শতবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ফটোগ্রাফি পর্ব-১( 10% beneficiaries for @shy-fox)

in hive-129948 •  3 years ago 
কেমন আছেন সবাই ?আশা করি ভাল আছেন ।আজ আমি আপনাদের সামনে আমার প্রাণপ্রিয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটোগ্রাফী কনটেস্ট এর কিছু ছবি আপনাদের সাথে শেয়ার করব। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ১৯২১ সালের পহেলা জুলাই বাংলার মুক্তিকামী মানুষের আশার আলো হয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়। সেই থেকে পথচলা আজ অবধি শিক্ষা শান্তি এবং সংস্কৃতি পতাকা উঁচু করে তুলে ধরে আছে।২০২১ সালে পহেলা জুলাই এই বিশ্ববিদ্যালয়ের 100 বছর পূর্তি হয় ।কিন্তু মহামারী করোনার কারণে শতবর্ষ উদযাপন করার যে মহাপরিকল্পনা ছিল তা ব্যাহত হয় পরবর্তীতে পয়লা ডিসেম্বর থেকে চৌঠা ডিসেম্বর পর্যন্ত তারিখ নির্ধারণ করা হয় ।তারই পরিপ্রেক্ষিতে পুরো বিশ্ববিদ্যালয় জুড়ে উৎসবমুখর পরিবেশ হয়। সেই উৎসবমুখর পরিবেশ কে আরো প্রাণবন্ত করতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ফটোগ্রাফী কনটেস্ট এ আয়োজন করে সেই ফটোগ্রাফী কনটেস্ট থেকে কিছু ছবি আপনাদের মাঝে শেয়ার করব।

20211204_173605.jpg

আপনারা যে ছবি দেখছেন এটি বাংলাদেশের ক্রিকেট বিশ্বকাপ উপলক্ষে একটি পতাকা তৈরি দৃশ্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যখন পতাকাটি তৈরি করছিল সে মূহুর্তে তোলা।

20211204_172734.jpg
১৯১২ সালে নাথান কমিশন গঠন করা হয়েছেছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য। নাথান কমিশনের সদস্যদের নিয়ে একটি ছবি।

20211204_173745.jpg
এই ছবিটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহাসিক বটতলা। এই বটতলা কে বলা হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাণকেন্দ্র। কলাভবনের সামনে এখানেই প্রথম স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলন করা হয়। এছাড়াও এখানে সব সময় শিক্ষার্থীদের , প্রেমিক-প্রেমিকাদের পদচারণায় মুখর হয়ে থাকে। বিভিন্নঐতিহাসিক সাক্ষী হয়ে আছে এই বটতলা ।
20211204_173740.jpg
মধুর ক্যান্টিন যাকে বলা হয় বাংলাদেশের রাজনীতির আঁতুড়ঘর । বাংলাদেশের সকল প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনের পদচারণায় সবসময় মুখর থাকে এই মধু কিন্তু বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের সময় এই মধুর ক্যান্টিন এর ভূমিকা অপরিসীম। এই ক্যান্টিনটি মধুদার নামে হয়েছে কারণ মধু দা ক্যান্টিন পরিচালনা করেছেন এবং তিনি মুক্তিযুদ্ধের সময় শহীদ হয়েছিলেন। এছাড়াও বিভিন্ন সময় বাংলাদেশের যত রাজনৈতিক সংগঠন আছে যত রাজনৈতিক সংগঠনের প্রধান নেতা গুলো আছে সবাই এই মধুর ক্যান্টিন থেকে বেড়ে ওঠা যার কারণে বাংলাদেশের রাজনীতিতে মধুর ক্যান্টিন এর তাৎপর্য ভিন্ন মাত্রা বহন করে
20211204_173647.jpg
এই ছবিটি বসন্ত উৎসবের সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বটতলা থেকে তোলা। পহেলা বসন্ত আসলেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে উৎসবের আমেজ চলে আসে। হলুদ শাড়িতে ,পাঞ্জাবিতে পুরো ক্যাম্পাস এক মনোরম দৃশ্য পরিপূর্ণ হয়ে যায় ।সারাদিন বিভিন্ন ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান মাধ্যমে দিনটি পালিত হয়।
20211204_173620.jpg
আপনারা যে মুরালকে দেখছেন এটি শহীদ আসাদ এর একটি ম্যুরাল। যিনি ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানের সময় নিহত হয়েছিলেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ছিলেন এবং তাঁকে স্মরণ করেই তার স্মৃতি রক্ষার্থে এই ম্যুরালটি সেখানে স্থাপন করা হয়েছে।
20211204_173555.jpg
এই ছবিটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ থেকে তোলা হয়েছে ।যেখানে আমরা দেখতে পাচ্ছি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রমিলা ফুটবল দলের একটি দৃশ্য অর্থাৎ প্রতি বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আন্ত: ডিপার্টমেন্ট মহিলা ফুটবল দল খেলা হয়ে থাকে এই ছবিটি তারই এক অংশ।
20211204_173546.jpg
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যে বরাবর অসাম্প্রদায়িকতার চর্চা করে এই ছবিটি তারই প্রতিফলন। ছবিটি জগন্নাথ হলে পূজা মণ্ডপ থেকে তোলা।
20211204_173529.jpg
বাঙালি জাতির প্রাণের উৎসব হচ্ছে পহেলা বৈশাখ। এই পহেলা বৈশাখে কেন্দ্র করে সারাদেশে এক বাঙালি সংস্কৃতির নব নব সাজে সজ্জিত হয়। আর যার প্রধান কেন্দ্র হচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। প্রতি বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পহেলা বৈশাখে মঙ্গল শোভাযাত্রা পালন করে থাকে। এই ছবিটি সেই মঙ্গল শোভাযাত্রার একাংশ।
20211204_173409.jpg
পৃথিবীর একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্ববিদ্যালয় একটি দেশের সাথে দেশের স্বাধীনতা সাথে জড়িত। যে বিশ্ববিদ্যালয় একটি দেশের স্বাধীনতা অর্জনের জন্য সর্বাপেক্ষা ভূমিকা রেখেছে এবং পৃথিবীর একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্ববিদ্যালয়ে যেখানে 1971 সালে জীবিত ছাত্র, শিক্ষকের সংখ্যার থেকে শহীদ ছাত্র/শিক্ষকের সংখ্যা বেশি। এই ছবিটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় অনুষদের নবম তলা থেকে তোলা যেখান থেকে আমরা একটি বাংলাদেশকে দেখতে পাচ্ছি। বাংলাদেশের পতাকা কে দেখতে পাচ্ছি। সবুজ ক্যাম্পাসের ভিতরে একখণ্ড কৃষ্ণচূড়া যেন বাংলাদেশের রূপ ধারণ করেছে।
20211204_173305.jpg
এই ছবিটি চারুকলা অনুষদের এক শিক্ষার্থী যখন একটি ম্যুরাল তৈরি করছিল সেই সময় তোলা। কত যত্নে কত পরিশ্রমে শিক্ষার্থী কর্মে মনোযোগ দিয়েছে এবং একটি ম্যুরাল তৈরি করার জন্য তার সমস্ত সৃজনশীলতাকে উজার করে দিচ্ছে।
20211204_173148.jpg
আপনাদের ছবিটি দেখছেন এটি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে তোলা। একুশে ফেব্রুয়ারীতে সকালবেলা বিএনসিসি ক্যাডেট দের নিয়ে ছবিটি তোলা হয়েছে ।যারা বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল কর্মকাণ্ড নিবেদিতপ্রাণ হিসেবে থাকে।

আশা করি আপনাদের এই ছবিগুলো অনেক ভালো লেগেছে ।আর পরবর্তী পারবে আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বিভিন্ন জায়গাযর ফটোগ্রাফি গুলো আপনাদের সাথে শেয়ার করব।

ফটোগ্রাফিঢাবি
Photo@abidatasnimora
CameraSamsung galaxy S6
W3w locationএখানে

3W72119s5BjVs3Hye1oHX44R9EcpQD5C9xXzj68nJaq3CeJJwaZsefPk1zN6fEAs7MdkdJfudjGmTTgEGoGzxsz4JfVM6eKjD5LC9K3xQyuVYFwkWACxsp.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

ওয়াও অসাধারন আপু, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এরিয়াতে আমি দীর্ঘদিন ছিলাম, কিন্তু আমার কাছে সবই রঙিন মনে হতো। কিন্তু এত কিছু জানতাম না। বিভিন্ন উৎসবের সময় ঘুরতে যেতাম। কিন্তু আপনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আজকে ফটোগ্রাফির মাধ্যমে যে পরিচয় গুলো তুলে ধরেছেন সেগুলো আমার অজানা ছিল। এবং আপনি প্রতিটা ফটোগ্রাফির খুব সুন্দর করে ব্যাখ্যা করেছে। আমি বলব এটা একটা শিক্ষনীয় বিষয় ও বটে। আমাদের সাথে এত সুন্দর একটা পোস্ট শেওয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

আপনি অসাধারণ একটি কমেন্ট করেছেন। আপনার মন্তব্যটা অনেক সুন্দর হয়েছে ।আপনাকে ধন্যবাদ।

আমাদের সকলের স্বপ্নের এই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। এ বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের জাতির সংস্কৃতির ঐতিহ্য বহন করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কে ঘিরে অনেক ইতিহাস লুকিয়ে রয়েছে।

বিশ্বাস করবেন নাকি জানিনা এ পোস্টটা পড়ে আমার এত ভালো লেগেছে যা বলে প্রকাশ করার মতো না। প্রত্যেকটা অ্যালবামের পেছনে অনেক তাৎপর্য লুকিয়ে রয়েছে। আপনি খুবই সুন্দর করে এর বর্ণনা দিয়েছেন। আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ।

অপেক্ষায় থাকলাম দ্বিতীয় পর্বের জন্য।

ধন্যবাদ ভাইয়া আপনাকে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বাঙালি জাতির একটি অহংকার। আপনার আজকের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটোগ্রাফি গুলো বেশ অসাধারণ ছিলো। তার মধ্যে সবচেয়ে আমার ভালো লেগেছে বাংলাদেশের পতাকার মতো দেখতে আপনি নয়তলা থেকে যে ছবিটি তুলেছেন সেটি। কৃষ্ণচূড়ার কি সৌন্দর্যতা, কিভাবে সে ফুটিয়ে তুলেছে বাংলাদেশকে। অসংখ্য ধন্যবাদ আপু আমাদের মাঝে আপনার এই আনন্দঘন মুহুর্ত গুলো শেয়ার করার জন্য।

আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম শুনলেই মনের ভিতর ইচ্ছা জাগে যে আসলেই একদিন যাওয়ার যেন সুযোগ হয়। বাংলাদেশের ক্রিকেট বিশ্বকাপ উপলক্ষে পতাকা তৈরীর দৃশ্য আমার খুবই ভালো লাগলো। অনেক পুরনো ছবি দেখলাম নাথান কমিশনের সদস্য নিয়ে একটি ছবি। এই বটতলা টি দেখেছি কোথাও আসলেই খুবই সুন্দর একটি জায়গা।প্রেমিক-প্রেমিকার তো কোন কথায় নাই একদম পারফেক্ট জায়গা 🤭।অনেক কিছু জানতাম না অনেক সুন্দর সুন্দর মুহূর্ত আপনি তুলে ধরেছেন। দেখে খুবই ভালো লাগলো। লাস্টে শহীদ মিনারের ছবিটি অত্যন্ত সুন্দরভাবে ফুটে উঠেছে

অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই আপনাকে এত সুন্দর একটি কমেন্ট করার জন্য।

বিশ্ববিদ্যালয় ফটোগ্রাফিক গুলো দেখে আমার খুবই ভালো লাগলো। বিশেষ করে বটতলার কথা মনে পরে গেল কিছুদিন আগেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গেছিলাম ভ্রমণ করতে। সেখানে আমার বন্ধুর সাথে এই বটতলায় অনেক আড্ডা দিয়েছিলাম। আপনি খুবই সুন্দর ভাবে আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।

আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া।

প্রত্যেকটি ছবি মনমুগ্ধকর।এছাড়া আপনি সুন্দর বর্ননা দিয়ে আরো সুন্দর করে তুলেছেন পোস্টটি।যা পড়ে ভালো লাগলো, জানতে পারলাম অনেক কিছু।পর্ব 2 এর অপেক্ষায় রইলাম।ধন্যবাদ আপু।

আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।

আসলে আপনার এই ছবিগুলো দেখতে খুব ভালো লাগে
। আর আপনি যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এটা ওটা দেন আমি আসলেই খুব উপভোগ করি। কারণ আপনার মাধ্যমে অনেক কিছু জানতে পারি। যেমন আজকে এই ছবিগুলোর পিছনের গল্প গুলো জানতে পারলাম শুধুমাত্র আপনার কারণে। তাই জন্য অনেক ধন্যবাদ আপু।

ধন্যবাদ আপু আপনাকে এত সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।