আসসালামু আলাইকুম।প্রথমেই সবাইকে জানাচ্ছি ঈদ মোবারক। আমার বাংলা ব্লগের সকল সদস্যগণ আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমতে আপনারা সবাই পরিবার নিয়ে বেশ ভালো ও সুস্থ আছেন। আমিও আল্লাহর অশেষ রহমতে বেশ ভালো আছি। আজ আমি আবারো আপনাদের মাঝে একটি নতুন পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি।
আমার আজকের পোষ্টটি হলো যমুনা নদীর ওপর আমার অভিমান। আমাদের গ্রামে এই যমুনা নদী রয়েছে। আসলেই নদীটা দেখতে যতটা সুন্দর ঠিক ততটাই ভয়ঙ্কর। এই কথাটা বলার কারণ হলো যারা নদী ভাঙ্গনের কবলে পড়েছেন তারাই বুঝবেন এই নদী একবার ভাঙ্গা শুরু করলে সবকিছু ভেঙে নিয়ে যায়।
আমি ছোটবেলায় গ্রামেই বড় হয়েছি।প্রায় ক্লাস ওয়ান পর্যন্ত আমি গ্রামে ছিলাম।আমাদের গ্রামের বাড়িতে আম, কাঁঠাল,লিচু,জাম,জাম্বুরা,নারকেল সহ প্রায় 50 টির মতো গাছ ছিল।আমাদের বাড়ি থেকে প্রায় বেশ কিছু দূরে যমুনা নদী ছিল। এরপর আমরা বগুড়া শহরে চলে আসি। স্কুল ছুটি হলেই গ্রামে যেতাম।এর কিছুদিন পর এক ভয়ানক বন্যা হয় । তখন আমি অনেক ছোট কিন্তু তারপরও আবছা মনে আছে ।সেই বন্যায় আমি যমুনা নদীর সেই ভয়ানক রূপ টা দেখেছিলাম।সেই বন্যা শেষ হতে না হতেই যে নদী ভাঙ্গা শুরু হলো আমাদের পুরো গ্রাম টা সেই নদী যেন আস্ত গিলে ফেললো।কত মানুষের কত হাহাকার।সেই দিন বুঝি নি কিন্তু আজ বুঝি প্রতি টা মানুষের বেড়ে ওঠার গ্রাম টা সবার প্রাণ প্রিয় হয়।নিজের গ্রামের মাটি তে পা দিলেও যেন মনে হয় আপন।আমি প্রায় 11 বছর শহরে থাকার পরেও শহরটা আমার কাছে এত টা আপন হতে পারেনি যত টা আপন ছিল আমার গ্রামের বাড়ি।
প্রতিবার স্কুল বন্ধ হলে বা ঈদের ছুটিতে সবাই কে দেখি গ্রামের বাড়ি যেতে। মন টা তখন খুব খারাপ হয় আর প্রতিবার খুব রাগ হয় ওই যমুনা নদীর ওপর। পরে যদিও বাবা ঠিক করেছিলেন গ্রামে আরেকটি বাড়ি করবেন কিন্তু নদী আবারো ভাঙ্গার সম্ভাবনা থাকার কারণে সবাই না করেছিলেন ।তাই আর আমরাও গ্রামে দ্বিতীয় বার বাড়ি করিনি।আর বাড়ি করলেও হয়তো সেই আগের পরিবেশ মানুষ জন পাবো না।তাই যত বার আমি গ্রামে যাই ওই যমুনা নদীর দিক তাকিয়ে থাকি আর ভাবী এমন টা না করলেও পারতে ।যাদের গ্রাম নাই এক মাত্র তারাই জানে নিজের যেন হালবিহীন নৌকার মতো মনে হয়। আর তখন থেকেই আমার যমুনা নদীর প্রতি একটা অভিমান জন্মে। আজ এই যমুনা নদীটা যদি আমাদের গ্রামের বাড়িটা ধ্বংস না করে দিত তাহলে হয়তো আমরাও আজ গ্রামে ঈদ বা গ্রীষ্মের ছুটিতে বেড়াতে যেতে পারতাম।
আজ এই পর্যন্তই। এরপর আবার নতুন কোনো পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হবো। সে পর্যন্ত আপনারা সবাই ভালো ও সুস্থ থাকবেন। আপনাদের সবাইকে জানাই অসংখ্য ধন্যবাদ সেই সাথে আবারো ঈদ মোবারক।
আসসালামু আলাইকুম। আমি আফরিন খান উপমা। আমি রাজশাহী বিভাগের বগুড়া জেলায় বসবাস করি। আমি ইন্টার সেকেন্ড ইয়ারের মানবিক বিভাগের একজন ছাত্রী। আমার জাতীয়তা বাংলাদেশী। আমি একজন ব্লগার উদ্যোক্তা। আমি গান গাইতে , নতুন নতুন রেসিপি তৈরি করতে এবং ছাদ বাগান করতে খুব ভালোবাসি। আমি আনন্দময়ী এবং সকলকে নিয়ে হৈহুল্লর ও একসঙ্গে সকলকে নিয়ে মজা করতে পছন্দ করি। আমি সকলের দুঃখে দুঃখী এবং সকলের সুখে সুখী
নদীর নিয়ম ই এমন আপু! এজন্যই নদী বহমান, স্রোতস্বিনী নামে পরিচিত! নদীর এক পাড় ভাঙে তো আরেক পাড় গড়ে উঠে! আপনার যমুনা নদীর উপর অভিমান হওয়াটা বেশ স্বাভাবিক ই লাগলো। তবে আফসোস রাখবেন না আপু। জীবন এর সবকিছুই পরিবর্তনশীল!
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ঠিক বলেছেন আপু জীবনের সবকিছুই পরিবর্তনশীল । আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
নদীভাঙন আর নদীভাঙনের কবলে পড়া বাস্তবতা দুটোর মধ্যে বিস্তর তফাত রয়েছে। যারা বিশেষ করে উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষ রয়েছে তারা নিজেদের ভিটেবাড়ি হারিয়েছে, নদীভাঙন তাদের জন্য একটি অভিশাপ বৈ কিছু নয়।
তবে আমরা বাঙালিরা পদ্মা মেঘনা যমুনার সাথে লড়াই করেই টিকে থাকার সংগ্রামে সেই সুপ্রাচীনকাল ধরেই অভ্যস্ত আছি। নদীবিধৌত জনপদের সুখ দুঃখ নদীর সাথেই একসাথে গাঁথা আছে।
আশা করি, সবকিছু একদিন ঠিকঠাক হয়ে আসবে।
যমুনার বাস্তবরূপ বর্ণনার জন্য ধন্যবাদ। অনেক কিছু শেখা গেল।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit