সময়ের প্রয়োজন হতে পারত। কিন্তু আপনি আপু অসাধারণ। মাএ দুইটি লাইনে অনেক বড় অর্থের কথা প্রকাশ করেছেন।

এবং জীবনসঙ্গী নির্বাচনের ক্ষেত্রে কোনো তাড়াহুড়ো না করাই ভালো। কারণ এটা সারাজীবনের প্রশ্ন একটা ভুল হলে আর শুধরে নেওয়া কঠিন।

অনেক সুন্দর লিখেছেন আপু।।

সত্যিই অনেক ভালো বিষয় সম্পর্কে আলোচনা করেছেন আপু।জীবন শুধু ভোগবস্তু নয়,আমাদের বাস্তবকে উপলদ্ধি করতে হবে।মনের সম্পর্ক এক্ষেত্রে মূল বিষয়।ধন্যবাদ আপু।