মুভির গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
মুভির নাম | দ্যা রেভেন্যান্ট |
---|---|
পরিচালক | আলেজান্দ্রে জি ইনাঋতু |
গল্পের লেখক | মাইকেল পাঙ্কে |
মুভির ধরণ | একশন,এডভেঞ্চার, বায়োগ্রাফি |
ভাষা | ইংরেজি |
মুক্তির তারিখ | ৮ জানুয়ারি ২০১৫ |
আইএমডিবি রেটিং | ৮/১০ |
পুরস্কার | অস্কার, বাফটা এওয়ার্ড ও গোল্ডেন ব্লু |
বাজেট | ১৩৫ মিলিয়ন |
রান টাইম | ১৫৬ মিনিট |
মুল কাহিনী
সিনেমাটি ২০০২ সালে একজন আমেরিকা রাইটার মাইকেল পাঙ্কের রেভেন্যান্ট উপন্যাসের অবলম্বনে তৈরি করা হয়েছে।রেভেন্যান্ট শব্দটির মানে হচ্ছে যে মৃত্যশর্যা থেকে উঠে এসে রাজ করে। সত্যি কথা বলতে সিনেমাটিতে এমন কাহিনীই ফুটে উঠেছে। সিনেমার কাহিনি ১৮২৩ সালে ক্যাপ্টেন এন্ড্রিও হেনরী ট্রাপার্সদের পাঠিয়েছিল এক অচেনা জায়গায়। যেটি ড্রাকোডা টেরিটোরি নামে পরিচিত ছিল। তার পাঠানো ক্রু সদস্যদের এই জায়গা সম্পর্কে কোনো ধরনের ধারণা ছিল না। যাদের পাঠানো হয়েছিল তাদের ট্রাপার্স বলা হয়। এরা মূলত বিভিন্ন ফাঁদ পেতে জীবজন্তুদের শিকার করে খাদ্য গ্রহন করতো এবং অন্যান্য সামগ্রী সংগ্রহ করত। আর এই ট্রাপারদের গাইড করছিল হিউ গ্লাস। হিউ গ্লাসের চরিত্রে অভিনিয় করেছিলে বিখ্যাত অভিনেতা লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিও। তার একটি ছেলে ছিল যার নাম হক। হক ছিল অর্ধ ইন্ডিয়ান। ট্রাপার্সরা তাদের যাত্রাপথে এক জায়গায় বিশ্রাম নিচ্ছিল ঠিক সেই সময় আরিকারা নামক এক নেটিভ আমেরিকান গোষ্ঠী তাদের উপর আক্রমণ করে। এই আক্রমণের মূল কারণ ছিল মূলত আরিকারা গোষ্ঠীর চীপের মেয়ের নিখোঁজ হওয়ার ব্যাপারে।
হঠাৎ আক্রমণের শিকার হয়ে অনেক ক্রু সদস্য নিহত হয় বাকীরা একটি নৌকা নিয়ে পালিয়ে যায়। কিন্ত নদীর একটি জায়গায় গিয়ে তারা পায়ে হেঁটে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। কারণ তাদের গাইড গ্লাস মনে করেন নদীপথে তারা খুব তাড়াতাড়ি এক্সপোজ হয়ে পড়বে। যার ফলে আরিকারা গোষ্ঠী খুব সহজে তাদের ধরে ফেলবে। তাই বাকি ট্রাপার্স গ্লাসের নির্দেশ অনুযায়ী আলাদা পথ অনুসরণ করে যাত্রা করে।
পরের দিন সকালে গ্লাস তার চারপাশে নজরদারি করছিল এমন সময় একটি ভাল্লুক এসে তাকে আক্রমণ করে। গ্লাস খুব সাহসের সহিত ভাল্লুকের সাথে তমুল লড়াই করে। শেষ পর্যন্ত ভাল্লুক মারা গেলেও ক্ষত-বিক্ষত হয়ে যায় গ্লাসের শরীর। প্রচুর ব্লেডিং হয় । তবে লড়াই করার এই দৃশ্য মুভিটির অন্যতম একটি আকর্ষনের জায়গা। গ্লাসের এই অবস্থা দেখে বাকী ক্রুরা হতাশ হয়ে পড়ে। কারণ তাদের একজন ক্রু গুরুতর আহত এবং গ্লাস ছিল তাদের একমাত্র গাইড। বিনা গাইডে ফিরে যাওয়া মুশকিল ছিল তাদের জন্য। গ্লাসের এই অবস্থা দেখে একজন ট্রাপার্স তাকে পেইনলেস মৃত্যু দিতে বলে কিন্তু বাকি সদস্যরা কেউ তাতে রাজি হয়না। এমন সময় এক সদস্য গ্লাসের ছেলে হক,ফিজ জেরার্ড ও ব্রিজারকে কিছু টাকা দিয়ে বলে গ্লাসের মৃত্যুর হলে যেন তাকে সুন্দর করে কবর দেওয়া হয়। এই বলে বাকি সদস্যরা পথ তৈরি করে রওনা দেয়।
এই জেরার্ডের সাথে গ্লাসের প্রথম থেকেই শত্রুতা ছিল তাই যায়গাটি যখন সম্পূর্ণ ফাঁকা হয়ে যায় জেরার্ড সুযোগ বুঝে গ্লাসের মুখ চেপে ধরে হত্যার চেষ্টা করে কিন্তু তার এই দৃশ্য হক দেখে ফেলে। প্রমাণ লোপাটের ও দায়মুক্তির জন্য জেরার্ড গ্লাসের ছেলে হকের পেটে ছুরি ঢুকিয়ে হত্যা করে। ছেলের হত্যার এই দৃশ্য গ্লাস নিজে চোখে দেখে। যদিও সে গুরুতর আহত। না সে মুখ দিয়ে আওয়াজ করতে পারছে না নড়াচড়া করতে পারছে। তবে গ্লাস কিন্তু মৃত নয়। অন্যদিকে ব্রিজ এসে যখন হকের খোঁজ করছিল তখন হেজার্ড সে নিখোঁজ বলে জানিয়ে দেয় । এরপর হেজার্ড ব্রিজকে কনভিন্স করে গ্লাসকে একা রেখে চলে যায়। তাদের ফাইনাল গন্তব্য ছিল ফোর্ড কিওয়া। যেখানে ক্যাপ্টেন হেনরী তাদের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। তারা ক্যাপ্টেন হেরনীকে গ্লাসের মারা যাওয়া ও হকের নিখোঁজ হওয়ার কথা জানায়। এদিকে গ্লাস যে মারা যায়নি ব্রিজ জানত।
তাহলে কি গ্লাসের গল্প এখানেই শেষ। না আসলে এই জন্যই তো গল্পের নাম দেওয়া হয়েছে দ্যা রেভেন্যান্ট। কারণ এখান থেকেই শুরু হয় গ্লাসের বেঁচে থাকার গল্প। এখন গ্লাসকে দুইটি জিনিস হতে বাঁচতে হবে -
- এক মৃত্যুর হাত থেকে নিজেকে রক্ষা করা
- নেটিভ আমেরিকান সেই আরিকার গোষ্ঠীর হাত থেকে নিজেকে বাঁচানো
সত্যি কথা বলতে এরপর থেকেই সিনেমায় আউটস্ট্যান্ডিং মুহুর্ত অপেক্ষা করছে। লিওনার্দো ডি ক্যাপ্রিও তার জীবনের শেষ অভিনয়টি এখানে দেখিয়েছেন। যার জন্য তিনি অস্কার ডিজার্ব করেন অবশ্য পরবর্তীতে তিনি অস্কার জয় করেন। আরিকারা গোষ্ঠীর ধাওয়ায় গ্লাস তার ঘোড়া নিয়ে পাহাড় থেকে খাদে পড়ে যায়। ভাগ্যক্রমে বেঁচে গেলেও তার ঘোড়া মারা যায়। সেখানে ছিক কনকনে ঠান্ডা। এখানে একটি বেঁচে থাকার অসাধারণ দৃশ্য ফুটে উঠেছে। দেখা যায় গ্লাস তার ঘোড়ার পেট চিড়ে সব নাড়ি-ভূরী বের করে ফেলে ঘোড়ার পেটে অবস্থান নেয় হাড় কাঁপানোর ঠান্ডার হাত থেকে বাঁচার জন্য। এই সিনটাকে এতো সুন্দর করে তুলেধরা হয়েছে যা অকল্পনীয়। সর্বশেষে গ্লাস সার্ভাইব স্কিলের কারণে সেখানে থেকে বেঁচে ফোর্ড কিওয়াতে যায়। তাকে দেখে ক্যাপ্টেন হেনরী হতবাক হয়ে যায় কেননা সে জানত গ্লাস মারা গেছে। গ্লাসের মুখ থেকে সব শোনার পর ক্যাপ্টেন বন্দুক হাত জেরার্ড কে মারা উদ্দেশ্যে বের হয় তখন গ্লাস জোর করে তাকে সাথে নেওয়ার জন্য কেননা সে নিজের হাতে ছেলে হত্যার বদলা নিতে চায়।
এইদিকে জেরার্ড পালিয়ে পাহাড়ে অবস্থান। ফিজ জেরার্ড ছিলেন অত্যন্ত চালাক তার চরিত্রে অভিনয় করেছেন টম হার্ডি। জেরার্ড তার চালাকিতে ক্যাপ্টেন হেনরীকে ধাঁধায় ফেলে হত্যা করে। এখন বাকী থাকে শুধু গ্লাস আর জেরার্ড। এই পর্বে গ্লাস খুব চালাকি করে।তার কাছে দুইটি ঘোড়া ছিল একটা ক্যাপ্টেনের অন্যটি তার নিজের। সে একটি কাঠের সাহায্য হেনরীকে ঘোড়ার পিঠে বসিয়ে নিয়ে অন্য ঘোড়া মৃত সেজে শুয়ে পড়ে। দূরে থেকে জেরার্ড বসে থাকা মানুষটিকে গ্লাস ভেবে গুলি করে এবং মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য যখন আসে ঠিক সেই মুহুর্তে গ্লাস তাকে আক্রমণ করে বসে। তাদের মাঝে ভয়ংকর একটি লড়াই হয়। জেরার্ড মারা যায় কিন্তু গ্লাসের হাতে নয়। তাহলে কার হাতে মারা যায় জেরার্ড জানতে হলে দেখতে হবে সুপার সার্ভাইবাল মুভি দ্যা রেভেন্যান্ট।
শিক্ষা
রেভেন্যান্ট মুভিটি আমাদের প্রতিকুল পরিবেশে প্রতি পদে পদে মৃত্যু হাতে নিয়ে কিভাবে বেঁচে থাকতে হয় তা শেখায়। বিপদে পড়লে ধৈর্য, সাহসিকতা ও বেঁচে থাকার মনোবলই যে একমাত্র অস্ত্র তা দারুণভাবে লক্ষ্য করা যায়।
ব্যক্তিগত মতামত
মুভিটির শুরু থেকেই এক রোমাঞ্চকর অবস্থা বিরাজ করছিল। বরফাচ্ছন্ন এলাকায় তারা কয়েক আক্রমণের শিকার হয়। ভাল্লুকের সাথে গ্লাসের লড়াইটি ছিল তার অস্তিত্বকে টিকিয়ে রাখার লড়াই। যদিও লড়াইয়ে সে গুরুতর আহত হয়। তার সঙ্গীরা তাকে ফেলে চলে গেলেও সে একমুহূর্তের জন্যেও হাল ছাড়েনি। অপরদিকে জেরার্ড এর ভূমিকায় অভিনয় করা টিম হার্ডি নিজেকে দারুন ভাবে তুলে ধরেছেন। তার প্রতিশোধ ও ক্যাপ্টেন হেনরীকে ফাঁদে ফেলে হত্যা করা সত্যিকারে ভিলেনের চরিত্র ফুটে তুলেছেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সত্যের, ধৈর্যের জয় অনিবার্য তা এই সিনেমায় প্রকাশ পেয়েয়ে। কনকনে ঠান্ডার হাত থেকে বাঁচার জন্য লিওনার্দো ডি ক্যাপ্রিও যখন ঘোড়ার পেটে আশ্রয় নেয় সেই মুহুর্তটি অসাধারণ লেগেছে। আশা করি আপনারা এই মুভিটি দেখতে বসলে চোখের পলক ফেলাতে পারবেন না কারন প্রতিমুহূর্তে রয়েছে রোমাঞ্চের ছোঁয়া।
ব্যক্তিগত রেটিং
আমি এই মুভিটিতে ৯.৫/১০ দিবো।
মুভির লিংক এখানে
প্রজেক্ট | মুভি রিভিউ |
---|---|
রিভিউ করেছেন | @abidatasnimora |
ছবি | ল্যাপটপ থেকে স্ক্রীনশটের মাধ্যমে নেওয়া হয়েছে। |
সত্যি প্রতিকুল পরিবেশে প্রতি পদে পদে মৃত্যু হাতে নিয়ে চলতে হয় আপু। ২০০২ সালের উপন্যাস নিয়ে একটা মুভি এই ভাবে রিপ্রেজেন্ট করেছেন এটা ভাবতেই ভালো লাগছে আপু। আপনার মততাম এর প্রশংসা করতে হবে আপু। পোস্ট টাও খুব সুন্দর করে সাজিয়েছেন। শুভকামনা রইল বোন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
এডভেঞ্চার মুভিটি আমি দেখিনি তবে আপনার রিভিউ দেখে দেখার ইচ্ছা হলো অবশ্যই দেখবো। অনেক সুন্দর ভাবে এডভেঞ্চার মুভি রিভিউ করেছেন ধন্যবাদ আপনাকে আপু আপনার জন্য শুভকামনা রইলো
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
এডভেঞ্চার মুভিটি অনেক নামকরা এবং জনপ্রিয় তা শুনেছি আমি। অনেকে আমাকে অনেকবার দেখতেও বলেছিলো।বিশেষ করে বান্ধুবিরা।
আপনার আজকের পোস্ট পড়ে মনে হচ্ছে দেখতে হবে।
আপনার জন্য অনেক ভালোবাসা।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
অবশ্যই দেখবেন আপু। অসাধারণ একটি মুভি।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
দ্যা রেভেন্যান্ট মুভিটা আমি কয়েকবার দেখেছি অনেক ভালো লেগেছে। আপনার পোস্টেও মুভিটির মূল কাহিনী ফুটে উঠেছে। যারা দেখেননি তাদের জন্য অনেক উপকার হবে। আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
এবং আপনার জন্য অনেক শুভকামনা আপনার আগামী দিনের পথ চলা শুভ হোক এই কামনাই করি।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ধন্যবাদ ভাইয়া আপনাকে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ, আপনি খুবই সুন্দর ভাবে লড়াইয়ে টিকে থাকার মত আত্মবিশ্বাসী সম্পূর্ণ অ্যাডভেঞ্চার মুভি রিভিউ করেছেন। মুভিটি সত্যিই অসাধারণ, আপনি খুবই সুন্দর ভাবে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে মুভির গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট গুলো আমাদের সামনে আলোকপাত করেছেন। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
মনোযোগ দিয়ে পড়ার জন্য ধন্যবাদ ভাইয়া
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
অনেক সুন্দর একটা মুভির রিভিউ দিয়েছেন। ইমু থেকে প্রাপ্ত শিক্ষাটি সত্যি বাস্তব জীবনে অনেক কাজে লাগে এবং একমাত্র বাস্তবতা এটাই প্রতিকূল পরিবেশে নিজেকে মানিয়ে নেয়া এবং ধৈর্যধারণ করা। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাদের মাঝে এমন সুন্দর একটি মুভির রিভিউ তুলে ধরার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ধন্যবাদ আপনাকেও
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
খুবই সুন্দর একটি রিভিউ দিয়েছেন আপনি। মুভিটি দেখতে হবে একসময়। ধন্যবাদ সুন্দর ভাবে তুলে ধরার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
খুবই সুন্দর একটি মুভি রিভিউ দিয়েছেন আপনি। উপস্থাপনা জাষ্ট অসাধারণ ছিলো। শুভেচ্ছা রইল আপু।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ধন্যবাদ ভাইয়া কেমন
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit