মানুষ কেন আত্বহত্যা করে!!(10% beneficiaries for @shy-fox

in hive-129948 •  3 years ago  (edited)
কেমন আছেন সবাই? আশা করি ভাল আছেন। আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সকল সদস্যদের সুস্বাস্থ্য কামনা করে আজ আমি আপনাদের সাথে খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করব। আজ আমি যে বিষয় নিয়ে আলোচনা করব তা হচ্ছে আত্মহত্যা, মানুষ কেন আত্মহত্যা করে তা নিয়ে আমার ব্যক্তিগত মতামত আপনাদের সাথে শেয়ার করব।

coronavirus-g77210f2e7_1920.jpg

Image Source

সম্প্রতি আমরা যে বিষয়টি দেখতে পাচ্ছি আমাদের আশেপাশে আত্মহত্যার হার ভয়ংকরভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে পত্রিকা, অনলাইন নিউজ পোর্টাল, ফেইসবুক খুললেই অহরহ আত্মহত্যার নিউজ আমাদের চোখে পড়ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, শিক্ষক, ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে বিশেষ করে ২০ থেকে ৬০/৬৫ বছর অবধি আত্মহত্যা বেশি করছে। আত্মহত্যা করার পর আমরা তাদের নিয়ে চুলছেড়া বিশ্লেষণ নেমে যায়। কিন্তু এত বিশ্লেষণ করে কি আর লাভ হবে যখন একটি প্রাণ চলে যায় তাকে কি আর ফিরে পাওয়া যাবে। তার পরিবার আত্মীয়-স্বজন যে পরিমাণ ক্ষতি সম্মুখীন হয় তাকে কখনো পূরণ করা সম্ভব?
সম্প্রতি বাংলাদেশ এক ভদ্রলোক লাইভে এসে তার জীবনের হতাশা থেকে কিছু কথা আমাদের সাথে শেয়ার করলেন এবং লাইভ চলাকালে তিনি মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে গুলি করে আত্মহত্যা করলেন। এই আত্মহত্যা শুধু মৃত্যু নয় এটি জীবনের চরম হতাশার ফল।এই আত্বহত্যার মাধ্যমে সারা বাংলাদেশে এক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। তাই মনে আত্বহত্যা নিয়ে আপনাদের সাথে কিছু আলোচনা করা যাক।

depression-g04eb6c877_1920.jpg

Image Source

পৃথিবীতে প্রতিবছর লক্ষ লক্ষ লোক আত্মহত্যা করছে এমনকি বাংলাদেশেও আত্মহত্যার হার ক্রমানুসারে বেড়ে চলছে। তাহলে প্রশ্ন উঠতেই পারে মানুষ কেন আত্মহত্যা করে? আত্মহত্যা পেছনে কারণ গুলো কি কি? আসলে যে ব্যক্তি আত্মহত্যা করে তার কাছে কারণের কোন অভাব নেই। তবে বেসিক কিছু কারন সবার একই তা হচ্ছে জীবনের প্রতি বিতৃষ্ণা এবং তারা ভাবে মৃত্যুই একমাত্র মুক্তি। একজন ব্যক্তি যখন মানসিক চাপ, হতাশা, আত্মবিশ্বাসের অভাব, অবসাদগ্রস্ত হয়ে বিভিন্ন হেনস্থার শিকার হয় তখন তার জীবনের প্রতি এক ধরনের বিতৃষ্ণা চলে আসে। তখন জীবন থেকে পালিয়ে যেতে চাই তখন সে বিভিন্ন পদ খুঁজলেও তার সামনে শুধুমাত্র একটি পথ এসে দেখতে পায় তা হচ্ছে মৃত্যু। সে ভাবে মৃত্যুর মধ্যে হয়তোবা মুক্তি। তার কাছে ব্যক্তি জীবনের সবকিছু পানশে মনে হয় পৃথিবীতে মনে হয় বড় একা ও স্বার্থপর। তবে আত্মহত্যার সবথেকে প্রধান কারণ হচ্ছে মানসিক চাপ। মানসিক চাপ যখন অত্যধিক হারে বেশি হয়ে যায় এবং যখন দেখছে সেই চাপকে মোকাবেলা করতে পারছে না, সে মনে করে সে হয়তো এসব সমাধান করতে পারবে না। পরিস্থিতি সামাল দিতে না পেরে তার কাছে মনে হয় আত্মহত্যা করি। এটায় তার জন্য সবথেকে সহজ পথ।

girl-g7c03a6d4f_1920.jpg

Image Source

আরেকটি বিষয় হচ্ছে যেসব মানুষ সবসময় বিষণ্ণতায় ভোগে তাদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা অনেক বেশি দেখা যায়। তারা সব সময় জীবন নিয়ে নেতিবাচক ভাবনা ব্যস্ত থাকে। আপনি যখন আপনার জীবন নিয়ে সব সময় নেতিবাচক চিন্তাভাবনা করবেন তখন আপনার কাছে বেঁচে থাকাটাই অর্থহীন হয়ে পড়বে।

তবে বর্তমানে আত্মহত্যার পিছনে আমার কাছে সব থেকে বেশি যে বিষয়টি মনে হয় তা হচ্ছে বর্তমান পৃথিবীতে আমরা এক অর্থহীন প্রতিযোগিতায় মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি যেখানে জীবন মানে এক অর্থহীন লোক দেখানো পথে চলা। এই ধরনের অস্বাভাবিক ও অসুস্থ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে আমাদের দিন দিন শুধু হতাশায় বৃদ্ধি পাচ্ছে।

এই প্রতিযোগিতায় আমরা সামান্যটুকু তৃপ্তি লাভ করতে পারিনা। আশেপাশের সবাই যখন আপনার থেকে অত্যাধিক প্রত্যাশা করে।আপনি যখন সেই প্রত্যাশা অনুযায়ী সামনে এগোতে পারেন না বা তাদের প্রত্যাশা পূরন করতে পারেন না তখন সেই ব্যক্তি থেকে আপনি যখন অপ্রত্যাশিত কিছু বাক্য শোনেন, অবহেলার শিকার হন তখন এক ধরনের বিতৃষ্ণা চলে আসে। যারা আত্মহত্যা করে তারা ভাবে আশেপাশের মানুষজন তাদের বোঝেনা, তারা যাই করে সেই কাজেই সবাই ভুল ধরে। এই প্রক্রিয়া যখন দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকে তখন তারা ভেঙে পড়ে মানসিকভাবে।

man-g248e53d19_1920.jpg

Image Source

তবে এই আত্মহত্যা থেকে আমাদের বন্ধু-বান্ধব আত্মীয়-স্বজন বাঁচাতে চাইলে বা যারা আত্মহত্যা করে তারা অনেক ধরনের লক্ষণ প্রকাশ করে বা আগাম বার্তা দেয় সে বিষয়গুলো যদি আমরা বুঝতে পারি এবং তাদের সাথে ভালোবাসা, তাদের সাপোর্ট দেওয়া, আমরা যদি তাদের প্রত্যাশা অনুযায়ী সাপোর্ট দিতে পারি তাহলে তারা সুস্থ জীবনে ফিরে আসতে পারবে। কেউ যখন কোন কিছু করতে পারে না তার ওপর অযাচিতভাবে প্রত্যাশা না করায় শ্রেয়। আমাদের মাঝে আর এক শ্রেণীর লোক আছে যারা সবসময় সফলতা অর্জন করে আসছে কিন্তু জীবনের একটা সময় সবার বিপর্যয় নেমে আসে। তখন ওই ব্যক্তি সেই বিপর্যয় কে মেনে নিতে পারে না। আমাদের সবার সফলতার মত ব্যর্থতাকেও সহজভাবে মেনে নেওয়ার মন মানসিকতা থাকা উচিত তাহলেই জীবনে ভুল পথ অবলম্বন করার প্রবণতা অনেকাংশে কমে যাবে। জীবনটাকে সুন্দর সাবলীল ভাবে অতিবাহিত করা যাবে।

ধন্যবাদ

@abidatasnimora


break.png

banner-abb23.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  
আসলে এই দুনিয়া থেকে কেউই যেতে চায় না। আসলে পরিস্থিতি মানুষকে আত্মহত্যা করতে বাধ্য করে।আসলে আমরা যদি একটা হতাশগ্রস্ত মানুষকে সঙ্গ দিই। তার কথাগুলো শুনি সে কিন্তু এরকম কাজ করতে পারে না। আমরাই তাদের আরো আত্মহত্যার দিকে হেলিয়ে দিয়।আসলে মানুষ দিন দিন হতাশায় ভুগছে

অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া।

একদমই যথার্থ এবং সময়োপযোগী পোস্ট 👌
ভীষণ বেড়ে গেছে এই সমস্যাটি। বিগত বেশ কিছু দিন থেকে এটি অত্যধিকভাবে বেড়ে গেছে সমস্যাটি কি আর বলবো 😥 মানুষ আসলে কেমন আবেগ প্রবন হয়ে গেছে। আসলে ব্যাপারটা হচ্ছে মানুষের মধ্যে ভালোবাসার ব্যাপক ঘাটতি রয়েছে এর কারনে ব্যাপকভাবে এটি ছড়িয়ে যাচ্ছে।
সবার প্রতি অনুরোধ সবাই সবাইকে ভালোবাসুন আর এই বিপদ কমিয়ে আনুন।
অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই আপু ❣️

অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।

সুন্দর লিখেছেন।আপনার বিশ্লেষণ গুলো যথার্থ।

আপনি পড়েছেন খুব ভালো লাগল। অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা।

আত্ম হত্যা আমাদের সমাজে ব্যাপক ভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে।জীবনে বেচেঁ থাকার আগ্রহ হারিয়ে ফেললে একজন মানুষ আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেয়।আপু আপনি খুবই সুন্দর ভাবে এর কারণগুলো বিশ্লেষণ করেছেন।শুভকামনা রইলো আপনার জন্য।

আপনাকেও ধন্যবাদ ভাইয়া।

আপু,দারুণ লিখেছেন।আসলে প্রিয়জনরা যখন স্বার্থপর হয়ে যায় তখন বেঁচে থাকা বড়ই মুশকিল হয়ে পড়ে।মানসিক চাপ খুবই বড়ো ধরনের সমস্যা।তবে এর সহজ ভাবনাও আছে কিন্তু সেটি মানতে কেউ রাজি নয়।ধন্যবাদ আপু,ভালোবাসা রইলো💝

ধন্যবাদ আপু । শুভকামনা রইল।

একজন ব্যক্তি যখন মানসিক চাপ, হতাশা, আত্মবিশ্বাসের অভাব, অবসাদগ্রস্ত

সঠিক কারন গুলো আপনার পোষ্টের মাধ্যমে খুব সুন্দরভাবে উঠে এসেছে এবং বর্তমান সময়ে যে কারণটি আপনি তুলে ধরেছেন সেটি আসলে মূল কারণ বলে আমি মনে করি। কারণ এক ধরনের অসুস্থ প্রতিযোগিতা আমাদের মাথায় সেট করে দেয়া হয়েছে। খুব ভালো লাগলো আপনার লেখাগুলো পড়ে কারণ অনেক দার্শনিক ও সমাজের বাস্তবিক দিকগুলো আপনার লেখায় খুব সুন্দর ভাবে ফুটে উঠেছে।
শুভকামনা আপু।

ধন্যবাদ ভাইয়া আপনাকে। আপনি পড়েছেন দেখে ভালো লাগল।