চট্টগ্রামের বীর সেনানী। (১০ ভাগ 🦊🦊🦊)

in hive-129948 •  3 years ago 

কেমন আছেন সবাই।? আশা করি ভাল আছেন। আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সকল সদস্যদের সুস্বাস্থ্য কামনা করি। আজ আমি আপনাদের সাথে সমসাময়িক ঘটে যাওয়া একটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করব। যে খবরটি নিয়ে আলোচনা করব বর্তমানে বাংলাদেশের প্রত্যেকটি জায়গায় কোন না কোন ভাবে এসব ঘটনা ঘটছে। যার মাঝে কিছু ঘটনা প্রকাশ হচ্ছে কিছু হচ্ছে না।

trauma-3485235__480.jpg

Image Source

আপনারা সবাই জানেন কয়েকদিন আগে চট্টগ্রামে একটি চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে।একটি মেয়ে তার কর্মস্থল থেকে বাসায় ফেরার সময় চলন্ত বাস থেকে লাফ দিয়েছে। আপনারা যারা এই নিউজ পড়েননি তারা হয়তো ভাববেন চলন্ত বাস থেকে একটি মেয়ে কেন লাফ দিল? এখন ভাবুন একটি মেয়ে চলন্ত বাস থেকে কোন পর্যায়ে গেলে লাফ দেয়? তবে চলুন কি এমন ঘটেছে! মেয়েটি একটি গার্মেন্টস এ কাজ করত।যখন তার কর্মস্থল থেকে বাসায় ফিরছিল! মায়ের কোল ফিরছিল তখন দানবেরা তাকে আক্রমণ করে। হায়েনারা তাকে তার মাংস খাবার জন্য ব্যাকুল হয়ে ওঠে। এই হায়নাদের কিন্তু আবার দুটি পা, দুটি হাত আছে। কিন্তু তাদের মস্তিষ্ক পশুর থেকেও নিকৃষ্ট। মেয়েটা যখন বাসায় ফিরছিল সে যেখানে নামবে তার আগেই পুরো বাসা ফাকা হয়ে গেছে সে বাসায় একা, আর শুধুমাত্র বাসের স্টাফ আছে। মেয়েটি একা দেখে এই হায়না গুলোর মাঝে পশুত্ব জেগে ওঠে। বাসের ড্রাইভার তার সহকারীকে চালকের আসনে বসিয়ে সে মেয়েটির সাথে জোরজবস্তি শুরু করে। মেয়েটি সম্ভ্রম বাঁচানোর জন্য প্রাণপণ যুদ্ধ শুরু করে দেয় বাসের মধ্যে।এক পর্যায়ে যখন তাকে পিছনের দিকে টেনে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল মেয়েটির দমে যায়নি । নিজের সম্ভ্রম বাঁচানোর জন্য সে প্রানপনে যুদ্ধ করেছে তবুও হায়নার হাতে নিজেকে সমর্পন করে নি।একটি মুহুর্তের জন্য সে নিজের উপর ভরসা হারায় নি। সুযোগ বুঝেই প্রতিরোধ করে নিজের সম্ভ্রম বাঁচানোর জন্য চলন্ত বাস থেকে লাফ দিয়েছে।

abuse-4175864__480.jpg

Image Source

এখন আমার প্রশ্ন হচ্ছে নারীদের নিরাপত্তা কোথায়? এই ধরনের ঘটনা আমাদের অহরহ ঘটছে। তাই বলে কি আমরা বাসে যাতায়াত করতে পারব না। নাকি সেই জাহিলী যুগের মত ঘরে বন্দি হয়ে ভোগের বস্তু হয়ে থাকব।আমি এই মেয়েকে সেলুট জানাই যে নিজেকে এই দানব গুলোর হাত থেকে রক্ষা করতেন পেরেছে ।কিন্তু আমাদের দেশে এমন ঘটনা প্রতিনিয়ত কোথাও না কোথাও ঘটছে কিন্তু নিজের সম্মান হারানোর ভয়ে মুখ খুলছে না।পরিবারের সম্মানের কথা ভেবে তারা প্রতিবাদ করছে না।নীরবে বুকের মাঝে এই হায়েনাদের ভয়াল থাবার আঘাত সহ্য করে চলছে, আর নীরবে চোখের পানি পালাচ্ছে।তাহলে কি এই সমাজ ,এই দেশ আমাদের নিরাপত্তা দিতে ব্যার্থ ।আমরা কাকে বিশ্বাস করব আমাদের আশেপাশে থাকা সব থেকে কাছের মানুষ দ্বারাই কিন্তু নির্যাতনের শিকার বেশি হচ্ছি ।এই ছাড়া পাবলিক যানবাহনে একটি মেয়ে একা যাওয়ার কথা চিন্তাও করতে পারেনা আমি নিজেও কখনো কোনো যানবাহন এ একা থাকলে সব সময় আতংকের মধ্যে থাকতে হয়েছে। কখনো যদি কোনো মেয়ে পাবলিক যানবাহনে দাড়িয়ে গেছে তাদের কি ধরনের পরিস্থিতির শিকার হতে হয় সেটি হয়ত আপনারা কল্পনাও করতে পারবেন না।তবুও গন্তব্যে যেতে বাধ্য বিধায় সব সহ্য করতে হয় আর প্রতিবাদ করলেই শুনতে হয় পাবলিক গাড়িতে একটু আধটু এমন হবেই। শরীর কি সোনা দিয়ে বানানো নাকি যে টাচ লাগানো যাবেনা। এতই যদি সমস্যা হয় তাহলে নিজের বাপের গাড়ি করে যান এখানে উঠছেন কেন।তখন একটা মেয়ের বলার কিছুই থাকেনা।এই লড়াকু মেয়ে কতটা সাহসী হলে নিশ্চিত মৃত্যু জেনেও বাস থেকে লাফ দিতে পারে।? কিন্তু যদি সে লাফ দিতে না পারত তাহলে কি ঘটতো তার সাথে? এমন হতে পারত তাকে হত্যা করা হতো কোন এক আবর্জনার স্তূপে তার লাশ পড়ে থাকতে হয়তোবা গাড়ির সামনে তাকে ফেলে দিয়ে এক্সিডেন্ট হিসেবে চালিয়ে দিত।

child-1235104__480.webp

Image Source

এই হায়নারা এই ঘটনা আগে আরো ঘটায়নি তার কি গ্যারান্টি আছে। যারা সেইদিন এই কাজ করেছে তার মানে এই ধরনের সুযোগ তারা আগেও খুঁজেছে।এই নরপিচাশদের প্রত্যাহিক ঘটনা এগুলো তারা সুযোগ বুঝে এই ধরনের কাজগুলো করে থাকে। আমাদের সমাজ দেশ যদি তার আইনের সর্বোচ্চ প্রয়োগ না করতে পারে এবং দেশের মানুষের যদি বিবেক বোধ জাগ্রত না হয় নারীকে শুধু ভোগের বস্তু মনে করে তাহলে অদূর ভবিষ্যতে সব কিছু অন্ধকারে ডুবে যাবে।আমি রিপোর্ট পড়ছিলাম আর চোখ বেয়ে পানি পড়ছিল ।আমাদের সমাজে এখনো এমন প্রতিবাদী নারী আছে বলেই হাজারো নারী হায়নাদের হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছে ।

হে দুই পাওয়ালা পশু তোমরা মানুষ হবে কবে?তোমাদের বিবেক বোধ জাগ্রত হবে কবে?

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

আপনি অনেক মুল্যবান একটি লেখা আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন আপু। মানুষ রুপী অনেক নরপিশাচ আছে যারা নারীদের সম্মানের চোখে তো দেখেই না বরং শুধু ভোগের পণ্য মনে করে। আমাদের সবার উচিত তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো যার যার জায়গা থেকে। আইনের সঠিক প্রয়োগ যদি হতো তবে তারা একরম কর্ম কান্ড করার সাহস পেত না। আল্লাহ্‌ তাদের হেদায়েত দান করুন।

আপনি আমার কথাগুলো বুঝতে পেরেছেন দেখে খুব ভালো লাগল।অনেক অনেক ধন্যবাদ।

আপু আমার কাছে বার বার মনে হয় এই সব পাশবিক ঘটনার জন্য আমাদের দেশের আইন ব্যবস্থা অনেক বেশি দায়ী। আইন থাকলেও তার সঠিক কোন প্রয়োগ নেই। অপরাধীরা অপরাধ করে বারবার জামিনে মুক্ত হয়ে যাচ্ছে। প্রকাশ্যে যদি এদের ক্রসফায়ার করে মারা যেত, মানুষের মাঝে একটু হলেও ভয়টা কাজ করত। আবার অন্যদিক দিয়ে বলতে গেলে এই মানুষগুলোর পারিবারিক শিক্ষারও অভাব আছে। শিক্ষা এবং মূল্যবোধের অবক্ষয়ের জন্যই এই ধরনের ঘটনা গুলো বারবার ঘটে চলেছে। সত্যি বলতে হাজার কিছু বল প্রতিকার নেই। দুদিন পর আবার সেই একই নিউজ।

আইন বাস্তবতা আলবত দায়ী কিন্তু পরিবার সমান ভাবে দায়ী ।

চট্টগ্রামের সেই ঘটনার কথা মনে উঠলে আজও গা শিউরে ওঠে। ধন্যবাদ আপু আপনাকে ।ঘটনার পুনরাবৃত্তির বিবরণ দেখি প্রতিবাদ জানানোর জন্য। আমি ওই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। আপনার জন্য শুভকামনা রইল। ভাল থাকবেন সুস্থ থাকবেন।

আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।এইভাবে পাশে থাকবেন।

যদিও ঘটনাটি নিউজে পড়েছিলাম, তবে যেভাবেই আপনি ব্যাখ্যা দিয়েছেন, তাতে খুব খারাপ লাগলো আপু । আসলেই চারপাশের অবস্থা খুবই অনিরাপদ হয়ে গেছে । এই ভাবলেই বেশ অসস্থি লাগে । মানুষ আর মানুষ নাই ।

হ্যা ভাইয়া ।নিজেকে খুব অনিরাপদ মনে হয় ।